হই হই রই রই, আওয়ামী লীগ গেল কই
১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। কথায় বলে, সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়। তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত ৯ নভেম্বর শনিবার একটি প্রেস রিলিজের মাধ্যমে ঢাকা ও সারা দেশে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। প্রেস সচিব তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলের বাংলাদেশে প্রতিবাদ করার কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশ নিয়ে কেউ সমাবেশ ও মিছিল করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণাঙ্গভাবে সেটি মোকাবিলা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সহিংসতা বা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গের কোনো প্রচেষ্টাকে বরদাশত করবে না।
এর পূর্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গত রবিবার ১০ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার জিরো পয়েন্টে নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণকে আসার ডাক দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। গত শনিবার দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের পোস্টে বলা হয়, ১০ নভেম্বর আসুন, নূর হোসেন চত্বরে জিরো পয়েন্ট, গুলিস্তান, ঢাকায়। আমাদের প্রতিবাদ দেশের মানুষের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে, আমাদের প্রতিবাদ মৌলবাদী শক্তির উত্থানের বিরুদ্ধে, আমাদের প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে। অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সঙ্গে আপনিও অংশ নিন।
শেখ হাসিনার আপাদমস্তক যখন ১৬ শতেরও বেশি ছাত্র-জনতার তাজা রক্তে রঞ্জিত, রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, তখন তিনি ভারতে বসে নরেন্দ্র মোদির প্ররোচনায় ১০ নভেম্বর বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির আহ্বান জানানোর দুঃসাহস করেন। ৯ নভেম্বর এক অডিও বার্তায় তিনি এই নৈরাজ্য সৃষ্টির আহ্বান জানান এবং ভারত থেকে সেটি বাংলাদেশে গোপন আস্তানায় লুকিয়ে থাকা আওয়ামী লীগারদের কাছে পৌঁছে দেন। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা শেখ হাসিনার এই দুর্বিনীত আহ্বানকে ভাইরাল করে। শেখ হাসিনা তার উস্কানিমূলক অডিওতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীদের বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের রঙ্গিন ছবি A4 সাইজের প্রিন্ট করে সাথে রাখবেন, যারা সেদিন আসবেন সবাই। যাতে বুঝা যাবে ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় তাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে। সবার কাছে ক্যামেরা আছে এমন মোবাইল সাথে রাখবেন। যাতে রাস্তায় কেউ হেনস্থা বা গ্রেফতার করতে আসলে ট্রাম্পের ছবিসহ ভিডিও করতে পারেন। যাতে প্রমাণ করা যায় ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাতে আসা লোকজনকে অবৈধ ইউনূস সরকার বাধা দিচ্ছে। সারাবিশ্বে এটি ছড়িয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সব কিছু কাভার করবে, ভিডিও চিত্র তুলে ধরবে। ১০ নভেম্বরে প্রোগ্রামে কোনো মঞ্চ থাকবে না, হবে গণজমায়েত ও পদযাত্রা। রিক্সায় মাইক থাকবে, হ্যান্ড মাইক থাকবে। দলীয় কোনো প্রকার ব্যানার ফ্যাস্টুন বহন করা যাবে না। একবারে সাধারণ মানুষের মতো আসতে হবে। দলের শীর্ষ নেতাসহ কোনো নেতারই ছবি ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। মহিলাদের ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে ভালো। একটু আগেভাগে এসে বায়তুল মোকাররমসহ আসে পাশের মসজিদগুলোতে অবস্থান নেয়া। ৫ আগস্টের পর যেহেতু এটাই আমাদের প্রথম প্রোগ্রাম সেহেতু সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসুন লাখো জনতা একত্রিত হই। একবার ভয় কেটে গেলে ইনশাআল্লাহ আমরা ঘুরে দাঁড়াবই।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, শেখ হাসিনার এই নতুন ষড়যন্ত্র দৈনিক ইনকিলাব ৯ নভেম্বরের অনলাইন সংস্করণে হুবহু ছাপিয়ে দেয় এবং অডিও ক্লিপটিও প্রকাশ করে। পরদিন ১০ নভেম্বর রবিবার ঐ খবরটি দৈনিক ইনকিলাবের প্রিন্ট সংস্করণেও প্রকাশিত হয়। দৈনিক ইনকিলাব এখানে অত্যন্ত সত্যনিষ্ঠ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিচয় দেয়। কারণ ঐ ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে সমাবেশের ডাক দেয়। শেখ হাসিনার ঐ অডিও ক্লিপ এবং পরদিন তার নির্দেশ মোতাবেক জিরো পয়েন্টে (অনেকে জিরো পয়েন্টকে জিপিও পয়েন্টও বলেন) আওয়ামী লীগের সমাবেশ আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার সচিবালয়ের নজর এড়ায়নি। তাই তারা ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং আওয়ামী লীগের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে।
॥দুই॥
যে যুক্তিতে সরকার আওয়ামী লীগকে সমাবেশ করতে দিতে রাজি নয় এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কোথাও সভা করতে দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সেই যুক্তি অকাট্য। বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী, গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক। রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে যাদের বিন্দুমাত্র জ্ঞান রয়েছে তারা বিলক্ষণ জানেন যে, গণতন্ত্রে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচারের কোনো স্থান নাই। ফ্যাসিবাদ গণতন্ত্রের Antithesis বা সম্মুখ শত্রু। গণতন্ত্র, নিয়মতন্ত্র এবং উদারনৈতিকতার সুযোগ নিয়ে গণতান্ত্রিক পন্থায় ফ্যাসিবাদ একটি দেশের বডি পলিটিক্সে অনুপ্রবেশ করে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই তার ফ্যাসিবাদী চেহারা উন্মোচন করে। ইতালিতে বেনিটো মুসোলিনি একই কাজ করেছেন, জার্মানিতে হিটলার একইভাবে নাৎসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বাংলাদেশেও একই পন্থায় শুধু শেখ হাসিনা নন, শেখ মুজিবও ফ্যাসিবাদ এবং স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আগেই বলেছি যে, ফ্যাসিবাদ হলো গণহত্যা, গুম, খুন এবং ভয়াবহ জুলুমের একটি মতবাদ। হিটলার এই বর্বর নির্যাতন চালানোর জন্য গড়ে তুলেছিলেন গেস্টাপো বাহিনী। শেখ মুজিব গেস্টাপোর আদলে গড়েছিলেন রক্ষী বাহিনী। শেখ হাসিনা পুলিশ এবং র্যাবকে গেস্টাপোর আদলে রূপান্তরিত করেন। নাৎসি হিটলার তার রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মূল করার জন্য কনসেনট্রেশন ক্যাম্প তৈরি করেন। বলতে গেলে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অনেকটা হুবহু আদলে শেখ হাসিনা নির্মাণ করেন আয়নাঘর। এখন গুম ও খুন বিষয়ক কমিটি বলছে যে, আয়নাঘর একটি নয়, অনেকগুলোর সন্ধান তারা পেয়েছে।
ছাত্র লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছিল। জার্মানিতে নাৎসিবাদ কায়েমের জন্য ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর নাৎসি পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়। আজও নাৎসি পার্টি নিষিদ্ধ রয়েছে। ইতালিতে বেনিটো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদকে ৮১ বছর আগে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আজও সেটি নিষিদ্ধই রয়েছে। অথচ, ইতালি এবং জার্মানি আজ পৃথিবীতে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং সুশাসনের রোল মডেল। যে যুক্তিতে জার্মানি এবং ইতালিতে ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদ নিষিদ্ধ রয়েছে সেই একই যুক্তিতে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছিল। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি বলে আজ শেখ হাসিনা ভারত থেকে নৈরাজ্য ও রক্তপাতের উস্কানি দিচ্ছেন এবং বাংলাদেশেও তার আত্মগোপনে থাকা চ্যালা-চামুন্ডারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছেন।
॥তিন॥
গত মঙ্গলবারের কলামে আমি আগাম সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলাম যে, ভারত বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে ডিস্টার্ব করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বর্তমান সরকারকে মেনে নিতে পারেনি। নিজেদের দেশে গণতন্ত্র চালু থাকলেও তারা মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখেছে। গণতন্ত্রের নামাবলী অঙ্গে ধারণ করলেও বাংলাদেশে তারা ১৬০০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং ২০ হাজারের ওপর ছাত্র-জনতাকে আহত ও পঙ্গু করার পরেও এই গণহত্যার মূল হোতা শেখ হাসিনার অবমাননাকর বহিষ্কারকে মেনে নিতে পারেনি। আমরা শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্রকে হালকাভাবে গ্রহণ করতে পারি না। কারণ, নামে তিনি শেখ হাসিনা হলেও তিনি যা করছেন সেটা করেছে মুখোশের আড়ালে ভারত।
