ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

ফিলিস্তিন : বিশ্ব ইতিহাসের এক অমানবিক অধ্যায়

Daily Inqilab গাজীউল হাসান খান

০৪ জুন ২০২৪, ১২:১৮ এএম | আপডেট: ০৪ জুন ২০২৪, ১২:১৮ এএম

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর (১৯১৪-১৯১৮) মিত্রশক্তির কাছে জার্মানির সাথে সাথে উসমানীয় শাসনের পরাজয় ঘটলে আরব বিশ্বে অভ্যুদয় ঘটে কিছু নতুন রাষ্ট্রের। বিজয়ী শক্তি ব্রিটেন (যুক্তরাজ্য) ও ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণাধীন উসমানীয় সাম্রাজ্যের ভূখণ্ডের মধ্যে তখন ইরাক, সিরিয়া, জর্ডান ও লেবাননের জন্ম হয়েছিল। তাছাড়া, সৌদি আরব ও মিশরের সাথে উসমানীয় শাসকদের সংঘাতের ইতিহাস আরও মর্মান্তিক। তবে সে ক্ষেত্রেও তৎকালীন ইউরোপীয় পরাশক্তি ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সম্পৃক্ততা ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। আশ্চর্য্যরে বিষয় হচ্ছে, আরব ভূখণ্ডের ফিলিস্তিন অঞ্চলে তখন ৯০ শতাংশ মুসলিমের বসবাস হওয়া সত্ত্বেও ব্রিটিশ সরকার সেখানে ইহুদিদের জন্য একটি আবাসভূমি বা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। ব্রিটিশ সরকারের তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী আর্থার জেমস ব্যালফোর ২ নভেম্বর ১৯১৭ সালের এক চিঠির মাধ্যমে সে সিদ্ধান্তের কথা তৎকালীন ব্রিটিশ ইহুদিদের নেতা লায়নেল ওয়াল্টার রথচাইল্ডকে জানান। তারপর থেকে তৎকালীন ফিলিস্তিনে বসবাসকারী ইহুদিদের সংখ্যা ৯ শতাংশ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ শতাংশে। সে পরিস্থিতির সূত্র ধরে ইহুদিবাদী নেতা ও চিন্তাবিদ থিয়োডর হারজেসের পরামর্শে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে তেল আবিবে আরেক বিশিষ্ট ইহুদি নেতা ডেভিড বেনগুরিয়নের নেতৃত্বে ইহুদিদের জন্য ইসরায়েল নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। পরে জাতিসংঘ ইসরাইয়েল নামক ইহুদিদের সে রাষ্ট্রকে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের ৫৬ শতাংশ জায়গা বরাদ্দ দেয়। অথচ, ব্যালফোর ঘোষণা (১৯১৭) থেকে ফিলিস্তিনের স্থায়ী বাসিন্দা আরবদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি জাতিসংঘ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের পরাশক্তিগুলো আজও নিশ্চিত করতে পারেনি। এরম মধ্যে সংগ্রামী ফিলিস্তিনিদের ইতিহাসের পাতা থেকে ঝরে গেছে ১০৭টি বছর।

