ডিসেম্বরের পর সুদহার কমানো প্রয়োজন : ডিসিসিআই

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার :

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম

 মূল্যস্ফীতি কমাতে ধাপে ধাপে নীতি সুদহার বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দীর্ঘ মেয়াদে উচ্চ সুদহারের কারণে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে যাবে এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সে জন্য আগামী ডিসেম্বর মাসের পর সুদহার কমানোর বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
গতকাল শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন আশরাফ আহমেদ। বেসরকারি খাতের দ্বিবার্ষিক অর্থনৈতিক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে এ সেমিনার আয়োজন করে ডিসিসিআই।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইউনিটের পরিচালক (গবেষণা) মো. সেলিম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ও বেসরকারি সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক কে এ এস মুরশিদ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আশরাফ আহমেদ। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদহার বৃদ্ধির নীতি সাময়িকভাবে কার্যকর ধরা যায়। এটি সাময়িকভাবে সফল হলেও দীর্ঘ মেয়াদে তা ধরে রাখা ঠিক হবে না। প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগে উচ্চ সুদহারের প্রভাব পড়ে। সুদহার বাড়লে ঋণপ্রবাহ কমে যায়। এতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমে যায়। সে জন্য দীর্ঘ মেয়াদে উচ্চ সুদহার ধরে রাখা যাবে না। আগামী ডিসেম্বর মাসের পরে সুদহার কমানো হলে তা বেসরকারি খাতের জন্য ভালো হবে।
আশরাফ আহমেদ বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকারের হাতে আরও কিছু উপকরণ আছে; সেগুলো ব্যবহার করা প্রয়োজন। দেশে মূল্যস্ফীতির অন্যতম বড় কারণ খাদ্যপণ্যের অপচয়। উৎপাদন পর্যায়ে অপচয় কমিয়ে আনা গেলে মূল্যস্ফীতি কমবে, আমদানি চাহিদাও কমবে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সুদহার বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আরও সহনশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইউনিটের পরিচালক (গবেষণা) মো. সেলিম আল মামুন। তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো, মূল্যস্ফীতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। মূল্যস্ফীতি যত দিন না কমবে, তত দিন নীতি সুদহার বাড়ানো হবে। কারণ, হিসেবে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি সরাসরি নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চেয়েও এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা জরুরি উল্লেখ করে সেলিম আল মামুন বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তা ঠিকভাবে কাজ করলে আট-দশ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, মুদ্রানীতির মাধ্যমে এককভাবে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না; এর সঙ্গে রাজস্ব নীতি ও বাজার ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো, সরবরাহ শৃঙ্খলের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। সেখানে কাজ করতে হবে।
বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক কে এ এস মুরশিদ বলেন, গত এক দশকে দেশে নতুন উদ্যোগের জায়গা সংকুচিত হয়েছে। এর বিপরীতে ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের (স্বজনতোষী পুঁজিবাদ) উত্থান হয়েছে। আমরা ব্যাংক খাতের দিকে তাকালে এর অনেক নজির পাওয়া যাবে। এখন তাদের (ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট) সরিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। এ জায়গায় নতুন উদ্যোক্তারা যেন আসতে পারে, সে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

কচুয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু
মধ্যরাতে মহাসড়কে গাছ ফেলে বাসে ডাকাতি
কর্ণফুলীতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ অভিযানে আ.লীগ নেতা আটক
গণহত্যা, গুম, খুন যারা করেছে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না তাদেরকে- এমরান চৌধুরী
আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে প্রশাসন সুযোগ নিচ্ছে: জয়নুল আবদিন ফারুক
আরও
X

আরও পড়ুন

অ্যান্টিমনির বিশাল মজুদ আবিষ্কার ইরানের

অ্যান্টিমনির বিশাল মজুদ আবিষ্কার ইরানের

গাজা নিয়ে অস্কারজয়ী তথ্যচিত্রের পরিচালকের ওপর হামলা, গ্রেফতার নিয়ে বিতর্ক

গাজা নিয়ে অস্কারজয়ী তথ্যচিত্রের পরিচালকের ওপর হামলা, গ্রেফতার নিয়ে বিতর্ক

ইরান শীঘ্রই নতুন রেডিও ফার্মাসিউটিক্যালস উন্মোচন করবে

ইরান শীঘ্রই নতুন রেডিও ফার্মাসিউটিক্যালস উন্মোচন করবে

ইরান এবং মধ্য এশীয় দেশগুলিতে নওরোজ যেভাবে উদযাপিত হয়

ইরান এবং মধ্য এশীয় দেশগুলিতে নওরোজ যেভাবে উদযাপিত হয়

বন বিড়ালে পর্যদুস্ত ইসরায়েল, স্যোশাল মিডিয়ায় প্রশংসার জোয়ার

বন বিড়ালে পর্যদুস্ত ইসরায়েল, স্যোশাল মিডিয়ায় প্রশংসার জোয়ার

ফের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ, যা বললেন মুখপাত্র

ফের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ, যা বললেন মুখপাত্র

গাজায় রেড ক্রস ভবনে হামলা, ইসরায়েলি বাহিনীর দুঃখপ্রকাশ

গাজায় রেড ক্রস ভবনে হামলা, ইসরায়েলি বাহিনীর দুঃখপ্রকাশ

জরুরি অবস্থা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে হাসির পাত্র ফ্যাসিস্ট আ'লীগ

জরুরি অবস্থা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে হাসির পাত্র ফ্যাসিস্ট আ'লীগ

বিএনপি'র লজ্জিত হওয়া উচিত : সারজিস আলম

বিএনপি'র লজ্জিত হওয়া উচিত : সারজিস আলম

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় আল জাজিরার সাংবাদিক নিহত

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় আল জাজিরার সাংবাদিক নিহত

রাজধানীতে স্টারলিংক ইন্টারনেটের পরীক্ষা, মিলল চমকপ্রদ গতি

রাজধানীতে স্টারলিংক ইন্টারনেটের পরীক্ষা, মিলল চমকপ্রদ গতি

ঈদ পরবর্তী ট্রেনযাত্রা, আজ বিক্রি হবে ৪ এপ্রিলের টিকিট

ঈদ পরবর্তী ট্রেনযাত্রা, আজ বিক্রি হবে ৪ এপ্রিলের টিকিট

কচুয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

কচুয়ায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

নিউজিল্যান্ডে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল

নিউজিল্যান্ডে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল

তামিমের জটিল চিকিৎসায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ

তামিমের জটিল চিকিৎসায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ

জামিনে মুক্ত হলেন শমসের মুবিন চৌধুরী

জামিনে মুক্ত হলেন শমসের মুবিন চৌধুরী

মুক্তিযুদ্ধ-জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় এগোতে চায় সরকার: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

মুক্তিযুদ্ধ-জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় এগোতে চায় সরকার: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

কানাডায় জাতীয় নির্বাচন, ভোটগ্রহণ ২৮ এপ্রিল

কানাডায় জাতীয় নির্বাচন, ভোটগ্রহণ ২৮ এপ্রিল

অসহিষ্ণু রাজনৈতিক চর্চা আমরা পুনরায় দেখতে চাই না: হাসনাত আব্দুল্লাহ

অসহিষ্ণু রাজনৈতিক চর্চা আমরা পুনরায় দেখতে চাই না: হাসনাত আব্দুল্লাহ

গুজব ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত নয়, ধৈর্য ধরে দায়িত্ব পালন করুন: সেনাপ্রধান

গুজব ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত নয়, ধৈর্য ধরে দায়িত্ব পালন করুন: সেনাপ্রধান