মুজাদ্দিদে আলফেসানী (রহ.) দ্বীন ও মিল্লাতের নবায়ন-৬
১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
হৃদয়াবেগ ও আন্তরিকতায় পূর্ণ ছিলো এসব চিঠি। দরদ, ঐকান্তিকতা ও খোদার প্রতি নিবেদনে নিবিড় ছিলো প্রতিটি বাক্য। চিন্তা ও প্রজ্ঞার উজ্জ্বলতায় প্রদীপ্ত ছিলো এর আবেদন। ভাষার অনন্যতা ছিলো বিস্ময়কর। বাক্যশৈলী ফার্সি সাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম নমুনা হয়ে আছে আজো। ধর্মীয় সংস্কারের লক্ষ্যে রচিত পত্রসাহিত্যের অতুল শিল্পমান ও প্রভাব বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না। পত্র এমন যুগান্তকারী প্রভাব তৈরী করতে পারেনি কোনো সমাজ-সংস্কৃতিতে।
আলফেসানীর এমন কৃতিত্ব বৈশিষ্ট্যের স্বাতন্ত্র্যে অনবদ্য, আবেদনের বিপুলতায় বেনজির। এই আবেদন বহু শতাব্দীর পথ পেরিয়ে আজকের পৃথিবীতেও নিজেকে প্রাসঙ্গিক রেখেছে। আজকের ভক্ত পাঠকের হৃদয়-মনেও তার পবিত্র প্রভাব ও অনুভূতি বিচিত্র মাত্রায় প্রতিফলিত হয়। সেই সময় পত্রের প্রাপকের ভেতর পত্রগুলোর বাণী ও ভাষা কত প্রখর ও গভীর প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিলো, তা উপলব্ধি করতে হলে আন্দোলনের ফলাফলের দিকে চোখ বুলাতে হবে। যে সম্রাট জাহাঙ্গীর ও পরিষদবর্গ মুজাদ্দিদে আলফেসানীকে কারাগারে প্রেরণ করেছিলেন, তারা হয়ে গেলেন তার ভক্ত-মুরীদ। নিজেকে তারা অবশেষে শায়খের সেবক হিসেবে ভাবতে লাগলেন। মুজাদ্দিদে আলফেসানীর সেই সব পত্র ‘মাকতুবাত শরিফ’ নামে বিশ্ববিখ্যাত, যা অনূদিত হয়েছে বিশ্বের বহু ভাষায়। পঠিত হচ্ছে দরবেশদের হাজারো খানকায়, সাধারণ পাঠকদের ঘরে ঘরে।
ইসলামের আকিদা-দর্শন, তাসাউফ, ফিকহ বা ইসলামী আইন, আখলাকিয়্যাত বা নৈতিকতার উপর বিশেষ জোর দেন শায়েখ সেরহিন্দি। এসব বিষয়ে রয়েছে তার বহু সংখ্যক রচনা। মাকতুবাত ছাড়াও খুতবাত-ই-মোজাদ্দেদিয়া (মুজাদ্দিদদের বক্তৃতা) সমাজে গভীর-নিবিড় প্রভাব তৈরি করে। তাঁর যেসব বক্তৃতা অনুলিখিত হয়, সেগুলোর সংকলন মুরিদদের কাছে থাকতো। অচিরেই তা সাধারণ পাঠসামগ্রীতে পরিণত হয়। তাঁর শিক্ষা এবং ধারণাসমূহ অসংখ্য মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাঁর প্রভাব ভারতের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল, যা ইসলামী চিন্তাধারা এবং আধ্যাত্মিকতার একটি স্থায়ী উত্তরাধিকারকে বিকশিত করে। ইসলামের সুন্নাহভিত্তিক অনুশীলন এবং সুফিবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে তিনি মুসলিম জীবনে নতুন ঋতুকে আমন্ত্রণ করেন। এর ফল-ফসল এতো ব্যাপক ছিলো এবং এর স্বভাব ও প্রভাব এতো বহুমুখী ছিলো, যা কোথাও আটকে থাকেনি কালের সীমানায়। প্রকৃতপক্ষে আলফেসানীর সাধনা উপমহাদেশে মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের বোঝাপড়াকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং এখনো মুসলিম মনের পুনর্গঠন করে চলছে। আহমদ আল-ফারুকী আল-সিরহিন্দি, মুজাদ্দিদ আলফ-ই সানী, ২৮ ডিসেম্বর ১৬২৪ খ্রিস্টাব্দে (১০৩৪ হিজরি) সিরহিন্দে ইন্তেকাল করেন। (সমাপ্ত)
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় মুরাদনগরে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ
গুজব উড়িয়ে দিয়ে পুরোদমে অফিস করলেন প্রধান উপদেষ্টা
রাজশাহী থেকে চালু হচ্ছে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন
ফরিদপুরের পদ্মায় চলছে ইলিশ মাছ ধরার মহা উৎসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরব নিথর।
নোবিপ্রবি বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্যের মতবিনিময়
তথ্য ও সস্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নবনিযুক্ত সচিবের মতবিনিময়
সরকারি ইন্ধনে তাণ্ডব হিন্দুদের, বাহরাইচে আতঙ্কে মুসলমানরা
রাজশাহীতে রেড ক্রিসেন্টের পিপিপি প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা
কেরানীগঞ্জে অবৈধ শিশা কারখানায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান, জরিমানা ২ লক্ষ টাকা
বন, বনভূমি, ডলফিন সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
ইরানের সঙ্গে যৌথ নৌ মহড়া চালাতে চায় সৌদি
কুষ্টিয়ায় হাসপাতালের ২০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি চার শতাধিক শিশু
সুন্দরবনে ৯০ অফিসের ৮শতাধিক বনকর্মীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ জেলায় প্রস্তুত ৩৫৯ আশ্রয় কেন্দ্র
পুলিশের ৬ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন
পাসপোর্ট জালিয়াতির মাধ্যমে যেভাবে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান হারুন
তবে কি ঐশী-শুভ'র প্রেমের গুঞ্জন সত্যি? সংসার জীবনের ইতি টানতে চলেছেন আরিফিন শুভ?
লক্ষ্মীপুরে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে থেমে থেমে বৃষ্টি,লঞ্চঘাটে আটকা পড়েছে ভোলাগামী শতাধিক যাত্রী
সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন গ্রেপ্তার
সাড়ে ৩ বছর পর ফিরে ওয়াশিংটনের রেকর্ড গড়া বোলিং
৮ম আন্তর্জাতিক সম্মেলন করতে যাচ্ছে রাবির পরিসংখ্যান বিভাগ