আকবর দ্য গ্রেট-৯
৩১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম
ইন্দ্র, বিষ্ণু, মহাদেবের প্রতি আকবর বেশ শ্রদ্ধা পোষণ করতেন। হিন্দু ধর্ম বিষয়ে জানার সময় তাদের বিভিন্ন উৎসবের সাথেও আকবরের পরিচিতি ঘটে। রাখীবন্ধন, বসন্তোৎসব, দীপাবলী, দশহারার মতো উৎসবগুলোতে আকবর অংশ নিতেন। হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে হিন্দু পÐিতদের আমন্ত্রণ জানাতেন। এমনকি আকবরের আগ্রহে যোগ, বলিষ্ঠ, রামায়ণ, মহাভারত, অথর্ব বেদ প্রভৃতি হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো অনুবাদের ব্যবস্থা করা হয়। তখনকার হিন্দু পÐিতদের অনেকেই আকবরকে হিন্দু ধর্মের পরিত্রাতা বলে আখ্যায়িত করতেন। এমনকি পরম পূজনীয় হিসেবে বিশ্বাস করতেন অনেকেই। তারা ঘোষণা করেন, আকবর হচ্ছেন রাম-কৃষ্ণের অবতার। হিন্দু ধর্ম ও সমাজের সংস্কারে আকবরের ভ‚মিকা ও প্রভাব ছিলো সুদূরপ্রসারী।
বর্ণবাদ হিন্দুসমাজকে গিলে ফেলছিলো বহু শতাব্দী ধরে। তিনি এর বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেন। উচ্চবর্ণ ও নি¤œবর্ণের মধ্যে সীমাহীন বৈষম্যকে তিনি ঘৃণা করতেন। অগ্রসর হিন্দুদের এ বিষয়ে সচেতন করেন। কিন্তু হিন্দু ধর্মের স্বাধীনতায় তিনি বিশ্বাস করতেন। আইন করে তা বন্ধ করার উদ্যোগ নেননি তিনি। তিনি সতীদাহ প্রথাকে অত্যন্ত ঘৃণা করতেন। ইচ্ছার বিরুদ্ধে সদ্যবিধবা স্ত্রীকে দাহ করা থেকে বিরত রাখতে আকবর শাস্তির ব্যবস্থা করেছিলেন। বেঁচে যাওয়া বিধবা হিন্দু মহিলাদের পুনরায় বিবাহের জন্য আকবর সবসময় উৎসাহ দিতেন।
মুঘল শাসকদের মধ্যে একমাত্র আকবরের প্রশ্নে হিন্দুত্ববাদের অবস্থান কিছুটা উদার। যদিও তারা সাধারণভাবে তাকেও প্রতিপক্ষ মনে করে, তবুও বিভিন্ন উপলক্ষে তাকে স্মরণ করার নজিরও কম নয়। ‘ইন্ডিয়া: মাদার অব ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক গ্রন্থে ভারতের প্রাচীন সভ্যতা, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, ধর্ম, সাধু-সন্ত, বিভিন্ন মহাপুরুষ ও শাসকদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩ এ মোদি সরকারের প্রকাশনা ‘ইন্ডিয়া: মাদার অব ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক গ্রন্থে ভারতের প্রাচীন সভ্যতা, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, ধর্ম, সাধু-সন্ত, বিভিন্ন মহাপুরুষ ও শাসকদের বিবরণে সম্মানের সাথে আকবরকে উল্লেখ করা হয়। এতে মুঘল সম্রাট আকবরের পরিচয়ে লেখা হয়েছে, ‘সুশাসন হল সেটাই, যেখানে ধর্ম নির্বিশেষে সবার কল্যাণ হবে। তৃতীয় মুঘল পাদিশাহ আকবর সেই গণতন্ত্রেরই চর্চা করতেন।’
তার সম্বন্ধে স্মরণিকা গ্রন্থে আরও লেখা হয়েছে, ‘তিনি সুলহ-এ-কুল, অর্থাৎ সার্বজনিক শান্তির নীতি নিয়ে চলতেন। এই নীতি ছিল ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে।’
লেখা হয়েছে, আকবর এমন এক সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন, যেখানে সৌহার্দ্য বিরাজ করবে, সেজন্যই তিনি নতুন ধর্ম ‘দিন-ই-ইলাহি’র প্রচলন করেছিলেন। বস্তুত সম্রাট আকবরের দ্বীনে ইলাহি ও ধর্মনীতি হিন্দু সমাজ, সংস্কৃতি ও দৃষ্টিভঙ্গির অগ্রগতি নিশ্চিত করেছিলো। এর প্রতিফলন ঘটেছে সেই প্রকাশনার মন্তব্যেও। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আকবরের গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা ছিল ব্যতিক্রমী এবং সময়ে থেকে অনেক এগিয়ে থাকা।’ রামায়ণে উল্লিখিত রাম, মগধের অজাতশত্রæ প্রমুখের ধারাবাহিকতায় আকবরকে সম্মান জানানো বস্তুত হিন্দু সংস্কৃতি ও সভ্যতায় তার বিপুল অবদানেরই জানান দিয়ে যায়।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা