বাসযোগ্য সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি অন্তরায়

Daily Inqilab জামালউদ্দিন বারী

১৫ মে ২০২৪, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ১৫ মে ২০২৪, ১২:০৯ এএম

একটি বল্গাহীন বিচারহীনতার সংস্কৃতি সমাজ ও রাষ্ট্রকে শান্তিপ্রিয় মানুষের জন্য বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির একাধিপত্য কায়েমের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে ক্রমেই অস্থিতিশীল ও ভঙ্গুর করে তোলা হয়েছে। গত দেড় দশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সঙ্কুচিত করে তথাকথিত উন্নয়নের রাজনীতি একটি অবাধ লুন্ঠন প্রক্রিয়াকে সাধারণ বাস্তবতায় পরিনত করা হয়েছে। মানুষের সাংবিধানিক জিম্মাদারি গ্রহণ করে বেশিরভাগ দায়িত্বশীল ব্যক্তি ক্ষমতাধর হয়ে ওঠে এবং চারপাশের সবকিছু গ্রাস করতে করতে এক সময় নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে ভাবতে শুরু করে। রাষ্ট্র, বিশেষ রাজনৈতিক দল, আমলাতন্ত্র এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পারস্পরিক শৃঙ্খলা, জবাবদিহিতা বাহ্যিক কোনো একক শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে এ ধরণের সামাজিক রাজনৈতিক বাস্তবতা অনির্বায হয়ে ওঠতে বাধ্য। বহুত্ববাদী সামাজিক-রাজনৈতিক মূল্যবোধের বদলে কোনো একক সংকীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের আলোকে সবকিছুর মূল্যায়ন করার প্রয়াস থেকে সমাজে এমন দমবন্ধ পরিবেশ দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতি একদিকে সমাজ ও রাষ্ট্রের ভেতরকার সমন্বয় ও শৃঙ্খলাকে যেমন বিনষ্ট করে, অন্যদিকে মানুষের জীবন-জীবিকা, প্রাণ-প্রকৃতি ও বেঁচে থাকার মূল অবলম্বনগুলোকেও দূষিত-কলুষিত করে তোলে। গত পাঁচ দশক ধরে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের উপজাত হয়ে পানি দূষণ, নদী দূষণ, নদী দখল-ভরাট, অবাধ বৃক্ষ নিধন, বনভূমি উজাড়, বায়ু দূষণ, মাটিদূষণ ও উর্বরতা হ্রাসের মতো প্রাকৃতিক রাসায়নিক দূষণের শিকার হয়ে জনস্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। এসব দূষণ ও ভেজাল খাদ্যের প্রতিক্রিয়ায় দেশের কোটি কোটি মানুষ এখন নানাবিধ স্বাস্থ্য জটিলতায় আক্রান্ত হচ্ছে। ইউনিসেফের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ২ কোটি শিশু চরম মাত্রায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। মানুষই দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, শিশুরা হচ্ছে জাতির সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের ভিত্তি। শিল্প বিনিয়োগ, নগরায়ণ, মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার লুটপাট হচ্ছে। অন্যদিকে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে পরিবেশগত ক্ষতি তার চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। উন্নয়নের ঢাকঢোল পিটিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট, দখলবাজি, বিচারহীন-নিয়ন্ত্রনহীন পরিবেশে ঠেলে দিয়ে জাতিকে অসুস্থ-অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছি আমরা। ইউনিসেফের হিসাব মতে, পরিবেশগত বিপর্যয় ও শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বৈশ্বিক সূচকে বিশ্বের ১৬৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৭তম। বায়ু, পানিসহ পরিবেশগত দূষণের কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ, সুশাসন ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ছাড়া জাতি ও রাষ্ট্রের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে তোলা অসম্ভব। যে সাম্য, চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তির সংগ্রামের ভিত্তি রচিত হয়েছিল, সেই চেতনাকে বর্জন করে লুটপাট-দুর্নীতির উন্নয়ন দিয়ে জাতির কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়।

