আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ তাঁর সৃষ্টির মাঝে-২
১৩ মে ২০২৩, ১১:১৪ পিএম | আপডেট: ১৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
পানির চরিত্র হলো, উপর থেকে নিচের দিকে প্রবাহিত হয়। পানি নিচ থেকে উপরের দিকে ওঠাতে হলে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ও কৃত্রিম শক্তি প্রয়োগ করে উত্তোলন করতে হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে পানি জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়ে তা আকাশে উত্তোলিত হয়, সেই জলীয় বাষ্প মেঘমালায় পরিণত হয়ে বৃষ্টিরূপে বর্ষিত হয়। পৃথিবীতে এমন কোনো মহাশক্তি রয়েছে, যা পানিকে এভাবে জলীয় বাষ্পে পরিণত করে আকাশে উত্তোলন করবে, আবার আকাশ থেকে তা বৃষ্টিরূপে জমিনে বর্ষণ করবে?
নিশ্চয় এমন কোনো অদৃশ্য মহাসত্তা রয়েছেন, যাঁর মহাজাগতিক নিখুঁত কর্মপরিকল্পনায় পানি নিজ চরিত্রের বিপরীতে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয় এবং আকাশে মেঘমালায় রূপান্তরিত হয়ে বৃষ্টি আকারে পৃথিবীতে নেমে আসে। এ থেকে প্রমাণিত হয়, সর্বশক্তিমান আল্লাহই এভাবে বিস্ময়কর পদ্ধতিতে আকাশ থেকে জমিনে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
আকাশ থেকে বর্ষিত পানির মাধ্যমে জমিন সতেজ-উর্বর ও চাষাবাদযোগ্য হয়। তা থেকে বৈচিত্র্যময় ফলমূল, শাকসবজি ও খাদ্যশস্য উৎপন্ন হয়। কুরআনুল কারীমের ভাষায় : আমি আল্লাহ তা (আকাশ থেকে বর্ষিত পানি) দ্বারা রং-বেরঙের ফলমূল উৎপন্ন করি। (সূরা ফাতির : ২৭)।
জমিন থেকে এ ফলমূল ও শস্যদানা উৎপন্নকারী হলেন স্বয়ং মহা প্রজ্ঞাময় আল্লাহ। কৃষক যদিও জমিন চাষাবাদ করে তাতে বীজ-শস্যদানা বপন করে; কিন্তু উক্ত বীজ ও শস্যদানা অঙ্কুরিত করে তা মাটির বুক চিরে নির্গতকারী কৃষক নয়। কৃষক তো শুধু চাষাবাদ ও বীজ বপনকারী। কিন্তু বপনকৃত বীজ বিদীর্ণ করা, তাতে অঙ্কুর সৃষ্টি করে মাটি ভেদ করে তা নিয়ে আসার এটা নিঃসন্দেহে দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান সর্বময় শক্তি ও ক্ষমতার আধার মহা পরাক্রমশালী আল্লাহরই কাজ।
তদুপরি এ অঙ্কুর এমনই নরম-কোমল, যা মাটি থেকে উপড়ে ফেলতে দুর্বল হাতের আঙ্গুলই যথেষ্ট। অথচ এমন শক্তিশালী, যা শক্ত মাটির বুক চিরে অনায়াসে বেরিয়ে আসে। নরম-কোমল অঙ্কুরে শক্ত মাটি ভেদ করার শক্তি দানকারী একজন মহাসত্তা নিশ্চয় রয়েছেন।
ভূপৃষ্ঠস্থিত পানিকে জলীয় বাষ্পে পরিণত করে বৃষ্টিবাহী মেঘমালায় রূপান্তরিত করা, আকাশ থেকে তা পৃথিবীতে বর্ষণ করা, বপনকৃত শক্ত কঠিন বীজ মাটির নিচে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেটে যাওয়া এবং তা থেকে নরম-কোমল অঙ্কুর মাটির বুক চিরে বেরিয়ে আসার শক্তি দানকারী নিঃসন্দেহে মহা ক্ষমতাধর আল্লাহ ছাড়া কেউ নয়।
আকাশ থেকে বর্ষিত পানির মাধ্যমে আল্লাহ বিচিত্র বর্ণের ফলমূল উৎপন্ন করেন। আপেল, আনার, আঙ্গুর, আম, কাঁঠাল আরো কত বিচিত্র রং, বৈচিত্র্যময় আকার আকৃতি ও নানান স্বাদের ফলমূল রয়েছে। প্রত্যেক প্রকার ফলের মধ্যে আবার বিচিত্র রং, স্বাদ, আকার ও আকৃতিগত ভিন্ন ভিন্ন জাত ও শ্রেণি রয়েছে। সুন্দরতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কতই না মহিমাময়! অথচ সর্বপ্রকার ফলেরই উৎসস্থল মাটি, মাটির ভেতর থেকেই সব উৎপন্ন হয়।
কিন্তু প্রত্যেক প্রকার ফলের রং ভিন্ন ভিন্ন। রং, স্বাদ ও আকার-আকৃতি সৃষ্টি যদি মাটির নিজস্ব চরিত্র হতো, তাহলে এক ও অভিন্ন স্বাদ, রং ও আকার-আকৃতিবিশিষ্ট বস্তুই শুধু মাটি উৎপন্ন করত। সুতরাং মাটি থেকে উৎপন্ন যাবতীয় ফল-মূল, শস্যদানা ও বৃক্ষ তরুলতায় রং, স্বাদ ও আকার-আকৃতিগত বৈচিত্র্য সৃষ্টিকারী মহান আল্লাহ ব্যতীত কেউ নয়।
রং ও বর্ণগত এ বৈচিত্র্য শুধু ফলমূলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং ভূপৃষ্ঠে বিদ্যমান পাহাড়-পর্বতমালাও এর ব্যতিক্রম নয় কোনোটি শুভ্র, কোনোটি লাল এবং কোনোটি নিকষ কালো। বিচিত্র রং ধারণ যদি পাহাড়ের নিজস্ব চরিত্র হতো, তাহলে পৃথিবীর সব পাহাড়-পর্বত অভিন্ন রংবিশিষ্ট হতো। পাহাড়-পর্বতমালার এ রং বৈচিত্র্য কে সৃষ্টি করলেন? নিঃসন্দেহে স্বাধীন কর্মবিধায়ক আল্লাহ তায়ালাই আপন ইচ্ছানুযায়ী এ রং বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছেন।
এমনিভাবে প্রাণিজগতের দিকে তাকালে দেখা যায়, অসংখ্য জীবজন্তু বিচিত্র রং ও আকার আকৃতিতে পৃথিবীতে বিচরণ করছে। উট, ঘোড়া, হাতি, বাঘ, ভাল্লুক, গরু, ছাগল, গাধা, ভেড়া, হরিণ ইত্যাদি একেক জাতের চতুষ্পদ জন্তু একেক রং-বর্ণ ও আকার-আকৃতিবিশিষ্ট।
আবার প্রত্যেক জাতের প্রাণীর মধ্যে রয়েছে সাদা-কালো-লাল তথা বহুবিধ রং ও বর্ণবৈচিত্র্য। রং-বর্ণ ও আকার-আকৃতি ধারণ যদি প্রাণিজগৎ ও জড়জগতের ফিতরাত ও স্বভাবের দাবি অনুযায়ী হতো, তাহলে সব অভিন্ন রং-বর্ণ ও আকার-আকৃতিবিশিষ্ট হতো। কিন্তু স্বভাব-বিরুদ্ধভাবে এ বিস্ময়কর রং ও বর্ণবৈচিত্র্য কীভাবে সৃষ্টি হলো? সন্দেহাতীতভাবে সেই মহাসত্তার সৃষ্টি কুশলতায়, যাঁর করায়ত্বে সৃষ্ট জগতের একক ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
‘সাইবার মানডে’ উপলক্ষে ওয়েব হোস্টিংয়ে লিমডা হোস্টে চলছে ৬০% পর্যন্ত ছাড়!
ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী
ফ্যাসিস্ট সরকারের ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে মঞ্চে আসছে থিয়েট্রিক্যাল বাহাস ও কন্ঠনালীতে সূর্য
মিলেছে ‘হারিছ চৌধুরী’র ডিএনএ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ
নাম পরিবর্তনের দাবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধের আত্মহত্যা
আইএসের নৃশংসতার বিচারে জাতিসংঘ ব্যর্থ : নাদিয়া মুরাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জে হাঙ্গার প্রজেক্টের গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার
ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে পাঞ্জাবের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদালের ওপর গুলিবর্ষণ
খুলনায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু