কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ধরিত্রীকে বাঁচাতে হবে
৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১২ এএম | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১২ এএম
সাম্প্রতিক বিশ্বে প্রধান সংকট হচ্ছে, বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা বৃদ্ধি এবং তৎপ্রেক্ষিতে অপূরণীয় ব্যাপক ক্ষতি। এ সংকটের অন্যতম কারণ হচ্ছে, মাত্রাতিরিক্ত কার্বন ও মিথেন গ্যাস নিঃসরণ, যার জন্য সর্বাধিক দায়ী ধনীরা। অক্সফামের গত ১৯ নভেম্বর প্রকাশিত তথ্য মতে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার দরিদ্রতম ৬৬% বা ৫০০ কোটি মানুষ যে, পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করছে, একই পরিমাণ নিঃসরণ করছে মাত্র ১% ধনী বা ৭.৭০ কোটি মানুষ। স্ট্যাটডস্টিয়ারের তথ্য মতে, ২০২২ সালে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের হার চীন-২৯.২%, যুক্তরাষ্ট্র-১১.২%, ভারত-৭.৩%, ইইউ-৬.৭%, রাশিয়া-৪.৮%, ব্রাজিল-২.৪% ও অন্যান্য দেশ-৩৮.৪%। বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। তাতে ঘন ঘন ব্যাপক ঝড়, বৃষ্টি, জ্বলোচ্ছাস, খরা ইত্যাদি বেড়ে ব্যাপক জানমালের ক্ষতি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাধিও বাড়ছে! সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, কয়লা-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে গত দুই দশকে কমপক্ষে ৪.৬০ লাখ মার্কিনীর মৃত্যু হয়েছে। দ্বিগুণ অকাল মৃত্যুরও কারণ এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অন্য দেশেও কম-বেশি তাই। ল্যানসেটের প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশে ২০০০-০৪ সালের তুলনায় ২০১৭-২০২২ সময়ে অতি তাপমাত্রার কারণে মৃত্যু বেড়েছে ১৪৮%। হু গত ৭ এপ্রিল ’২২ জানিয়েছে, বায়ুদূষণে বিশ্বে বছরে ৭ লাখ অপরিণত নবজাতকের মৃত্যু হয় ও প্রতি মিনিটে মারা যান ১৩ জন। বাংলাদেশে বছরে বায়ুদূষণে প্রতি ১ লাখে ১৪৯ জন মারা যান। নিউইয়র্কের গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় ডেলাওয়্যারের প্রতিবেদন মতে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে ২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উৎপাদন ৬.৩% কমেছে। সম্প্রতি হু জলবায়ু পরিবর্তনকে মানবসভ্যতার মুখোমুখি হওয়া একক বৃহত্তম স্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। উপরন্তু জাতিসংঘ প্রথমবারের মতো ৩ ডিসেম্বরকে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’ হিসাবে পালন করার ঘোষণা করেছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত হিমবাহ ব্যাপকভাবে গলে যাওয়ায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে অনেক। ফলে সাগরের উপকূলবর্তী কোটি কোটি মানুষ চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যেই অসংখ্য মানুষ ঘরবাড়ি ও সম্পদ হারিয়ে বাস্তুচ্যুৎ ও নিঃস্ব হয়েছে। তাতে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২১৬ মিলিয়ন লোককে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। তন্মধ্যে ৪০ মিলিয়ন এককভাবে দক্ষিণ এশিয়ার। এ সংক্রান্ত চরম ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এছাড়া, বহু জীববৈচিত্র্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে জগৎখ্যাত বিজ্ঞানীরা বলেছেন, কার্বন নিঃসরণের সামাজিক ক্ষতির দাম এখন প্রতি মেট্রিক টনে ১৮৫ মার্কিন ডলার। তবুও তাপপ্রবাহ এই শতকের মধ্যে আরো ২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস,এমনকি ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে নিঃসরণের পরিমাণ ১.২% বেড়েছে। গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমাতে জরুরি ভিত্তিতে যথার্থ কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিশ্ব বলে ইউএনইপি জানিয়েছে গত ২১ নভেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। ইউএনইপি অন্য এক প্রতিবেদনে বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ২০২০ সালে ২৫.২ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করা হয়েছে। ২০২১ সালে তা ২১.৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। অথচ, এ খাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর চলতি দশকে বছরে ২১৫ থেকে ৩৮৭ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। ফরেস্ট ডিক্লারেশন অ্যাসেসমেন্ট গত ২৪ অক্টোবর বলেছে, বিশ্ব ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি গত বছর বিশ্বব্যাপী বন উজাড় হয়েছে ৬.৬ মিলিয়ন হেক্টর। গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে বিজ্ঞানীদের এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ, বন উজাড় ও কৃষিকাজে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারে নষ্ট হচ্ছে বিশ্বের স্থিতিশীলতা। পৃথিবীর স্বাস্থ্য হিসেবে বিবেচিত ৯টি সূচকের মধ্যে ৬টি নিরাপদ মাত্রা ছাড়িয়েছে, ২টি নিরাপদ সীমা ভাঙার কাছাকাছি ও ১টির ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা থ্রিসিএস গত ৮ নভেম্বর’২৩ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, চলতি বছরের অক্টোবর ছিল সোয়া এক লাখ বছরের মধ্যে উষ্ণতম অক্টোবর মাস। গত সেপ্টেম্বরও উষ্ণতম ছিল। তাই ২০২৩ সালটা ইতিহাসের উষ্ণতম বছর হতে পারে। কিন্তু বর্তমান তাপমাত্রার চেয়ে আরো ২.৯ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে ধরিত্রী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে! তবুও বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা বেড়েই চলেছে! তাই পরিবেশবিদ, পরিবেশবাদী ও সচেতন মহল বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা রোধ করার জন্য ব্যাপক আন্দোলন করছে দীর্ঘদিন যাবত। তাতে শামিল হয়ে বিশ্বব্যাপী প্রবল আওয়াজ উঠেছে, কার্বন নিঃসরণ কমাও ধরিত্রীকে বাঁচাও। ইউএনইপির গত ২১ নভেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার জন্য বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ বর্তমানের চেয়ে ২৮% আর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উচ্চাভিলাষী সীমায় রাখতে হলে বৈশ্বিক নিঃসরণ ৪২% কমাতে হবে।
বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা কমানোর জন্য জাতিসংঘও সোচ্চার হয়েছে। ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু করে সংস্থাটি এ পর্যন্ত ২৭টি বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন(কপ) করেছে। পরবর্তী তথা কপ-২৮তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আজ ৩০ নভেম্বর থেকে আগামী ১২ ডিসেম্বর’২৩ পর্যন্ত দুবাইয়ে। দেশটি বর্তমানে এর সভাপতি। এ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিবসহ ১৯৮টি দেশের শীর্ষনেতা/প্রতিনিধি, সুশীলরা, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও পোপ ফ্রান্সিসসহ ৭০ হাজার মানুষ অংশ নেবে বলে জানা গেছে। তাতে ইতোপূর্বেকার সম্মেলনের মতোই বহু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু ইতোপূর্বেকার কপ সম্মেলনের প্রতিশ্রুতির ও সিদ্ধান্তের সামান্যই বাস্তবায়িত হয়েছে! যেমন: ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত কপ সম্মেলনে প্রথম সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, বায়ু মণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পযুগের চেয়ে ২ ডিগ্রি এবং সম্ভব হলে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার। উপরন্তু ২০২১ সালে মিশরে অনুষ্ঠিত কপ-২৭তম সম্মেলনেও একই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সর্বোপরি এ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত গরিব দেশগুলোকে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য লস এন্ড ড্যামেজ তহবিল গঠন, জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ না করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু এসবের তেমন বাস্তবায়ন হয়নি। বেশিরভাগ দেশ দেয় প্রতিশ্রুতি ও সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি। বরং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বেড়েছে। বিশেষ করে কয়লার ব্যবহার। সম্প্রতি প্রকাশিত কেপলারের তথ্য মতে, চীন ও ভারতে কয়লার ব্যবহার অনেক বেড়েছে ২০২২ সালে। এছাড়া, বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড কয়লার ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ও বিনিয়োগ কিছুটা বেড়েছে। গত ২৩ আগস্ট নরওয়েতে উদ্বোধন করা হয়েছে হাইউইন্ড ট্যাম্পের্ন নামের বিশ্বের বৃহত্তম বায়ু পার্ক। সমুদ্র তীরে ১৪০ কিলোমিটার বিস্তৃত এ পার্কে রয়েছে ১১টি টারবাইন, যার প্রতিটিতেই ৮.৬ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। চীন তিব্বতের ছোমেই জেলার চেগু গ্রামে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার মিটার উঁচুতে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে, যাতে বছরে ২০০ মিলিয়ন কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। বর্তমানে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ (মেগাওয়াটে) চীনে ৩.০৬ লাখ (মোট বিদ্যুতের ৩৫%), আমেরিকায় ১ লাখের অধিক (মোট চাহিদার ১১%)। অপরদিকে, ২০২২ সালে মোট চাহিদার মধ্যে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের হার ভারতে ৩৩.৭%, মালয়েশিয়ায় ২৩.৩.%, আফগানিস্তানে ৬৪%, ফিলিপাইনে ২৬.৪%, বাংলাদেশ প্রায় ৩%। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালটেক গত ৬ জুন বলেছে, তাদের মহাকাশে ভাসমান প্রোটোটাইপ স্পেস সোলার পাওয়ার ডেমোনস্ট্রেটর সূর্যালোক সংগ্রহ করে একে বিদ্যুতে রূপান্তর করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে, যা বিশ্বে প্রথম। এতে অফুরন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কাতারে চলছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের বিশাল কর্মযজ্ঞ। বিভিন্ন দেশে হাইড্রোজেন জ্বালানির উৎপাদন এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারের হার ব্যাপক বাড়ছে। সবুজ জ্বালানিতে উড়োজাহাজও চলছে। সুইডেনে বৈদ্যুতিক যানের ব্যাটারি তৈরির জন্য ২০০ ফুটবল মাঠের সমান এক গিগাফ্যাক্টরি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বছরে উৎপাদন হবে ১০ লাখ ইলেকট্রিক যানের ব্যাটারি-জার্মান বেতার। অনেক দেশে কার্বন ট্যাক্স চালু করা হয়েছে। রাশিয়া ও চীন চালু করেছে ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ইইউ কাউন্সিল সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছে, সদস্যরা ২০৩০ সালের মধ্যে ইউরোপে জীবাশ্ম জ্বালানি পাঠানোর ক্ষেত্রে বিদেশি উৎপাদকদের ওপর সর্বোচ্চ মিথেন তীব্রতার সীমা বেঁধে দিতে সম্মত হয়েছে। অপরদিকে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে বিশ্বব্যাপীই। সম্প্রতি আইইএ জানিয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বে নবায়নযোগ্য ও নিরাপদ জ্বালানিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ১.৭ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। সিএফএ ইন্সটিটিউটের মতে, পরিবেশ, সমাজ ও করপোরেট সুশাসন খাতে ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ ৫৩ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। চীনের ‘সিনোপেক ফোরাম’ ‘উন্মুক্ত সহযোগিতা, জ্বালানির রূপান্তর জোরদার করার জন্য ১৬টি দেশ ও অঞ্চলের ৩৮টি সহযোগী অংশীদারের সঙ্গে ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে গত ৪ নভেম্বর। গত ২ মে অনুষ্ঠিত এডিবির ৫৬তম বার্ষিক সম্মেলনে সংস্থার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘এডিবি আর কখনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পে অংশ নেবে না।’ তারা এই খাতে আর ঋণ দেবে না। ঋণ দেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে। ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ত্রুটি সমাধান করতে না পারায় সম্প্রতি ২০টি ব্যাংককে জরিমানা করছে। অন্যদিকে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের নিত্য নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার হচ্ছে এবং নানা কার্যক্রম চলছে। অর্গানিক সোলার সেল প্রচলিত সোলার প্যানেলের তুলনায় ১০ গুণ হালকা। বসানো সম্ভব যেকোন জায়গায়। জার্মানির একটি কোম্পানি এটি উৎপাদন করছে। বিশ্বের নামীদামী বহু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহক। কানাডার জিএইচজি স্যাট সম্প্রতি ভ্যানগার্ড নামে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে। এটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে নিঃসৃত কার্বনের মাত্রা পরিমাপ ও তথ্য সংরক্ষণ করবে। জাতিসংঘের সামুদ্রিক আদালতে গত ১১ সেপ্টেম্বর, ২৩ বিশ্বের প্রথম জলবায়ু মামলার শুনানি হয়েছে। মহাসাগরগুলোর সুরক্ষা চেয়ে ৯টি ছোট দ্বীপরাষ্ট্রের নেতারা আইটিএলওএসে মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই এ শুনানি হয়েছে। সাগরে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনকে দূষণ হিসাবে বিবেচনা করা যায় কি না তা নির্ধারণ এবং যদি নির্ধারণ সম্ভব হয় তবে তা প্রতিরোধ করার জন্য এ মামলা।
যা’হোক, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ও কার্যক্রম আশানুরূপ নয়। তাই ধরিত্রীর ভবিষ্যৎ ঘোর অন্ধকার। কিন্তু না, এটা হতে দেওয়া যাবে না। ধরিত্রীকে রক্ষা করতে হবে। সে জন্য ‘কার্বন নিঃসরণ কমাও ধরিত্রীকে বাঁচাও’ নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে সারা বিশ্বেই। অর্থাৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী। এ খাতে সহজ পদ্ধতি ও স্বল্প সুদে চাহিদা মাফিক ঋণ, ব্যাপক বিনিয়োগ, সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদির মূল্য হ্রাস ও কর ছাড় দিলেই সাফল্য মিলবে। এছাড়া, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ এবং সর্বক্ষেত্রেই সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে হবে। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে। গরীব দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ ও জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। উপরন্তু প্রয়োজনীয় বৃক্ষ রোপন ও রক্ষা করতে হবে।এসবই হোক কপ-২৮তম সম্মেলনের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত।এ ব্যাপারে বিশ্ববাসীর ব্যাপক সোচ্চার হওয়া দরকার।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার
সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী