ঢাকা   মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২১ কার্তিক ১৪৩১

আকবর দ্য গ্রেট-৭

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

২৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

আকবরই প্রথম উপমহাদেশকে উপহার দিলেন সর্বভারতীয় রাষ্ট্রীয় সনব্যবস্থা। কিন্তু এই সন ধরে একই সময়ে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজস্ব আদায় করাটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ, রাজস্ব আদায়ের জন্য, সম্রাটকে কৃষকের ফসল ঘরে উঠার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। বিশাল উপমহাদেশে কৃষকরা সব জায়গায় একই সময়ে ফসল কাটতো না। সেই কারণে ফসল কাটার সময়কে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে পৃথক পৃথক সনের প্রচলন করা হয়েছিল। এই বিচারে ফসলি সন হয়ে দাঁড়িয়েছিল, ফসল-নির্ভর আঞ্চলিক বর্ষ গণনা পদ্ধতি। তখনকার বাংলায় ফসলি সনের শুরু হতো অগ্রহায়ণ মাস থেকে। পক্ষান্তরে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে ফসলি সন শুরু হতো আষাঢ় মাস থেকে। তবে এই সকল ফসলি সন ছিল সৌর-বছর ভিত্তিক ইলাহি সনের নানা সংস্করণ। সবগুলোকেই দেখা হতো ইলাহী সন হিসেবে।
ধর্মের প্রশ্নে উন্মুক্ত বিতর্ক আকবরের পছন্দ ছিলো। সব ধর্মের প্রতিনিধিরা কথা বলতেন তার মজমায়। মুসলিম ধর্মতত্ত্ববিদদের সঙ্গে হিন্দু, জৈন, পার্সি, শিখ, খ্রিস্টান প্রভৃতি ধর্মের প-িতগণ ধর্মালোচনায় অংশগ্রহণ করতেন। তাঁদের মধ্যে হিন্দুধর্মের পুরুষোত্তম, দেবী, জৈনধর্মের হরি বিজয় সুরী, বিজয় সেন সুরা, ভানু চন্দ্র উপাধ্যায়, গোয়ার জেসুইট ধর্মযাজক ফাদার রিডোলফো ও ফাদার মানসারেট প্রমুখ ধর্মতত্ত্ববিদের নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৫৭৮ সালে প্রথমবারের মতো আকবরের ইবাদতখানায় হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জরাথ্রুস্টসহ অন্যান্য ধর্মের প-িতদের আমন্ত্রণ জানানো হতে থাকে। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই প্রক্রিয়ার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি আকবরের ধর্মসভাকে বললেন, First World Religious Parliament. আজকাল সর্বধর্ম সম্মিলনির যে ধারা দেশে দেশে চলমান, আকবরকে তার দিশারী মনে করা হয়। তিনি সব ধর্মের ব্যাখ্যা ও ভাষ্যকে পরম মনে করতেন। ধর্মপুরুষদের আলোচনা ও মতামত অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে এবং ধৈর্য্যরে সঙ্গে শুনতেন। এসব আলোচনা শুনতে শুনতেই সবগুলো ধর্মের মূল কথা নিয়ে একটি সমন্বিত ধর্ম প্রচলনের বিষয়টি আকবরের মাথায় চলে আসে। শেষপর্যন্ত ১৫৮২ সালে আকবর জন্ম দেন নতুন একটি ধর্মের।


বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

মেসিকে নিয়ে বড় পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

মেসিকে নিয়ে বড় পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে তৈরি আছি: হাছান মাহমুদ

‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে তৈরি আছি: হাছান মাহমুদ

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে দলের কোনো নেতা-কর্মীকে ছাড় দেওয়া হবে না : যুবদল সভাপতি

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে দলের কোনো নেতা-কর্মীকে ছাড় দেওয়া হবে না : যুবদল সভাপতি

ঢাকা মেডিকেলের সিসিইউতে ভর্তি শাজাহান খান

ঢাকা মেডিকেলের সিসিইউতে ভর্তি শাজাহান খান

আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত

আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা মাশায়েখ মহাসম্মেলন কাল

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা মাশায়েখ মহাসম্মেলন কাল

ব্র্যাক ব্যাংকের ৩০,০০০ কোটি টাকার রিটেইল ডিপোজিট মাইলফলক

ব্র্যাক ব্যাংকের ৩০,০০০ কোটি টাকার রিটেইল ডিপোজিট মাইলফলক

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গবেষণায় জোর দিতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পরামর্শ

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গবেষণায় জোর দিতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পরামর্শ

ব্রাহ্মণপাড়ায় জেলেকে পিটিয়ে হত্যা

ব্রাহ্মণপাড়ায় জেলেকে পিটিয়ে হত্যা

কুয়াকাটায় দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

কুয়াকাটায় দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

কলারোয়ায় হাজার হাজার ছাগলের মৃত্যু

কলারোয়ায় হাজার হাজার ছাগলের মৃত্যু

হত্যা মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ফাঁসানোর প্রতিবাদ

হত্যা মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ফাঁসানোর প্রতিবাদ

শিয়ালের কামড়ে নারী ও শিশুসহ আহত ৯

শিয়ালের কামড়ে নারী ও শিশুসহ আহত ৯

লোহাগাড়ায় ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

লোহাগাড়ায় ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বন্দরগুলোর অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

বন্দরগুলোর অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

পঞ্চগড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

পঞ্চগড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

ধামরাইয়ে পুলিশ ক্যাম্পে ঝুলছে তালা

ধামরাইয়ে পুলিশ ক্যাম্পে ঝুলছে তালা

ভোগান্তির আরেক নাম আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ভোগান্তির আরেক নাম আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

যশোরে বিএনপি নেতার আদালতে আত্মসমর্পণ

যশোরে বিএনপি নেতার আদালতে আত্মসমর্পণ

যশোর শহরজুড়ে রাস্তার পাশে ময়লার ভাগাড়

যশোর শহরজুড়ে রাস্তার পাশে ময়লার ভাগাড়