ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৩০ ফিলিস্তিনি, শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত জীবন

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ এএম | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ এএম

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অব্যাহত হামলায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে শীতের তীব্রতা ও হাসপাতালে হামলার ঘটনায় গাজার জনগণের কষ্ট বাড়ছে।গত ২৪ ঘন্টায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় নিহত ৩০ ফিলিস্তিনি। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে।

 

রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দুটি হাসপাতালে হামলা চালায়। গাজা সিটির আল-ওয়াফা হাসপাতালে হামলায় সাতজন নিহত হন। পাশের আহলি হাসপাতালেও বোমাবর্ষণ করা হয়। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করছে, তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে কাজ করছে, তবে এই আক্রমণে বেসামরিক মানুষের নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

 

গাজার আল-ওয়াফা হাসপাতালে হামলায় নিহত হন সাতজন, যেখানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন অসংখ্য আহত মানুষ। একই সঙ্গে আহলি হাসপাতালে গোলাবর্ষণে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তার অভাব এবং চলমান শীতকালীন ঠাণ্ডা পরিস্থিতি গাজাবাসীর দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয় সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে ইতোমধ্যে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, যা এই শীত মৌসুমে মৃত শিশুর সংখ্যা পাঁচে পৌঁছেছে।

 

শুধু তাই নয়, কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুসাম আবু সাফিয়াকে গ্রেফতার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা হাসপাতালে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগেও অভিযুক্ত। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ এবং তীব্র নিন্দার সৃষ্টি হয়েছে।

 

৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৫,৪৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০৮,০৯০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং ২০০-এরও বেশি মানুষ অপহৃত হয়েছেন।

 

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

 

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

 

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

 

গাজার জনগণের কষ্ট ও মানবিক সংকট ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতি সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। শান্তি এবং মানবতার স্বার্থে সংঘাতের স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু
লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের
চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম
মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর
গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় দুইদিনে নিহত ১৫০
আরও

আরও পড়ুন

ব্রাইটনের বিপক্ষে আর্সেনালের হোঁচট

ব্রাইটনের বিপক্ষে আর্সেনালের হোঁচট

টানা দ্বিতীয় জয়ে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত সিটির

টানা দ্বিতীয় জয়ে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত সিটির

রিকেলটনের মহাকাব্যিক ইনিংস,রান পাহাড়ের চাপে পাকিস্তান

রিকেলটনের মহাকাব্যিক ইনিংস,রান পাহাড়ের চাপে পাকিস্তান

রহমতের লড়াকু সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান

রহমতের লড়াকু সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান

আশুলিয়ায় ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

আশুলিয়ায় ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

আটঘরিয়ায় প্রভাষকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি

আটঘরিয়ায় প্রভাষকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি

আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ: স্বৈরাচার মুক্ত নতুন ব্যবস্থার সন্ধানে

আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ: স্বৈরাচার মুক্ত নতুন ব্যবস্থার সন্ধানে

৫০০ হজ কোটা বহাল রাখতে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তা কামনা

৫০০ হজ কোটা বহাল রাখতে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তা কামনা

ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ

ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ

পাওনা টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব যাওয়ায় পাওনাদার টাকা ফেরত নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে।

পাওনা টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব যাওয়ায় পাওনাদার টাকা ফেরত নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে।

‘রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন দিতে হবে’

‘রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন দিতে হবে’

শীতে পশু-পাখিদের যত্ন

শীতে পশু-পাখিদের যত্ন

মানব পাচার রোধ করতে হবে

মানব পাচার রোধ করতে হবে

মজলুমের বিজয় ও জালেমের পরাজয় অবধারিত

মজলুমের বিজয় ও জালেমের পরাজয় অবধারিত

বিনিয়োগ বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

বিনিয়োগ বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু

লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের

লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের

চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম

চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম

মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর

মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর

জাতীয় ঐক্য এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল

জাতীয় ঐক্য এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল