রমযান মাস : কোরআন নাজিলের মাস
২০ মার্চ ২০২৫, ১২:২৫ এএম | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০১:০৪ এএম

রমযার মাস,আল কোরআন নাজিলের মাস। অধ্যায়ন ও তাকওয়ার মাস। এ মাস বলে দিবে কোনটি আলোর ও কোনটি অন্ধকারের পথ। এরশাদ হচ্ছে-‘হে ইমাদারগণ!তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে,যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পুর্ববতী নবীর উম্মতের উপর। আশা করা যায় তোমাদের মাঝে তাকওয়ার গুন ও বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হবে’। (সুরা বাকারা-১৮৩)। সিয়াম সাধনায় মুত্তকির গুন অর্জন হয়।আয়াতে কারীমায় সে কথাই নিশ্চিত করা হয়েছে। রোজা একটি ফরজ ইবাদত। ইহা পালন করা ফরজ। এখন প্রশ্ন তাকওয়া কি? তাকওয়া হচ্ছে,মহান আল্লাহ তাআলার নাফরমানি,অবাধ্যতা থেকে নিজেকে বেঁচে রাখা। অন্তরে আল্লাহ ভীতি জাগ্রত রাখা। যা মোমেন বান্দার জন্য একান্ত ভাবে কাম্য।
মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে সর্ব শ্রেষ্ঠ্য জাতি হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরন করেন।তারা সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।পার্থক্যের মাপ কাটি হলো আল কোরআন। এরশাদ হচ্ছে- ‘রমযান মাস তো সে মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল করা হয়েছে। আর এ কোরআন হচ্ছে মানব জাতির জন্য পথের দিশা। মানুষের জন্য সত্য মিথ্যার পার্থক্য কারী’।(সুরা বাকারাহ-১৮৫)। মহান আল্লাহ তাআলা সব সহিফা এবং বড় বড় চারি খানা আসমানি কিতাব রমজান মাসে নাজিল করেন। পবিত্র হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে,‘হযরত ইব্রাহিম (আ) এর উপর সহিফা রমজানের ১লা তারিখে,হযরত মুসা (আ) এর উপর তাওরাত শরীফ রমজানের ৬ তারিখে,হযরত দাউদ (আ) এর উপন যাবুর শরীফ রমজানের ১২ তারিখে, হযরত ঈসা (আ) এর উপর ইজ্ঞিল শরীফ রমজানের ১৮ তারিখে এবং সব শেষ মহা গ্রন্থ আল কোরআন শরীফ বিশ^ নবী (দ) এর উপর রমযান মাসের কদরের রাতে নাজিল করা হয়েছে’।রমযান মাস,সত্য ও মিথ্যার পার্থকের মাস। যা আমাদের জন্য মহা নিয়ামত।মোমেন বান্দা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন.হে আল্লাহ,বাতিল ছেড়ে সত্য পথের দিশ দেখাও। এরশাদ হচ্ছে-‘হে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে সরল সঠিক পথের দিশা দাও’। (সুরা ফাতিহা)্।বান্দাকে সঠিক পথের দিশা দিয়ে আল্লাহ বলেন,‘আলিফ লাম মিম!এটা সেই কিতাব,তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এটি মুত্তাকি লোকদের পথ দেখাবে’।(সুরা বাকারা১-২)। মহান আল্লাহ তাআলা আল কোরআনের মাধ্যমে মুত্তাকিদের জন্য পুরুস্কার ঘোষনা করেন।এরশাদ হচ্ছে,‘নিশ্চয় যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং যারা সৎকর্ম পরায়ন,আল্লাহ তাদের সঙ্গে রয়েছেন’।‘নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকিদেরকে ভালোবাসেন’। ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার পাপ মার্জন করবেন এবং তাকে দেবেন মহা পুরুস্কার’।‘যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারনাতীত উৎস থেকে জীবিকা দান করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট’।‘যদি তোমরা ধৈর্য ধারন করো এবং আল্লাহকে ভয় করো। তাদের ষড় যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না’।‘যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করতো তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা জান্নাতের নিকট উপস্থিত হবে,তার দরজা গুলো খুলে দেওয়া হবে এবং জান্নাতের রক্ষীরা তাদের বলবে,তোমাদের প্রতি সালাম এবং জান্নাতে প্রবেশ করো, স্থায়ী ভাবে অবস্থানের জন্য”। হাদীসে কুরসিতে আল্লাহ বলেন,‘রোজা আমার জন্য,আমি নিজে তার পুরুস্কার দিব’। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্নিত হযরত রাসুল (দ) বলেন, সিয়াম এবং কোরআন বান্দার জন্য কিয়ামতের দিবসে সুপারিশকারী হবে,সিয়াম বলবে,হে প্রভু আমি তাকে দিনের বেলা খাওয়া এবং প্রবৃত্তির তাড়না থেকে নিবৃত্ত রেখেছি তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহন করুন। কোরআন বলবে,আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি,তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন,আল্লাহ বলবেন,তাদের সুপারিশ গ্রহন করা হলো’।‘যে রমজানের ইমান এবং এহতেসাবের সাথে সিয়াম পালন করবে,আল্লাহ তার পুর্বের গোনাহ মাফ করে দেবেন’।(বুখারী-মুসলিম)।
রোজা মানুষের পাপ রাশিেেক জ¦ালিয়ে পুড়ে খাটি মানুষ তৈরী করে। এ মাসে রাত জেগে আল কোরআন অধ্যায়ন ও তেলাওয়াত করে অসংখ্য নেকী অর্জন করা সম্ভব হয়। যা অন্য মাসে অসম্ভব। এ মাসে মোমেন বান্দা দিবা নিশি কোরআন অধ্যায়ন করে। এ কিতাবের জ্ঞান অর্জন করেন। যে জ্ঞান মানুষকে সরল সঠিক পথের কর্মসুচি নিদেশ করে। কোনটি জান্নাতের আর কোনটি জাহান্নামের পথ। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘আর এ কুরআন হচ্ছে মানব জাতির জন্য পথের দিশা। মানুষের জন্য হক-বাতিলে পার্থক্য কারী’। পবিত্র রমযান মাসে বেশী বেশী করে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করা যায়। মানুষের কথা,বার্তা,আচার-আচরন,চাল-চলনে সত্য মিথ্যার প্রভাব পড়ে।তাছাড়া বেশী সওয়াব অর্জনের আশায় রোজার মাসে ইফতার মাহফিল,তারাবী,লাইলাতুল কদর ইত্যাদি পালন করে থাকি। অথচ মধ্যমনি আল কোরআন কে ভুলে আমরা আধুনিক সভ্যতা,সংস্কৃতিকে আকড়ে ধরেছি। যা দুনিয়ার জীবনে শেষ। পরকালের জন্য কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। মহান আল্লাহ তাআলা আল কোরআনের প্রতিষ্ঠানিক রুপ দেয়ার জন্য রোজা ফরজ করেন।একজন মোমিন বান্দা প্রতিদিন নামাজ,রোজা,যাকাত,হজ্জ ইত্যাদি ইবাদত করে থাকেন।এরশাদ হচ্ছে,‘নিশ্চয় নামাজ খারাপ ও অশ্লুীল কাজ থেকে বিরত রাখে’।অথাৎ নামাজ খারাপ কাজ থেকে বান্দাকে দুরে রাখে।প্রত্যেকটি ইবাদত বান্দাকে সঠিক পথ দেখান।কিন্তু আমরা,সঠিক পথের সন্ধ্যান পাচ্ছি না। আল কোরআন অধ্যায়ন ও রোজা পালনের মাধ্যমে মুত্তাকি হতে পারছি না।
মাহে রমযান বরকত,রহমত ও নাজাতের মাস। আল কোরআনের বিধি বিধান গুলো সংযোজন এবং নিষেধের বিধি বিধান সংকোচন করে জীবন পরিচালনা করা প্রয়োজন। হালাল,হারাম,ন্যায়-অন্যায়,সত্য-মিথ্যাসহ যাবতীয় বিধানাবলি যথাযথ ভাবে পালন করা হচ্ছে না। মোমিনের সংবিধান হলো আল কোরআন।রোজার তাকওয়া ব্যক্তি,পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে। আল কোরআনের র্স্পশে ব্যক্তি,পরিবার,সমাজ ও রাষ্ট্র পরিবর্তন আনা সম্ভব। (চলবে)
লেখক: সহকারী অধ্যাপক আরবী, গ্রন্থকার।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