ভারতের কয়েকজন নামজাদা কলামিস্ট এবং কয়েকটি নামকরা ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ্যে বলেছিল যে, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ বাংলাদেশে তাদের ভাষায় বিএনপি-জামায়াতকে দমন করার জন্য আরেকটি কাশ্মীর সৃষ্টি করা হোক। অর্থাৎ কাশ্মীরের জনগণ ৯৪ শতাংশ মুসলমান হলেও বর্বর সামরিক শক্তি দিয়ে কাশ্মীরীদের ভারতের পদানত করে রাখা হয়েছে। ৭৮ বছর পার হয়ে গেছে, আজও কাশ্মীরীরা মন থেকে ভারতকে মেনে নিতে পারেনি। আজ যদি কাশ্মীরীদের রায় নেওয়া হয় তাহলে ৯৫ শতাংশ কাশ্মীরী ভারত থেকে আলাদা হয়ে হয় স্বাধীন হতে চাইবে, নয়তো পাকিস্তানে যোগ দিতে চাইবে। ভারত চেয়েছিল বাংলাদেশ কাশ্মীরের মতো তাদের তাবেদার ও পদানত থাকুক। কিন্তু জুলাই ও আগস্টের বিপ্লব তাদের সমস্ত স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে। তাই শেখ হাসিনার ইঙ্গিতে বাংলাদেশের পুলিশ ও র্যাব হানাদার বাহিনীর মতো নির্বিচার গুলি করলেও, হেলিকপ্টার থেকে গুলি বর্ষণ করলেও ভারত আজও রক্ত পিপাসু শেখ হাসিনাকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
সেই শক্তিতে বলিয়ান হয়েই তারা সর্বশেষ জেনেভা বিমানবন্দরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে হেনস্তা করেছে। আওয়ামী লীগকে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক ফ্রন্টে মোকাবেলা করার জন্য ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ফ্রান্সে গিয়ে পিনাকী ভট্টাচার্যের সাথে দেখা করেছেন। অন্যদিকে প্রাবসী ইউটিউবার ও ব্লগার কনক সরোয়ার, ইলিয়াস হোসেন, পিনাকী ভট্টাচার্য, নাজমুস সাকিব এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী প্রোপাগান্ডা মোকাবেলা করবেন বলে নিজেরা ঠিক করেছেন।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের ভিত্তিহীন ও মনগড়া কাহিনী রচনা করে স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমা বিশে^ ছড়িয়েছেন। তার সূত্র ধরে এখন ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ও ত্রিপুরায় ব্যাঙের ছাতার মতো একের পর এক সোশ্যাল মিডিয়ায় গজিয়ে উঠছে, যাদের উন্মাদ প্রচারণা শুনলে মনে হয়, এরা বাংলাদেশে একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির জন্য আদাপানি খেয়ে লেগেছে। এমনকি একটি ভিডিও ক্লিপে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ধরে ধরে জবাই করা হচ্ছে। আরেকটি ভিডিও ক্লিপে বলা হয়েছে যে, চট্টগ্রামে ইসকনের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযানে হিন্দুদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে তাদের সেনাবাহিনী মারপিট করেছে।
গত ৫ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় আওয়ামী শিবিরে বিপুল উল্লাস দেখা গেছে। তারা ট্রাম্পের সহায়তায় আবার হারানো মসনদ ফিরে পাওয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে আছে। অথচ, এই শেখ হাসিনাই বলেছিলেন, তিনি কখনো পালান না। তিনি জনতার রোষানলে পড়ে প্রাণ ভয়ে ভারতে পালিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, মার্কিনীরা সেন্টমার্টিন চায়। সেন্টমার্টিন দিলে তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। তিনি এতদিন দেখিয়েছেন যে, তিনি চরম মার্কিন বিরোধী। সেই হাসিনা এখন ট্রাম্পের ছবি বুকে নিয়ে, তারই দল কর্তৃক সেই ছবিতে আঘাত করার সাজানো নাটকের ছবি ট্রাম্পের কাছে পাঠানোর জন্য উদগ্রীব। তাই ১০ নভম্বেরের ঐ ব্যর্থ মহড়া।
কথায় বলে, শূন্য কলসি বাজে বেশি। এই হই হুলুস্থুল করে হাসিনা ১০ নভেম্বরে বিক্ষোভ সভার ডাক দিলেন, তার ডাকে অজ্ঞাত স্থান থেকে আওয়ামী লীগের পলাতক নাম না জানা ব্যক্তি জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ ডাকলেন। কিন্তু বাস্তবে কী দেখা গেল? ৯ নভেম্বর রাত ১১টা থেকে ছাত্রদল এবং বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সদস্যরা আওয়ামী লীগ অফিস ঘেরাও করে রাখে। ১০ নভেম্বর বেলা ১২টা থেকে জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগের বিচার দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা সভা করে। আওয়ামী লীগ অফিস জিরো পয়েন্ট বা বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আশেপাশে কোনো আওয়ামী লীগ, যুবলীগ বা ছাত্রলীগের একজন সদস্যের টিকিটিরও দেখা পাওয়া যায়নি। তাই ছাত্রদল এবং বৈষম্য বিরোধীরা শ্লোগান তোলেন, ‘হই হই রই রই/ শেখ হাসিনা গেল কই?’, ‘হই হই রই রই/আওয়ামী লীগ গেল কই?’ এই হলো শেখ হাসিনার শূন্যে গদা ঘোরানো।
এখানে একটি কথা বলা অত্যন্ত জরুরি। জুলাই আগস্টের বিপ্লব কোনো বিদেশি শক্তির সাহায্যে হয়নি। আমেরিকা, রাশিয়া বা চীন কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয়নি। আর ভারত তো সব সময় শেখ হাসিনার পেছনে ছিল এবং আজও আছে। তারপরেও যেহেতু দেশের মানুষ ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করতে পেরেছিল এবং জীবন মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য বলে গণ্য করেছিল তাই ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে ঝাড়ে-বংশে উৎখাত করা সম্ভব হয়েছে। এই ঐক্যকে যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে। আমি কোদালকে কোদাল বলতে ভালবাসি। তাই বলছি, ট্রাম্প ইউনূস সরকারের প্রতি বৈরী হবেন কিনা জানি না, তবে নরেন্দ্র মোদি ও ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা ও গভীর বন্ধুত্বের সুযোগ নেবেন নরেন্দ্র মোদি। তাকে দিয়ে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা করবেন। তাই বলে তাতে শংকিত হওয়ার কোনো কারণ নাই।
ধারণা করি, ইন্ডিয়া আর যাই করুক, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সামরিক হস্তক্ষেপ করবে না। ১৯৭১ সালের পটভূমি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটা ২০২৪ সাল। সেই রামও নাই, সেই অযোধ্যাও নাই। রয়েছেন কোটি কোটি বীর জনতা। আর তাদের মাঝে রয়েছে চার কোটি জেন-জেড এবং জেন-আলফা। এরা রক্ত দিতে শিখেছে। ভারত যদি ওপার থেকে বাজপাখির কালো হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে ঐ চার কোটি তরুণ যুবা এবং অবশিষ্ট নারী পুরুষ সেই কালো হাত ভেঙ্গে দেবে। তবে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয়তাবাদী, ইসলামী মূল্যবোধে বিশ^াসী এবং গণতন্ত্রে আস্থাবান আবালবৃদ্ধবনিতার মাঝে শিলা অটল ঐক্য থাকতে হবে। তাহলে কোনো শক্তি বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং সার্বভৌমত্বের ওপর কূ-নজর দিতে পারবে না।
Email: [email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তিলকের সেঞ্চুরিতে টি-টোয়েন্টির নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়ে জিতল ভারত
বসুন্ধরা গ্রুপের চাকরি ছাড়লেন আবু সাঈদের দুই ভাই
মেন্ডিসের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে জয়ে শুরু শ্রীলঙ্কার
রিয়েলিটি শো’র প্রধান বিচারক নাজনীন হাসান খান
অনেক দিন পর সায়ানের একক কনসার্ট
ছাত্র আন্দোলনে ফারুকী ভাইকে মাঠে দেখিনি-হিরো আলম
ঈশ্বরগঞ্জে পুলিশের বিশেষ অভিযানে তিন চোর আটক
আসিফের গানের মডেল গণবিপ্লবের ভাইরাল কন্যা সিঁথি
গাজায় যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে : অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন
বন্য হাতির সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ উপদেষ্টা
সরকারি কৌঁসুলির নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে পটুয়াখালীতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ মিছিল
সরকারি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকদের দিয়ে কাজ করানোর পর বখশিশ দেওয়া প্রসঙ্গে?
শিক্ষা প্রশিক্ষণের সর্বস্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা অত্যাবশ্যক
আল্লামা আলহাজ¦ আবুবকর সিদ্দিকি ফুরফুরাভীর জীবন ও কর্ম
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে আবারও সিন্ডিকেটের আশঙ্কা রামরুর আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ
আখেরাতের বাসিন্দা মানুষ মুসাফির দুনিয়ায়
হযরত রাসূল (সা) ঃ আধার রাতে,আলোর প্রদীপ
প্রশ্ন: মসজিদে পানাহারের শরয়ী বিধান কি?
নোয়াখালীতে বিএনপির তিন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি
পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে জুলাই বিপ্লবে আহতদের অবরোধ