বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান দুই দলের খেলোয়াড়েরাই নিশ্চয় হোটেল রুমে তীর্থের কাকের মতো চোখ রেখেছিলেন এই ভারত-অস্ট্রিলিয়া ম্যাচের দিকে। দুই দলেরই নিশ্চয়ই প্রার্থনা ছিল ভারতের বিপক্ষে যেন অস্ট্রেলিয়া যেন হারে।

রোহিত শর্মা-যাসপ্রিত বুমরাহদের নৈপুণ্যে সেই কাঙ্ক্ষিত ফলও এল। ভারতে কাছে ২৪ হেরে সেমিফাইনাল সমীকরণের দৌড় আরও পিছিয়ে পড়ল অস্ট্রিলিয়া।অন্যদিকে এই ফলাফলে দুই ম্যাচ হেরেও সম্ভাবনা জাগল বাংলাদেশের; আফগানদের দরকার কেবল একটি জয়।

সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাক করতে নামা ভারত রোহিত শর্মা ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৫ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায়।জবাবে ট্রাভিস হেডের ব্যাটে লড়াই করলেও  নির্ধারিত ২০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলতে পারে সাত উইকেটে ১৮১ রান।

দাপুটে এ জয়ে তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ভারত শুরুতেই বিরাট কোহলকে হারায়।সাদামাটা বিশ্বকাপ কাটানো এই তারকা এদিন রানের খাতাই খুলতে পারেননি।দুই ওভার শেষে কোহলিকে হারিয়ে ভারতের রান ছিল ৬। পাঁচ বলে মেরেছেন ডাক।তবে এরপরের গল্পটা স্রেফ রোহিতময়।উইকেট পড়ার পরেও চাপ তো দূরের কথা, রোহিত সরাসরি ব্যাটিং করেছেন 'টপ গিয়ারে'।

মিচেল স্টার্কের করা তৃতীয় ওভারেই চার ছক্কা ও এক চারে তুলেছনে ২৯ রান।এরপর কামিন্স, স্টয়নিস, জাম্পা-কেউই রক্ষা পাননি রোহিতের ব্যাট থেকে।দ্বিতীয় উইকেটে রিষাভ পান্থের সঙ্গে মিলে যোগ করেছেন ৩৮ বলে ৮৭ রান,যেন আউট হওয়ার আগে পান্থের অবদান কেবল ১৪ বলে ১৫ রান।

এরপর সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়েন রোহিত। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো ভারতীয় অধিনায়ক ফিরে যান ৯২ রানে সেই স্টার্কের শিকার হয়ে।রোহিত চলে যাওয়ার পর শিবাম দুবের ২৮ ও হার্দিক পান্ডিয়ার অপরাজিত ২৭ রানের ক্যামিও ইনিংসে দুইশ পার  করে ভারত। এছাড়া সূর্য খেলেন ১৬ বলে ৩১ রানের ইনিংস। অজিদের হয়ে দুটি করে উইকেট পান স্টার্ক ও মার্কাস স্টয়নিস। বাকিদের বেধম মার খাওয়ার মাঝেও ৪ ওভারে স্রেফ ১৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন জশ হ্যাজেলউড।

এ রান তাড়া করে জিততে হলে রেকর্ডই গড়তে হতো অজিদের।অন্যদিকে অজিদের ১৫.৩ ওভারের বেশি ঠেকিয়ে রাখতে পারলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো ভারতের।

চ্যালেঞ্জিং স্কোর তাড়ায় শুরুতেই ওয়ার্নারকে হারায় অজিরা।অধিনায়ক মিচেল মার্শ ও ট্রাভিডে হেডের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় অসিরা। ৪৮ বলে ৮১ রানের দুর্দান্ত জুটি করেন তারা।

২৮ বলে ৩৭ রান করে মার্শ আউট হয়ে গেলে জুটি ভাঙে। এরপর ১২ বলে ২০ রান করে ফেরত যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১৪তম ওভারে ম্যাক্সওয়েল আউট হওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার বোর্ডে ১৩.১ ওভারে ১২৮ রান। তখনও ম্যাচে ছিল অসিরা। কিন্তু পরের ওভারে মার্কাস স্টয়নিজের উইকেট হারালে ম্যাচ থেকে সরে যায় তারা।

একা আর লড়াই চালিয়ে যেতে পারেননি হেড। ১৭তম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর বল আকাশে ভাসিয়ে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ হন তিনি। এতেই মোটামুটি ভারতীয়দের জয়ের উচ্ছ্বাস শুরু হয়। হেডের ৪৩ বলে ৭৬ রানের (৯ বাউন্ডারি ৪ ছক্কায়) দুর্দান্ত ইনিংস বিফলে যায়। শেষ দিকে টিম ডেভিড (১১ বলে ১৫) আর প্যাট কামিন্সের অপরাজিত ৭ বলে ১১ রানে ৭ উইকেটে ১৮১ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া।

আফগানিস্তানের জন্য সমীকরণ এখন খুব। আজ বাংলাদেশকে হারাতে পারলেই প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে যাবে রশিদ-নবীরা।অন্যদিকে বাংলাদেশকে ম্যাচ জিততে হবে অন্তত ৬২ রানে, অথবা পরে ব্যাট করলে আফগানদের দেওয়া টার্গেট ভাঙতে হবে ১২.৫ ওভারের ভেতর