ইমাম গাজ্জালীর দৃষ্টিতে কোরআন তেলাওয়াতের শর্ত-১
২৯ মার্চ ২০২৩, ১১:৩৮ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৪৪ পিএম
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহ.) ও হযরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহ.) দু’জনই ছিলেন শরীয়ত দর্শনের মহান ইমাম। শেষোক্তের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুলাহিল বালেগা’, যা আমাদের দেশের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার টাইটেল ফিকা বিভাগে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। হযরত শাহ সাহেব এতে রোজা সম্পর্কে দার্শনিক দিক থেকে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। প্রথমোক্তের বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থের নাম ‘ইয়াহুয়াউল উলুম’। বহু খ-ে এটি বিভক্ত। ইমামদ্বয় কোরআন ও হাদিসের আলোকে রোজার দার্শনিক ব্যাখ্যাদান করেছেন এবং এ ব্যাপারে দুইজনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রায় এক।
এখানে আমরা ইমাম গাজ্জালী (রহ.) এর দৃষ্টিভঙ্গি সংক্ষেপে তুলে ধরেছি। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থে তিনি লিখেছেন : ‘রোজা মানব নফসের জন্য মহৌষধ স্বরূপ। এ কারণে হযরত আদম (আ.) থেকে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত যত নবীর আগমন ঘটেছে, সবাই রোজা পালন করেছেন এবং তাদের অনুসারীদের রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন সহি বর্ণনা হতে জানা যায় যে, হযরত নূহ (আ.) সর্বদা রোজা রাখতেন। হযরত দাউদ (আ.) এর নিয়ম ছিল এই যে, একদিন রোজা রাখতেন, একদিন রাখতেন না। হযরত ঈসা (আ.) একদিন রোজা রাখতেন এবং দুইদিন রোজা রাখতেন না। হুজুর (সা.) এর উম্মতদের জন্য সহজ করে দেয়া হয়েছে যে, বছরে তাদের জন্য মাত্র এক মাস রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। আর তা এজন্য যে, হযরত নূহ (আ.) এর কওম ছিল দৈহিক শক্তির দিক দিয়ে খুবই সুদৃঢ় মজবুত। এজন্য তাঁকে সর্বদা রোজা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। যখন মানবিক শক্তি হ্রাস পেতে থাকে, রোজার সংখ্যাও কমতে থাকে। এমনকি রসূলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মতের জন্য সহজ করে দেয়া হয় যে, তারা বছরে মাত্র এক মাস (রমজানে) রোজা রাখবে এবং ফজিলত সারা বছরব্যাপী লাভ করবে। (ইয়াহিয়াউল উলুম)।
হযরত শাহ সাহেব এটাও বলেছেন যে, রোজার প্রধান ফায়দা হচ্ছে এই যে, প্রত্যেক মানুষ তার শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তারা রোজার বহু উপকার ও ফজিলত তাৎপর্যের বর্ণনা দিয়েছেন উভয় গ্রন্থে। কোরআনে বর্ণিত সূরা বাকারা ও সূরা কদরের আয়াতসমূহ এ প্রসঙ্গে উদ্ধৃত করা হয়েছে। এতদসংক্রান্ত হাদিসও বর্ণিত হয়েছে। হযরত শাহ সাহেব রোজাকে ‘তিরিয়াক’ বলেছেন যা, মানবীয় হলাহলগুলোকে বিদূরীভূত করে দেয়।
রমজানের অসীম ফজিলত বরকতের কারণে এ মাসের ইবাদত-বন্দেগীর মধ্যে কোরআন তেলাওয়াতের ওপর বিভিন্ন হাদিসে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মোহাদ্দেসীন এবং মাশায়েখ-বুজর্গানে দ্বীন ও ইমামগণ রমজানে অধিক সময় ব্যয় করতেন কোরআন তেলাওয়াতে। হযরত ইমাম আজম আবু হানিফা (রহ.) সমগ্র রমজানে কোরআনে কারিম ৬১ বার খতম করতেন। অনেকের কাছে এ অসম্ভব কাজ তিনি এইভাবে সহজ ও সম্ভব করেছিলেন যে, রমজানের ৩০ দিবসে ৩০ খতম , রাতে ৩০ খতম এবং (মাসব্যাপী ) খতম তারাবিহ এর নামাজে এক খতম-সর্বমোট রমজান মাসে ৬১ খতম।
অন্যান্য অনেকের ক্ষেত্রে জানা যায় যে, তারা রমজানে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। বর্তমান যুগে যারা সাধারণভাবে কোরআন তেলাওয়াতে সক্ষম, তাদের পক্ষে দিবা-রজনীতে নুন্যতম এক পারা তেলাওয়াত মোটেই কষ্টসাধ্য নয়, যাদের পক্ষে রমজানে অনায়াসে এক খতম খুবই সহজ। ইমাম গাজ্জালী (রহ.) কোরআন তেলাওয়াতের যেসব শর্তের উল্লেখ করেছেন, সেগুলো পালন করতে গেলে সাধারণ লোকের তেলাওয়াতের কি অবস্থা হতে পারে তা ভেবে দেখার বিষয়।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
কানাইঘাটে গ্রুপিং কোন্দলে প্রাণ হারলেন ছাত্রদল কর্মী
শাহজালাল বিমানবন্দরের সব নিরাপত্তা পাস স্থগিত
বিএনপির দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ১০
সড়কে ফের তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, শিক্ষক-সাংবাদিকসহ আহত ১০
প্রাইম ব্যাংক’র সাথে চুক্তি করলো কাশপিয়া গ্রুপ
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের সাথে হজ এজেন্সি প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গফরগাঁওয়ে বালুর নিলাম সম্পন্ন
খামেনি কোমায়! ছবি প্রকাশ করে গুজব উড়িয়ে দিল ইরান
শাহজাদপুরে নিখোঁজের ১৫ দিন পর ব্যবসায়ীর গলিত লাশ উদ্ধার
হত্যাকে পুঁজি করে চাঁদাবাজি: সালথায় ফের গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামির জামিন নামঞ্জুর
ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক রেখেই জিএম পদে পরিক্ষা
মন্দির থেকে চুরি হওয়া শিবলিঙ্গটি উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার
রাঙামাটিতে অবৈধ অটোরিকশা বন্ধের দাবি
ফরিদপুরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিবাদ সমাবেশ
কৃষিজমি ভরাট করে আবাসন প্রকল্প গড়ার প্রতিবাদ
পাবনায় দুই দিনে ৩ খুন
ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কিনা তা জনগণই নির্ধারণ করবে -সারজিস আলম
গাইবান্ধায় শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের নামে হত্যা মামলা