ঈদে নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে হবে
১৮ জুন ২০২৩, ০৯:০৪ পিএম | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম
বহুল আলোচিত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের রাজধানীর উত্তরার হাউজ বিল্ডিং থেকে টঙ্গীর কলেজগেট পর্যন্ত ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার। গত বছর নভেম্বরে হাউজবিল্ডিং থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত ২ দশমিক ২ কিলোমিটার ফ্লাইওভার চালু করা হয়। আর গত শনিবার স্টেশন রোড থেকে কলেজগেট পর্যন্ত বাকী ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যানজট নিরসন এবং আসন্ন ঈদুল আজহার গরুবাহী ট্রাক যাতায়াত এর ফলে সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১২ সালে শুরু হওয়া বিআরটি প্রকল্পের অধীন ২০১৬ সালে বিশেষ বাস চলাচলের কথা ছিল। কিন্তু আজো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম বিমানবন্দর-গাজীপুর-জয়দেবপুর সড়কে এই প্রকল্পের কাজ চালু থাকায় যানজট ও জনদুর্ভোগ নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়। যা হোক, অবশেষে জানা গেছে, প্রকল্পের কাজ ৯১ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ শেষ হতে আরো কয়েক মাস লাগবে এবং এ বছরের শেষ নাগাদ পুরো প্রকল্পের সুবিধা মানুষ লাভ করতে পারবে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ফ্লাইওভার উদ্বোধন করে বলেছেন, একটি জটিল অংশ, যেটা খুব বেশি ভোগান্তির কারণ হতে পারে, সেটার সাড়ে চার কিলোমিটার এলিডেটেড অংশ ঈদের আগে খুলে দেয়া হলো। এখন এটা অনেক কাজে আসবে। মানুষের ভোগান্তি কমবে। মন্ত্রীর সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করি। ঈদের সময় প্রতি বছর সড়ক-মহাসড়কে যানজট মারাত্মক আকার নেয়। বিপুল সংখ্যক মানুষ শহর ছেড়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যায়। মালামাল পরিবহন, বিশেষ করে ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুবাহী যানবাহন চলাচলও বেড়ে যায়। এবার বিআরটির ফ্লাইওভারটি চালু হওয়ায় অন্তত ঐ রুটে চলাচল যে আগের চেয়ে সহজ হবে, তাতে সন্দেহ নেই। এর প্রভাব অন্যান্য সড়ক-মহাসড়কেও কম-বেশি পড়বে।
দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা খুব ভালো নয়। অধিকাংশই ভাঙ্গাচোরা ও খানাখন্দকে পূর্ণ। যান চলাচল অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। ঈদের আগেই এসব মেরামত ও সংস্কার করা দরকার ছিল। বর্ষাকালে সড়ক-মহাসড়কের সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। ভাঙ্গাচোরা সড়ক-মহাসড়ক পানিতে ডুবে গেলে আর চলাচলের উপযুক্ত থাকে না। এজন্য বর্ষার আগেই মেরামত-সংস্কারের কাজ শেষ করা উচিত। এবার অর্র্থাভাবে সড়ক-মহাসড়কে সংস্কার-মেরামতের কাজ তেমন হয়নি। ফলে সঙ্গত কারণেই আশংকা করা হচ্ছে, এবার ঈদের সময় মানুষের দুর্ভোগ-বিড়ম্বনা বাড়বে। এর মধ্যেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন মহাসড়কে যান চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দীর্ঘ যানজট লেগে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ইনকিলাবে প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, যান চলাচলে বিশৃংখলা আর দখলবাজির কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায়ই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এবং মানুষ দুর্ভোগে পড়ছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতে, দিনকে দিন সমস্যা বাড়ছেই। মহাসড়কের পাশে হাটবাজার, অবৈধ গাড়িপার্কিং উল্টো পথে চলাচল এবং অবৈধ স্থাপনা ইত্যাদি সমস্যাকে কঠিন ও জটিল করে তুলছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে, কেবল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেই এহেন পরিস্থিতি নয়, অন্যান্য মহাসড়কেও একই অবস্থা বিদ্যমান। ঈদে