দেশকে সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার মতো উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে যাওয়ার দাবি ইতিমধ্যেই ফিকে হয়ে গেছে। জাতীয় অর্থনীতিতে চলছে অশনি সংকেত। প্রায় দুই কোটি প্রবাসীর কষ্টার্জিত রেমিটেন্স, গার্মেন্ট রফতানি খাতের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী, গার্মেন্ট শ্রমিক ও ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজের সাথে জড়িত প্রায় এককোটি মানুষের সমন্বিত শ্রমে অর্জিত আয় দিয়ে দেশের ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। অপরাজনীতি ও অর্থনৈতিক লুন্ঠন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে সমৃদ্ধির সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশকে অনেকটা দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, যাদের হাতে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব, তাদেরই একটি শ্রেণী সবচেয়ে বেশি অন্যায়-অবিচার, লুটপাটের সাথে জড়িত হয়ে বিচারের সব দাবিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। অবসরের পর একেকজন পুলিশ কর্মকর্তা, সরকারি আমলা, এমপি-মন্ত্রীর সম্পদের প্রবৃদ্ধির চিত্র, কারো কারো ক্ষেত্রে তা যেন আলাদিনের চেরাগকেও হার মানায়। সাধারণ মধ্যবিত্ত অবস্থা থেকে কয়েক বছরের মধ্যে শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়ার উদাহরণ আমাদের চারপাশে রয়েছে। দেশের মানুষের সম্পদ লুন্ঠন করে, ব্যাংক জালিয়াতি করে দেশের কোটি কোটি মানুষকে ভাগ্য বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়ার জন্য দায়ী রাজনৈতিক রাঘব-বোয়ালরা যেন বিচার ও আইনের বাধ্যবাধকতার ঊর্ধ্বে। অস্বচ্ছ ও অনৈতিক পন্থায় জমানো রাঘব-বোয়ালদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ দেশের আইন এখন কয়েক হাজার টাকার কৃষি ঋণ খেলাফের জন্য কৃষকের কোমড়ে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করতে দেখা গেলেও হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাফ করে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর ও অর্থনীতিকে দেউলিয়া ও অকার্যকর করে তোলার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা দিব্যি ভিআইপি মর্যাদা নিয়ে কোটি টাকা দামের গাড়িতে দাপটের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাজনীতি, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচারব্যবস্থা, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এদেরই সম্মান, নিয়ন্ত্রণ ও জয়জয়কার। একেকটি রাঘব বোয়াল দিনে দিনে সামুদ্রিক হাঙ্গরে পরিনত হয়, এরপর এদের ছত্রছায়ায় নতুন রাঘব-বোয়ালের জন্ম দিচ্ছে। এভাবেই আমাদের সমাজ রাষ্ট্র একটি দুর্বৃত্তায়নের নিগড়ে বন্দী হয়ে পড়েছে। এ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে- গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের রাজনৈতিক ব্যবস্থা অবারিত করা, আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।

বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতিতে এ এক কদাকার বাস্তবতা। দু’টি প্রধান রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাকর্মীরা পালাক্রমে দখলবাজ, নির্যাতক, আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেও বিগত দেড় দশকের ধারাবাহিক রাজনৈতিক পরিক্রমা সবকিছুকে যেন ভারসাম্যহীন করে তুলেছে। তবে এটা নিশ্চিত যে, আজ যারা শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে কাল তারাই শোষণের শিকার হবেন। জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন ও সেবা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনীতিকরা সব সময় জনগণের মাথার উপর জগদ্দল পাথরের মতো ক্ষমতার স্থায়ী আাসন গেড়ে বসতে চান। জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করেই তারা ক্ষান্ত হয় না, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন রাজনৈতিকভাবে তাদেরকে সরাতে না পারে সে ব্যবস্থাও পাকাপোক্ত করতে সব সময় ব্যস্ত থাকে। এটা ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট্য। তবে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি এতটা বিশৃঙ্খল ও নিয়ন্ত্রণহীন হতে পারেনা। যেমনটা এখন বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে, রাজনীতির কোনো সূত্রেই একে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। ফ্যাসিবাদী রাজনীতিতে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, সরকার, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকার একটি অভিন্ন একক রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে ক্ষমতাসীনদল, সরকার এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতাই নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে চরম বিশৃঙ্খলা ও সাংঘর্ষিক অবস্থাও দেখা যাচ্ছে। এই নিবন্ধ লেখার সময় চোখে পড়ল, টাঙ্গাইলের সখিপুরের একজন আওয়ামীলীগ নেতা স্থানীয় একজন সংসদ সদস্যের জিহ্বা কেটে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। যারা নিজ দলের সংসদ সদস্যকে প্রকাশ্য জনসভায় এমন হুমকি দিতে পারে, তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি কি ধরণের আচরণ করে গত ১৫ বছরে তার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। বিরোধীদলের লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা, হাজার হাজার নেতাকর্মী কারারুদ্ধ, শত শত মানুষ গুম-খুনের শিকার হওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর রিপোর্টে বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থার চরম বিপর্যয়ের চালচিত্র বারবার উঠে এসেছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষিত-অশিক্ষিত যুবক-তরুণ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের বড় অংশ এখন দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে উদগ্রীব। গত সপ্তাহে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরা মানুষের মধ্যে শতকরা ১২ জন বাংলাদেশি। উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে বিদেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে সমুদ্রে ডুবে মরার নিয়তি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে গ্রাস করেছে। এই দেশে এরা তাদের কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না। ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা, বিচারহীনতা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অবক্ষয় ও দুর্বৃত্তায়ণের করালগ্রাস থেকে জাতিকে মুক্ত করতে না পারলে দেশের সম্ভাবনাময় তরুণদের বিদেশমুখী প্রবণতা ও মাইগ্রেশনের ¯্রােত থামানো যাবে না। এক শ্রেণীর মানুষ দেশের টাকা লুন্ঠন করে বিদেশে বিনিয়োগ ও সেকেন্ড হোম গড়ে তুলেছে। স্ত্রী-সন্তানদের বসবাস ও লেখাপড়ার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে তারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচার ও সামাজিক ব্যবস্থাকে কলুষিত করতে দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক ক্ষমতাকে বেছে নিয়েছে।

