ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ: প্রতিকার ও প্রতিরোধ
১২ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১২ পিএম | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
প্রাণীজ আমিষের অন্যতম উৎস হলো গো সম্পদ। দেশের অধিকাংশ মানুষই এর উপর নির্ভরশীল। কিন্তু হঠাৎ করেই ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ বা এল এসডি এর আক্রমণে খামারিরা সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশজুড়ে এই রোগটি মারাত্মকভাবে হানা দিয়েছে। এটি গবাদি পশুর জন্য ভয়ঙ্কর ভাইরাসজনিত চর্মরোগ। সর্বপ্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায় ১৯২৯ সালে আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে। পরবর্তীতে ১৯৪৩-১৯৪৫ সালের মধ্যে মহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিস্তৃতি লাভ করে। বাংলাদেশে এই রোগটি ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে দেখতে পাওয়া যায়। মূলত এটি পক্স ভাইরাস বা লাম্পিং স্কিন ডিজিজ ভাইরাসজনিত রোগ। সাধারণত বর্ষা, শরতের শুরুতে বা বসন্তের শুরুতে যখন মশা-মাছির উৎপাত বেশি থাকে, তখনই এ রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখতে পাওয়া যায়। এ রোগ হলে গরুর শরীরে প্রাথমিক অবস্থায় জ্বর আসবে এবং খাবারের প্রতি অনীহা দেখাবে। গবাদি পশুর মুখ ও নাক দিয়ে লালা ক্ষরণ হতে থাকবে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুটি তৈরি হবে। কয়েকদিন পর ক্ষত স্থান দিয়ে পুঁজ বের হয়। এ রোগ বিস্তারের অন্যতম বাহক হলো মশা ও মাছি। আক্রান্ত গাভীর দুধে বিদ্যমান ভাইরাস থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গরুর লালা, খাবারের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গরুর সিমেন অন্য গরুতে স্থানান্তরের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। খামারের কাজের লোকের পোশাকের মাধ্যমে সুস্থ গরু থেকে অসুস্থ গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে হলে আক্রান্ত গরুকে দ্রুত আলাদাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। মশা মাছি থেকে দূরে রাখতে মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশা মাছির উপদ্রব কমাতে হবে এবং খামারের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত গাভীর দুধ কোনভাবেই বাছুরকে খেতে দেওয়া যাবে না। আক্রান্ত গরুর পরিচর্যাকারী ব্যক্তি ঐ একই পোশাকে সুস্থ গরুর কাছে যাওয়া যাবে না। ক্ষত স্থান নিয়মিত আন্টিসেপটিক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। সর্বোপরি একজন রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারিয়ানের শরণাপন্ন হতে হবে। একটি খামারকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য এফএমডি বা খুরা রোগের চেয়েও এটি অনেক ভয়ঙ্কর রোগ। এতে এক বছরের কম বয়সী বাছুর বেশি মারা যায়। এই রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিকারসমূহ মেনে চলতে হবে। তাছাড়া, প্রান্তিক খামারিদের জনসচেতনতার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পেইন, সভা, সেমিনারের আয়োজন করা যেতে পারে। সর্বোপরি, উপজেলা প্রাণীসম্পদ হাসপাতালের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। এভাবেই ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ থেকে বাঁচিয়ে নিজেদের গরুকে সুস্থ রাখা সম্ভব।
মো. আনসারুজ্জামান সিয়াম
শিক্ষার্থী, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস,
গণ বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সিংগাইরে কৃষকদলের নতুন কমিটি গঠন
আরাফাত রহমান কোকো যুব ও ক্রীড়া সংসদের ময়মনসিংহ উত্তর জেলার কমিটি গঠন
এটা সত্যি আমি ফেঁসে গেছি: সৃজিত মুখার্জি
গাজার পূর্ণ দায়িত্ব নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ : আব্বাস
৩৯ হাজার ৯৯৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ উৎপাদন হবে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪ মেট্রিক টন চাউল
৪ আগস্টের পর মাজার-দরগাহে হামলা ভাঙচুর: গ্রেপ্তার ২৩
৭ ম্যাচে ৭৫২ রান, গড় ৭৫২- অবিশ্বাস্য করুনে মুগ্ধ টেন্ডুলকারও
হবিগঞ্জে সাড়ে ৭ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বিজিবি
পণ্যবাহী দুটি কার্গো আটক করেছে আরাকান আর্মি
আশুলিয়ায় কৃষক দলের কম্বল বিতরণ
পশ্চিমাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে ২০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি সই ইরান-রাশিয়ার
আ.লীগের আমলে উন্নয়নের গালগপ্প শোনালেও ভেতরে ছিল ফাঁপা: উমামা ফাতেমা
লঞ্চ ব্যবসায়ী ছেলের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মায়ের সংবাদ সম্মেলন
কিশোরগঞ্জে ‘তারুণ্যের মেলা’র উদ্বোধন
সুন্দরগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন
মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে প্রয়োজন স্থায়ী সংস্কার: এইচআরডব্লিউ'র প্রতিবেদন
কক্সবাজারে ছাগলনাইয়া সিএনজি শো-রুম মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সংবর্ধনা
ওপারে ভালো থাকবেন ডেভিড লিঞ্চ
হাজারীবাগে ছাত্রী হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
গুপ্ত হত্যা, গুম ও ক্রসফায়ার ছিলো শেখ হাসিনার অত্যন্ত প্রিয়: রিজভী