সড়ক দুর্ঘটনা ও বাস্তবতা
১৮ জুন ২০২৩, ০৯:০৭ পিএম | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম
দিন তারিখ ঠিক মনে নেই, খুব সম্ভব ম্যাট্রিক পরীক্ষার সময় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন এসেছিল Write a letter to the Editor of a local newspaper about frequent road accident in your locality.যার বাংলা অনুবাদ হলো ‘তোমার এলাকায় ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকের কাছে একখানা পত্র লিখ।’ পত্রটি ছোটবেলা নিজে শিখেছিলাম। জাপানের পরীক্ষায় যখন প্রশ্ন আসে, পরমাণু বোমার প্রস্তুতপ্রণালী কিংবা কাঁচামাল সম্পর্কে লেখো, ঠিক সেই যুগে আমাদের রচনা পড়াতে হয়, দেশের বন্যা ও তার প্রতিকার, পরিবেশ দূষণ, এলাকায় বিদ্যুৎ সঙ্কট, পানীয়জলের সঙ্কট, বেহাল পথঘাট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে পত্রলিখন ইত্যাদি। তুলনায় যেতে চাইব না। তবু বলতে হচ্ছে, একবিংশ শতাব্দীতে এসে বিজ্ঞানীরা যখন মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর চিন্তাধারা করছেন, ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে আমাদের অবস্থানকে বিচার করলে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হয়। যাই হোক, দুঃখ শুনিয়ে লাভ নেই। শুরু করেছিলাম সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে পত্র লেখা নিয়ে।
বেশ কিছুদিন আগে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ক’জন ছাত্র প্রাণ হারিয়েছে। এদের কেউ না কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নয়তো বিজ্ঞানীও হতে পারত। এর আগে অন্য জায়গায় হারালাম আরও দু’জনকে। দু’দিন পর ঢাকায় ঘাতক ট্রাকের ধাক্কায় হারালাম আরেক দম্পতিকে। সিলেটে মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেল আরো দু’জন। এ যেন মৃত্যুপুরীতে অঘোষিত মৃত্যুমিছিল। যানবাহনগুলো যেন আস্ত এক একটা যমদূত। কে কার আগে কত দ্রুত দৌড়ায়! যেন জীবন বিলানোর অভিশপ্ত প্রতিযোগিতা, আপাতত যা অপ্রতিরোধ্য। ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনা দেশে এখন স্বাভাবিক ঘটনা। জায়গা বদল হলেও প্রায় বেশিরভাগ কাহিনীর চিত্রনাট্য এরকম: দুর্ঘটনার পর মৃতদেহ রাস্তায় রেখে পথ অবরোধ। এরপর ছুটে যান ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার কিংবা প্রশাসনের কোনও বড় কর্মকর্তা। ঘটনাস্থলে উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে এডিসি অগত্যা ফোন কানে ঝুলিয়ে বলেন, ‘ডিসি, মন্ত্রী নতুবা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আপনাদের সব দাবি মানা হবে। ব্যস।’ অন্য জেলার বা গ্রামের কথা না-ই বললাম, শুধুমাত্র আমাদের শহরেই গত দু’বছরে ঘটা ১২টি দুর্ঘটনায় ৯ জন মানুষ প্রাণ হারালেও আজ অবধি সরকারের তরফে এক টাকাও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। গাড়ির ইন্স্যুরেন্স ঠিকঠাক আছে, আছে চালকের লাইসেন্স। অতএব চালক আত্মসমর্পণ করায় মালিক, চালক উভয়েই পার পেয়ে গেছেন। মানুষ মরল তো কী! ইতোমধ্যে গাড়ি মেরামত করে চালককে বাড়ি পাঠিয়ে দিল মালিক কিংবা সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনায় মারা যায় মানুষ। আমরা আওয়াজ তুলছি। ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। নেতা-মন্ত্রীরা শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ নিয়ে সমবেদনা জানাচ্ছেন। ব্যস, দায়িত্ব শেষ। কিছুদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর মৃতদের নাম চলে যাবে অতীতের খাতায়। পুরোদমে আগের মতো সবকিছু চলবে।
প্রশ্নটি হলো, আমরা কি একবারও ভেবেছি এসব সড়ক দুর্ঘটনা কেন এবং এর সমাধান কীভাবে করা যায়? সড়ক দুর্ঘটনার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ক’দিন চিন্তা করেছে? কোনও পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে? মাঝে-মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তার সমাধানে আন্তরিকতা পরিলক্ষিত হয়নি। ভয়াবহ পথদুর্ঘটনা রুখতে আজ অবধি প্রণয়ন করা সব রকমের আইন মাঠে মার খাচ্ছে, যার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পুলিশ-জেলা প্রশাসনের খামখেয়ালিতে যাচ্ছে শত শত প্রাণ।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের মেঘালয় সরকার যদি তাদের ন্যাশনাল হাইওয়েতে ঘন ঘন স্পিড ব্রেকার বসাতে পারে, তা হলে আমাদের দেশের রাস্তা-ঘাটে স্পিড ব্রেকার বসাতে আপত্তিটা কোথায়? আমাদের হাইওয়েগুলো সিঙ্গাপুর, না কাতারের রাস্তা? এখানে কেউ কি ১৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করে অফিস করে? সত্যিই কি এ দেশের মানুষের সময়ের দাম প্রশাসনের কাছে এত বেশি? হয়তো বা মেনে নিতাম যদি আমজনতার মূল্যবান সময়কে ট্র্যাফিক জ্যামে, বিভিন্ন অফিসে, হাসপাতালের বারান্দায় নতুবা ব্যাঙ্কের লাইনে গড়াগড়ি করা অবস্থায় না দেখতাম।
দেশের ট্রাফিক এবং রোড ট্রান্সপোর্ট অফিসগুলো দুর্নীতির আঁতুড়ঘর। দিনমজুর থেকে লাইসেন্স সই করে এনে সিলেটে আবাল চালকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ইদানীং এই সিস্টেমে কিছুটা হলেও পরিবর্তন ঘটেছে, তবে পুরোপুরি নয়। শুধু যে সেদিন ট্রাকের ধাক্কায় মাইক্রোবাস খাদে গেছে তা নয়, প্রতিদিন এ দেশের অলিগলিতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অটো, মটরসাইকেল, ছোট গাড়ি, পণ্যবোঝাই লরি, টুকটুকি, বাইক ইত্যাদি রকমারি বাহন। আহতদের খবর পত্রিকায় না এলেও সারা জীবনের জন্য হাত, পা, কোমর ভেঙে ঘরে বসে থাকা লোকের সংখ্যা কম নয়। কেউ নকল হাত-পা লাগিয়ে দুনিয়া দেখার তিক্ত স্বাদ অনুভব করে আফসোস করছে, এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে চলে যাওয়াটাই ভালো ছিল। বন্ধুবান্ধবের মধ্যে প্রতিদিন অনেকের গায়ে, চোখে, মুখে, পায়ে, হাতে অ্যাক্সিডেন্টের দাগ দেখলে নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হয়।
এ দেশের চালকরা বেপরোয়া। অপ্রাপ্তবয়স্ক, সিংহভাগ অবিবাহিত এবং মাদকাসক্ত। যোগ্যতাকে খাটো না করে বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলছি, জেনারেল শিক্ষায় ব্যর্থ হলে তবেই তাদের সিংহভাগের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় গাড়ির স্টিয়ারিং। সুতরাং, জীবনের মূল্য তাদের বোঝার কথাও নয়। গাড়ি চালানোর জন্য তাদের কোনও পরীক্ষায়, প্রশিক্ষণে বসতে হয় না। প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, দেশের ৮০ শতাংশ চালক রাতের আঁধারে লাইটের ব্যবহার জানে না, ৭০ শতাংশ উৎকোচের বিনিময়েই ৩ টনা ট্রাকে ৭/৮ টন মালামাল নিয়ে বুক ফুলিয়ে রাস্তার উপর দিয়ে বেপরোয়াভাবে যাতায়াত করে। ডান-বাম, নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করে না কেউই। এসব দেখার যাদের দায়িত্ব তারা তো উপরিতেই সন্তুষ্ট। অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সততা, আন্তরিকতা এবং দেশপ্রেম থাকলে দেশে প্রতিবছর এত মানুষের প্রাণহানি ঘটতো না এবং সম্পদ বিনষ্ট হতো না। ইন্ডিকেটর, সিগনাল, ওভারটেক সম্পর্কিত কমনসেন্স নেই। ক’জন ড্রাইভারের পায়ে জুতো থাকে? ক’জন বেল্ট চাপিয়ে গাড়ি চালায়? এখানে গাড়ি চালাতে হলে যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। চালকদের গড় বয়স কোনও অবস্থায় ৩০-এর উপর হবে বলে মনে হয় না। কী করছে পরিবহন বিভাগ? মাঝে-মধ্যে টাকার অভাব দেখা দিলে বাইকের হেলমেট আর কাগজ খুঁজলেই ল্যাটা চুকে যায়? ইলেকশন আর স্বাধীনতা দিবস এলেই নিরাপত্তার দরদ উথলে ওঠে। জগাখিচুড়ি চালকদের বাড়বাড়ন্তের মূলে দেশের পুলিশ বিভাগেরও একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ট্রাফিক কড়া হলে সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকটা লাগাম টানা যেত। এখানে নিয়মের বালাই নেই। যে কেউ ইচ্ছামতো যে কোনও জায়গায় গাড়ি