সদ্য বিদায়ী একজন পুলিশ মহাপরিদর্শকের সম্পদের পাহাড় এবং আনুসাঙ্গিক বিষয়াদির চিত্র চমকে উঠার মতো। রক্ষকরা ভক্ষক হয়ে সবকিছু গ্রাস করার এমন অপরিনামদর্শী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উদাহরণ বিশ্বে আর কোথাও নেই। সম্প্রতি দেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, বিচার পেতে অনেক বিচারপ্রার্থী নি:স্ব হয়ে যাচ্ছে। আদালতে এই মুহুর্তে ৪০ লাখের বেশি মামলা রয়েছে। যার শতকরা ৮০ ভাগই জমিজমার বিরোধ সংক্রান্ত। কোনো কোনো দেওয়ানি মামলা শেষ হতে ১৫-২০ বছর লেগে যায়। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ৪০ লাখ মামলা নিস্পত্তির জন্য দেশে বিচারকের সংখ্যা মাত্র ২ হাজার। প্রতিদিনই বাড়ছে মামলার সংখ্যা। ভূমিদস্যুতা ও কূটিল সামাজিক ষড়যন্ত্রের শিকার সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের অনেকেই জীবদ্দশায় মামলার রায় দেখে যেতে পারেন না। প্রভাবশালী মহলের প্রতিবন্ধকতা এবং আদালতের দীর্ঘসূত্রিতায় বছরের পর বছর ধরে মামলার খরচ যোগাতে গিয়ে নি:স্ব হয়ে তারা পৃথিবী ত্যাগ করেন। ফৌজদারি অপরাধের মামলায় জামিন প্রাপ্তি এখন আইনের ধারা ও অপরাধের প্রকৃতির চেয়ে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচয় মূখ্য হয়ে উঠেছে। মোটা অংকের টাকা খরচ করে যেকোনো অপরাধের শাস্তির হাত থেকে রেহাই পাওয়া কিংবা গুরুতর অপরাধে লঘুদ-ে নিস্তার পাওয়া যেন সাধারণ বিষয়ে পরিনত হয়েছে। এমনকি একজনের অপরাধের দ- আরেকজনের নামে চালিয়ে দিয়ে নিরপরাধ মানুষের জেল খাটার উদাহরণও রয়েছে। রাষ্ট্রে বিচারহীনতা এবং অবিচার পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে চলার একটা অপসংস্কৃতি দশ্যমান হয়ে উঠেছে। সামাজিক-রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ণ, ব্যাপক অর্থ পাচার, মেধা পাচার, নিররাপত্তাহীনতা, পরিবেশগত দূষণ ও টেকসই উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধক হচ্ছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি। আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারলে অন্য সব সমস্যা এমনিতেই দূর হয়ে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তার বোধ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। শিক্ষার জন্য, কর্মসংস্থানের জন্য, চিকিৎসার জন্য, শান্তিতে ও নিরাপদে বসবাসের জন্য স্বদেশ ত্যাগ করে বিদেশে পাড়ি জমানোর সময়কে উন্নয়নের রোল মডেল বলা যায় না। রাষ্ট্রকে নাগরিকের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলা, নতুন প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তির নিরাপত্তা ও পরিচর্যা, মানবিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ, প্রশাসক ও শাসকশ্রেণীর মূল দায়িত্ব। এ দায়িত্বে ক্রমবর্ধমান ব্যর্থতার বোঝা মাথায় নিয়ে আমাদের সরকার ও রাষ্ট্র যেন অদ্ভুত এক উন্নয়নের মহাসরণিতে এগিয়ে চলেছে। মানুষ এ থেকে নিস্তার চায়।