পাবনায় চররে জমি দখল নিয়ে সংর্ঘষে গুলবিদ্ধি ৫

আইএমএফের ঋণের কিস্তি নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ

মার্কিন উচ্চশিক্ষার চরম পতন

পরিশুদ্ধ-পরিবর্তিত বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে হবে-সাহাদাত হোসেন সেলিম

গাজায় ইহুদী হামলায় ৬০ ফিলিস্তিনি শহীদ

জাতিসংঘের দুটি আঞ্চলিক সংস্থায় নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ

রাজনৈতিক দল গঠন এখন ছেলেখেলা!

সাভারে অজ্ঞাত নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

নর্থ সাউথে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ

কোরআনবিরোধী নারী সংস্কার প্রস্তাবনা দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ

পাকিস্তান-ভারতকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে বলল জাতিসংঘ

‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

নারী কমিশনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে

তারেক রহমান ‘নিয়তির সন্তান’

অতিদারিদ্র্য বৃদ্ধির শঙ্কা

২৪ ঘন্টায় গ্রেফতার ১০৭২ আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার

পারভেজ হত্যা মামলায় প্রধান আসামি মেহেরাজ রিমান্ডে

আ.লীগের ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সন্তোষ কুমার রিমান্ডে

চট্টগ্রামে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ মহিলার মৃত্যু

রাজধানীর প্রধান সড়কে ব্যাটারি রিকশা বন্ধের দাবি মোটরসাইকেল চালকদের