জহির উদ্দীন বাবর দিগ্বিজয়ের বাঘ-২
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
পিতার মৃত্যুর সময় বাবর অবস্থান করছিলেন রাজধানী থেকে ৩০ মাইল দূরে, আন্দিজানের চারবাগীতে। তখন তার বয়স মাত্র এগার বছর। পরিবার ও ফারগানা রাজ্যের হাল ধরতে হবে তাকে। কিন্তু অভিজাতরা মাত্র ১১ বছর বয়সী বাবরের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। পৈতৃক উত্তরাধিকার আদায়ের জন্য বাবর দ্রুতই এলেন রাজধানীতে। এদিকে আহমদ মীর্জা এগিয়ে আসছিলেন ফারগানা দখলের জন্য। অভিজাতরা তাই বাবরকেই শাসক হিসেবে কবুল করলেন। দ্রুতই তিনি নিজেকে প্রমাণ করতে লাগলেন। এক্ষেত্রে তাকে বিশেষভাবে সহায়তা করলো তার পরিবার। তার পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এসেছিলেন আল মজালদ বেগ, হাসান ইবনে ইয়াকুব, কাসিম বেগ, বাবা কুল বেগ, নিজের নানি আলসান দৌলত বেগম, বাইসালঘা, মীর গিয়াস তগাই, কম্বর আলী, খ্বাজা কাজী, ঔজিগ হাসান, আলী দরবেশ খোরাসানীসহ বেশ কিছু বিশ্বস্ত মানুষ। তাদের অব্যাহত সহায়তায় শেষ পর্যন্ত তিনি সিংহাসনে টিকতে সক্ষম হন।
কিশোর বাবরের মনে ছিলো দূরন্ত স্বপ্নের ঝড়। তৈমুর লং ছিলেন তার প্রেরণা। গোটা মধ্য এশিয়াসহ আধুনিক পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান, সিরিয়া ও তুরস্কসহ বিস্তীর্ণ এক ভূখ- শাসন করতেন তৈমুর। তার মৃত্যুর সাথে সাথেই ভেঙ্গে পড়ে এই বিশাল সাম্রাজ্য। যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বের অভাবেই এটা ঘটে। সাম্রাজ্যের আয়তনও ছিলো অনেকটা দায়ী, গৃহযুদ্ধসমূহও ভাঙনকে ত্বরান্বিত করছিলো। তৈমুরের নাতি সুলতান আবু সাঈদ মির্জা বিশাল এই সাম্রাজ্যের বেশ কিছু ভূখ- পুনরুদ্ধার করেছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পরে তার ছেলেরা সাম্রাজ্যকে টুকরো টুকরো করে ভাগাভাগি করে নিলো। ফারগানা রাজ্যটির নিয়ন্ত্রণ পেলেন বাবরের পিতা, যিনি ছিলেন আবু সাঈদ মির্জার চতুর্থ পুত্র।
বাবর হারানো সাম্রাজ্য উদ্ধার করতে চান। তৈমুরের মতো করেই জগতজয়ের নেশা ছিলো বাবরের মনে। কিন্তু সেজন্য শুরুতেই দখল করতে হবে তৈমুরের সাজানো রাজধানী সমরকন্দ। ক্ষমতাসীন হবার পর থেকেই তিনি প্রস্তুতি নিতে থাকেন। কিন্তু তার এ স্বপ্নের পাশে কে দাঁড়াবে? আত্মীয়-স্বজন বিপক্ষে। স্বগোত্রীয় উজবেক নেতা সাইবানী খান ঘোর বিরোধী। কিন্তু বাবরের রক্তে ছিলো অভিযানের তরঙ্গ, যাকে পরিস্থিতির রক্তচক্ষু দমাতে পারে না। ১৪৯৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি সমরকন্দ অধিকার করে নিলেন। কিশোর শাসকের নিজস্ব সিদ্ধান্ত ও জয়ের তাড়নাকে কবুল করতে পারছিলো না ফারগানার কিছু অভিজাত। তারা সেখানে শুরু করে গৃহদাহ। খবর পেয়ে বাবর দ্রুত ফেরেন ফারগানায়। এ সুযোগে সাইবানী খান দখল করে নেন সমরকন্দ। বাবর আর একে উদ্ধার করতে পারেননি। ১৫০১ খ্রিস্টাব্দে সমরকন্দ আক্রমণ করে সাইবানীর হাতে পরাজিত হন। ফলে নিজের গোত্রের অবাধ্য সর্দাররা আরো শক্তিশালী হয়। তাদের সমবেত ষড়যন্ত্রে ফারগানার সিংহাসন থেকেও বঞ্চিত হতে হয় তাঁকে। সিংহাসন থেকে বিতাড়িত বাবর ভাগ্যবিড়ম্বিত অবস্থায় পতিত হন। কিন্তু পরাজয়কে মনে জায়গা দেননি। এক ধরনের যাযাবর জীবনযাত্রার মধ্যে তিনি নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকেন।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নীতি সহায়তার অভাবে বিকশিত হচ্ছে না কসমেটিকস শিল্প
রাইসির নিহত হওয়ার খবরে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
গণতন্ত্রকামীরা কারাগারে আর ঋণখেলাপী-পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য চরমে: রিজভী
পিকে হালদারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক
ক্যাপিটাল গেইনে কর আরোপ না করার অনুরোধ ডিএসইর
৩০ মে ময়মনসিংহ নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে দোয়া-মাহফিল করবে বিএনপি
অটোরিকশাচালকদের ওপর সরকার স্টিম রোলার চালাচ্ছে: রিজভী
আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহে আইসিটি ও ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার বিকেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্ত
বিএনপি নেতা ইশরাকের মুক্তির দাবিতে নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ
যশোরে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ভ্যান চালক নিহত
ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণও শোকাহত বিভিন্ন ইসলামী দলের গভীর শোক
আগাম নির্বাচনের আগে রাইসি’র স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মোহাম্মদ মোখবার
‘অপো এ৬০ লাখ টাকা ক্যাম্পেইন’ বিজয়ীর নাম ঘোষণা
রাইসি’র মৃত্যুতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ‘গভীর শোকাহত’
তাপপ্রবাহ চলাকালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মাউশি’র ৯ নির্দেশনা
টাঙ্গাইলে মাদক মামলায় এক নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রাজবাড়ীতে ছেলে হত্যা মামলার আসামীদের হামলায় পিতা জখম
রাইসির মৃত্যুতে বেড়েছে তেলের দাম
ওলামা লীগের ইতিহাস খুব সুখকর নয় : ওবায়দুল কাদের