পার্কিং করে যানজট সৃষ্টি করতে পারে, ডান-বামের কোনো তোয়াক্কা নেই। ইচ্ছেমতো যাত্রী তুলতে পারে। কানে ফোন লাগিয়ে গাড়ি চালাতে পারে। চালকের আসনে বসে সিগারেট টানতে পারে। দেশে কিছু কিছু স্থান আছে যেগুলোতে সর্বদাই যানজট লেগে থাকে। এগুলো দেখেও অন্ধের ভূমিকা পালন করে পুলিশ বিভাগ। আফসোস হয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকায়, তারা দেশ-বিদেশের উন্নত জায়গার ট্রাফিক আইন স্বচক্ষে দেখে এসেও এ দেশে এসব বাস্তবায়নের প্রয়োজনবোধ করেন না। এবার লন্ডনের একটি ঘটনার কথা বলি। লন্ডনে বেড়াতে গিয়েছিলাম ক’বছর আগে। একদিন ভোরে একটা জনপ্রিয় পত্রিকার প্রথম পাতায় একটি সংবাদ দেখলাম। রাজ পরিবারের কিছু ছেলে রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছিল। গাড়িতে যতজনের আসন ছিল তার চেয়ে এক জন বেশি যাত্রী থাকায় লন্ডন পুলিশ তাদের ট্রাফিক আইন ভাঙ্গার জন্য জরিমানা করেছিল। মাত্র ক’দিন আগে লন্ডনের রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে অফিসে যাচ্ছিলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করে অন্য গাড়িকে ওভারটেক করার জন্য ট্রাফিক কন্ট্রোল অফিস থেকে তার নামে নোটিশ ইস্যু করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার এ ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। না রেহাই নেই, তাকে জরিমানা গুণতে হয়েছে। আইনের কাছে রাজ পরিবারের সদস্যদের এমনকি প্রধানমন্ত্রীরও রেহাই নেই। ইংরেজিতে একটি কথা আছে- Equality before the eye of law অর্থাৎ আইনের চোখে সবাই সমান। আইনের এভাবে প্রয়োগ দেখে আমাদের দেশের মানুষ অবশ্যই খুশি হবে। ভাবি, আমাদের দেশের সবাই যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকত তাহলে সড়ক দুর্ঘটনায় এত প্রাণহানী বা সম্পদ নষ্ট হতো না।
ট্রাফিক শাখায় কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিএসপি (রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদকপ্রাপ্ত) মুতালিব আহমদের মতে, সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো নিম্নরূপ:
চালকের অসাবধানতা বা অতিরিক্ত বেগে বেপরোয়া গাড়ি চালানো, অপরিণামদর্শী চালানো, নেশাগ্রস্থ হয়ে বা তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় গাড়ি চালানো, নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যক যাত্রী ও নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি পরিমাণ মাল নিয়ে গাড়ি চালানো, অনভিজ্ঞ এবং উপযুক্ত প্রশিক্ষণ বিহীন চালকের দ্বারা গাড়ি চালানো, আবহাওয়া জনিত কারণ যেমন, অতিবৃষ্টির দরুণ রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া, অভারটেকিং করে সামনের গাড়িকে পিছনে ফেলে যাওয়ার প্রবণতা, কুয়াশায় রাস্তা অন্ধকার হয়ে যাওয়া এবং পথচারীদের অসাবধানতা, ত্রুটিপূর্ণ রাস্তা, যত্রতত্র পার্কিং, ট্রাফিক চিহ্নের অনুপস্থিতি, প্রশাসনিক অবহেলা, অব্যবস্থা তথা গাফিলতি, যেমন চালকের দক্ষতার পরীক্ষা না করেই লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া, গাড়িগুলোর পরীক্ষা না করেই ফিট্নেস সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া, ব্যবহারের অযোগ্য পুরনো গাড়িগুলোর রেজিস্ট্রেশন বাতিল না করা, যান্ত্রিক ত্রুটিযুক্ত গাড়িগুলোর অবাধ চলাচল, স্বল্প পরিসর রাস্তা, চালকের শারীরিক অক্ষমতাÑ যেমন চোখে কম দেখা, কানে কম শোনা ইত্যাদি, সূর্যাস্তের পর অপর্যাপ্ত আলো, রাস্তার মানের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি।