[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বাংলাদেশে সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা, ‘আমাকে শেখাবেন না, বরং আপনারা শিখুন’

বাংলাদেশে সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা, ‘আমাকে শেখাবেন না, বরং আপনারা শিখুন’

চোটজর্জর বার্সাকে নিয়ে চিন্তিত ফ্লিক

চোটজর্জর বার্সাকে নিয়ে চিন্তিত ফ্লিক

বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি বিনিয়োগে দারুণ প্রবৃদ্ধি চীনে

বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি বিনিয়োগে দারুণ প্রবৃদ্ধি চীনে

জাপানে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, সরিয়ে নেওয়া হলো হাজারো মানুষকে

জাপানে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, সরিয়ে নেওয়া হলো হাজারো মানুষকে

জন্মভূমির বিপক্ষে মুরের ফিফটি, মাডান্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড

জন্মভূমির বিপক্ষে মুরের ফিফটি, মাডান্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৮২ রানে থামিয়েও দিনশেষে অস্বস্তিতে ইংল্যান্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৮২ রানে থামিয়েও দিনশেষে অস্বস্তিতে ইংল্যান্ড

পদ্মায় নিখোঁজ নৌপুলিশের সন্ধান মেলেনি ৭ দিনেও

পদ্মায় নিখোঁজ নৌপুলিশের সন্ধান মেলেনি ৭ দিনেও

বেতাগী দরবারে ওরশ আজ

বেতাগী দরবারে ওরশ আজ

সন্ধ্যা হলেই দ্বিগুণ ভাড়া ভোগান্তিতে যাত্রীরা

সন্ধ্যা হলেই দ্বিগুণ ভাড়া ভোগান্তিতে যাত্রীরা

কারফিউ শিথিল করায় টাঙ্গাইলে জনজীবনে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে

কারফিউ শিথিল করায় টাঙ্গাইলে জনজীবনে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে

নদী ভাঙনে ৪৫৮ পরিবারের আহাজারি

নদী ভাঙনে ৪৫৮ পরিবারের আহাজারি

বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে টুকুসহ বিএনপি জামায়াতের ৬ নেতা কারাগারে প্রেরণ

বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে টুকুসহ বিএনপি জামায়াতের ৬ নেতা কারাগারে প্রেরণ

শনিবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী

শনিবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী

মেট্রোরেল স্টেশনে হামলার ঘটনায় আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড

মেট্রোরেল স্টেশনে হামলার ঘটনায় আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড

গণবিরোধী কারফিউ দিয়ে মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে : ডা. মনীষা

গণবিরোধী কারফিউ দিয়ে মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে : ডা. মনীষা

নিহত রুদ্রের নামে শাবির প্রধান ফটকের নামকরণ

নিহত রুদ্রের নামে শাবির প্রধান ফটকের নামকরণ

তিনটি গুলি খেয়ে বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলেটা মরে গেছে’

তিনটি গুলি খেয়ে বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলেটা মরে গেছে’

মালয়েশিয়া ও প্রবাসী আর্ট মেলায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

মালয়েশিয়া ও প্রবাসী আর্ট মেলায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকুন- ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর এমপি

সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকুন- ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর এমপি

কুড়িগ্রামে তিন লাশ দাফন, পরিবারের আহাজারি

কুড়িগ্রামে তিন লাশ দাফন, পরিবারের আহাজারি