আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে পত্রপত্রিকার অবদান
১৭ মে ২০২৪, ১২:১৫ এএম | আপডেট: ১৭ মে ২০২৪, ১২:১৫ এএম
কালে কালে দেশে দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে পত্রপত্রিকা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, ইতিহাসে তা লেখা আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধেও পত্রপত্রিকার তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সনে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হলে তাতে নতুন মাত্রা সংযোজিত হয় এবং যুদ্ধোত্তরকালে দেখা যায়, তাতে বিকৃতি ঘটেছে।
বলা আবশ্যক, বর্তমান আলোচনায় ‘স্বাধীনতাযুদ্ধ’ বলতে ১৯৭১ সনে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যুদ্ধকে বোঝানো হচ্ছে, আর তা ১৯৪৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রবহমান রয়েছে। একথা উপলব্ধি করতে মাও সেতুঙের এই উক্তিটি সহায়ক হবে। তিনি লিখেছেন, ‘রাজনীতি হলো অস্ত্রবিহীন যুদ্ধ, আর যুদ্ধ হল সশস্ত্র রাজনীতি।’
আমাদের আজকের আলোচনার পটভূমি হিসেবে প্রথমেই আরো একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করা উচিৎ। যেমন ঃ ১৯৭১ সনের স্বাধীনতাযুদ্ধ আমাদের জনজীবনের সহস্রাধিক বৎসরের লিখিত ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর একটি। কারণ এই যুদ্ধ আমাদের দেয় স্বশাসিত হবার অভূতপূর্ব সম্মান। এর আগে আমরা কোন স্বদেশী রাজার অধীনে শাসিত হই নি। ড. আহমদ শরীফ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, শশাঙ্ক, দিব্যক, রুদ্রক, ভীম, গণেশ, যদু-জালালুদ্দীন বিগত আড়াই হাজার বছরের কোনো কোনো সময়ে খুব অল্প সময় ধরে শাসন করলেও প্রকৃতপক্ষে স্বদেশী শাসক দ্বারা বাঙালি শাসিত হচ্ছে ১৯৭১ সন থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই তাই, স্ব-শাসনের জন্যে সংঘটিত সশস্ত্র এই যুদ্ধ নিয়ে আমাদের জাতীয় জীবনের সকল স্তরে আলোচনার অন্ত নেই।
যুদ্ধ সকল কালেই রাজনৈতিক ঘটনা। কিন্তু ১৯৭১ সনের যুদ্ধকে সাধারণত রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে না দেখে জনগণের ওপর পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সশস্ত্র গণহত্যা রূপে বিচার করা হয়। যুদ্ধের ঘটনাবলী বিচারে মতপার্থক্য আছে, পক্ষ-প্রতিপক্ষ আছে, তীব্র বিতর্ক আছে, সকল পক্ষক্ষ থেকেই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আছে। কিন্তু বিতর্কে লিপ্ত কোনো পক্ষই ১৯৭১ সনের তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে প্রবাসে গঠিত প্রথম বাংলাদেশ সরকার সম্পর্কে সামান্য উক্তিটি পর্যন্ত করেন না। এতে গোটা যুদ্ধটাই একটা অরাজনৈতিক সশস্ত্র গণনিপীড়নের ঘটনারূপে চিত্রিত হয়।
যুদ্ধ সম্পর্কে কবিতায়, গল্পে, উপন্যাসে, নাটকে এবং চিত্রকলায় যেসব বিবরণ, অনুভূতি ও উপলব্ধির প্রকাশ দেখা যায়, সেগুলোতেও যুদ্ধ অরাজনৈতিক সশস্ত্র গণ-নিপীড়নের ঘটনারূপেই প্রতিভাত হয়।
গল্প-উপন্যাস-নাটকে যুদ্ধের যেসব খন্ড খন্ড চিত্র প্রকাশিত হয়, সেগুলোতে সাধারণত আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের বিপক্ষের লোকেরা নায়কের স্থান লাভ করে এবং স্বাধীনতা অভিলাষী লোকেরা কিংবা সাধারণ মানুষেরা ভিলেনের অথবা দুর্বল পরাজিত চরিত্রের অবস্থান লাভ করেন।
১৯৭২ থেকে আজ পর্যন্ত রাজনীতি সাধারণ ভাবে প্রায় সকল মহলের নিন্দা ও তিরস্কারের বিষয়বস্তু হয়ে আসছে। ১৯৮০র দশকের শুরু থেকেই বাংলাদেশে কোন অদৃশ্য মহল থেকে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে নিঃরাজনীতিকরণের একটি প্রক্রিয়া কার্যকর করা হচ্ছে। এই বাস্তবতায় আমরা আজ আলোচনা করছি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে পত্রপত্রিকার ভূমিকা। এই আলোচনায় আমাদের উদ্দেশ্য, পূর্বোক্ত কারণসমূহ আমাদের জাতীয় জীবনে যে নিদারুণ দুর্বলতার সৃষ্টি করেছে তা থেকে অব্যাহতির উপায় সন্ধান করা।
পত্রপত্রিকা বলতে আমরা সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রকে বুঝাচ্ছি। নি¤েœাক্ত তিনটি উপ-শিরোনামে বিভক্ত করে অত্যন্ত সংক্ষেপে আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরছি:
ক. যুদ্ধপূর্বকালের পত্র-পত্রিকার ভূমিকা (১৯৪৭-৭০)
খ. যুদ্ধকালীন পত্র-পত্রিকার ভূমিকা (১৯৭১)
গ. যুদ্ধোত্তর কালের পত্র-পত্রিকার ভূমিকা (১৯৭২-২০০০)
যুদ্ধপূর্ব কালের পত্রপত্রিকার অবদান (১৯৪৭-৭১) ঃ
স্বাধীনতাযুদ্ধে পত্রপত্রিকার ভূমিকা আলোচনায় যুদ্ধপূর্বকালের পত্রপত্রিকার ভূমিকাই অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ একালের স্বাধীনতাকামী পত্রপত্রিকাগুলো সঠিক ভূমিকা পালন না-করলে যুদ্ধ আরও বিলম্বিত হতো। যদিও পূর্ববাঙলা থেকে পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক কালে প্রকাশিত পত্রপত্রিকার এক ক্ষুদ্রাংশই যুদ্ধ চেয়ে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছিল, এবং একালের সকল নিয়মিত প্রভাবশালী পত্রপত্রিকাই ছিল সরকার নিয়ন্ত্রিত, স্বাধীনতার বিপক্ষে, পাকিস্তনী জাতীয়তাবাদের প্রচারক।
কিন্তু সংক্ষেপে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে পত্রপত্রিকা প্রকাশের ও সে-ধারা বিকাশের পটভূমি বলা আবশ্যক । পাকিস্তানপূর্ব কালে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র ছিল কলকাতা । আমরা জানি, আধুনিক কালের বাঙলার নবজাগরণের সূত্রপাতও কলকাতায়।
অতএব প্রধান প্রধান পত্রপত্রিকা ও প্রতিভাধর সম্পাদক লেখক কলকাতাকে কেন্দ্র করেই বিকশিত হয়। ঢাকা তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ জিলা শহর কেবল। ফলে কলকাতা থেকে প্রধান পত্রিকাগুলো অধিক হারে প্রকাশিত হলেও বিভিন্ন মফঃস্বল শহর থেকেও নানা জাতের মানসম্পন্ন পত্রিকা প্রকাশিত হত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের বার্ষিকী বাসন্তিকা, শতদল প্রভৃতিসহ সাপ্তাহিক চাবুক, ঢাকা প্রকাশ, দরদী এবং কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার, অমৃতবাজার, আজাদ প্রভৃতি পত্রিকার আঞ্চলিক অফিস ও ম্যানেজারিয়েল ব্যবস্থা ঢাকায় বলবৎ ছিল। চাবুক ১৯৪৭ সনেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী জানায়। চাবুক পাকিস্তান যুগের গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকা যা ঢাকা থেকে বাঙালির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে প্রকাশিত হয়। এর গায়ে মুদ্রিত পরিচিতি ছিল ঃ ‘পূর্ব বঙ্গের জাতীয়তাবাদী সাপ্তাহিক’ বলে । কলকাতা থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়ে কাফেলা ১৯৪৭ সন থেকে মাসিকরূপে আত্মপ্রকাশ করে। আবদুল গণি হাজারীর সম্পাদনায় পিপলস পার্টির রাজনৈতিক সাপ্তাহিক মুখপত্র ‘আলোড়ন’, ফয়েজউদ্দীন সম্পাদিত আজাদ পূর্ব পাকিস্তানের মজলুম জনসাধারণের মুখপত্র ‘ফরিয়াদ’ এবং কাজী আবদুল মান্নান ও একরামুল হক সম্পাদিত ‘ছাত্রলীগ’ ১৯৪৭ সনে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। তাই বলা চলে, একালের সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলো প্রকাশিত হয়েছিল প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতি ও সমাজ-সংস্কৃতির রূপান্তর, পরিবর্তন ও নতুন সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে । ১৯৪৮ সনে প্রকাশিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তানের একমাত্র নির্ভীক ও নিরপেক্ষক্ষ সাপ্তাহিক’ মুখপত্র তাওহীদ, তকবীর ও নবনূর। ‘নবনূর’ ফেনী থেকে মহীউদ্দীন আহমদের সম্পাদনায় বের হয়। লক্ষ্য ছিল ঃ ‘ইসলামী সাম্য ও সমাজতান্ত্রিক পাকিস্তান গড়ে তোলার পথে সাহায্য করা।’
এই সময়ে প্রকাশিত সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য সাপ্তাহিক পত্রিকা শাহেদ আলী ও এনামুল হক সম্পাদিত এবং মোহাম্মদ আবুল কাসেম প্রকাশিত ঢাকার ‘সাপ্তাহিক সৈনিক’ ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত ‘সাপ্তাহিক ইত্তেফাক’। বাংলা দৈনিক সংবাদপত্র ‘সংবাদ’ও প্রকাশিত হলো। ‘দৈনিক আজাদ’ ঢাকা থেকে প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। ইংরেজী দৈনিক মর্নিং নিউজের প্রতিক্রিয়াশীলতাকে রোধ করার জন্যে দৈনিক ‘অবজারভার’ও বের হল । পূর্ব বাঙলার পত্রপত্রিকার জগৎ ব্যস্ত, সচকিত যাত্রা আরম্ভ করল।
এই যাত্রা পথে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পাঁচ শতাধিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় বলে জানা যায়। এর মধ্যে জহীর রায়হান ও কবি আহসান হাবীব সম্পাদিত সাপ্তাহিক ‘প্রবাহ’, ‘পূর্বদেশ’সহ ১২৯টি সাপ্তাহিকী প্রকাশিত হয়। এগুলোর কতিপয় ‘সাহিত্য সাপ্তাহিকী’ খ্যাতনামা কবি-সাহিত্যিকদের সম্পাদনায় প্রকাশিত হলেও অধিকাংশই ছিল রাজনৈতিক আদর্শের সম্প্রচারক। একালে ৫৭টি পাক্ষিকও বের হয়। দৈনিক পত্রিকা বেরায় সতেরটি। কলকাতা থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়ে ‘বেগম’ প্রকাশিত হওয়া শুরু করলে মহিলাদের জন্য মহিলা সম্পাদিত পত্রিকার ধারাও উন্মোচিত হয়। সুলতানা (১৯৪৯), অনন্যা, মহিলা (১৯৬১), বান্ধবী (১৯৬৫), ললনা (১৯৬৬), লাবনী (১৯৭০) ইত্যাদি যুদ্ধপূর্ব কালে বাঙালি মহিলাদের মানসগঠনে ভূমিকা রাখে। কিন্তু যে কথা এখানে বিশেষভাবে বলবার রয়েছে, তাহলো বাঙালির স্বার্থ সংরক্ষণে সচেষ্ট উন্নতমানের কোনো শ্রেণীর কাগজই নিয়মিত নির্বিঘেœ, বিনা ঝুঁকিতে প্রকাশিত হতে পারেনি। পক্ষান্তরে যেসকল পত্রপত্রিকা অখন্ড পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখবার জন্যে পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদ প্রচার করেছে, আর বাঙালি জাতীয়তাবাদকে প্রতিপক্ষরূপে চিহ্নিত করে বিরোধিতা, শত্রুতা ও ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছে, সেসব পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো বাধা ছিল না, উপরন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া যেতো। কিন্তু বাঙালির জাগরণের, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি প্রস্তুতির কালে আদর্শবাদী পত্রিকাগুলোই ছিল সজীব, প্রাণস্ফূর্তিতে পরিপূর্ণ, আকর্ষণীয় এবং একালের জন্য স্মরণীয়।
সেকালের পত্রিকা জগৎকে বুঝবার জন্যে আজাদ, ইত্তেফাক, সংবাদ এই তিনটি দৈনিক পত্রিকার নাম নিয়ে তিনটি ধারার পরিচয় অনুসন্ধান করা যায়। সকলেরই জানা যে, মওলানা আকরম খাঁ প্রতিষ্ঠিত দৈনিক আজাদ ১৯৫২ সনে ভাষা-আন্দোলনের সময়ে সদর্থক, সৎসাংবাদিকতার আদর্শে অবিচল থাকলেও ‘আজাদ’ ছিল পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদের সম্প্রচারক, আন্তরিক সেবক।
এর প্রতিপক্ষ ইত্তেফাক (সাপ্তাহিক অবস্থায় এবং পরে দৈনিক হয়েও) ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারক বাহক এবং বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসনের কলমীযোদ্ধা। ‘সংবাদ’কে সমাজতন্ত্রী তথা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকল্পনা লালনকারীদের মুখপত্র বলা চলে। এর চারপাশে ছিল কিছু সহায়ক, সমর্থক ছোট কাগজ। বাংলা পত্রিকার ন্যায় মর্নিং নিউজ এবং অবজারভারও দুই বিবদমান পক্ষের সহায়ক সমর্থক ছিল। ইত্তেফাক ও অবজারভারের দুই জাঁদরেল সাহসী সংবাদিক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং হামিদুল হক চৌধুরী ছিলেন পাকিস্তানপন্থীদের চক্ষুশূল, জাতশত্রু, পাকিস্তান সরকারের তালিকাভুক্ত শীর্ষ দেশদ্রোহী। সুযোগ পেলেই সরকার এঁদের ওপর পাকিস্তানী নির্যাতন চাপিয়ে দিত।
ঐকালে প্রকাশিত সাহিত্যপত্রিকা তথা সৃজনশীল মাসিক দ্বিমাসিক ত্রৈমাসিক ও বিভিন্ন সংকলনগুলোকে উপর্যুক্ত তিনটি বিখ্যাত দৈনিক পত্রিকার গোত্রভুক্ত করেই বিচার করতে হবে। অতএব বর্ণিত তিনটি মোটা দাগে ভাগ করে দেখলে সেকালের পত্রিকাগুলোকে এভাবে ভাগ করা যায়:
ক. পাকিস্তানবাদী পত্রিকা: দৈনিক আজাদের নেতৃত্বে যুদ্ধপূর্বকালে মিল্লাত, আমার দেশ, বুনিয়াদ, পূর্বপাকিস্তান (চট্টগ্রাম), আজাদী (চট্টগ্রাম), পয়গাম, মর্নিং নিউজ, দৈনিক পাকিস্তান (সরকারি, ঢাকার) প্রভৃতি ইংরেজী ও বাংলা ভাষার দৈনিক সংবাদপত্রগুলো বাঙালি জাতীয়তাবাদকে পাকিস্তানের শত্রু হিসাবে গণ্য করে আগাগোড়া বিরোধিতা করেছে। পাকিস্তানবাদকে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে যারপর নেই তথ্য ও ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। ধর্মের আদর্শের নৈতিকতার বালাই তাদের ছিল না। সবকিছুর ঊধের্¦ ছিল পাকিস্তানের অখন্ডতা।
এ ধারার মাসিক সাহিত্য পত্রিকাগুলোও ছিল দৌর্দন্ড প্রতাপশালী। মাসিক মোহাম্মদী মাহেনও দিলরুবা আল-ইসলাহ্্ নওবাহার দ্যুতি তাহজিব দিগন্ত অভিযান অতএব পূরবী লেখক সংঘ পত্রিকা পরিক্রম সংলাপ উত্তর-অন্বেষা প্রভৃতি হচ্ছে আজাদ-এর ধারার প্রধান সাময়িকী।
খ. ইত্তেফাক-অবজারভারের ধারা বাঙালি জাতীয়তাবাদী মানবতাবাদী ধারার দৈনিক পূর্বদেশ ছাড়া বেশি সংখ্যক বড় পত্রিকা ছিল না। মাসিক পত্রিকাও ছিল সংখ্যায় অল্প তাও সময়ে সময়ে ডিক্লিয়ারেশন রক্ষা করার জন্যে সরকারি ধ্যান-ধারণার প্রচার করা হত। সওগাত সমকাল ইমরোজ সাহিত্য উত্তরণ পূর্বমেঘ পূবালী স্বদেশ মেঘনা নাগরিক পলিমাটি ছিল এঁদের সহযাত্রী। আর ছিল অনিয়মিত সংকলন আর একুশের সংকলনরূপে যেগুলো বের হত।
গ. সংবাদ-এর ধারায় রয়েছে দৈনিক জিন্দেগী ইনসাফ চাষী ইত্যাদি। এ ধারার পত্রিকার মধ্যে সমাজতন্ত্রী কমিউনিস্টদের প্রভাব ছিল বলে কোন জাতীযতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল না। কমিউনিস্টদের সাপ্তাহিক মাসিক ও অনিয়মিত পত্র-পত্রিকা ছিল কিন্তু সেসব আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা জাতীয়জীবনে এবং স্বাধীনতাযুদ্ধে সুদূরপ্রসারী ধারাবাহিক কোনো প্রভাব না রাখলেও সীমিত অবদান তাঁদের ছিল। এ ধারার পত্রিকার মধ্যে সীমান্ত অগত্যা যাত্রিক মুক্তি স্পন্দন প্রভৃতি গুটিকয়েকের নাম এখানে করা চলে। (সংগৃহীত)
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা
বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম
নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক
পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা
দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত
জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে
আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি
ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা
বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা
সিলেটে মাজিদের ফিফটি
অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন
মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে
সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স
ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না
দৌলতখানে শীতকালীন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক
সুন্দরগঞ্জে ছয় পা বিশিষ্ট বাছুরের জন্ম
বৈষম্যের শিকার কুমিল্লার ১৫ হাজার এতিম শিশু