ইহুদি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার পর অর্থাৎ ১৯৪৮ সাল থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ইসরাইয়েলের ইহুদিবাদীরা বন্দর ও ব্যবসা বাণিজ্য কেন্দ্রসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নেয় এবং ফিলিস্তিনের কৌশলগত স্থানগুলোতে ইহুদিদের জন্য অবৈধভাবে বসতি নির্মাণ শুরু করে। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে বিগত কয়েক দশক যাবত ইহুদিবাদীদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘ সে অবৈধ কার্যক্রম নিয়ে ইসরাইয়েলকে বারবার হুঁশিয়ার করলেও তারা তাতে মোটেও কর্ণপাত করেনি। ইসরাইয়েল রাষ্ট্রের সকল প্রধানমন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতা একরকম না হলেও সাবেক নেতা এরিয়েল শ্যারণ ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত আপসহীন। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইয়েলের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন লিকুদ পার্টি প্রধান বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইহুদিবাদীদের মধ্যে সবচেয়ে কট্টরপন্থীদের সমর্থনে তিনি এখনো ক্ষমতাসীন রয়েছেন। এদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর থেকে ভূমধ্যসাগরের অববাহিকার মধ্যে একটি বৃহত্তর ইহুদিরাষ্ট্র গড়ে তোলা। এ কট্টরপন্থীরা দ্বিরাষ্ট্রের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানের বিশ্বাস করে না। তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা নিয়ে কোনো অর্থবহ আলোচনায়ও বসতে রাজি নয়। তারা এ ব্যাপারে জাতিসংঘের কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা আন্তর্জাতিক আদালতের ঘোষিত যুদ্ধ বিরতির রায়ও মানতে রাজি নয়। ইসরাইলে রাষ্ট্রের সব ইহুদি একরকম নয়। তাদের অনেকে ফিলিস্তিনি ভূমির পরিবর্তে শান্তি চাইলেও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার কট্টরপন্থী সমর্থকরা সেগুলো মানতে রাজি নয়। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ইসলামী প্রতিরোধযোদ্ধা হামাসসহ অন্যান্য মুক্তিকামী শসস্ত্র গ্রুপের বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তার বক্তব্য হচ্ছে, গাজা উপত্যকা থেকে হামাস ও অন্যান্যদের নিশ্চিহ্ন করার আগ পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং ইসরাইল রাষ্ট্রে নেতানিয়াহুর পর্যাপ্ত সমর্থন না থাকলেও তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না, গাজা ভূখণ্ডে আপসহীনভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে এক চরম ভণ্ডামী ও দ্বিচারিতার আশ্রয় নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি একদিকে বলছেন, অবিলম্বে গাজার রাফায় যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিতে, অপরদিকে ইসরাইলের দখলদার এবং যুদ্ধবাজদের প্রচুর অর্থসহ গোপনে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া দ্বিরাষ্ট্রের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধানের কথা বলছেন এক মুখে এবং আরেক মুখে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পূর্ণ সদস্য পদ লাভে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিচ্ছেন।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী আচরণ এবং সার্বিক সাহায্য সহযোগিতার কারণে ইসরাইলের ইহুদিবাদী এবং কট্টরপন্থীরা এখনো টিকে রয়েছে। কারণ, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা মনে করে, মধ্যপ্রাচ্যে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইয়েল হচ্ছে তাদের অঘোষিত সাম্রাজ্যের অবচ্ছিদ্য অংশ। ১৯৬৭ সালে ইহুদিরাষ্ট্র ইসরাইয়েল ছয় দিনের এক অসম যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের সমস্ত ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছিল এবং তখন থেকেই তারা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে সমগ্র ফিলিস্তিনসহ সে অঞ্চলে একটি বৃহত্তর ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। ইহুদদিবাদীরা মনে করে জর্ডান, মিশর ও সিরিয়ার কিছু কিছু অঞ্চল তাদের ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের অংশ, যা তাদের কাছে তাদের প্রতি মহান স্রষ্টার এক প্রতিশ্রুত ভূমি। সে ভূমি পুনরুদ্ধারে তারা যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা শক্তির কারো কথাই শুনবে না। অথচ, প্রকৃত বাস্তব সত্য হচ্ছে, ১৯১৭ সালে ব্যালফোর ঘোষণার সময় সমগ্র ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইহুদিরা ছিল মোট জনসংখ্যার মাত্র ৯ শতাংশ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে-পরে ফিলিসিস্তানে বসবাসকারী ইহুদিরা চাকরি-বাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্যেও লোভে তাদের আদি ভূখণ্ড ছেড়ে ইউরোপ ও আমেরিকায় পাড়ি জমায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানিতে হিটলারের ইহুদি নিধনকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে তাদের চোখ খুলে যায়। তখন সাধারণ ইহুদি জনগোষ্ঠি ফিলিস্তিনের সে আদি ভূখণ্ডে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তবে পশ্চিম ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অবস্থাপন্ন ইহুদিরা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের এবং পশ্চিম ইউরোপের বড় বড় ধনকুবের কিংবা শিল্পপতিরা হচ্ছে ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ। তারা বর্তমান ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের সরকার ও তার অর্থনীতি কিংবা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিপুল অংকের অর্থের জোগানদেয়। তার সাথে সাথে মার্কিন প্রশাসনে ইহুদি জনগোষ্ঠীর প্রভাব অপরিসীম। শিক্ষা-দীক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও তারা অত্যন্ত অগ্রসর। সে কারণে রাজনৈতিক দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ইহুদি স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সে কারণেই ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের বাণিজ্যিক ও সামরিক প্রতিরক্ষার দিক থেকে স্বার্থের অন্যতম প্রধান প্রতিভূ মনে করে। যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি সম্প্রদায়ে স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করার ক্ষমতা কোনো নির্বাচিত প্রেসিডেন্টেরই নেই। মূলত সে কারণেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রশ্নে এতো স্ববিরোধিতা ও দ্বিচারিতা দ্বিচারিতা। তিনি বার বার তার ঘোষিত বক্তব্য থেকে পিছু হটতে বাধ্য হছেন।

নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হ্যাগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালত দক্ষিণ আফ্রিকার এক আবেদনে অবিলম্বে গাজার রাফায় ইহুদিবাদী নেতানিয়াহুর ঘোষিত সামরিক অভিযান বন্ধ করার আবেদন জানায়। সে অনুযায়ী জাতিসংঘ সমর্থিত আন্তর্জাতিক আদালত ইসরাইলের প্রশাসনকে অভিলম্বে গাজা ও বিশেষ করে রাফায় সামরিক অভিযান পরিচালনা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। সে নির্দেশ এটিও বলা হয়েছে যে, রাফা প্রবেশপথ দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য ও ঔষধসহ যাবতীয় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশ করতে দিতে হবে। তার পশাপাশি আন্তর্জাতিক আদালত এবং জাতিসংঘের তদন্ত কিংবা অনুসন্ধানকারী বিভিন্ন গ্রুপকে বিনা বাধায় কাজ করতে দিতে হবে। কিন্তু ইসরাইলের প্রাধনমন্ত্রী নেতানিয়াহু আদালতের সে রায়কে মানতে রাজি নন। আদালতে ঘোষিত সমস্ত নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে সে দিনই নেতানিয়াহু রাফার বিভিন্ন এলাকায় নীরিহ নিরস্ত্র নারী-পুরুষের ওপর বোমা হামলা চালিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সে ব্যাপারে কোনো কথাই বলেনি। যদিও ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল কিংবা যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আদালতের কোনো স্বাক্ষরকারী সদস্য নয় তবুও গাজায় অবিলম্বে বিরতির দাবি জানিয়ে আসছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি রাফার ব্যাপারে বিভিন্ন কারণে প্রথম থেকে কিছুটা সংবেদনশীল ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নেতাহিয়াহু প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কোনো অনুরোধ রাখতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সাহায্য না দিলে তিনি হাতের নখ দিয়ে হলেও তার অভিযান চালিয়ে যাবেন। হামাস পরাজিত কিংবা নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি অভিযান থামাবেন না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে, পশ্চিমা দেশসমূহ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইসরাইলের পক্ষে হামাস কিংবা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন কিংবা পরাজিত করা সম্ভব হবে না। ইসরাইল বর্তমান অবস্থায় সে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চাইলে তার প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশাঙ্কা রয়েছে। কারণ, বর্তমান অবস্থায় সংঘর্ষ আরও ছড়িয়ে পড়লে তা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা নেতানিয়াহুর মোটেও নেই। কারণ, নেতাহিয়াহু ও তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আইযুব গেলান্তের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই আন্তর্জাতিক আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা আসতে পারে। তাতে নেতানিয়াহু ও তার সরকার আন্তর্জাতিকভাবে আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে সমস্ত সামরিক ও মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারি অত্যন্ত শক্তিশালী ইহুদি শিল্পপতি কিংবা ধনকুবেররা এবং রাজনৈতিক মহল এমন একটি পরিস্থিতিতেও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে তার হামাস বিরোধী যুদ্ধে সমর্থন অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত রয়েছে বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন। তারা আন্তর্জাতিক আদালতের রাফা অভিযান বন্ধ সংক্রান্ত রায় কিংবা নেতানিয়াহুর গ্রেফতারি পরোয়ানা বিষয়ক নির্দেশকে অমান্য করার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। তারা এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন একটি যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার জন্য। তাছাড়াও, ইসরাইলকে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ বিরোধী জনগোষ্ঠী ও বিশেষ করে সংগ্রামী ছাত্র সমাজ সে সমস্ত বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, গাজায় এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ তথাকথিত যুদ্ধে জেতার কোনো সুযোগ নেতানিয়াহুর তেমন নেই। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সামনে ঘনিয়ে আসছে আগামী নভেম্বর অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় টার্মের নির্বাচন। সে নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা তার অত্যন্ত ক্ষীণ। ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের ইসরাইলি আক্রমণ ও সমগ্র ফিলিস্তিন দখল করে নেওয়ার পর থেকে গত ৫৭ বছর ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি কিংবা স্বাধীনতা লাভের জন্য সংগ্রাম করেছে। এবার তারা এর একটি শেষ দেখতে চায়। এক্ষেত্রে সুবিধাবাদী আরব বিশ্ব তাদের হয়ে অস্ত্র না ধরলেও গাজার হামাস ও অন্যান্য প্রতিরোধ যোদ্ধারা, লেবাননের হিজবুল্লাহ গেরিলা বাহিনী ও ইয়েমেনের হুতি আনসারুল্লাহ বাহিনী প্রাণপণ আক্রমণ চালাতে বদ্ধপরিকর। তারা কোনো অবস্থাতেই রণে ভঙ্গ দেবে না। কারণ, তাদের পেছনে রয়েছে প্রতি শ্রুতিবদ্ধ রাষ্ট্র ইরান। এক্ষেত্রে তাদের সকল সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে সবার ধারণা। সুতরাং এ রণক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া পেছনে ফেরার কোনো অবকাশ নেই তাদের।

 

লেখক: বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্যালেস্টাইন : এক সংগ্রামের ইতিহাস গ্রন্থের প্রণেতা
[email protected]


বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আওয়ামী লীগের বেলাগাম পুঁজিলুণ্ঠন
বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পটভূমিতে এবারের বিজয় দিবস
ইসলামোফোবিয়া
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, যার মর্মমূলে স্বাধীন জাতিসত্তার চেতনা
স্মৃতি রোদ
আরও

আরও পড়ুন

তারাকান্দায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬

তারাকান্দায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬

আওয়ামীলীগ লাশের ওপর নৃত্য করে ফ্যাসিস্ট ইতিহাস তৈরি করেছিল : ড. রেজাউল করিম

আওয়ামীলীগ লাশের ওপর নৃত্য করে ফ্যাসিস্ট ইতিহাস তৈরি করেছিল : ড. রেজাউল করিম

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নীলফামারী ছাড়লেন আসিফ মাহমুদ

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নীলফামারী ছাড়লেন আসিফ মাহমুদ

ডিমলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ছাত্রলীগ নেতা  গ্রেফতার

ডিমলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ফায়ার ফাইটার নয়নের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া

ফায়ার ফাইটার নয়নের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া

কচুয়ার একাধিক মামলার আসামি বাবু দুমকীতে গ্রেফতার

কচুয়ার একাধিক মামলার আসামি বাবু দুমকীতে গ্রেফতার

পূর্বাচলের সরকারি প্লটে অনিয়ম: হাসিনা-রেহানার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

পূর্বাচলের সরকারি প্লটে অনিয়ম: হাসিনা-রেহানার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

ধামরাইয়ে ২ সন্তানের জননীর আত্মহত্যা  স্বামী আটক

ধামরাইয়ে ২ সন্তানের জননীর আত্মহত্যা  স্বামী আটক

দৌলতদিয়ায় বয়স্ক যৌনকর্মীদের শীতবস্ত্র ও শিশুদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

দৌলতদিয়ায় বয়স্ক যৌনকর্মীদের শীতবস্ত্র ও শিশুদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

যারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত: বদিউল আলম

যারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত: বদিউল আলম

নাচোল পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মুসা মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

নাচোল পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মুসা মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত

কুষ্টিয়ায় দরজা ভেঙে নারী পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

কুষ্টিয়ায় দরজা ভেঙে নারী পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

হাজীগঞ্জে ৩৫ একর কৃষি জমিতে পানিবদ্ধতা

হাজীগঞ্জে ৩৫ একর কৃষি জমিতে পানিবদ্ধতা

টাঙ্গাইলে টুকুর পক্ষ থেকে সুবিধাবঞ্চিত গরীব অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

টাঙ্গাইলে টুকুর পক্ষ থেকে সুবিধাবঞ্চিত গরীব অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

ফায়ারফাইটার নিহতের ঘটনায় যা বললেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

ফায়ারফাইটার নিহতের ঘটনায় যা বললেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

বোয়ালমারীতে পর্ণোগ্রাফির চক্রের ২ সদস্য আটক, প্রায় বারো লাখ টাকা খোয়ালেন প্রবাসীর স্ত্রী

বোয়ালমারীতে পর্ণোগ্রাফির চক্রের ২ সদস্য আটক, প্রায় বারো লাখ টাকা খোয়ালেন প্রবাসীর স্ত্রী

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর বৃদ্ধের মরদেহ মিলল পুকুরে

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর বৃদ্ধের মরদেহ মিলল পুকুরে

চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে ৫ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে ৫ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

বুধবার রাতে সচিব নিবাসেও আগুন লেগেছিল

বুধবার রাতে সচিব নিবাসেও আগুন লেগেছিল

শৈলকুপায় নিহতের ঘটনায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা

শৈলকুপায় নিহতের ঘটনায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা