ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

ঢাকার জলাবদ্ধতার নিরসন হবে কি?

Daily Inqilab আফতাব চৌধুরী

১৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৩ এএম

ঢাকা নগরীর বহুবিধ সমস্যা বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠীর চোখে ভিন্ন ভিন্ন রূপে ধরা পড়ে। তবে এর প্রভাব থেকে কেউই সম্পূর্ণরূপে মুক্ত নয়, তা সে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত যে কোনো গোষ্ঠীভুক্তই হোক না কেন। সব মহানগরেই সমস্যা আছে, তারতম্য শুধু ব্যাপকতার ও জটিলতার। ঢাকা নগরী অবশ্য এর মধ্যে অদ্বিতীয়। এর অনেক সমস্যা ও জটিলতা মানুষের তৈরি। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা। নগরায়নের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ছাপ জনবহুল নগরী ঢাকায় খুঁজে পাওয়া সত্যিই দুরূহ ব্যাপার। রূঢ় হলেও বাস্তব, নগরী ঢাকা গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। ডিআইটির মাস্টার প্লান সুপরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছিল, কিন্তু এটা বিশেষজ্ঞমহল মানতে চান না। যারা বিদেশে ঘুরেছেন, তাদের অভিমত, ডিআইটি প্রণীত নগরী ঢাকার মাস্টার প্লানের সবচেয়ে বড় খুঁত হলো সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বুড়িগঙ্গা নদীকে কাজে লাগানো হচ্ছে না আজ অবদি। প্রসঙ্গক্রমেই স্থপতিদের কথা উল্লেখ করতে হয়। নগর সম্প্রসারণের কাজ সাধারণত বৃত্তাকারে হয়। কিন্তু ঢাকার সম্প্রসারণ লম্বালম্বি হয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব উন্নয়নশীল দেশেই নগরায়ন হয়েছে নদীকে কেন্দ্র করে। তাইতো আমরা দেখি সিন নদীর দু’পাড়ের প্যারিস নগরী সমভাবেই উন্নত। নদীর দু’পাড়কে কাজে লাগানোর ফলে নগরী অপরিসর রাস্তাঘাট, জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপে বিবর্ণ হয়ে যায়নি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে অবস্থিত ঢাকাকে একটি পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার সবরকম বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও তা গড়ে তোলা হয়নি সুদূরপ্রসারী প্লানের অভাবে।

গত শুক্রবার সকালে ঢাকায় শুরু হওয়া বৃষ্টি দুপুর ১২টায় থেমে যায়; ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্রায় পুরো নগরীই পানির নিচে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে, রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় নগরীর বিভিন্ন অংশে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। অনেক জায়গায় রাস্তা ডুবে গিয়ে প্রথমে ফুটপাত, তারপর বাসা-বাড়ি, অফিস, দোকান-পাটেও পানি উঠে যায়। অনেক স্থানে প্রাইভেটকার, রিকশা, ভ্যান পানিতে ভেসে যেতে দেখা গেছে। অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, বাসের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে আটকে থেকেছে। এমনকি বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ার ৩০ ঘণ্টা পরও রাজধানীর বেশ কিছু এলাকার সড়ক ডুবে ছিল। বিশেষ করে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ ছিল বেশি। বকশীবাজার, চকবাজার, চানখাঁরপুল, হোসেনি দালান, বুয়েট ক্যাম্পাস ও স্বামীবাগ এলাকার বেশির ভাগ সড়কে হাঁটুসমান বা এর কাছাকাছি পরিমাণ পানি ছিল শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকেও। এসব এলাকার অনেক ভবনের নিচতলার বাসিন্দারা দিনভর ব্যস্ত ছিলেন পানি সরানোর কাজে। ঢাকা মহানগরীতে বিগত কয়েক দশক ধরে প্রতি বছরই জলাবদ্ধতার সমস্যা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।

উৎসগত দিক বিবেচনা করলে ঢাকার জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হিসেবে দু’টো বিষয়কে চিহ্নিত করা যায়। প্রথমত, অধিক বর্ষণের ফলে অপেক্ষাকৃত নিম্নভূমি ও পানি নিষ্কাশন সুবিধা বঞ্চিত এলাকাগুলো ডুবে যায়। দ্বিতীয়ত, খাল ও নদীবাহিত পানি ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে গেলে দু’কূল বাহিত করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, প্রকৃতপক্ষে বর্ষা ও বন্যাÑ এর কোনটিই এই জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী নয়। পরিকল্পিতভাবে শহরের উন্নয়নে ব্যর্থতার ফলে আজ এ বিরাট সমস্যা লাখ লাখ মানুষের জন্য বয়ে আনছে অসহনীয় দুর্ভোগ। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শত মাইল নগর সড়ক, বাড়িঘর, পণ্যদ্রব্য। যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে ও মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির। জলাবদ্ধতা আজ একটি বাৎসরিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ, এ ধরনের সমস্যা কিন্তু এ শতাব্দীর গোড়াতে ছিল না। ক্রমাগত অপরিকল্পিতভাবে শহর বিস্তারের ফলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যত্রতত্র বাড়িঘর তৈরি, মার্কেট স্থাপন ও সড়ক নির্মাণের ফলে বর্ষার পানি দ্রুত সরে যেতে পারছে না। তাছাড়া শহরের অভ্যন্তরীণ ও আশপাশের খালগুলো ভরাট করে সেখানে বাড়িঘর কল-কারখানা ও দোকানপাট নির্মাণ করায় বৃষ্টির পানি সরে যেতে বেশ সময় নিচ্ছে। অপরপক্ষে নগরীর খাল ময়লা-আবর্জনা দ্বারা ভরাট হয়ে পানি ধারণ ও পরিচালন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।

ঢাকা প্রাচীন শহর। এক সময়ে এটি একটি পরিচ্ছন্ন ও প্রকৃতিগতভাবে ভারসাম্যপূর্ণ শহর ছিল। যাতায়াত ও পণ্যদ্রব্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হতো নগরীর চারপাশের নদী ও অভ্যন্তরীণ খালগুলো। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী, বালু ও তুরাগ নদী বাইরের সঙ্গে যোগাযোগের পথ ছিল। অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হতো ধোলাই খাল, সেরনী খাল, বেগুনবাড়ী খাল ও টঙ্গী খাল। এই নদী ও খালগুলো শুধুমাত্র যাতায়াতের মাধ্যমই ছিল না, বরং সুষ্ঠু ও দ্রুত পানি নিষ্কাশনে এদের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এই খাল ও নদীগুলো ছিল গভীর ও সংস্কারের জন্য সময়ে সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। কিন্তু কালক্রমে ঢাকা নগরীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিশেষ করে ১৯৪৭-এর ভারত বিভক্তির পর যখন এ নগরী পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী হিসাবে মর্যাদা লাভ করে। দ্রুত জনাগমের ফলে এ নগরীর সমস্যা দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। নগরীর জমির দারুণ অভাব দেখা দেয়। শুরু হয় বিভিন্ন স্থানে নিচু জমি ভরাট করে সেখানে বাড়িঘর তৈরির প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় নগরীর যুগ যুগ ধরে বয়ে আসা স্রোতস্বিনী খালগুলো বাদ পড়েনি। ধীরে ধীরে এ খালগুলো ভরাট হয়ে যায় এবং অপেক্ষাকৃত নিম্নজলাভূমি নিশ্চিহ্ন হতে থাকে। পরিণামে যা হলো, তা হচ্ছে পানি নিষ্কাশন প্রণালীর অভাবে প্রতি বছর বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সমস্যার।

১৯৭১ সালে ঢাকা নগরীকে পরিকল্পিতরূপে গড়ে তোলার জন্য প্রস্তাব করা হয়। একটি মহাপরিকল্পনা প্রণীত হয়। নগরীর নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতার ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে অভ্যন্তরীণ প্রতিটি খালকে সংস্কারের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গতি দানের জন্য এ মহাপরিকল্পনায় জোর সুপারিশ করা হয়। যে খালগুলোর সংস্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়, সেগুলো হচ্ছে, ধোলাই খাল, বেগুন বাড়ি খাল, সেগুনবাগিচা খাল, গিরনী খাল এবং পশ্চিম জাফরাবাদ খাল। কিন্তু এ যাবত এ মহাপরিকল্পনার ভিত্তিতে কোনো খালের সংস্কার কর্মসূচি সম্পন্ন হয়নি। মাঝে মধ্যে কিছু কিছু কাজ কোনো কোনো স্থানে শুরু হলেও সমাপ্ত হয়নি। বরং বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, সেই সমস্ত খাল ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে গেছে। তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনে স্টর্ম স্যুয়ারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যেটা প্রয়োজনীয় পানি নিষ্কাশনের তুলনায় অপ্রতুল হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে এই স্টর্ম স্যুয়ারের নিষ্কাশন পথ বিভিন্ন জায়গায় বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার ফলে সামান্য বৃষ্টির পানিতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং তা পুরোপুরি সরে যেতে প্রায় দু’তিন দিনের মতো সময় লাগে।

বলা যায়, ঢাকা নগরীর মহাপরিকল্পনা ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন সময়ের প্রতিবেদনে যে সমস্ত সুপারিশ দেয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়নি। বরঞ্চ জলাবদ্ধতা সমস্যার গুরুতর অবনতি ঘটেছে। ঢাকা নগরীর খালগুলোর বিভিন্ন জায়গা ভরাট হওয়ায় ও ষ্টর্ম স্যুয়ার তৈরি করার ফলে এসবের প্রাকৃতিক নাব্য ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। প্রয়োজনীয় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এর ফলে ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি স্ফিত হলে এই সমস্ত খালে বর্ষার পানি ঢুকে যায় এবং পানি দ্রুত সরে যেতে পারে না। এই কারণে নগরীর বিভিন্ন জায়গা পানির নিচে ডুবে যায়। এমনকি নগরীর প্রধান সড়কগুলোর বেশ কিছু অংশে ১ থেকে ১.৫ মিটার পানির নিচে চলে যায় এবং যানবাহন চলাচল বিগ্নিত হয়। নগরীর পানি নিষ্কাশন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ সমস্যা গত তিন দশক যাবত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে এবং অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে এর সমাধান করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট। বৃক্ষরোপণে জাতীয় (স্বর্ণপদক ১ম) পুরস্কার প্রাপ্ত।


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা