ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

আকবর দ্য গ্রেট-৭

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

২৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

আকবরই প্রথম উপমহাদেশকে উপহার দিলেন সর্বভারতীয় রাষ্ট্রীয় সনব্যবস্থা। কিন্তু এই সন ধরে একই সময়ে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজস্ব আদায় করাটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ, রাজস্ব আদায়ের জন্য, সম্রাটকে কৃষকের ফসল ঘরে উঠার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। বিশাল উপমহাদেশে কৃষকরা সব জায়গায় একই সময়ে ফসল কাটতো না। সেই কারণে ফসল কাটার সময়কে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে পৃথক পৃথক সনের প্রচলন করা হয়েছিল। এই বিচারে ফসলি সন হয়ে দাঁড়িয়েছিল, ফসল-নির্ভর আঞ্চলিক বর্ষ গণনা পদ্ধতি। তখনকার বাংলায় ফসলি সনের শুরু হতো অগ্রহায়ণ মাস থেকে। পক্ষান্তরে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে ফসলি সন শুরু হতো আষাঢ় মাস থেকে। তবে এই সকল ফসলি সন ছিল সৌর-বছর ভিত্তিক ইলাহি সনের নানা সংস্করণ। সবগুলোকেই দেখা হতো ইলাহী সন হিসেবে।
ধর্মের প্রশ্নে উন্মুক্ত বিতর্ক আকবরের পছন্দ ছিলো। সব ধর্মের প্রতিনিধিরা কথা বলতেন তার মজমায়। মুসলিম ধর্মতত্ত্ববিদদের সঙ্গে হিন্দু, জৈন, পার্সি, শিখ, খ্রিস্টান প্রভৃতি ধর্মের প-িতগণ ধর্মালোচনায় অংশগ্রহণ করতেন। তাঁদের মধ্যে হিন্দুধর্মের পুরুষোত্তম, দেবী, জৈনধর্মের হরি বিজয় সুরী, বিজয় সেন সুরা, ভানু চন্দ্র উপাধ্যায়, গোয়ার জেসুইট ধর্মযাজক ফাদার রিডোলফো ও ফাদার মানসারেট প্রমুখ ধর্মতত্ত্ববিদের নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৫৭৮ সালে প্রথমবারের মতো আকবরের ইবাদতখানায় হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জরাথ্রুস্টসহ অন্যান্য ধর্মের প-িতদের আমন্ত্রণ জানানো হতে থাকে। ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ এই প্রক্রিয়ার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি আকবরের ধর্মসভাকে বললেন, First World Religious Parliament. আজকাল সর্বধর্ম সম্মিলনির যে ধারা দেশে দেশে চলমান, আকবরকে তার দিশারী মনে করা হয়। তিনি সব ধর্মের ব্যাখ্যা ও ভাষ্যকে পরম মনে করতেন। ধর্মপুরুষদের আলোচনা ও মতামত অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে এবং ধৈর্য্যরে সঙ্গে শুনতেন। এসব আলোচনা শুনতে শুনতেই সবগুলো ধর্মের মূল কথা নিয়ে একটি সমন্বিত ধর্ম প্রচলনের বিষয়টি আকবরের মাথায় চলে আসে। শেষপর্যন্ত ১৫৮২ সালে আকবর জন্ম দেন নতুন একটি ধর্মের।


বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

লেবাননে ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ, নিহত ২০

লেবাননে ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ, নিহত ২০

এস আলমের গৃহকর্মীর নামে ১৫ কোটি টাকার সম্পদ!

এস আলমের গৃহকর্মীর নামে ১৫ কোটি টাকার সম্পদ!

পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগের ৩ নেতাকর্মী

পরীক্ষা দিতে এসে আটক ছাত্রলীগের ৩ নেতাকর্মী

পিটিয়ে হত্যার আগে তরুণকে ভাত খেতে দিয়েছিল ঢাবি শিক্ষার্থীরা

পিটিয়ে হত্যার আগে তরুণকে ভাত খেতে দিয়েছিল ঢাবি শিক্ষার্থীরা

জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচনে শলৎসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যারৎস

জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচনে শলৎসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যারৎস

রাজ্জাকের বিশ্ব রেকর্ড ভাঙলেন নেপালের ঝা

রাজ্জাকের বিশ্ব রেকর্ড ভাঙলেন নেপালের ঝা

মেসির ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে যা বললেন দে পল

মেসির ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে যা বললেন দে পল

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ গ্রেপ্তার

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ গ্রেপ্তার

জাবিতে গণপিটুনির শিকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মারা গেছেন

জাবিতে গণপিটুনির শিকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মারা গেছেন

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক পেলেন নৌ-বাহিনীর ২০০ সদস্য

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক পেলেন নৌ-বাহিনীর ২০০ সদস্য

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা