জহির উদ্দীন বাবর : দিগ্বিজয়ের বাঘ-১০
১৬ মার্চ ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪, ১২:১২ এএম
বাবর তুর্কি ও ফার্সি ভাষায় অসংখ্য কবিতা রচনা করেন। তাঁর রচিত তুর্কি কবিতার সংকলন ‘দিওয়ান’ নামে পরিচিত। ফার্সি ভাষায় বাবর এক প্রকার নতুন ছন্দ আবিষ্কার করেন, যা সাধারণত ‘মুবইয়ান’ নামে সুপরিচিত। জহির উদ্দিন মুহম্মদ বাবরের সাহিত্যানুরাগের শ্রেষ্ঠ নির্দশন তুর্কি ভাষায় রচিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘তুযুক-ই-বাবরী’। তাঁর পৌত্র সম্রাট আকবরের নির্দেশে বইটির ফার্সি অনুবাদ করেন খান-ই-খানান আবদুর রহিম। মিসেস বেভারিজ একে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ‘মেমোরিজ অব বাবুর’ নামে। এরপর দ্রæতই গ্রন্থটি সারা বিশ্বে বিখ্যাত হয়। ভারতীয় লেখক সৈয়দ আমীর রিজভি এ গ্রন্থের একটি হিন্দি সংস্করণ প্রস্তুত করেন। বাবরনামা নামে বাংলায় বইটির তর্জমা করেন মুহম্মদ জালালউদ্দীন বিশ্বাস। বিশ্বের বহু ভাষায় অনূদিত ও বন্দিত এই বই বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম এক হীরকখÐ।
বাবর চাইতেন জনগণের সহায়তা নিয়ে শাসনকে স্থায়ী করতে। কিন্তু জনগণের সহায়তা পাওয়া জনগণকে সহায়তা করার উপর নির্ভরশীল, এই সচেতনতা তার ছিলো। অত্যাচার ও নির্দয় আচরণকে তাই কোনোভাবেই শাসনপরিসরে স্থান দেওয়া চলবে না। হিন্দুস্তানকেই তিনি আপন স্বদেশ করে নিলেন। এর উন্নয়ন আর স্থানীয়দের মন জয় তার কাছে পেলো প্রাধান্য। সুশাসনের জন্য অধিকৃত সমস্ত এলাকায় কৃষির উন্নয়নে পানিব্যবস্থাপনা ও সেচ-পরিস্থিতির উন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলো। অসংখ্য ক‚প, খাল ও বৃহদায়তন পুকুর খনন করা হলো। আশ্রয়কেন্দ্র ও হাম্মামখানা তৈরি হলো বিপুল পরিমাণে। নদীবহুল অঞ্চলে তৈরি হলো বহু সেতু। রাজধানী আগ্রাসহ নানা অঞ্চলে নির্মিত হলো অসংখ্য স্থাপনা ও যোগাযোগ শৃঙ্খলা। আগ্রা থেকে কাবুল অবধি রাস্তা জরিপ করা হলো। ফলক বসিয়ে এলাকাসমূহ চিহ্নিত করা হলো। পথের পাশে সরাইখানা স্থাপন করা হলো, অসংখ্য সরাইখানা যাত্রীদের বিশ্রাম, খাবার-দাবার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতো। পথ ও গন্তব্য নির্দেশক স্থাপন করা হলো। বাবর তার সমগ্র সাম্রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ঢেলে সাজান। কাবুলসহ হিন্দুস্তানের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে ভালো ও দ্রæত যোগাযোগ করার জন্য উৎকৃষ্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। ১৫ মাইল পরপরই ডাকঘর আর সেনাচৌকি স্থাপন করেন। বিপুল সংখ্যক মসজিদ ও অন্যান্য ভবন সংস্কার করা হলো। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সাধনের জন্য বিভিন্ন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলো।
মুঘলদের বিশেষ মনোযোগ ছিলো বাগান নির্মাণে। শহরে-বন্দরে তৈরি হলো বহু উদ্যান। আগ্রায় জোহরাবাগ আর আরামবাগ নামক বিখ্যাত বাগান মুঘলদের উন্নত রুচি ও প্রাকৃতিক বৈচিত্রের জয় ঘোষণা করে। কেবল দিল্লি ও আগ্রায় ২০টি বিপুলায়তন উদ্যান তৈরি করেন তিনি। পয়োনিষ্কাষণ ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে শহরে শহরে তৈরি হয় বহু পাকা নর্দমা।
১৫২৭ সালে পানিপথে বাবরের তৈরি কাবুলি বাগ মসজিদ ছিলো মুঘল স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন। বাবরের স্ত্রী কাবুলি বেগমের নামানুসারে মসজিদের নামকরণ হয়। দিল্লির প্রায় ১৪০ কিলোমিটার পূর্বে সম্ভলে বাবর নির্মাণ করেন সম্ভল জামে মসজিদ। ১৫২৮-২৯ সালের মধ্যে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় বাবরের বিখ্যাত বাবরী মসজিদের।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
১৩ বছর পর লক্ষ্মীপুরে ৫টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহন চলছে
কম্বোডিয়ায় সামরিক ঘাঁটিতে অস্ত্রাগারে বিস্ফোরণ : নিহত ২০
আট জেলার ১৯ ইউনিয়ন পরিষদের ভোট চলছে
আগামীদিনে ঘোরাঘুরির উপযুক্ত থাকবে না বিশ্বের একাধিক জায়গা, এমআইটির রিপোর্ট
হুথিদের হামলায় আরো এক মার্কিন সামরিক ড্রোন ভূপাতিত
ফ্রান্সে খাদ্য হিসেবে বাড়ছে শামুকের কদর
অস্ট্রেলিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট, শুরু চরম জনদুর্ভোগ
লাদাখের পর এবার সিয়াচেন নিয়ে উত্তেজনা!
পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিলো ভারত
জোড়া গোলে নিজেকে ছাড়িয়ে গেলেন কেইন
বনানীতে বাসে আগুন: মোটরসাইকেলচালকের মৃত্যু
ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: একে একে পরিবারের সবার মৃত্যু
ব্রিটিশ তেলবাহী ট্যাংকারে হুথিদের সরাসরি হামলা
জানা গেল এসএসসির ফল প্রকাশ কবে হতে পারে
বরিশালে ‘হিট স্ট্রোকে’ আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
জনপ্রিয় টিকটক তারকাকে গুলি করে হত্যা
ভারতীয় পণ্য রপ্তানিতে ধস, তথ্য সংগ্রহ করছে যুক্তরাষ্ট্র
এসটিপি ছাড়া নতুন বিল্ডিং করার অনুমোদন নয় : গণপূর্ত মন্ত্রী