ঢাকা   রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | ২৫ কার্তিক ১৪৩২
ভারতের সভ্যতায় মুসলমানদের অবদান

মুজাদ্দিদে আলফেসানী (রহ.) : দ্বীন ও মিল্লাতের নবায়ন-৪

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম

 

মুজাদ্দিদে আলফে সানীর সংগ্রামের আরেকটি দিক হলো আন্দোলনের ধারাবাহিকতা। তিনি মুঘল পরিবারের বিভিন্ন স্তরে কাজ করেন পরিকল্পিতভাবে। দীর্ঘ ও ধারাবাহিক সাধনার মাধ্যমে তিনি এই পরিবারে প্রবেশ করেন। তিনি জানতেন, মুঘলদের পতনের সম্ভাবনা নেই, শাসনটা তারাই করবে। শাসক হবে তারা, মন্ত্রী হবে তারা, সাম্রাজ্যের পদবিসমূহে নিয়োগ দেবে তারা। তারা ক্ষমতার কেন্দ্রে, সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তাদের সাথে যুক্ত। জনগণ আছে প্রান্তে। প্রান্ত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সফল হবে না। ফলে শাসকশ্রেণীর সাথে দ্বন্দ্বের পরিবেশ সৃষ্টি না করে তাদের প্রভাবিত করতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করা, লেগে থাকা, সব ধরনের ত্যাগ স্বীকার ও উত্তম আদর্শের নজির স্থাপনের মাধ্যমে তাদের সঠিক পথে আনতে হবে, সেটাই উত্তম। পারিবারিক সংস্কৃতি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কৃতির মধ্যে আনতে হবে বদল। যেন কয়েক প্রজন্ম এই পরিবর্তনের ধারায় বিকশিত হতে পারে। আমরা দেখি, তাই ঘটেছিলো। রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন আওরঙ্গজেব আলমগীরের মতো সম্রাট। ঐতিহাসিকরা তার ব্যক্তিত্বকে হযরত সেরহিন্দির আন্দোলনের অন্যতম ফসল বলে মনে করেন।

শায়খ সেরহিন্দির সামনে পাঠানরা ছিলো একটা বিকল্প। তাদের অনেকেই রাষ্ট্র কর্তৃক অত্যাচারিত হয়ে ক্ষমতা ফিরে পাবার স্বপ্ন পুষতেন। কিন্তু শায়খ দেখলেন এদের হাতে নেবার চেষ্টা ভুল হবে। কারণ, ক্ষমতার পরিবর্তনটাই মুখ্য নয়। মুখ্য হলো সংস্কার ও সংশোধন। ফলে কোনো গোত্র-জাতি তার কাছে আলাদা ছিলো না। তার বিচারে মুঘলদের সংস্কার যেমন চাই, তেমনি চাই পাঠানদের। মুসলিম হিন্দুস্তানে অতীতের ধারাবাহিকতায় মুঘল ও পাঠানদের মধ্যে সংঘাত লেগেই আছে। মাহমুদ গজনভী ও শের শাহ সুরির মতো শাসকরা পাঠান ছিলেন। মুঘলরা ছিল আধা-উদারপন্থী এবং শিয়া-প্রভাবিত, তবে পাঠানরা ছিল সম্পূর্ণরূপে ধার্মিক এবং সম্পূর্ণরূপে সুন্নি। মুঘলরা বলতে গেলে ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতির চর্চা করতো। তারা ধর্মে বিশ্বাস করত এবং তা পালন করত, কিন্তু একই সঙ্গে সহনশীলতা ও জাগতিকতা ইত্যাদির চর্চা করত স্বাধীনভাবে। সেখানে আওরঙ্গজেব আলমগীরের মতো প্রবল ধর্মাবেগসম্পন্ন সম্রাটের জন্ম এক বিস্ময়।


বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ইরান-ইসরাইল সর্বাত্মক যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দিতে পারে
নাব্যতা হারিয়ে দখলদারদের কবলে পড়ে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একের পর এক নদী
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-১২
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-১১
সম্রাট জাহাঙ্গীর : রূপান্তরের বাদশাহী-১০
আরও

আরও পড়ুন

শেষ মৃতদেহ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী

শেষ মৃতদেহ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী

লেবাননে ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানাল ইইউ

লেবাননে ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানাল ইইউ

গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও থামেনি ইসরায়েলি হামলা, নিহত ছাড়াল ৬৯ হাজার

গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও থামেনি ইসরায়েলি হামলা, নিহত ছাড়াল ৬৯ হাজার

সৈয়দপুরে ট্রেনে কাটা মরদেহ উদ্ধার

সৈয়দপুরে ট্রেনে কাটা মরদেহ উদ্ধার

৮ ডিসিকে যুগ্মসচিব হিসেবে পদায়ন

৮ ডিসিকে যুগ্মসচিব হিসেবে পদায়ন

দেশের ১৫ জেলায় নতুন ডিসি, মধ্যরাতে প্রজ্ঞাপন জারি

দেশের ১৫ জেলায় নতুন ডিসি, মধ্যরাতে প্রজ্ঞাপন জারি

অটো চার্জার ছিনতাইয়ের চেষ্টায় ড্রাইভারকে ছুরিকাঘাত

অটো চার্জার ছিনতাইয়ের চেষ্টায় ড্রাইভারকে ছুরিকাঘাত

আওয়ামী লীগ নেতা এখন ইসলামী আন্দোলনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী

আওয়ামী লীগ নেতা এখন ইসলামী আন্দোলনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ভারতের গোলামী আর দাসত্ব করার জন্য নয়: শাহজাহান

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ভারতের গোলামী আর দাসত্ব করার জন্য নয়: শাহজাহান

৮ ম্যাচ পর গোল হজম করে আর্সেনালের হোঁচট

৮ ম্যাচ পর গোল হজম করে আর্সেনালের হোঁচট

কিছু দল নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায়: মেজর হাফিজ

কিছু দল নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায়: মেজর হাফিজ

আইন ভাঙায় জরিমানা দিতে বাধ্য হলেন কাতারের আমির

আইন ভাঙায় জরিমানা দিতে বাধ্য হলেন কাতারের আমির

জি-২০ সম্মেলন বয়কট করছে যুক্তরাষ্ট্র

জি-২০ সম্মেলন বয়কট করছে যুক্তরাষ্ট্র

গাঁজা বিক্রি নিষেধ করায় খুন

গাঁজা বিক্রি নিষেধ করায় খুন

ফরাসী নাগরিকদের জরুরী ভিত্তিতে মালি ত্যাগের পরামর্শ

ফরাসী নাগরিকদের জরুরী ভিত্তিতে মালি ত্যাগের পরামর্শ

অনুষ্ঠিত হলো উদ্ভাবন, নীতি ও সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে ৫ম বাংলাদেশ ফিনটেক সামিট

অনুষ্ঠিত হলো উদ্ভাবন, নীতি ও সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে ৫ম বাংলাদেশ ফিনটেক সামিট

স্বাস্থ্যের মিঠু চক্র এখনো সক্রিয়, মানি লন্ডারিং মামলা থেকে রেহাই পেতে সিআইডির কর্মকর্তাদের ম্যানেজের চেষ্টা

স্বাস্থ্যের মিঠু চক্র এখনো সক্রিয়, মানি লন্ডারিং মামলা থেকে রেহাই পেতে সিআইডির কর্মকর্তাদের ম্যানেজের চেষ্টা

ধামরাইয়ে আওয়ামী লীগের ৩ নেতা গ্রেপ্তার

ধামরাইয়ে আওয়ামী লীগের ৩ নেতা গ্রেপ্তার

ঈশ্বরদীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল বর্ণাঢ্য র‍্যালি

ঈশ্বরদীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল বর্ণাঢ্য র‍্যালি

কালীগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র‌্যালি

কালীগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র‌্যালি