নববর্ষ ও বিজাতীয় আগ্রাসন
১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১২ এএম | আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১২ এএম

পহেলা বৈশাখ বাংলাসনের প্রথম দিন। এই দিনটিকে বাঙালি সমাজ একটি উৎসব হিসেবে পালন করে থাকে। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। অতীতে ফেলে আসা সব ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি মুছে ফেলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদ্যাপিত হয় বাংলা নববর্ষ।
বাঙালিরা স্বভাবতই হর্ষ-উল্লাসপ্রিয় জাতি। এ হর্ষ-আনন্দ-প্রীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা উৎসব। বংশ পরম্পরায় মানুষের মাঝে চলে এসেছে তাদের এই উৎসব-আনন্দ উদ্যাপনের ধারা। হাজার বছরের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে অফুরন্ত উৎসব-আনন্দের উৎস এবং অনাবিল সুখের ধারা। প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আবহে সমৃদ্ধ আনন্দ ধারাকে এদেশের মানুষ সব সময় প্রাণভরে উপভোগ করে আসছে। এসব উৎসব কখনো পারিবারিক পরিমন্ডলে, কখনো ক্ষুদ্র গোত্রের পরিসীমায়, আবার কখনো তা সমাজের সর্বস্তরে হয়েছে অধিক জনপ্রিয়। এভাবে সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা এবং ব্যক্তিগত ইচ্ছার ফলে আমরা পেয়েছি অনেক উৎসব, যেগুলোর মধ্য থেকে কোনো কোনো উৎসব বিকশিত হতে হতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে আনন্দ উপভোগের বিশেষ উপলক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু কিছু উৎসব আবার ক্ষয়িষ্ণু জীর্ণ দশায় পড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে। কিন্তু তারপরও দেশের নানা সম্প্রদায় ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে এখনো বিভিন্ন উৎসব প্রচলিত আছে, যেগুলো আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির পরিচায়ক।
আমাদের দেশে নানা ধরনের উৎসব প্রচলিত। ঋতু-বৈচিত্র্যের মতো বাংলাদেশে উৎসবের বৈচিত্র্যও কম নয়। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ বিভিন্ন ঋতুতে নানা রকম উৎসব পালন করে থাকে। যেমন- ধর্মীয় উৎসব, সামাজিক উৎসব, সাংস্কৃতিক উৎসব, পারিবারিক উৎসব, বিভিন্ন বরণীয় ব্যক্তির স্মরণোৎসব ইত্যাদি। এসব উৎসব পালনের ভেতর দিয়ে ফুটে ওঠে বাংলাদেশের মানুষের আবহমানকালের প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক জীবনবোধ।
বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের মানুষের জীবনে তেমনি একটি উৎসব।
বাংলা বছরের শেষ মাস চৈত্রের অবসানে বৈশাখ আসে, আসে নববর্ষ। পহেলা বৈশাখ বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন। দিনটি আমাদের কাছে ‘নববর্ষ’ নামে চিহ্নিত। পৃথিবীর সর্বত্র নববর্ষ একটি ঐতিহ্য। নববর্ষে আমরা অতীত বছরের তিরোধান এবং নবাগত বছরের আবির্ভাবের মুখোমুখি এসে দাঁড়াই। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় গণমুখী ও সর্বজনীন উৎসব। এ দিনে বাংলাদেশের সকল ধর্মের ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অতীতের সুখ-দুঃখ ভুলে গিয়ে নতুনের আহবানে সাড়া দিয়ে ওঠে। বৈশাখের প্রথম দিনটিতে মানুষের মনে জাগে নানা আশা, আকাঙ্খা ও আনন্দ। উত্থান-পতন, ভালো-মন্দ, আশা-নিরাশা, আনন্দ-বেদনায় ভরা মানব জীবন। তবু মানুষের আশাবাদী মন দুঃখ-বেদনার স্মৃতি ভুলতে চেষ্টা করে। নতুন বছরের নবীন সূর্য বিগত বছরের গ্লানি, হতাশা, বেদনা বিদূরিত করে জীবনকে সফল করে আনন্দের সিংহদ্বারে নিয়ে পৌঁছাবে- এ প্রত্যাশাতেই বিপুল আনন্দে বাংলাদেশের মানুষ নববর্ষকে আপন করে নেয়; নতুন উদ্দীপনায় সে যেন নতুন প্রাণ পায়। এই আবেগ আর উপলব্ধির প্রেক্ষিতে বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের সংস্কৃতিরও অঙ্গ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রাচীনকালে আমাদের দেশে অগ্রহায়ন মাস থেকে বছর গণনা হতো। এদেশের সহজ-সরল অশিক্ষিত জনগণ তখনো চন্দ্রসূর্যের গতি অবলোকন করে বর্ষ গণনা করতে শেখেনি। তাই প্রকৃতির স্বভাব ও লক্ষণ দেখে তারা বর্ষ গণনা করত। ‘অগ্র’ অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ, ‘হায়ন’ অথবা ব্রীহি বা ধান জন্মায় যে সময় সেটা অগ্রহায়ন। এ সময় কৃষকের ঘরে নতুন ফসল থাকত, ফলে রাজস্ব আদায় ও ঋণ পরিশোধের এটাই ছিল যথার্থ সময়। অতঃপর মোঘল স¤্রাট জালালুদ্দীন মুহাম্মদ আকবরের রাজত্বকালে কৃষকদের ধান তোলার কাল ও রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে অগ্রহায়নের পরিবর্তে গণনা শুরু হয় বৈশাখ থেকে।
ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসকগণ সর্বপ্রথম হিজরি সন প্রবর্তন করেন। খিলজী বংশীয় তুর্কী বীর ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী বঙ্গদেশ জয় করেন ৬০০ হিজরি তথা ১২০৬ খ্রি.। তখন থেকে শুরু করে উপমহাদেশে মোঘল স¤্রাট আকবরের রাজত্বকালের চান্দ্র বর্ষভিত্তিক হিজরি সন প্রচলিত ছিল। সরকারি কাজেও হিজরি সন ব্যবহার করা হতো। হিজরি সন চান্দ্র সন বলে এ সনের সময়কাল সৌরবর্ষের চেয়ে কিছুটা কম অর্থাৎ ৩৫৪ দিন। অন্যদিকে, সৌর সনের বছর ৩৬৫ দিনে হওয়ায় প্রতি বছর চান্দ্র সনের সাথে ১০/১১ দিনের পার্থক্য হয়ে যেত। এর ফলে প্রতি বছরে দিনক্ষণ ও তিথি, নক্ষত্র, লগ্নভিত্তিক উৎসব, আচার-আচরণ, উৎসব-অনুষ্ঠানে দারুণ অসুবিধা দেখা দেয়। এছাড়াও চান্দ্র বর্ষের হিসেবে একই মৌসুমে একই মাস বিদ্যমান থাকে না, বিধায় উপমহাদেশে রাজকোষের খাজনা আদায়ের ব্যাপারে অসুবিধায় পড়তে হয়। সাধারণত কৃষকেরা প্রধান ফসল যখন তোলেন তখন খাজনা আদায় সুবিধাজনক। কেননা, ফসল মৌসুম ঋতুভিত্তিক আর হিজরি সন চান্দ্রভিত্তিক। কিন্তু চান্দ্রবর্ষে মাস এগিয়ে যায় বলে খাজনা আদায়কারী রাজ কর্মচারীরা ও প্রজারা উভয়ই অসুবিধার সম্মুখীন হন। এ সকল অসুবিধার কথা স¤্রাট আকবরের দরবারের নবরতœ ও অন্যান্য সভাসদদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
সভাসদদের আলোচনার ভিত্তিতে মোঘল স¤্রাট আকবর সৌর মাস ভিত্তিক বর্ষ গণনার কথা চিন্তা করেন। তার রাজত্বের ২৯ বছর পূর্তিতে তিনি তার দরবারের অন্যতম পন্ডিত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদ আমীর ফতেহউল্লাহ্ সিরাজীকে হিজরি সনের সাথে সমন্বয় করে সৌর বর্ষভিত্তিক ‘ফসলি সন’ প্রবর্তনের নির্দেশ প্রদান করে রাজ ফরমান জারি করেন। তিনি স¤্রাটের নির্দেশ মোতাবেক সৌর মাসভিত্তিক একটি নতুন সনের উদ্ভাবন করেন। এটি মৌসুমভিত্তিক সৌর সন। এর নাম দেয়া হয় ‘ফসলি সন’। স¤্রাট আকবর ৯৯৩ হিজরি সন মোতাবেক ১৫৮৪ খ্রি. ১০ মার্চ মতান্তরে ১১ মার্চ ‘ফসলি সন’- এ ফরমান জারি করেন। পরবর্তীকালে এ ফসলি সনই বাংলাসন বা বঙ্গাব্দে নামান্তরিত হয়।
বাংলা নববর্ষ বহুমাত্রিকতায় পরিপূর্ণ। আগেকার দিনে নববর্ষের উৎসব-অনুষ্ঠান পল্লীকেন্দ্রিক এবং শুধু হালখাতা আর মেলার অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন তা পল্লীর সীমা ছাড়িয়ে শহরে ব্যাপ্ত হয়ে জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এদিনে বাংলাদেশের ছোট-বড় শহর, উপশহর এমনকি গ্রামাঞ্চলে বসে বৈশাখী মেলা। মোসুমী ফলমূল, নানা রকম কুটির শিল্পজাতদ্রব্য, মাটি, কাঠ, বাঁশ, বেতের তৈরি প্রয়োজনীয় জিনিস ও খেলনাসামগ্রী যেমন: হাতি, ঘোড়া, গাড়ি, ঢাক-ঢোল, বাঁশি, মুখোশ, মুড়ি-মুড়কি, বাতাসা ইত্যাদি কেনার ধুম পড়ে যায়। এসব মেলায় সাপখেলা, ঘুড়ি উড়ানো, নাগর দোলার আয়োজন থাকে। জাতীয় ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নববর্ষের আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইদানিং ভদ্র সমাজে পান্তা ভাত ও ইলিশ ভাজা খাওয়ার রেওয়াজ চালু হয়েছে।
বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতিসত্তার পরিচয়কে বহন করে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নববর্ষ আজ আমাদের জাতীয় উৎসব। আমাদের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে আমরা প্রত্যক্ষ করি নববর্ষের অনুষ্ঠানে। নববর্ষের সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে আমরা আমাদের জীবনবাদী ও কল্যাণধর্মী রূপটিকে খুঁজে পাই। নতুন বর্ষকে স্বাগত জানানো মানে আমাদের জীবনকেই নতুনভাবে গ্রহণের, সাজানোর প্রস্তুতি। আমাদের নববর্ষের উৎসব নির্মল আনন্দের উৎসধারা।
মানুষের সাথে মিলিত হতে পারি-এটাই হওয়া উচিত বাংলা নববর্ষ উৎসবের প্রেরণা। আর আমাদের দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার শপথ নেয়ার মধ্য দিয়ে আমরা যদি এ দিনটিকে উদযাপন করি তবে তা হয়ে উঠবে আরো সার্থক ও সুন্দরতম।
দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, বিগত স্বৈরসরকারের আমলে একটি ঐতিহ্যবাহী শালীন উৎসবকে সুকৌশলে বিজাতীয় সংস্কৃতি গ্রাস করে ফেলে। এদেশীয় কিছু ধর্মবিদ্বেষী তথাকথিত প্রগতিশীল ভিন দেশীয় এজেন্টরা এটা করে। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ১৯৮৯ সালে এই উৎসবকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নামে বেহায়াপনার অপসংস্কৃতি সহজ-সরল বাংলাদেশি জনসাধারণের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। সেখানে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও আধিপত্যের বিষয় গত ২৫-৩০ বছরে একটু একটু করে প্রবেশ করানো হয়েছে। সকল ভালো-মন্দ, মঙ্গল-অমঙ্গলের মালিক মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে বাদ দিয়ে বাঘ, হাতি, ঘোড়া, কুমির, ময়ূর, পেঁচাসহ বিভিন্ন প্রাণীর মূর্তিকে তারা মঙ্গলের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল- যা এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য একটি কালিমাময় অধ্যায় এবং আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ বা চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ২০২৪-এর ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরসরকারের পতন ঘটেছে। নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। সঙ্গতকারণেই চাপিয়ে দেয়া মঙ্গল শোভাযাত্রার সংস্কৃতিও বিদায় নিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব সংস্কৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবার নববর্ষের উৎসবÑ অনুষ্ঠান, এটাই প্রত্যাশিত।
লেখক: কবি, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

