শাবান মাসের মর্যাদা ও ফজিলত
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম

মহান আাল্লাহ সৃষ্টির মহা কারিগড়।তার সৃষ্টির রহস্য মানুষের পক্ষে জানা অসম্ভব। আল্লাহ তাআলা দিন রাতের মাধ্যমে চন্দ্র বছর হিসাব নিধারন করে দিয়েছেন। সে হিসাবে প্রত্যেক মোমিন বান্দা,দিবা নিশি তার ইবাদত বন্দেগি করে সময় অতিবাহিত করি।মহান আল্লাহ,শাবান মাসে মোমিন বান্দার জন্য ক্ষমা ও পুরুস্কার ঘোষনা করেন।এ মাসের পর আসে পবিত্র মাহে রমজান।এ মাসে মোমিন বান্দার হৃদয়ে খুশির অনুভুতি সৃষ্টি হয়।মহান আল্লাহ বলেন,‘নিশ্চয় আমি একে এক বরকতময় রাতে নাযিল করেছি,নিশ্চয়ই আমি হলাম সর্তককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপুর্ন বিষয় বন্টন করা হয়। আমার নিদেশ ক্রমে,নিশ্চয় আমি হলাম প্রেরণ কারী’।এই বরকতময় রাতে আল্লাহর কাছে জীবনের গুনাহ ও ক্ষমাহ প্রার্থনা করি।
আরবী মাস,শাবান মাস। এ মাসটি গুরুত্ব পুণ মাস।শাবান শব্দের অর্থঃ বিভক্ত হওয়া বা বিচ্ছিন্ন হওয়া,শাখা প্রশাখা ইত্যাদি। রজব ও রমজানের মাঝা মাঝি শাবান মাস। হযরত আনাস (রা) বলেন,‘এই মাসের নাম শাবান রাখার কারন হলো, এই মাসে রোজা পালন কারীরা শাখা-প্রশাখার মতো বেশী বেশী সওয়াব প্রাপ্ত হয়’। উম্মুল মোমেনিন মা আয়েশা (রা) বলেন,‘আমি রাসুল (দ) কে এ মাসের তুলনায় অন্য কোন মাসে এত বেশী রোজা রাখতে দেখিনি। এমন কি রাসুল (দ) কয়েকটি দিন ছাড়া প্রায় পুরো মাসেই রোজা পালন করতেন’।উসামা বিন জায়েদ (রা) বলেন,আমি প্রিয় রাসুল (দ) কে জিজ্ঞেস করেছি,হে আল্লাহর রাসুল,শাবান মাসে আপনি যেভাবে রোজা রাখেন সেভাবে অন্য কোন মাসে রোজা রাখতে আপনাকে দেখিনা। রাসুল (দ) বলেন,রমজান ও রজবের মধ্যেবতী এই মাসের ব্যাপারে মানুষ উদাসিন থাকে। এটা এমন এক মাস যে, বান্দার আমলকে বিশ^ জগতের মহান অধিপতি আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। আমি চাই আল্লাহর কাছে আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক,যখন আমি রোজাদার। (নাসাঈ)। বিশিষ্ট সাহাবী মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা) বলেন, রাসুল (দ) বলেছেন,আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টি দেন, এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষনকারী ছাড়া আর সবাইকে মাফ করে দেন।( ইবনে হিব্বান)।
এহান আল্লাহ বিশ^ জাহানের ¯্রষ্টা। মহান ¯্রষ্টার কাছে বান্দার আমল তিন ভাবে উপস্থাপন করা হয়।যথাঃ ১. প্রতি দিনের আমল প্রতিদিন।২.প্রতি সপ্তাহ্ ে৩.বছরে একবার আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়।হযরত আবু হুরাইরা (রা) বলেন,আমি প্রিয় রাসুল (দ) কে বলতে শুনেছি, প্রতি বৃহস্পতিবার জুমার রাতে বনি আদমের আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। কিন্তু আতœীয়তার সর্ম্পকিত ছিন্ন করেছে এমন ব্যক্তির আমল কবুল হয না।(মুসনাদে আহমদ)।আনাস ইবনে মালিক (রা) বলেন, প্রিয় নবীজী সাহাবায়ে কিরামগণ শাবান মাসের চাদঁ দেখলে বেশী বেশী কোরআন তিলাওয়াতে মশগুল হয়ে যেতেন। অন্য বননায় রয়েছে,যাদের উপ যাকাত ফরজ হয়েছে, তারা মালের যাকাত আদায় করে দিতেন। যাতে গরিব ও অসহায় মুসলমানদের রোজা রাখার ব্যবস্থা হয়ে যায। বিচারকরা কয়েদিদের ডেকে শস্তির হকদার হলে শস্তি দিতেন, না হয় মুক্তি দিয়ে দিতেন।(লাতায়েফুল মায়ারেফ)।শাবান মাস গুনা মাফের মাস। এ মাসে এমন একটি রজনী রয়েছে.যাকে লাইলাতুল বরাত বা ভাগ্য রজনী বলা হয়। এটি একটি মর্যাদা পুণ রজনী। এ রাতে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার পাপ রাজী ক্ষমাহ করে দেন। হযরত রাসুল (দ) বলেন,শাবান মাসের পনের তারিখের রাতে যত এ বছর যত শিশু জন্ম গ্রহন করবে তা লিপি বদ্ধ করা হব্ েআর যত লোক মুত্যু বরন করবে তাও লিপি বদ্ধ করা হবে।তিনি আরো বলেন,যখন শাবান মাসের পনের তারিখের রাত হয় তখন তোমরা ঐ রাত জাগ্রত থেকে ইবাদত কর এবং দিনে রোজা রাখ। কেননা এ রাতে আল্লাহ তাআলা সুর্যাস্তের পর দুনিয়ার আসমানে অবতরন করে বলতে থাকেন,আছ কি কোন ক্ষমা প্রার্থনা কারী? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। আর কি আছ কোন রিযিকের প্রার্থনা কারী? আমি তাকে রিযিক দান করব,আছ কি কোন বিপদগ্রস্থ? আমি তাকে বিপদ মুক্ত করে দিব। আছ কি কেউ এমন,আছ কি কেউ এমন? এ রুপ ফজর পর্যন্ত ডেকে ডেকে বলতে থাকেন।(হাদিস)
বিশ^ নবী (দ) রজব ও শাবান মাসে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহন করতেন।মানসিক ভাবে তৈরী হতেন। এ কারনে তিনি পবিত্র শাবানের দিন ও তারিখ গুরুত্ব সহকারে হিসাব রাখতেন।হযরত আয়েশা (রা) বলেন,আল্লাহর রাসুল (দ) শাবান মাসের তারিখ এতটাই মনে রাখতেন যতটা অন্য মাসের তারিখ মনে রাখতেন না। শাবানের ২৯ তারিখ চাদঁ দেখা গেলে পরের দিন রমজানের রোজা রাখতেন্ আর সেই দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে শাবান ৩০তম দিন পুর্ণ কওে রমজানের রোজা শুরু করতেন।(আবু দাইদ)।শাবান মাসের দিন তারিখ হিসাব রাখাটা নবী (দ) এর সুন্নত। মোমেন বান্দার জন্য কল্যাণ কর।শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিগত রমজানের রোজা যাদের কাজা আছে,তাদের রমজান শুরুর পুর্বে কাজা গুলো আদায় করে নিতে হবে। বিধান অনুযায়ী কাজা রোজা আদায়ে বিলম্ব করা উচিত নয়। হযরত আয়েশা রা) বলেন,আমার ওপর রমজানের যে সব কাজা রোজা থাকত সে গুলো শাবান মাসের ভিতর আতায় করে ফেলতাম।( মুসলিম)।
রমজানের রোজা প্রতি বছরে একবার আসে। তাই রমজানের বিধি বিধান অনেক মোমিনের কাছে স্মরন থাকে না। শাবান মাসে মোমিন বান্দার কাজ হলো রমজানের বিধি বিধান জানা এবং সে হিসাবে রমজান মাসের নিয়ামত রাজী হাত ছাড়া না করা। শাবানে বেশী বেশী নফল রোজা,তওবা, ইস্তিগফার,কোরআন তিলাওয়াত,জিকির ও দান সদকা করা উত্তম কাজ। প্রত্যেক মোমিন মুসলমান সব ধরনের ভালো কাজ পবিত্র শাবান মাসে বেশী বেশী আদায় করা উচিৎ। মহান আল্লাহর ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে অতিবাহিত করা। আল্লাহ প্রত্যেক মোমিন বান্দাকে শুকুর আদায় করার শক্তি ও সাহস দান করুন। আমিন।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক আরবী, গ্রন্থকার।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

