একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি নিয়ে আলোচনা করবে জাতিসংঘ
৩১ মে ২০২৩, ০৮:৪৬ পিএম | আপডেট: ০১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চালানো গণহত্যার আন্তজার্তিক স্বীকৃতির দাবি নিয়ে আলোচনা করবে জাতিসংঘ। বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি সন্তানদের কয়েকটি সংগঠন, যা তিনি গ্রহণ করেছেন এবং আগামী ১৯ জুন থেকে ১৪ জুলাই মানবাধিকার পরিষদের ৫৩তম অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনা হবে। ওই অধিবেশনের তিন নম্বর এজেন্ডায় রয়েছে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি।
সোমবার জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মহাসচিব চিঠিটি পেয়েছেন, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের রেজ্যুলেশন ১৯৬৩/৩১ অনুযায়ী প্রচার করা হলো।
একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের কাছে এই চিঠি পাঠায় বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি সন্তানদের সংগঠন ‘স্টিচিং বাসুগ’র (বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ), আমরা একাত্তর, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম’ ৭১, ইউরোপীয় বাংলাদেশ ফোরাম (ইবিএফ) এবং সিরাজি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) বিশেষ পরামর্শকের মর্যাদা পেয়েছে স্টিচিং বাসুগ।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের গণহত্যা পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের পরিকল্পিত এক অভিযান ছিল। বাংলাদেশে বিহারি ও বাঙালি সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এই নৃশংস পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশে।
একাত্তরে ৩০ লাখের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা। এছাড়া দুই লাখেরও বেশি নারী ধর্ষণ ও শারীরিক নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটিরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি ছেড়ে কেবল জীবন বাঁচানোর তাগিদে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। আর অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন ২ কোটির বেশি মানুষ।
বিভিন্ন দেশের গ্রন্থাগার ও আর্কাইভে পাওয়া খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন এবং প্রকাশনাগুলো এই সত্যের সাক্ষ্য বহন করে। একাত্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় মুক্তিকামী বাঙালির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সিনেটর এডওয়ার্ড টেড কেনেডি। তিনি বাংলাদেশে আসতে চাইলেও পাকিস্তান সরকারের বাধায় তা ভেস্তে যায়। পরে ভারতে পৌঁছে বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ঘুরে মানুষের দুর্দশা, পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম হত্যাযজ্ঞের বিবরণ শুনেছিলেন তিনি। ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব পরিমণ্ডলে মতামত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
জাতিসংঘের কাছে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশি সংগঠনগুলো বলেছে, সিনেটর এডওয়ার্ড টেড কেনেডির ভারতে বাংলাদেশি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন, তথ্য অনুসন্ধানের জন্য তাকে বাংলাদেশে প্রবেশে পাকিস্তানের বাধা এবং তার পরবর্তী বক্তৃতা, আলোচনা ও মার্কিন সিনেটে উপস্থাপিত প্রতিবেদন পাকিস্তানের নৃশংসতার যথেষ্ট প্রমাণ।
বাংলাদেশে সংঘটিত নৃশংসতার ঘটনা তদন্তে ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের অসহযোগিতার কারণে এই কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতে পারেনি। পরে ১৯৭২ সালে তারা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত আইনি বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হয়।
ঢাকায় তৎকালীন মার্কিন মিশনের চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদন ও যুক্তরাজ্যের দাতব্য সংস্থা অক্সফামের সংকলিত নথিও গণহত্যার ঘটনার প্রমাণ বলে সংগঠনগুলো চিঠিতে উল্লেখ করেছে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়
‘হাই অ্যালার্টে’ লন্ডন, মার্কিন দূতাবাসের সামনে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