বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় স্বামীর ভূমিকা
১৪ জুন ২০২৪, ১২:২৮ এএম | আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪, ১২:২৮ এএম
এ আবার কি কথা !! বৌ’টার বাচ্চা হয়না, তাতে আমার কিইবা করার আছে !! আমাদের দেশের এক শ্রেণীর পুরুষ সিংহ (!)’র মাঝে প্রায়শঃই এমন মনোভাব পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়। এদেশের এক শ্রেণীর স্বামী’দের এমন এক মনোভাব যেনো তাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে গেঁড়ে বসে গেছে। এঁদের বেশীরভাগেরই ‘ইনফার্টিলিটি সমস্যা’ সম্পর্কে মোটেই ধারণা নেই। এমনকি এক্ষেত্রে তাঁদের করণীয় সম্পর্কেও নেই বিন্দুমাত্র সচেতনতা। এক শ্রেণীর পুরুষ আছেন যারা মনে করেন, বিছানায় তিনি এক দাপুটে স্বামী, সুতরাং সন্তান না হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কোনো দায় থাকতেই পারে না। অনেক সাধের বিয়ে করা ‘বৌ’টাই এর জন্য একমাত্র দায়ী (যদিও পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে, নানা রকম স্পার্মজনিত সমস্যাসহ এঁদের ভেতরই অনেকেই সেক্সচুয়াল ডিসফাংশনে (প্রিম্যাচিউরড্ ইজাকুলেশন - সঙ্গম পূর্ণতা প্রাপ্তির আগেই বীর্যোস্খলন), ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা পুরুষাঙ্গের উত্থান বা সম্ভোগযোগ্য সবল না হওয়া ইত্যাদি নানারকম সমস্যায় ভুগছেন। যেগুলোও সন্তান না হওয়ার পেছনের অন্তরায়। অথচ এঁরাই নির্দ্বিধায় স্ত্রী’কে একতরফাভাবে নিরন্তর গিনিপিগ বানিয়ে চলেছেন। সেইসাথে পারিবারিক, সামাজিকভাবে এমনকি নিজ সংসারেও নারী হচ্ছেন হেয়। নিত্য মানসিক পীড়নে হচ্ছেন ক্ষতবিক্ষত। তাইতো সন্তান প্রত্যাশী পুরুষদের বলবো, সর্বাগ্রে এই দুটো বিষয়কে মাথায় গেঁথে রাখুনঃ
১. সন্তান না হওয়ার পেছনে শুধু আপনার স্ত্রী নন, বরং আপনারও এমন অনেক সমস্যা থাকতে পারে। আর তাই, আপনার সমস্যা চিহ্নিতকরণে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার সিমেন টেস্টসহ আরো অন্যন্য প্রয়োজনীয় ইনভেস্টিগেসশনগুলো কোনো গাফিলতি না করে নির্দ্বিধায় করিয়ে ফেলুন।
২. স্ত্রী’র যদি সমস্যা চিহ্নিত হয় সেক্ষেত্রে সমস্ত চিন্তা-চেতনায়, মন- মনন তাঁর পাশে আরো নিবিড়ভাবে থাকুন তার পুরো ইনফার্টিলিটি জার্নিতে তাঁর হাতটি ধরে রাখুন। মনে রাখবেন, ইমোশনাল সাপোর্ট’সহ আপনার সবধরনের সহায়তা আপনার স্ত্রীকে আরো দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। এই কথাগুলো অন্তরে ধারণ করে রাখুনঃ মাতৃত্ব মেয়েদের মজ্জাগত। প্রতিটা নারী’ই মাতৃত্বের এই আস্বাদ নিতে পাগলপারা হয়ে থাকেন। আর তাই বেবী নেবার কথা ভাবার পর যখন দেখেন, তাঁর সন্তান হচ্ছেনা বা সন্তান ধারণে সমস্যা ধরা পড়ে, তখন তারা ভীষণ দিশেহারা হয়ে পড়ে। একদিকে নিজের সন্তান লাভের উদগ্র বাসনা, অন্যদিকে পরিবার, সমাজের বক্র চাহনি। আর এক্ষেত্রে তার সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে আপনার জন, সবচেয়ে নিরাপদ নিভৃত কোণ ... সেটা কিন্তু স্বামী এই আপনিই। আর তাই সেই হতভাগিনী’র সকল আস্থা, ভরসা, বিশ্বাসের স্থানটি যেনো সামান্যতম টলে না ওঠে, তা