গৃহযাত্রা শুরু হলে এবং পশুবাহী যানবাহন চলাচল বেড়ে গেলে যানজট পরিস্থিতি আরো শোচনীয় হয়ে পড়বে। সড়ক-মহাসড়ক যানবাহন চলাচলের জন্য। যানবাহন যাতে নির্বিঘেœ-নির্বাধে চলাচল করতে পারে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর। সড়ক-মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে হাটবাজার- দোকানপাট গড়ে উঠবে, সড়ক-মহাসড়ক দখল করে যানবাহন জড়ো করে রাখা হবে, বা তা অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে, এটা হতে পারে না। সড়ক-মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ, থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি কেউই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না।
ঈদের সময় যানজট ও জনদুর্ভোগ বাড়ার আশংকা উদ্বেগজনক। গত ঈদুল ফিতরে সড়ক-মহাসড়কে যানজট তেমন একটা দেখা যায়নি। মানুষ যথাসময়ে বাড়ি যেতে ও কর্মস্থলে ফিরতে পেরেছে। এর একটি বড় কারণ ছিল, ওই ঈদে ছুটি বেশি ছিল। ঈদযাত্রীরা নিজেদের সুবিধামত ভ্রমণের দিন নির্ধারণ করে নিতে পেরেছিল, আবার ফিরতেও পেরেছিল। এই ঈদে ছুটির দিন কম হওয়ায় যাতায়াতে ভীড় ও ত্রস্ততা দেখা দিতে পারে। একারণে যানজটও অবধারিত হয়ে উঠতে পারে। যাতে সেটা না হয়, সেজন্যে এখনই সড়ক মহাসড়কের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যানজটের কারণ হতে পারে, এমন সবকিছু সড়ক-মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করে দিতে হবে। অবৈধ হাটবাজার-দোকানপাট, স্থাপনা, পার্কিং-কোনো কিছুই যেন না থাকে। একই সঙ্গে সড়ক-মহাসড়কের ভাঙ্গাচোরা অংশ, খানাখন্দক মেরামত ও সংস্কার করতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। গত ঈদে সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিকের ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। এবার ট্রাফিকের ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যানবাহন চলাচলে বিশৃংখলা যানজটের একটি বড় কারণ। যান চলাচলে শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের। সেই সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশরেও। তাদের সর্বদা তৎপর ও সক্রিয় রাখতে হবে। যে কোনোমূল্যে মানুষের যাতায়াত নিরাপদ সহজ ও মসৃণ করতে হবে। কর্তৃপক্ষগুলোকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতে ১৬ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
গণহত্যার পূর্ণাঙ্গ তথ্য জাতিসংঘকে দিতে নাগরিক কমিটির দাবি
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮ ফিলিস্তিনি নিহত, পশ্চিম তীরে সংঘর্ষ অব্যাহত
এনসিটিবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ছুটি বাতিল
বড়দিনে ভারতকে ‘দুঃসংবাদ’ শোনালো অস্ট্রেলিয়া
প্রেমিকের মৃত্যুর খবরে প্রাণ দিলেন প্রেমিকা
ব্রাজিলে সেতু ধস: নিহত ৪, নিখোঁজ ১০
যুদ্ধকালীন ইউক্রেনের ডাকটিকিট, সাহসিকতার ভাষায় দেশপ্রেম ও প্রতিবাদের প্রতীক
বিচ্ছেদ হতে না হতেই আবারও একসাথে তারকা জুটি বেন-লোপেজ
হাইতির হাসপাতালে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত তিনজন
ছাত্রদলের কমিটি : ঢাকা কলেজের সামনে ৭টি ককটেল বিস্ফোরণ
আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ১৫
গুম হন কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খালেদ হাসান
বিদেশি ভুল তথ্য ঠেকানোর মার্কিন সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ
চাঁদপুরে জাহাজে সেভেন মার্ডারের ঘটনায় মামলা
গাজায় বড়দিনে শান্তির জন্য প্রার্থনা, নিহতের সংখ্যা ছাড়লো ৪৫ হাজার
স্ত্রী-সন্তানসহ শাহরিয়ার আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মোজাম্বিকে বাংলাদেশিদের ৩শ' ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর
অতিসত্বর নির্বাচন হওয়ার দরকার : আমীর খসরু
দুর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে : মেজর হাফিজ