অন্যের সাথে ওই আচরণ করি যা পেলে আমি খুশি হই-১
১৯ মার্চ ২০২৩, ১১:১০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:১৮ এএম
কুরআন মজীদের প্রসিদ্ধ আয়াত : ‘হে ঈমানদারগণ! পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন’। এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের সম্বোধন করে বলেছেন, ‘তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ কর’। পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করার অর্থ কী? এই যে আমরা মসজিদে প্রবেশ করেছি, পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করেছি। অর্থাৎ আমাদের দেহের কোনো অংশ মসজিদের বাইরে নেই। যদি আমার পা মসজিদের ভেতরে থাকে আর মাথা মসজিদের বাইরে তাহলে বলা হবে না যে, আমি মসজিদে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করেছি। তো আল্লাহ মুমিনদের আদেশ করেছেন, ‘তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ কর’। অর্থাৎ তোমাদের জীবনের সকল অংশ যেন ইসলামের ভেতরে চলে আসে। জীবনের কিছু অংশ ইসলামের ভেতরে আর কিছু অংশ ইসলামের বাইরে, কিছু অংশে ইসলামের অনুসারী আর কিছু অংশে ইসলাম থেকে খারিজ এমন যেন না হয়। আর এ আদেশ আল্লাহ কোনো অমুসলিমকে করেননি। এ আদেশ করেছেন মুমিনকে, মুসলিমকে।
ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতে হলে সর্বপ্রথম ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে জানতে হবে, ইসলামের শিক্ষা ও বিধানের বিস্তৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। তা জানলে মানার চিন্তা আসবে। না জানলে মানার চিন্তাও আসবে না। তাই ইসলামের শিক্ষা ও বিধানের ব্যাপকতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়টি দু’ভাবে চিন্তা করা যায়। এক. জীবনের অঙ্গনগুলো সম্পর্কে চিন্তা করা। জীবনের সকল অঙ্গনে ইসলামের শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা আছে। দুই. ইসলামী শিক্ষার বিভাগগুলো সম্পর্কে চিন্তা করা। এর একটি সহজ উপায় হলো, আপনি একটি হাদিসের কিতাব হাতে নিন এবং শুধু শিরোনামগুলো পড়ুন। তাহলে দেখতে পাবেন আমরা যতটুকু চিন্তা করি তার চেয়ে বিস্তৃত আকারে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নির্দেশনা রয়েছে। তেমনি একটি ফিকহের কিতাব হাতে নিন এবং শুধু সূচিপত্রে নজর বুলান। দেখবেন আমরা যতটুকু ভাবি তার চেয়ে অনেক ব্যাপকভাবে ইসলামের বিধানাবলী বিদ্যমান।
আলিমগণ ইসলামের মৌলিক বিধানাবলী পাঁচটি শিরোনামে তুলে ধরেছেন : আকিদা, ইবাদত, মোয়ামালাত, মোয়াশারাত ও আখলাক। আকিদা অর্থ বিশ্বাস। এটি অনেক ব্যাপক বিষয়। ইসলামের একটি মৌলিক বিভাগ। ইসলাম মানুষকে সঠিক ও যথার্থ আকিদা শিক্ষা দান করে। যেমন আল্লাহ এক, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল ও শেষ রাসূল, কিয়ামত হবে, পুনরুত্থান হবে ইত্যাদি।
দ্বিতীয় বিভাগ, ইবাদত। ইবাদত মানে উপাসনা। ইসলামে ইবাদতের প্রসঙ্গ অনেক বিস্তৃত। আমরা যে নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, হজ করি, জাকাত দেই, কুরবানি করি এগুলো ইসলামের একেকটি ইবাদত। তৃতীয় বিভাগ, মোয়ামালাত তথা লেনদেন। লেনদেনের ক্ষেত্রে ইসলামের অনেক বিধান আছে। একটি মৌলিক বিধান, বেচাকেনা হালাল, রিবা বা সুদ হারাম।
চতুর্থ বিভাগ, মোয়াশারা। পারস্পরিক আচরণ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে একের সাথে অন্যের আচরণ কী হবে এটি ইসলামের অনেক বড় শাখা। পঞ্চম বিভাগ, আখলাক। স্বভাব-চরিত্র। যেমন এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রিয় সাহাবী হযরত আনাস বিন মালিক (রা.) কে বলেছেন, হে আমার বৎস! তোমার পক্ষে যদি সম্ভব হয় তুমি সকাল-সন্ধ্যা এমন অবস্থায় অতিবাহিত করবে যে, তোমার অন্তরে কারো প্রতি বিদ্বেষ নেই, তাহলে তাই কর। কারণ এটি আমার সুন্নাহ। আর যে আমার সুন্নাহকে জিন্দা করে সে আমাকে ভালোবাসে। যে আমাকে ভালোবাসে সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে। (জামে তিরমিজি : ২৬৭৮)।