যে আপনাকেই লক্ষ্য রাখতে হবে ভাই। মনে রাখবেন, সন্তান প্রত্যাশী এক নারী’র ‘ইনফার্টিলিটি জার্নি’টা যেনো এক “রোলার কোস্টার” প্রতিনিয়ত তা তাঁকে হতাশা, ব্যর্থতা, দুঃখ, বেদনা, ভয়, লাঞ্চনা, গঞ্জনা, গ্লানি, মর্ম যাতনায় দুমড়ে মুচড়ে ছিন্ন ভিন্ন করে প্রতিটা মুহুর্ত এক নিদারুণ ঘুর্ণিপাকে আছড়ে ফেলছে। ভেবেছেন কি, এর পরো কিন্তু আপনি আপনার নাস্তা, জলখাবার, জামা, জুতো সব হাতের কাছেই এগোনো পাচ্ছেন। আর তাই সন্তান না হওয়ার গঞ্জনা’টা যেনো ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হয়ে আপনার দিক থেকেও একটিবারের জন্যেও না আসে সেদিকে খেয়াল রাখুন। স্ত্রীকে আবেগিক সাপোর্ট দিয়ে আগলে রাখুন।
সাধারণত বন্ধ্যাত্বের সমস্যা নিয়ে আমরা যারা কাজ করি, ইনফার্টিলিটি গাইডেন্স তথা চিকিৎসার জন্য আমাদের কাছে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে একসাথেই থাকতে হবে বলে দেয়া হয়। কিন্তু “ও তো খুব ব্যস্ত, অফিসের জন্য আসতে পারেনি ... এমন হেনতেন গাল্ভরা গল্প আমাদের হরদম বিহ্বল করে! ডাক্তারের আপয়েন্টমেন্টে, চিকিৎসায়, কাউন্সেলিং, গাইডেন্সে স্ত্রীর সাথে স্বামী প্রবর’টি থাকলে একদিকে যেমন স্ত্রীটি নিরাপত্তাহীনিতায় ভোগেনা, স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে ঠিক তেমনি স্বামীর সমস্যা, মনোভাব ইত্যাদি চিকিৎসা/ কাউন্সিলিংএর জন্যেও অতি অপরিহার্য। আর তাই স্ত্রীকে একা একা যুদ্ধ ক্ষেত্রের দিকে ঠেলে দেয়া অবুঝ স্বামী’দের বলবো আরেকবার মাথায় রাখুন, সন্তানের বিষয়টি স্ত্রীর একার নয়। আর আপনি শুধু একাই অফিস/ব্যবসা নিয়ে ব্যাপৃত নন, আরো অনেকেকেই এসব করেও স্ত্রীর প্রয়োজনে তাঁর সাথেই আসছেন। সবার আগে আপনার “প্রায়োরিটি” নির্ধারণ করুন, আপনার সন্তান প্রয়োজন কিনা? যদি মন বলে না, তবে শুধু শুধু স্ত্রীকেই বা একাকী ঠেলে দেয়া কেনো! বরং আপনার প্রিয় মাতা, ভগ্নী, ভ্রাতা, পরিবার ও সংশ্লিষ্ট সমাজকে সদর্পে আপনার ইচ্ছেটি ঘোষণা দিয়ে দিন। এতে করে অন্তত সেই বেচারী দায়মুক্ত হবেন। আর যদি সত্যিকার অর্থে আপনারও সন্তান লাভের ইচ্ছে থেকে থাকে, ওসব খোড়া যুক্তি শিকেয় তুলে ‘মানিক জোর’ হয়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিটা পদেক্ষেপে স্ত্রীর সাথে, তার পাশেই থাকুন।
দেশীয় প্রেক্ষাপটে ইনফার্টিলিটি ইস্যু’টা যেনো অঘোষিতভাবে মেয়েদের ওপরই বর্তে যায়, এতে করে সেই মেয়েটি ‘গোদের ওপর বিষ ফোড়া’র মতো সিভিয়ার লোনলিনেসে ভোগে, আর এই একাকীত্ব থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, অহরহ বিভ্রান্তও হয়। তাই শুধু এডাক্তার থেকে সেডাক্তার, ওষুধ কেনা, গেলানো, গাদাগাদা টেস্ট এসব করেই দায় সারা নয় বরং ছায়া হয়ে স্ত্রীর পাশে থাকুন, স্ট্রেস, ডিপ্রেশন থেকে তাকে দুহাত বাড়িয়ে আগলে রাখুন। দেখুননা, সেই তিনিই কতো চট করে বন্ধ্যাত্বের অভিশাপ মুক্ত হয়ে দুজনের জীবনকেই মধুময় করে তুলবে। ইনফার্টিলিটি সমস্যায় নারী পুরুষ উভয়েরই ভূমিকা সমানে সমান। আর তাই যখন দুজনের একজনের যে কারোরই সমস্যা ধরা পড়ুক না কেনো, নিজেদের একটা “টীম হিসেবে” দেখার চেষ্টা করুন। একে অন্যকে যথাসাধ্য মানসিক সমর্থনসহ সম্ভ্যাব্য সব ধরণের সহায়তা দিতে সচেষ্ট হোন। এই টীম ইফোর্ট’ই আপনাদের ইনফার্টিলিটি যুদ্ধে জিতিয়ে দিবে।
ইনফার্টিলিটি চিকিৎসার সাথে ‘ফাইনান্সিয়াল স্ট্রেইন’ টা ভীষণভাবে জড়িত। কেনোনা কখনো কখনো এই ট্রিটমেন্ট খুব এক্সপেনসিভ হয়ে ওঠে। তাই একজন হাসবেন্ডের উচিত নিজেদের সঙ্গতি, সামর্থ্য বিচার করে দুজনে একসাথে বসেই তাঁদের চিকিৎসা বিষয়ে একটা কমপ্লিট প্লানিং করে নেওয়া। যা দেখেছি, তাতে করে ইনফার্টিলিটি চিকিৎসার বিষয়ে এদেশের ‘ফিমেল পার্টনার’ই সবচেয়ে বেশী মাঠ দাপিয়ে বেড়ান। যেখানে এসব নিয়ে একটু কথা, একটা উইন্ডো খোলা দেখলো, একটু ধোঁয়া উঠতে দেখলো, অমনি বিভ্রান্ত হয়ে, না জেনে না বুঝেই চোখ বন্ধ করে তাঁরা যেনো পংগপালের মতো সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েন! অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে এক শ্রেণীর ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নানা রকমের সরেস মূলো’র প্রলোভনতো রয়েছেই। ভিন দেশ থেকেও অনেকেই একই উদ্দেশ্য নিয়ে জাল বিছিয়ে চলেছে। আর তাই একজন হাসবেন্ড’কে এবিষয়ে সচেতনতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে, দেখতে হবে তার স্ত্রী আবেগের বশে হুজুগের বশে প্রকৃত অর্থে কোথায় ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। খোঁজ খবর নিয়ে, এনিয়ে ঘাঁটাঘাটি করে প্রকৃত অর্থে তাদের জন্য কোন পথ’টি কার্যকরী তা চিহ্নিত করে দুজনে একসাথে সেই পথে এগোনো। নিজেরা তা না পারলে এর তার কথায় কান না দিয়ে প্রফেশনাল হেল্প নেওয়া বাঞ্ছনীয়। আর তাইতো শুধু সাংসারিক প্রয়োজনের গন্ডীতে সীমাবদ্ধ থেকেই নয়, বরং স্ত্রীর সাথে গভীর, নিবিড় মানসিক যোগাযোগ রেখে নিজেদের সম্পর্কের সমঝোতা বাড়িয়ে আত্মিক বন্ধনকে আরো মজবুত করুন।
নতুন ডাক্তার/ওষুধে তার আগের চেয়ে ভালো কাজ করছে কিনা, কেমন ফীল করছে, ওষুধ ঠিক মতো খাচ্ছে কিনা, কোনো অসুবিধে হচ্ছে কিনা, একজন জার্নালিস্টের মতো তাঁর মনের অলিতে গলিতে ঘুরে নিজ স্ত্রীর মনের খোঁজ খবর রাখুন। স্ত্রী গৃহিণী বা কর্মজীবি যাই হোকনা কেনো, গৃহকর্মে তাঁকে সহায়তা করুন, দুজনের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে নিজের ইন্টারেস্ট, ইনভলভমেন্ট বাড়ান। জানবেন, আপনার এটুকু মানসিক সাপোর্টেই তিনি আরো কনফিডেন্ট হয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন। শুধু মাত্র স্ত্রীর ইনফার্টিলিটি সমস্যা রয়েছে বলে বেবী হচ্ছেনা, এধরণের মনোভাব মুখে আনাতো দূরের কথা, ক্ষুণাক্ষরে মনেও আনবেন না। মনে রাখবেন, আপনার স্ত্রী এমনিতেই হালভাঙ্গা এক নাবিক, হারিয়েছে দিশে। এই বিপন্ন বেচারীকে এসব নিয়ে একটুও বিপন্ন করা নয়, বেবী না হওয়ার জন্য তাকে একবারের জন্যও ব্লেম করা নয় ঠাট্টাচ্ছলেও পুনর্বিবাহের ইচ্ছে ব্যক্ত নয়। এমনিতেই ইনফার্টিলিটি সমস্যায় ভোগা মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি একটি খুব কমন ভীতি। আর সেই ভীতিতে না বুঝে হাওয়া দিলে আপনার সন্তান লাভের প্রত্যাশা সেই সাথে সংসারের সূর্যটাও পশ্চিমাকাশের দিকেই হেলে পড়বে। মাতা-পিতা, ভগ্নী, ভ্রাতা, পরিবার ও সংশ্লিষ্ট সমাজের অহেতুক হাসি, ঠাট্টা, কৌতুহল, রোষানল থেকে স্ত্রীকে আগলে রাখুন।