প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের এ সব কথা জানা আছে। কিন্তু জানলে কী হবে? তাদের বেশির ভাগকেই ম্যানেজ করে নেয়া যায়। আবার তাদের তো নেতা মন্ত্রীদের কথা শুনতে হয়। না শুনলে বদলি হতে হয়, না হয় ধমক খেতে হয়। ট্রাফিক পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর আমাকে বলেছিলেন যে, নেশাগ্রস্ত এক ড্রাইভারকে আটক করার দশ মিনিটের মধ্যেই মন্ত্রীর কাছ থেকে ফোন এসেছিল পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ওকে ছেড়ে দিতে হবে। আরও বললেন, ছেড়ে না দিলে কী হতো জানেন? আমাকে হয়তো কোনও খারাপ জায়গায় বদলি করে দেওয়া হতো, না হয়ত ক্লোজ করা হতো। বিপন্ন হতো আমার পরিবার। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা।
দেশের শহরগুলোতে সিগনাল লাইটের প্রচলন প্রায় নেই। বছর দুয়েক আগে কোনো কোনো স্থানে সিগনাল বাতি ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এর আগাগোড়া বোধগম্য হয়নি চালকদের। এর মূলে রয়েছে প্রয়োজনীয় শিক্ষা, সচেতনতার অভাব এবং সেজন্য অবশ্যই দায়ী প্রশাসনের দুর্বলতা। কলকাতার মতো লোকে লোকারণ্য শহরেও লাইটের লাল সিগনাল দেখামাত্র যদি গরুর গাড়ি থমকে দাঁড়ায়, তবে আমাদের দেশে কেন থামতে পারবে না? উল্লেখ্য বিভিন্ন জেলা সদরে যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশের তেমন হেলদোল নেই। কিছুটা ব্যতিক্রম শহর সিলেট। গাড়ি জ্যামে, অথচ ট্রাফিকের দায়িত্বরত পুলিশকর্মীকে দাঁড়িয়ে গল্পে মশগুল দেখা যায় প্রায়শই। কোনও সময় সাধারণ জনতাকে ট্রাফিকের ভূমিকা পালন করতেও দেখা যায়। তাছাড়া রাস্তার মোড়ে মাঝে-মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে বন্ধ পণ্য বোঝাই লরি। কখনও এগুলো পাগলা কুকুরের মতো দৌড়ায়। কখন জানি ধেয়ে আসে পুলিশ। তোলাবাজির আতঙ্কও তাড়া করে বেড়ায় চালক, খালাসিদের। এর উপর আছে লোড-আনলোডের তাগিদ। টাকার নেশায় মত্ত দুনিয়ায় এদের মাতলামির শিকার হয় শত শত প্রাণ।
দু’নম্বরি থেকে বেরিয়ে পুলিশ বিভাগ জেগে না উঠলে, রোর্ড ট্রান্সপোর্ট অফিসের দুর্নীতি বন্ধ না হলে, চালকের সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না করলে, আবাল চালকদের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত না করলে কয়েকদিন পরপর আমরা শুধু আফসোস করতেই থাকব। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এতসব ঘটনার পরও যদি প্রশাসনের টনক না নড়ে, তা হলে সড়ক দুর্ঘটনাকে আজীবন সঙ্গী করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁচা ছাড়া উপায় নেই আমাদের।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সার্চ কমিটি করে গ্রহণযোগ্যদের স্থানীয় সরকারে প্রশাসক নিয়োগ করার দাবি
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক
অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতে ১৬ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
গণহত্যার পূর্ণাঙ্গ তথ্য জাতিসংঘকে দিতে নাগরিক কমিটির দাবি
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮ ফিলিস্তিনি নিহত, পশ্চিম তীরে সংঘর্ষ অব্যাহত
এনসিটিবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ছুটি বাতিল
বড়দিনে ভারতকে ‘দুঃসংবাদ’ শোনালো অস্ট্রেলিয়া
প্রেমিকের মৃত্যুর খবরে প্রাণ দিলেন প্রেমিকা
ব্রাজিলে সেতু ধস: নিহত ৪, নিখোঁজ ১০
যুদ্ধকালীন ইউক্রেনের ডাকটিকিট, সাহসিকতার ভাষায় দেশপ্রেম ও প্রতিবাদের প্রতীক
বিচ্ছেদ হতে না হতেই আবারও একসাথে তারকা জুটি বেন-লোপেজ
হাইতির হাসপাতালে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত তিনজন
ছাত্রদলের কমিটি : ঢাকা কলেজের সামনে ৭টি ককটেল বিস্ফোরণ
আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ১৫
গুম হন কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খালেদ হাসান
বিদেশি ভুল তথ্য ঠেকানোর মার্কিন সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ
চাঁদপুরে জাহাজে সেভেন মার্ডারের ঘটনায় মামলা
গাজায় বড়দিনে শান্তির জন্য প্রার্থনা, নিহতের সংখ্যা ছাড়লো ৪৫ হাজার
স্ত্রী-সন্তানসহ শাহরিয়ার আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মোজাম্বিকে বাংলাদেশিদের ৩শ' ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর