আল- কুরআন : তাজকেরায়ে মীলাদ নামায়ে আম্বিয়া (আ:)
০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০২ এএম
আমরা বিভিন্ন ইসলামী নিদর্শনাবলীর আলোচনা ও পর্যালোচনা এই নিরিখে করেছি যে, সেগুলো আম্বিয়ায়ে কেরামের ইয়াদগার বা স্মৃতিচিহ্ন এবং এগুলো উম্মতে মুসলিমার জন্য এবাদত হিসেবে লাজেম ও অপরিহার্য করা হয়েছে। যখন অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরামের ঘটনাবলীর স্মরণ বা ইয়াদ উদযাপন করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবাদত হিসেবে পালন করে থাকি, তখন পিয়ারা নবী তাজদারে মদীনা হুজুর নবী আকরাম (সা:)-এর ‘আগমনকে’ উদযাপন কেন করা যাবে না? কুরআনুল কারীম গভীর দৃষ্টিতে অধ্যয়ন করলে এই বিশেষত্বটি সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে যে, ইহা আল্লাহপাকের সুন্নাত বা রীতি। নিম্নে আমরা কুরআনুল কারীমে উল্লিখিত ‘মীলাদের ঘটনাবলী’ উপস্থাপন করতে প্রয়াস পাব।
মীলাদনামার সম্যক দৃশ্য :
আরব দেশগুলোতে আয়েম্মা ও মুহাদ্দেসীন এবং ওলামায়ে হক হুজুর নবী আকরাম (সা:)-এর ‘মীলাদ’ বিষয়বস্তুুর ওপর অনেক কিতাব রচনা করেছেন। আরবদের নিকট মীলাদের বর্ণনাকে সাধারণভাবে ‘মাওলাদ’ অথবা ‘মাওলীদ’ অথবা ‘মাওলুদ’ নামে পাঠ করা হয়। এজন্য এরকম কিতাবসমূহ অথবা প্রবন্ধসমূহকে যেগুলোতে হুজুর নবী আকরাম (সা:)-এর মীলাদের ঘটনাবলী এবং তাঁর বরকতসমূহের উল্লেখ আছে, সেগুলোকে ‘মাওলুদ’ বলা হয়। আরব দেশসমূহের মহব্বতধারী মুসলমানদের নিকট অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখনও এই তরিকা প্রচলিত আছে যে, যখন মাহে রবিউল আউয়াল আগমন করে, তারা মীলাদ মাহফিলগুলোতে অত্যন্ত আগ্রহ ও উদ্দীপনার সাথে ‘মাওলুদ পাঠ’ করেন। হেজাজ অঞ্চলে আরবী পদ্য এবং গদ্যে মাওলুদের ‘মাহফিল’ অনুষ্ঠিত হয়। মাদীনায়ে তাইয়্যেবা, মক্কা মোয়াজ্জমা, শাম, মিসর, ইরাক, আম্মান, জর্ডান, আরব আমীরাত, কুয়েত, লিবিয়া এবং মরক্কোর মতো আরব সাম্রাজ্যের পাশাপাশি দুনিয়ার প্রত্যেক দেশেই আয়েম্মা মুহাদ্দেসীনের লিখিত ‘মাওলুদ’ খুবই মকবুল ও জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে। হুজুর নবী আকরাম (সা:)-এর বেলাদতের ঘটনাবলীর বয়ানকে আরবগণ ‘মাওলাদ’ অথবা ‘মাওলুদ’ বলেন। উর্দু ভাষায় ইহাকে ‘মীলাদনামা’ বলা হয়। আম্বিয়াগণের কথা আলোচনা করা আল্লাহপাকের সুন্নাত বা রীতি। কোন কোন পছন্দকারী মন ও মগজে এই খেয়াল পয়দা হয়ে থাকে যে, হুজুর নবী আকরাম (সা:)-এর সৌভাগ্যময় বেলাদত তো হয়েই গেছে এবং এতদসংক্রান্ত ঘটনাবলী ও নিদর্শনাদি প্রকাশ পেয়েছে, তাই প্রত্যেক বছর বা যুগে ইহা স্মরণ করার কি দরকার আছে? তাই বর্তমানে হুজুর নবী আকরাম (সা:)-এর সীরাতে তাইয়্যেবা ও উসওয়ায়ে হাসানা বয়ান করাই যথেষ্ট। তাদের এই ধারণা কুরআনভিত্তিক নয়। তাই এর অপসারণ খুবই জরুরী।
কুরআন ও হাদীস অধ্যয়ন করলে অবশ্যই জানা যায় যে, আল্লাহপাকের মাহবুব ও বরগুজিদাহ বান্দাহদের কথা স্মরণ করা, আলোচনা করা শুধু কেবল এবাদতই নয়, বরং বিশ্ব স্রষ্টার সুন্নাত ও বটে। আল্লাহতায়ালা স্বয়ং কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে স্বীয় সালেহ ও মুকাররাম বান্দাহদের বিশেষ করে আম্বিয়াদের কথা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বয়ান করেছেন। কেননা, তাঁরা আল্লাহতায়ালার মকবুল এবং মনোনীত বান্দাহ হওয়ার কারণেই এমনটি হয়েছে। কুরআনুল কারীমে তাদের বেলাদত এবং সীরাত উভয়দিকই উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআনুলকারীমের আম্বিয়াদের ঘটনাবলীর উল্লেখ আল্লাহতায়ালার সুন্নাত এবং হুকুম মোতাবেক করা হয়েছে। কুরআনুল কারীম হুজুর নবীয়ে আকরাম (সা:)-এর পবিত্র জবানের দ্বারা বহুবার তিলাওয়াত করা হয়েছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে আম্বিয়ায়ে-কেরাম-এর সৌভাগ্যপূর্ণ বেলাদতের ঘটনাবলী এবং সেগুলোর অংশবিশেষ ও খুঁটিনাটি বিষয়াদির জিকির করা কতখানি খায়ের ও বরকতের পরিচায়ক, তার বিস্তৃত বিবরণ কুরআনুলকারীমের আয়াতরূপে আমাদের সামনে আছে। এমনিতেই কুরআনুল কারীম আম্বিয়ায়ে-কেরাম এবং তাদের উম্মতদের হালত ও ঘটনাবলীকে বিভিন্ন স্থানে বিস্তারিতভাবে বয়ান করেছে, কিন্তু কিছু কিছু স্থান এমনও আছে যেখানে আম্বিয়ায়েকেরাম এবং মুকাররাব বান্দাহদের কথাকে বক্তব্যের শিরোনাম করা হয়েছে। এ উপলক্ষে নমুনাস্বরূপ কতিপয় আয়াত নিম্নে সন্নিবেশ করা হল।
১। আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা সুরাতুল আনয়ামে আম্বিয়ায়ে- কেরামের কথা তুলে ধরে ইরশাদ করেছেন : আর ইসমাঈল এবং আল ইয়া ছায়া এবং ইউনুস এবং লুতকেও (হেদায়েত দ্বারা মর্যাদাবান করেছি) এবং আমরা তাদের সকলকে (সেই জামানার) সকল বিশ্ববাসীদের ওপর ফজিলত দান করেছি এবং তাদের পিতৃপুরুষদের এবং তাদের সন্তান-সন্তুতিদের এবং ভ্রাতৃবৃন্দের মধ্যে হতেও (কাউকে ফজিলত দান করেছি এবং তাদেরকে স্বীয় দান ও বুজুগীর জন্য) মনোনীত করেছিলাম এবং তাদেরকে সোজা রাস্তায় হেদায়েত দান করেছিলাম। (আল কুরআন : সূরাতুল আনয়াম, আয়াত-৮৬,৮৭)।
২। কুরআনুলকারীমের চতুর্দশতম সূরার নামকরণ আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা স্বীয় খলীল ইব্রাহীম (আ:)-এর নামে করেছেন। এই সূরায় হযরত ইব্রাহীম (আ:) স্বীয় ছেলে হযরত ইসমাঈল এবং হযরত ইসহাক সম্পর্কে বলেছেন : সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য নিবেদিত, যিনি আমাকে বৃদ্ধ বয়সে ইসমাঈল এবং ইসহাক (আ:) কে দান করেছেন। নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদিগার প্রার্থনা শ্রবণকারী। (সূরা ইবরাহীম : আয়াত-৩৯)।
৩। সূরায়ে মারয়াম আল্লাহতায়ালার বরগুজিদাহ বান্দাহদের বিবরণে ভরপুর রয়েছে। এতে আম্বিয়ায়ে- কেরামের কথা ধারাবাহিকভাবে এসেছে। আল্লাহতায়ালা হযরত জাকারিয়া (আ:)-এর কথার দ্বারা আরম্ভ করে ইরশাদ করেছেন :
ইহা আপনার পরওয়ারদিগারের রহমতের কথা (যা তিনি) স্বীয় (বরগুজিদাহ) বান্দাহ জাকারিয়া (আ:)-এর ওপর করেছিলেন। যখন তিনি স্বীয় পরওয়ারদিগারকে (শ্রদ্ধাভরে) নিম্নস্বরে ডেকেছিলেন। (সূরা মারয়াম : আয়াত-২, ৩)।
৪। এবং (আমি) স্বীয় খাস অনুগ্রহের দ্বারা (তাঁকে) অশ্রু বর্ষণকারী এবং পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা অবলম্বনকারী করেছি এবং সে ছিল খুবই পরহেজগার। (সূরা মারয়াম : আয়াত-১৩)
৫। ‘এবং (হে আমার প্রিয় হাবীব) আপনি কিতাবে উল্লিখিত (কোরআন মজীদ) মারয়ামের কথা স্মরণ করুন, যখন সে নিজের গৃহবাসীদের থেকে পৃথক হয়ে (এবাদতের জন্য নির্জনতা অবলম্বন করত:) পূর্বদিকের ঘরে আগমন করতেন (সূরা মারয়াম : আয়াত : ১৬)।
৬। ‘আর আপনি কিতাবে (কোরআন মজীদে) উল্লিখিত ইব্রাহীমের কথা স্মরণ করুন, নিশ্চয়ই সে বড় সত্যবাদী নবী ছিলেন।’ (সূরা মারয়াম : আয়াত-৪১)।
৭। ‘আর (এই) কিতাবে উল্লিখিত মুসার কথাও স্মরণ করুন, নিশ্চয়ই তিনি (নফসের বেস্টনী হতে মুক্তি লাভ করে) ছিলেন নিবেদিত প্রাণ এবং নব্যুয়ত ও রেসালতের অধিকারী।’। (সূরা মারয়াম : আয়াত : ৫১)।
৮। ‘আর আপনি এই কিতাবে উল্লেখিত ইসমাঈল (আ:)-এর কথা স্মরণ করুন, নিশ্চয়ই তিনি যথাযথ অঙ্গীকার পালনকারী ছিলেন এবং নব্যুয়ত ও রিসালাতের অধিকারীও ছিলেন। এবং তিনি গৃহবাসীদের নামাজ এবং যাকাতের হুকুম দিতেন এবং তিনি স্বীয় পরওয়ারদিগারের নিকট মাকামে মারজিয়ায় অধিষ্ঠিত ছিলেন (অর্থাৎ তার পরওয়ারদিগার তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন)’। (সূরা মারয়াম : আয়াত-৫৪, ৫৫)
৯। হযরত ইদ্রিস (আ:) প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘আর আপনি এই কিতাবে উল্লিখিত ইদ্রীসের কথা স্মরণ করুন, সে ছিল সত্যনিষ্ঠ নবী এবং আমি তাকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছিলাম। (সূরা মারয়াম : আয়াত-৫৬, ৫৭)
এমন কি আম্বিয়ায়ে কেরামের ধারাবাহিক আলোচনার পূর্বে সূরা আম্বিয়ার ৫০ নং আয়াতে ভূমিকা স্বরূপ এ সকল বাক্যাবলী ইরশাদ হয়েছে :
১০। ‘এবং এই (কোরআন) বরকতপূর্ণ জিকির যাকে আমরা নাজিল করেছি, তবে কি তোমরা ইহার অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে? (সূরা আম্বিয়া : আয়াত-৫০)
১১। জিকরুম মুবারাকুন শিরোনামে পূর্ববর্তী আয়াতে জাদ্দুল আম্বিয়া হযরত ইব্রাহীমের কথা শুরু করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয়ই আমরা প্রথম থেকেই ইব্রাহীমকে তাঁর (মর্তবা অনুসারে) জ্ঞান ও হেদায়েত প্রদান করেছিলাম এবং আমরা তাঁর (সামর্থ্য ও যোগ্যতা) সম্পর্কে খুবই অবহিত ছিলাম। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত -৫১)
১২। তারপর তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পর হযরত লূত, হযরত ইসহাক, হযরত ইয়াকুব (আ:)-এর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। পরে শেষ প্রান্তে ইরশাদ হয়েছে : ‘এবং আমি তাদের সকলকে পুণ্য কর্মশীল করেছিলাম। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত-৭২)
১৩। তারপর ৭৩ নম্বর আয়াতে তাদের অন্যান্য সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব এবং কর্তব্য উল্লেখ করে ইরশাদ হয়েছে :
‘আর আমরা তাদেরকে (ইনসানিয়াতের) ইমাম বানিয়েছিলাম তাঁরা (মানুষকে) আমাদের হুকুম মোতাবেক হেদায়েত করছিলন এবং আমরা তাদের প্রতি পুণ্যকর্ম সম্পাদন করা এবং নামাজ কায়েম করা এবং যাকাত আদায় করার (নির্দেশাবলী) ওহী প্রেরণ করেছিলাম : তাঁরা সকলেই আমার এবাদত গুজার ছিলেন। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত-৭৩)
১৪। তারপর আয়াত নম্বর ৭৬ হতে শুরু করে আয়াত নম্বর ৮৪ পর্যন্ত নূহ, হযরত দাউদ, হযরত সুলায়মান, হযরত আইয়্যুব (আ:)-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শেষের দিকে হযরত আইয়্যুব (আ:) সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে :
‘সুতরাং আমরা তাঁর দোয়া কবুল করলাম এবং তিনি যে কষ্ট পাচ্ছিলেন, তা আমি দূর করেদিলাম এবং আমরা তাঁকে তাঁর পরিবার-পরিজনদেরকেও ফিরিয়ে দিলাম এবং তাঁদের সাথেও অনুরূপ অনুগ্রহ করেছিলাম। ইহা ছিল আমাদের নিকট হতে খাস রহমত এবং এবাদত গুজারদের জন্য নসীহত। আল্লাহ ধৈর্য এবং শোকরগুজারীর বিনিময় কিভাবে প্রদান করেন। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত -৮৪)
১৫। তার পর পরবর্তী আয়াতসমূহে হযরত ইসমাঈল, হযরত ইদ্রীস, হযরত জুলকিফল (আ:)-এর কথা বিবৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে :
অর্থাৎ এবং ইসমাঈল এবং ইদ্রিস এবং জুলকিফল (এর কথাও স্মরণ করুন) তাঁরা সবাই ছিলেন ধৈর্যশীল এবং আমরা তাদেরকে স্বীয় রহমতের ছায়ায় স্থান দান করেছিলাম, নিশ্চয়ই তারা পুণ্য কর্মশীল ছিলেন। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত-৮৫, ৮৬)
১৬। তারপর আয়াত নম্বর ৮৭ হতে আয়াত নম্বর ৯০ পর্যন্ত হযরত ইউনূস (যাকে ‘জুন্নন’ উপাধিতেও ডাকা হয়েছে) হযরত জাকারিয়া এবং হযরত ইয়াহইয়া (আ:)-এর কথা বলা হয়েছে এবং পরিশেষে আগের মতোই তাঁদের আন্তরিক অবস্থা এবং রূহানী কাইফিয়াত এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : অর্থাৎ নিশ্চয়ই তারা (সকলেই) পুণ্যকর্ম সম্পাদনে (আঞ্জাম দেয়ার ব্যাপারে) ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন এবং আমাদের কাছে উৎসাহ ও আকর্ষণ এবং ভয় ও সন্ত্রস্ততার সাথে ফরিয়াদ জানাতেন এবং আমাদের কাছে বিনয় ও নম্রতার সাথে নিবেদন পেশ করতেন। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ৯০)
১৭। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জাত স্বীয় মাহবুব, মুকাররাব এবং বরগুজিদাহ বান্দাদের কথা স্মরণ করার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং পরিণাম সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন : নিশ্চয়ই এর মধ্যে এবাদতগুজার বান্দাহদের জন্য (লক্ষ্য পূরণের) পর্যাপ্ত উপকরণ ও উপায় নিহিত আছে। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত-১০৬)
১৮। তারপর এই সূরায় সত্যাশ্রয়ী প্রিয় বান্দাহদের আলোচনার ধারাবাহিকতা মাহবুবানে আলমের মাথার তাজ, রহমতে কাউনাইন (সা:)-এর ওপর গিয়ে শেষ হয়েছে। ১০৭ নম্বর আয়াতের পরিসমাপ্তি হুজুর নবীয়ে আকরাম (সা:)-এর সৌন্দর্যপূর্ণ প্রসঙ্গ উত্থাপন সহকারে ঘটেছে। ইরশাদ হয়েছে :
‘(হে পূর্ণ মর্যাদাশীল রাসূল) আমরা আপনাকে প্রেরণ করিনি, কিন্তু সকল সৃষ্টির জন্য রহমতস্বরূপ করে’ (সূরা আম্বিয়া: ১০৭)
১৯। ইহার পর এই সূরাতে অন্য কোন নবী এবং রাসূলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। কেননা, মহব্বতের প্রসঙ্গ এখানে এসে পরিপূর্ণতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। পিয়ারা নবী তাজদারে মদীনা মোহাম্মদ মোস্তফা (সা:)-এর কথা উল্লেখ করার পর যে আয়াতে সুরাতুল আম্বিয়া শেষ হয়েছে সেখানে রাহমান নামের কথা তুলে ধরা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : ‘(আমাদের প্রিয় হাবীব) আরজ করলেন, হে আমার পরওয়ারদিগার! (আমাদের মাধ্যে) সত্যের সাথে ফায়সালা করুন, এবং আমাদের পরওয়ারদিগার সীমাহীন রহমকরণে ওয়ালা, তাঁর কাছেই সাহায্য কামনা করা হয়, (অন্তরে আঘাতকারী) সেই কথার উপর যা (হে কাফের সম্প্রাদায়!) তোমরা রটনা করে থাক। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ১১২)
২০। আল্লাহ তাবারাকা ওয়াতায়ালা সূরা সোয়াদ এ ইরশাদ করেছেন : এবং (এভাবে) ইসমাইল, আলইয়াছায়া এবং জুলকিফিলের কথাও স্মরণ করুন, তাঁরা ছিলেন পুণ্যবান বান্দাহদের অন্তর্ভূক্ত। (সূরা সোয়াদ : আয়াত-৪৮) এ পর্যায়ে আমরা কেবল পাঁচটি সূরার চয়নকৃত কিছু আয়াত উপস্থাপন করেছি। তাছাড়া কোরআনুল কারীমে অসংখ্য এমন মাকামাত রয়েছে যেখানে আল্লাহতাবারাকা ওয়াতায়ালা স্বীয় মহবুব ও মুকাররাব বান্দাহদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। এবং একের পর এক সকলের রূহানী অবস্থাবলী ও কর্মপ্রবাহের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। (চলবে)
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আফগানিস্তানের টানা ষষ্ঠ সিরিজ জয়
কমিউনিটি ব্যাংকে ট্রাফিক মামলার জরিমানা দেওয়া যাবে
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস
‘ফ্যাসিবাদী প্রধানমন্ত্রী ও এমপিরা তাদের কৃত কর্মের জন্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে’
ব্রাহ্মণপাড়ায় ট্রাক্টরের চাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু, আহত ২
কুরআন শিক্ষা বোর্ড ঢাকা মহানগর উত্তরের নগর সম্মেলন অনুষ্ঠিত
এবি ব্যাংক পিএলসি. এর "বিজনেস রিভিউ মিটিং" অনুষ্ঠিত
উথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেল সোনালী লাইফ
নেতাকর্মীদের রেখে লক্ষণ সেনের মত পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার: ব্যারিস্টার সালাম
অভিনেতা অপূর্বকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যাচার
বরিশালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অংশীজন সভায় প্রধান প্রকৌশলী
দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতিতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস
সংস্কারোত্তর পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে
‘শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে’
‘রাষ্ট্রের সকল স্তরে ইসলামী সংস্কৃতির অনুশীলন নিশ্চিত করতে হবে’
মেট্রোকে থামিয়ে ফাইনালে রংপুর
৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী
আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি, হাসিনার ভরসা ভারতে: দুলু
মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল, কানাডায় কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন ট্রুডো?
পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