ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ কার্তিক ১৪৩১

পশ্চিমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করছে ইসরাইলপন্থী সন্ত্রাসী ও প্রেসার গ্রুপ

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৫ জুন ২০২৪, ০৯:২৯ এএম | আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪, ০৯:২৯ এএম

মিডল ইস্ট আইকে উদ্ধৃত করে পার্স টুডে জানিয়েছে, নিউইয়র্ক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য হেসেন জাবর নামে একজন ফিলিস্তিনি বংশদ্ভুত আমেরিকান নার্সকে পুরস্কৃত করেছিল।কিন্তু এর কয়েকদিন পরে গাজায় চলমান ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞকে তিনি 'গণহত্যা' বলে অভিহত করায় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান থেকে তাকে বহিস্কৃত করা হয়।

 

চিকিত্সকরা ফিলিস্তিন ইস্যুতে যারা চিন্তিত, উদ্বিগ্ন এবং প্রতিবাদ করতে চায় তাদের জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অত্যন্ত "শ্বাসরুদ্ধকর এবং প্রতিকূল" বলে বর্ণনা করেছেন। তারা বলেছেন যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মী বা ছাত্রদেরকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করার অনুমতি দেয়া হচ্ছেনা। এমনকি ইসরাইল যখন ফিলিস্তিনদের হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করে নারী শিশুসহ সবাইকে পাইকারিভাবে হত্যা করছে, সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে তখনও প্রতিবাদের কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।

 

তারা আরো বলেছেন, গত আট মাস ধরে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা গাজার গণহত্যার ব্যাপারে নিজেদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাকে কেবল নিজেদের মধ্যেই গোপন রাখতে বাধ্য হয়েছে। এর অন্যথায় প্রতিবাদ করলেই কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে।

 

নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের সাম্প্রতিক স্নাতক ডিগ্রি লাভকারী ভিক্টোরিয়া ক্লাদায়ার বলেছেন, "যদি কেউ প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা সম্পর্কে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে তবে তাদেরকে হয়রানি করা হয়, নির্যাতন করা হয়।

 

অথচ,অন্যরা প্রকাশ্যে ইসরাইলের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করতে পারে এবং এমনকি আমেরিকান-ইসরাইল পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির সম্মেলনেও যেতে পারে।

 

"ছাত্র এবং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইমেল আক্রমণ এবং নানা শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কারণে,আমরা ফিলিস্তিন সম্পর্কিত যে কোনো কথা বলতে ভয় পাই।"

 

হামলা ও নির্যাতনের আশঙ্কায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের আরেক চিকিৎসক বলেছেন, আমরা মনে করি আমরা যা কিছু বলি সবই আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশি নজরদারি বহুগুণে বেড়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, হেসেন জাবেরকে বহিস্কারের ঘটনা থেকেই বোঝা যায় ফিলিস্তিনের সমর্থকরদের ওপর কিভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

 

ফিলিস্তিনি বংশদ্ভুত আমেরিকান নার্স হেসেন জাবের যিনি ২০১৫ সাল থেকে নিউইয়র্ক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নার্স হিসাবে কাজ করছেন। ইসরাইলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার কারণে ৭ মে একটি পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান থেকে তাকে বহিস্কার করার অনেক আগে তিনি বলেছিলেন যে তাকে থামিয়ে দেয়ার জন্য ব্যাপক চেষ্টা হয়েছিল।

 

তিনি আরো বলেন তিনি ক্রমাগত পুলিশি চাপ ও তদন্তের মধ্যে ছিলেন এবং ইসরাইলপন্থী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ বিভাগের একজন ইসরাইল সমর্থকের সামান্য অভিযোগের ভিত্তিতে তার সাথে কর্তৃপক্ষ খারাপ আচরণ করেছে।

 