প্রাথমিক চিকিৎসাসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পাশে ইবি ছাত্রদল

হাজারীবাগ ভিওআইপি ব্যবসার মূলহোতা গ্রেফতার, দেড় হাজার সিম উদ্ধার

মৌলভীবাজারে বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

হুইসেল ব্লোয়ার ইন্ডিয়ান আর্মি অফিসারের ভিডিওতে কি আছে?

শেরপুরে ৩০ বছরে ও নিরসন হয়নি মানুষ বন্য হাতির দ্বন্দ্ব!

রায়পুর পৌর এলাকায় একমাস ধরে বিশুদ্ধ পানির সংকট

কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে গোদাগাড়ীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ নির্বাচনের উভয় কক্ষেই পিআর সিস্টেমে ভোট চান জামায়েত আমীর

জার্মানিতে অস্ত্র-বিস্ফোরক মজুদকারী কিশোরসহ পিতা গ্রেপ্তার

ভ্যাটিকানের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার কাতার ত্যাগ

তারাকান্দায় সড়ক দূর্ঘটনায় পথচারীর মৃত্যু

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন

দেশের জন্য সততার সঙ্গে কাজ করবে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ : ইলিয়াস কাঞ্চন

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া হেফাজত নেতা এখন ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামী

রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনর্গঠনের কার্যকর সূচনা শিক্ষাঙ্গন থেকেই শুরু করা প্রয়োজন- আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী

মাভাবিপ্রবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

পদ্মা পাড়ে ব্যাটারি রিসাইকেলিং কারখানা, লাখ টাকা জরিমানা

ডিমলায় স্কুলের ছাদের বীম ধসে আহত হয়েছেন এক শিক্ষিকা ও তার নয় মাসের ছেলে সন্তান

ফুলগাজীতে আড়াই লাখ টাকার ভারতীয় মালামালসহ যুবক গ্রেফতার

কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় ভারতে নিষিদ্ধ পাকিস্তানি সিনেমা