শের শাহ শুরি : প্রজ্ঞার প্রতাপ-৮
১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ এএম

শের শাহের সংস্কারের প্রধান খাত ছিলো প্রশাসন। ৪৭টি শিক বা প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত সাম্রাজ্যে প্রশাসন, বিচার, অর্থনীতি, জননিরাপত্তা ও শিক্ষা-সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের অগ্রগতি ও সুফল নিশ্চিত করতে হবে এবং নিয়মিত রিপোর্টিং করতে হবে ঊর্ধ্বতন প্রশাসনে। জবাবদিহি প্রশাসনের প্রাণ। প্রতিটি পরগণা তদারকি করবে অধিনস্ত প্রশাসনকে। এজন্য থাকবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিকদার, আমীন, মুন্সিফ, খাজাঞ্চি, কানুনগো, ফতেহদার ও কোষাধ্যক্ষ। রিপোর্টিংয়ের জন্য থাকবেন দু’জন কারকুন; একজন মুসলিম, একজন হিন্দু। শিকদার জবাবদিহি করবেন পরগনার সামরিক কর্মকা- নিয়ে। তার অধিনস্ত দফতর প্রয়োজনীয় অর্থ, জনবল ও ক্ষমতা ভোগ করতো। তাদের জন্য ছিলো নির্ধারিত আইনী পাহারা। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় ও আদেশ-নিষেধের বাস্তবায়নে দায়িত্বরত অধিকর্তা হলেন আমীন। তিনি হলেন বেসামরিক প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তা। তার অফিস পরগণার রাজস্ব নির্ধারণ করতো, তা আদায় করতো। সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনে থাকতে হতো সমন্বয়। পরগণাসমূহের কাজকর্ম দেখভাল করতো সরকার। সরকার বা প্রশাসনিক অঞ্চলের সর্বোচ্চ সামরিক প্রতিষ্ঠান হলো দফতর-ই শিক বা আঞ্চলিক কার্যালয়। এর প্রধান হলেন শিকদার-ই-শিকদারান। আঞ্চলিক শান্তিরক্ষা, বহিরাগত হুমকি মোকাবেলা এবং বিদ্রোহ ও দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এ প্রশাসন দায়িত্ব পালন করতো। আঞ্চলিক প্রশাসনের অধিনস্ত বিভাগসমূহের কাজকর্ম ও দিওয়ানী মামলার বিচার করতো দফতর-ই ইনসাফ। এর প্রধান থাকতেন মুন্সিফ-ই মুন্সিফান। শিক বা সরকারসমূহের তদারকির দায়িত্বে ছিলো অনেকগুলো মন্ত্রণালয়। উজির বা মুখ্যমন্ত্রী পরিচালনা করতেন দিওয়ান-ই-ওয়াজারাত। এই মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগ দেখভাল করতো। দিওয়ান-ই-আরিজের কাজ ছিলো সেনা বিভাগ দেখভাল করা। আরিজ-ই-মামালিক ছিলেন এর প্রধান।
দিওয়ান-ই-ইনশা সরকারি দলিল, হিসাব- নিকাশ ও চিঠিপত্র সংরক্ষণ করতো। মুনশি-ই মামালিক ছিলেন বিভাগটির ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। দিওয়ান-ই-রিসালাত পররাষ্ট্র বিভাগের দায়িত্ব পালন করতো। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকতেন এর প্রধান হিসেবে। সবার উপরে ছিলো দিওয়ান-ই-কাজা বা বিচার বিভাগ। কাজী উল কুজাত বা প্রধান বিচারপতি ছিলেন এর সর্বোচ্চজন। দিওয়ান-ই-বারিদ ডাক ও যোগাযোগ বিভাগ দেখভাল করতো। সাহিবুল বারিদ যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতেন।
গোটা প্রশাসন ব্যবস্থার সর্বোচ্চস্থানে ছিলেন সুলতান। তিনি সকল কিছুর সর্বেসর্বা। নিয়োগ, পদোন্নতি, পদাবনতি, পদচ্যুতিসহ প্রতিটি বিষয়ে তার সিদ্ধান্তই সর্বোচ্চ। আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন তিনি।
শের শাহের এ প্রশাসন ব্যবস্থা উপমহাদেশকে দেয় প্রগতিশীল এক প্রশাসন ও কার্যকর সরকার, যা মধ্যযুগীয় ব্রিটিশ প্রশাসনের চেয়ে কেবল অগ্রণী ছিলো না, বরং ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ প্রশাসনের বিন্যাস ও সংস্কারে শের শাহী মডেল ছিলো ইতিবাচক অর্থে পথপ্রদর্শক। (সমাপ্ত)
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপি নেতা হাজী ইদ্রিস গ্রেফতার

ইবির আরবী বিভাগে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের বিদায় ও সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তর

নির্যাতিত নেতাকর্মীদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে: টিপু

মাশহাদে ১৮তম আন্তর্জাতিক পর্যটন ও হস্তশিল্প মেলা

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড

১৭ ঘণ্টা পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দেশে স্বৈরাচারী শাসক তৈরি হতেই থাকবে ; অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

নতুন পারমাণবিক সাফল্য উন্মোচন করলো ইরান

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে শরণখোলায় বিএনপির প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত

তুর্কি অ্যারোস্পেসের সিইও’র সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক

বিচারক নিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করবে আইন মন্ত্রণালয়: আইন উপদেষ্টা

ডিসেম্বরে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার

দাউদকান্দিতে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার

রাওয়ার আয়োজনে সেমিনারে বক্তারা ভারত বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়

১২ এপ্রিল পথনবজাতক দিবস ঘোষণার দাবি

ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৭ বছর যাদের দালালি করেছে তাদের কাছেই এখন আশ্রয় নিয়েছে মাওলানা অধ্যাপক লিয়াকত আলী

বরগুনায় চাহিদাভিত্তিক নতুন জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রকল্প উদ্বোধন

চবির ৫ম সমাবর্তনের লোগো উন্মোচন

বেনাপোলে ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার পথে যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে জখম

রায়পুরে বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