মনে রাখবেন, আপনি যেখানেই থাকুন না কেনো, আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যে আপনি পরিবার গড়ে তুলেছেন সেটাই এখন সর্বাগ্রে বিবেচ্য। সন্তান লাভের ক্ষেত্রে নিজের সমস্যা চিহ্নিত হলে, সৎসাহস থাকলে নির্দ্বিধায় আপনার পরিবারকে তা জানিয়ে দিন। সেটুকু সৎসাহস না থাকলে বা যদি স্ত্রীর সমস্যা থেকে থাকে, তবে বীরদর্পে তা ঘোষণা থেকে বিরত থাকুন। বরং সব সময় সযতেœ খেয়াল রাখুন, নিজ পরিবার, পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন বা কোনো সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে যেনো কেউ এমন বিব্রতকর প্রশ্ন না তুলে আপনার স্ত্রীকে হেয় ও বিপন্ন করতে না পারে। একান্ত সেরকম প্রশ্ন আপনার স্ত্রীর উপস্থিতিতে এমনকি অনুপস্থিতিতে কোথাও কখনো উঠলে স্মার্টলি বলুন, এটাতো আমাদের পার্সোনাল প্লানিং। বেবী নেওয়ার বিষয়টি এখনো ভাবছিনা, দুজনে আরেকটু গুছিয়ে নেই। আপনাকে বিব্রত ও নিজেরা আমোদ পাওয়ার লক্ষ্যেই বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এধরণের প্রশ্নের অবতারণা হয়। আপনি নির্বোধ হলে সে ফাঁদে পা দিবেন, আর নিজ ও স্ত্রীর সম্মানের কথা মনে করলে এভাবেই সেসব অতিউৎসাহী মুখে ভদ্রভাবে ঝাঁটা মারবেন।
ইনফার্টিলিটির সমস্যার ক্ষেত্রে বিশেষ করে সন্তান প্রত্যাশীদের ‘ওভুলেশন ক্যালেন্ডার” মেইন্টেইন করে ‘ শারীরিকভাবে মিলিত হওয়া” অতি অত্যাবশ্যকীয়। প্রতিটা হাসবেন্ডেকে এসময় নিজ দায়িত্বেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে, দায়সারা গোছের নয় বরং মনে রাখতে হবে, সময়মতো একটা মধুর যৌনমিলন অচিরেই তাদের ইনফার্টিলিটি সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সন্তান প্রত্যাশী আমাদের অনেক বন্ধুদের ক্ষেত্রে আমি বলে থাকি, নিজেদের ‘ওভুলেশন ডেট’ টাকে সামনে রেখে দু/তিনটে দিন শুধু দু’জনে জাস্ট কোথাও হারিয়ে যাও। নিজেদের মতো করে কাটিয়ে এসো, সেই সাথে মধুরতমভাবে ইউটিলাইজ করো নিজেদের এই মহার্ঘ্য সময়টিকে। অনেকেই তার সুফল হাতেনাতেই পেয়ে গেছেন। তাই আদর্শ হাসবেন্ডকে বলবো, বিষয়টি মাথায় রাখুন, নিজেদের নতুন করে আবিস্কার করার পাশাপাশি এমন একটি পরিকল্পনা আপনাদের সামনে এক নতুন দিগন্তের উম্মোচন করবে। সেইসাথে একটা কথা মনে রাখবেন, বিভিন্ন ধরণের মানসিক চাপ এবং কখনো কখনো ইনফার্টিলিটি চিকিৎসায় প্রদেয় বিভিন্ন হরমোনের ওষুধ, ইঞ্জেকশনের প্রভাবে আপনার স্ত্রীর সাময়িকভাবে মন-মেজাজের হেরফের, পরিবর্তন (মুড সুইং) এবং নানা রকম আবেগিক পরিবর্তন বা প্রকাশ ঘটাতে পারে। “তুমিতো আর আগের মতো নেই” এমন না ভেবে বরং তাঁর এই অবস্থায় আরো নিবিড়ভাবে তাঁর পাশে থাকুন তাঁকে ইমোশনাল সাপোর্ট দিন। “ ইনফার্টিলিটি মেয়েদের ক্ষেত্রে একটা “ব্রোকেন ড্রিম” হিসেবে তাঁদের ক্ষতবিক্ষত করে। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখেছি, তারা ভেবে বসেন, শুধু এজন্যই বুঝিবা তাঁর হাসবেন্ড তাকে আর আগের মতো ভালোবাসেন না, কেয়ার করেন না। আর এমন ভেবে নিজেদের আরো হতাশায় নিমজ্জিত করে। আর তাই প্রয়োজনে মাঝে মধ্যেই নিজেদের দাম্পত্য জীবনের “রিফ্রেস” বাটনে চাপ দিন, নিজের এবং স্ত্রীর ক্লান্তি, ক্লেশ, হতাশাসহ সব ঋণাত্মক অবস্থাগুলো গার্বেজ বিনে নিক্ষেপ করে নিজেদের মধুরতম দিকগুলো নতুন করে আবিস্কারে মেতে উঠুন। ইনফার্টিলিটি থেকে বেড়োনোর কোনো মহামন্ত্র নেই। একদিনেই এ থেকে পরিত্রাণ মেলে না। আমি সব সময় বলে থাকি কার ‘ইনফার্টিলিটি জার্নি’টি ঠিক কতো স্বল্প বা দীর্ঘতম হবে, তা অনেকাংশেই সেই কাপল’টির ওপরই নির্ভর করে। আর স্ত্রীর পাশে স্বামী যখন এমন “রোল প্লেয়িং” ভূমিকায় অবতীর্ণ হোন তখন তা হয়ে ওঠে আরো ত্বরান্বিত। আর তাইতো বলবো, সমস্ত দ্বিধা কাটিয়ে মনের নরম পরশ বুলিয়ে বলে উঠুন, “হে অর্ধেক আকাশ’, তোমার পাশে থেকে, তোমাকে সাথে নিয়েই দু’জনে কাটিয়ে উঠবো আমাদের সব অন্ধকার, আত্ম গ্লানি’তে নয় দোষারোপে নয় - উদ্ভাসিত হয়ে দুজনের আপন মহিমায়।
রফিক-উল-আলম
ইনফার্টিলিটি কাউন্সেলর ইমপালস হাসপাতাল, ঢাকা।
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কালীগঞ্জে বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ফুলের শুভেচ্ছা জানালেন হামিদ
পর্ন তারকা স্টর্মিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘুষ প্রদান মামলার রায় স্থগিত করলো আদালত
দৌলতপুরে মাদকাসক্ত যুবকের হাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন : যুবক আটক
রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বিক্ষোভ, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা
পবিত্র কোরআন শরীফের পরে সত্য হিসেবে মানুষ সংবাদপত্রকে মনে করতো-বিটিভি মহা পরিচালক
লালমোহনে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে ৭০ বছরের বৃদ্ধ নিহত
বিচারের আগে ফ্যাসিস্ট আ. লীগের রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ নেই : নাহিদ
ড. ইউনূসকে নিয়ে এক দশক আগে যা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুতের তারের স্পর্শে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
লেবাননে জাতিসংঘ মিশনে হামলা, চার ইতালীয় সেনা আহত
এ আর রহমানের নামে মিথ্যাচার রটানোর অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ ঝাড়লেন ছেলে এ আর আমিন
ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোন ধর্মই নিরাপদ ছিল না-এড.আহমেদ আযম খান
শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন বাধ মানে না এমন ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত আছে : পুতিন
ঢাকা আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় চতুর্থ
পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, হচ্ছে মামলা
ছয়-সাত মাসেই টিয়ার কাবিখার ২০০ কোটি লুটেছিলেন হাসিনা দোসর মহিবুর
আদানির দুই চুক্তি বাতিল করলো কেনিয়া
হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে ক্ষতবিক্ষত বাবুকে থাইল্যান্ড নেয়া হচ্ছে
দীর্ঘ ১৭ বছর পর মানিকগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত
কলাপাড়ায় নিম্নবিত্তদের স্বস্থি দিতে স্থাপন করা হলো সরাসরি কৃষকদের সবজি বাজার