চা শিল্পে সংকট, শৃঙ্খলা ভাঙলে ব্যবস্থার নেয়ার ঘোষণা

কানাডায় ভারতীয় নাগরিক ছুরিকাঘাতে নিহত, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

মরণ বাঁধ ফারাক্কার প্রভাবে পদ্মা নদীতে পানির বড় আকাল

ঈশ্বরগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমীস্নান

পাঁচবিবিতে বাস ভাড়া আদায় রোধে প্রশাসনের অভিযান

গাজার ভয়াবহ চিত্র, জীবন বাজি রেখে ক্যামেরাবন্দী করছেন ফটোসাংবাদিকরা

ধবলধোলাই হয়ে রিজওয়ান বললেন, ‘হতাশার সিরিজ’

মাগুরায় সন্ত্রাসী হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

রংপুরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় শীর্ষক সেমিনার

জুলাই বিপ্লবে শহীদ রাকিবুলের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপি’র কেন্দ্রীয় নেতা তারেক রেজা

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই বাংলাদেশের মত, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নগরকান্দায় বিয়ের ১ মাস হতেই ডাকাতের হাতে প্রান গেল প্রবাসীর

বায়ার্নের সঙ্গে ২৫ বছরের সম্পর্কের ইতি টানছেন মুলার

নিকলীর হাওরে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯৭ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন

মার্কিন শুল্ক ইস্যুতে জরুরি সভা ডাকলেন প্রধান উপদেষ্টা

ভারতে মুসলিমদের সম্পত্তি দখল এবং সংখ্যালঘু নিধনের গভীর ষড়যন্ত্র–ওয়াকফ বিল

বুড়িচং উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মিজান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কামাল ও সদস্য সচিব কবির

আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত বিএনপি নেতা জাকিরকে দেখতে হাসপাতালে ব্যারিস্টার সায়েম

দুমকিতে মাইক্রোবাসের চাপায় এক নারীর মৃত্যু

কলাপাড়ায় দুই সন্তানের জননীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