এ ব্যাপারে হেসেন জাবের বলেন, গাজায় বোমা হামলা অব্যাহত রাখতে ইসরাইলের জন্য তার এক সহকর্মী অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছিলেন। তাকে আমি মানবতার বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলাম। বলেছিলোম মানবতা তাহলে কোথায়? কিন্তু সে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। ফলে তখন থেকেই শুরু হয় আমার ওপর নির্যাতন ও হয়রানি। অথচ ইসরাইলের জন্য অর্থ সংগ্রহকারী তিনিও ছিলেন একজন মা।

 

যাইহোক, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনি ইস্যুতে বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করে দেয়ার দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি খুনি ইসরাইলের পাশে দাঁড়ানোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

অকস্মাৎ মৃত্যু ইসলামে কাম্য নয়

অকস্মাৎ মৃত্যু ইসলামে কাম্য নয়

হাসিনা পালিয়ে না গেলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হতো: ইসমাইল সম্রাট

হাসিনা পালিয়ে না গেলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হতো: ইসমাইল সম্রাট

কেরানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ১০

কেরানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ,আহত ১০

দস্তগীরের বানোয়াট প্রশ্নের সমুচিত জবাব দিলেন ম্যাথু মিলার

দস্তগীরের বানোয়াট প্রশ্নের সমুচিত জবাব দিলেন ম্যাথু মিলার

বাংলাদেশের মাটিতে যত খুন হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যকান্ড হয়েছে সবার বিচার এই মাটিতেই হবে; শামা ওবায়েদ

বাংলাদেশের মাটিতে যত খুন হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যকান্ড হয়েছে সবার বিচার এই মাটিতেই হবে; শামা ওবায়েদ

রাসুল সা. এর জীবনাদর্শই আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের একমাত্র চাবিকাঠি- সিলেটে জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা আফেন্দী

রাসুল সা. এর জীবনাদর্শই আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের একমাত্র চাবিকাঠি- সিলেটে জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা আফেন্দী

অলরাউন্ডারদের তালিকায় তিনে মিরাজ, শীর্ষ বোলার রাবাদা

অলরাউন্ডারদের তালিকায় তিনে মিরাজ, শীর্ষ বোলার রাবাদা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী জ্ঞান-গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে

শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী জ্ঞান-গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে

চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী মাছপাড়ায় অবৈধ ৬টি স্বর্ণের বারসহ চোরাচালান কাজে ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী মাছপাড়ায় অবৈধ ৬টি স্বর্ণের বারসহ চোরাচালান কাজে ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার

ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে হবে

ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে হবে

মানবাধিকারের নামে সমাকামিতা প্রমোট করা জনগণ মানবে না

মানবাধিকারের নামে সমাকামিতা প্রমোট করা জনগণ মানবে না

ইসরাইলি হামলায় আরও ১০২ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরাইলি হামলায় আরও ১০২ ফিলিস্তিনি নিহত

পর্তুগাল জমিয়তের উলামায়ে ইসলামের কাউন্সিল সম্পন

পর্তুগাল জমিয়তের উলামায়ে ইসলামের কাউন্সিল সম্পন

শিক্ষার সব স্তরে 'ইসলাম শিক্ষা' বাধ্যতামূলকসহ ৭ দাবি

শিক্ষার সব স্তরে 'ইসলাম শিক্ষা' বাধ্যতামূলকসহ ৭ দাবি

আয়রন ডোমের আদলে তুরস্কের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ

আয়রন ডোমের আদলে তুরস্কের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ

ইরান সামরিক বাজেট তিন গুণ বাড়াবে

ইরান সামরিক বাজেট তিন গুণ বাড়াবে

রহস্যঘেরা মায়া সভ্যতার শহরের খোঁজ মেক্সিকোয়

রহস্যঘেরা মায়া সভ্যতার শহরের খোঁজ মেক্সিকোয়

উষ্ণায়নের প্রভাবে মাউন্ট ফুজিতে তুষারপাতে বিলম্ব

উষ্ণায়নের প্রভাবে মাউন্ট ফুজিতে তুষারপাতে বিলম্ব

টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা চীনের শীর্ষ ধনী

টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা চীনের শীর্ষ ধনী