খুলনা মহানগরীর ত্রাস, সন্ত্রাসীদের গডফাদার নুর আজিম এবং তার সহযোগী শীর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজুলকে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। কেএমপি গোয়েন্দা বিভাগের একটি টীম ঢাকা মহানগরীতে অভিযান পরিচালনা করে বুধবার ভোরে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড সিপি) মোহাঃ আহসান হাবীব, পিপিএম।
তিনি জানান, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি টীম বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
এসময় খুলনা মহানগরীর ত্রাস, সন্ত্রাসীদের গডফাদার টুটপাড়া মহিরবাড়ী মোড় এলাকার শানু মহরীর ছেলে নুর আজিম (২৮), তার সহযোগি নগরীর কাশেমনগর এলাকার বাবুল মাতুব্বরের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম দাদা মিয়া (৩৫) গ্রেফতার করে। এসময় নুর আজিম এবং তার সহযোগী রিয়াজুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অস্ত্র-গোলাবারুদ সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে। তাদের প্রদত্ত তথ্য মোতাবেক মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ খুলনা সদর থানাধীন দক্ষিণ টুটপাড়া এবং পূর্ব বানিয়াখামার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১ টি বিদেশী একনলা ১২ বোর এর কাটা বন্দুক, ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ২ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগজিনসহ ১ টি বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় অস্ত্র আইনে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নুর আজিম খুলনা মহানগরী এলাকায় নিজ নামে সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, হত্যা, দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, টাকার বিনিময়ে কিলিং মিশনসহ অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। শীর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজুলও এলাকায় দখলবাজি, চাঁদাবাজি এবং টাকার বিনিময়ে কিলিং মিশন চালাতো।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত নুর আজিম মহানগরীতে ত্রাস সৃষ্টিকারী ১২ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর গডফাদার। তার বিরুদ্ধে খুলনা মহানগরী, খুলনা জেলা এবং ডিএমপি, ঢাকাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি এবং মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের ১৩ টি মামলা রয়েছে। অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
জানাযায়, খুলনা নগরীর খুলনা থানা এবং লবনচরা থানা এলাকায় আশিক গ্রুপের পরেই সব থেকে বেশি অস্ত্রধারী সদস্য রয়েছে নূর আজিমের গ্রুপে। তাদের দলে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। ওই দলের নেতৃত্ব দেন শেখ নূর আজিম। কিশোর গ্যাং সৃষ্টির মাধ্যমে ২০১৬ সালে তিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। বর্তমানে তার নামে মোট মামলা রয়েছে ১৩টি বেশি। তার দলের সদস্যদের নামে মামলা রয়েছে ৫৮টিরও বেশি। নূর আজিম পলাতক থাকলে ওই গ্রুপটির নেতৃত্ব দেয় রাজু। তিনি নগরীর লবনচরা থানাধীন উকিলের কালভার্ট এলাকার বাসিন্দা। তার নামে মামলা রয়েছে ৭টি। এছাড়া ওই গ্রুপের চেগা সোহেলের নামে ১টি, দাঁত ভাঙ্গা মামুনের নামে ১টি, মাসুদের নামে ১টি, মেহেদী হাসানের নামে ৫টি, বিকুলের নামে ৩টি, মিরাজ শিকদারের নামে ১টি, কাটা রাশেদের নামে ২টি, কালু সরদারের নামে ৪টি, কালা লাভলুর নামে ৩টি, সাদ্দাম মল্লিকের নামে ৫টি, টগরের নামে ২টি ও মো. রাশেদুল ইসলাম খোকনের নামে ২টি মামলা রয়েছে।
নূর আজিমের গ্রুপের সদস্য কাটা রাশেদ খুলনা সদর থানার একটি অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। আর নূর আজিমের ভাই রকি কয়েকদিন আগেই গ্রেফতার হয়েছে। তবে ওই গ্রুপের বাকি সব সদস্য বর্তমানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে জানাযায়।