আমরা তো সুন্নত বলতে বুঝি নামাজের সুন্নত, রোজার সুন্নত, হজের সুন্নত ইত্যাদি। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) বলছেন, কারো প্রতি বিদ্বেষ না থাকা, সবার প্রতি অন্তর নির্মল থাকা এটিও তার সুন্নত। তো আখলাক সম্পর্কে কুরআন মজীদে অনেক আয়াত রয়েছে এবং হাদিসের কিতাবসমূহে অনেক হাদিস রয়েছে।
এই যে বিভাগগুলো এর মধ্য থেকে সাধারণত আকায়েদ ও ইবাদতকে দ্বীনের অংশ মনে করা হয়। লেনদেনকেও কিছু মানুষ মনে করেন ইসলামী শিক্ষার অধীন। কিন্তু এক্ষেত্রেও অধিকাংশ মানুষ অসচেতন। তারা মনে করে, আমাদের লেনদেন আমরা যেভাবে ইচ্ছা করব, যেভাবে লাভ হয় সেভাবে করব।
আর মোয়াশারা এবং আখলাক! হাকিমুল উম্মত হযরত আশরাফ আলী থানবী (রাহ.) বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষ অসচেতন। বিশেষভাবে মোয়াশারা বা পারস্পরিক আচরণ সম্পর্কে’। তারা নফল নামাজ পড়াকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে করে, বুজুর্গী ও দ্বীনদারী মনে করে কিন্তু কষ্টদায়ক আচরণ থেকে বেঁঁচে থাকাকে দ্বীনদারীর বিষয় মনে করে না। তারা এটাকে ব্যক্তিগত সভ্যতা মনে করে। কেউ তা লক্ষ্য করলে সে সভ্য মানুষ। না করলে বড় জোর সে সভ্য, ভদ্র নয়। তবে দ্বীনদার থাকতে কোনো অসুবিধা নেই। কী ভয়াবহ ধারণা! অসভ্য অথচ দ্বীনদার! এটা কীভাবে সম্ভব?
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিপ্লবে গুলির সামনে বাচ্চারা জীবন দেয় আর মুরব্বিরা পদ ভাগাভাগি করেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ
বিমানবন্দর থানা কৃষক দলের উদ্যোগে ক্রয় মূল্যে সবজি বিক্রি
বগুড়ায় চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার, চারজন গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ায় শেখ কামালের নাম সরিয়ে হচ্ছে ‘আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম’
পাবনায় খাল অবৈধ দখল ও দূষণমুক্ত করার কাজ শুরু
দ্রুত জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে- গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের নিয়ে মামলা বাণিজ্য করতে দেয়া যাবে না-সারজিস আলম
মাওলানা হামিদ খান ভাসানী ছিলেন শোষণের বিরুদ্ধে ও শোষিতের পক্ষে : তারেক রহমান
অঞ্চলভিত্তিক ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে- সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাসের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
কুয়াকাটা সৈকতের পাবলিক টয়লেট থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
এখনও নির্বাচন দিলে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করবে-ব্যারিস্টার খোকন
সবার আগে সকলের সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে- খুলনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তারা
যুক্তরাষ্ট্রে উড্ডয়নের সময় বিমানে বন্দুক হামলা
জেলেনস্কি বিশ্বাস করেন ট্রাম্পের সময়েই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি হবে
"বিচ্ছেদের পর প্রথমবারের মতো মঞ্চ মাতালেন জেনিফার লোপেজ"
প্রতিদিনই বাংলাদেশকে সংস্কার করা দরকার : মান্না
পুলিশ সংস্কার প্রস্তাবনা জমা দিল বিএনপি
বিশ্বব্যাপী ফ্যাশন আইকন ৮০ বছরের দাদির নতুন জীবনের গল্প
শিবালয়ে নৌকা থেকে পানিতে পড়ে এক ব্যাক্তির মৃত্যু