সন্তান আল্লাহর নিয়ামত : চাই যথাযথ তালিম-তারবিয়াত-২
১৯ জুন ২০২৩, ১১:১০ পিএম | আপডেট: ২০ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
শিশুরা পরিবারের সদস্যদের দেখে শেখে। এই শেখা শুরু হয় মুখ ফোটারও আগে। অনেক শিশু অন্যদের দেখাদেখি নামাজ পড়ে, হাত বাঁধে, রুকু-সিজদা করে। তাই শিশুর দ্বীনি তারবিয়াতের জন্য দ্বীনি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার ব্যাপারে যতœবান হওয়া : নিকট অতীতের বিখ্যাত আলেম মাওলানা মুহাম্মাদ মনযূর নোমানী (রাহ.) বলেন, ‘আম্বিয়ায়ে কেরামের দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি হলো, এটি মূলত আখেরাতের চিরস্থায়ী জীবনের প্রস্তুতির জন্য। এই দৃষ্টিভঙ্গির স্বাভাবিক ও অপরিহার্য দাবি এই যে, দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মাসয়ালা হলো, আখেরাতে সফলতা অর্জন করা। তাই রাসূল (সা.) প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর তার সন্তানের এই হক সাব্যস্ত করেছেন যে, একেবারে প্রথম থেকেই তার দ্বীনি তালিম ও তারবিয়াতের ফিকির করবে। এতে অবহেলা করলে গুনাহগার হবে’। (মাআরিফুল হাদিস ৩/২৭৪)।
অতএব সন্তানকে প্রথমে আল্লাহর নাম ও কালিমা শেখাতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন জিকির, মাসূর দুয়া এবং ইসলামি শিষ্টাচার শেখাতে হবে। নবীজির আমল দেখুন, ওমর ইবনে আবি সালামা (রা.) বলেন, আমি ছোট অবস্থায় নবীজির কাছেই লালিত-পালিত হয়েছি। একবার খাওয়ার সময় পাত্রের চতুর্পাশ থেকে খাচ্ছিলাম। তখন নবীজি (সা.) আমাকে বললেন, হে বৎস! বিসমিল্লাহ বল, ডান হাতে খাও এবং তোমার পাশ থেকে খাও। (সহিহ মুসলিম : ২০২২)। এভাবে শিশুকে হাতে-কলমে সুন্নত, আদব ইত্যাদি শেখানো।
সন্তান যেন আমার থেকে কোনো মন্দ কাজ না শেখে, সতর্কতার অভাবে অনেক সময় শিশুরা আমাদের থেকেও বিভিন্ন মন্দ কাজ শেখে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ব্যাপারে পূর্ণ সতর্কতা কাম্য। কয়েকটি বিষয় আলোচনা করা যায়।
ক. অনেক সময় জ্বালাতন থেকে বাঁচার জন্য আমরা শিশুর হাতে ডিভাইস-স্মার্টফোন দিয়ে দেই। অথচ আমরা কি একটু চিন্তা করেছি! সামান্য সময়ের জ্বালাতন থেকে বাঁচার জন্য আদরের সন্তানের হাতে এমন একটি অগ্নিখ- তুলে দিলাম, যার কারণে তার ঈমান, আমল, আখলাক এক কথায় দুনিয়া ও আখেরাত কোনো কিছুই রেহাই পাবে না।
বিষয়টি ব্যাপক হওয়ায় হয়তো আমাদের কাছে তেমন কিছু মনে হয় না। মনে করি, কী আর এমন হবে! কিন্তু একটু ভাবলে দেখা যাবে, সন্তানের বহু আচরণ আমাদের এই কর্মের ফল। এর সুন্দর সমাধান হলো, সন্তানকে সময় দেওয়া। তার আনন্দ-বিনোদনের উত্তম পথ খুঁজে বের করা।
খ. শিশুকে কখনো মিথ্যা আশ্বাস না দেই। একে তো তা কবিরা গুনাহ, তারপর আবার এ থেকে বাচ্চাও শিখবে প্রয়োজনে মিথ্যা কথা বলা যায়। অতএব এক্ষেত্রেও সতর্কতা কাম্য। এ বিষয়ে নবীজি (সা.) কী বলেছেন শুনুন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমের (রা.) বলেন, (ছোট বেলায়) একদিন (আমি খেলার জন্য ঘর থেকে বের হতে চাইলে) আম্মা ডাক দিয়ে বললেন, এদিকে আস, তোমাকে একটি জিনিস দেব। তখন নবীজি আমাদের ঘরে ছিলেন। তিনি বললেন, তুমি তাকে কী দিতে চেয়েছ? মা বললেন, আমি তাকে খেজুর দিতে চেয়েছি। তখন নবীজি বললেন, তুমি যদি তাকে কিছু না দাও তবে তোমার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় গুনাহ হবে। (সুনানে আবু দাউদ : ৪৯৯১)।
ঘ. রাগের সময় কোনো অসমীচীন শব্দ না বলি। কেউ কেউ এই সময় সন্তানকে গালিগালাজ করে। অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে; যা কোনো সভ্য মানুষ থেকেও কাম্য নয়। এতে অনেকগুলো ক্ষতি : ১. এটি কবিরা গুনাহ। ২. এর কারণে পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের শ্রদ্ধাবোধ বাকি থাকে না। ৩. সন্তানও পিতা-মাতার ওপর এগুলো প্রয়োগ করে।
এক নারীকে দেখেছি, সে তার ছেলেকে খুব গালিগালাজ করত। কিছুদিন পর দেখি, ছেলেও তার মাকে গালিগালাজ করছে এবং ওই শব্দগুলোই বলছে, যেগুলো তার মা একসময় বলত। এমন অনেক বিষয় রয়েছে, যা আমাদের আচরণ থেকে সন্তান শেখে। সুতরাং আমরা সন্তানের সাথে এমন আচরণ করব না, যা তার থেকে কামনা করি না।
সন্তানকে কমপক্ষে ফরজে আইন পরিমাণ দ্বীনি ইলম শেখানো : সন্তান একটু বড় হলে তাকে ধীরে ধীরে ওযু, গোসল, নামাজ, কুরআন কারীমের তিলাওয়াত ও আকায়েদ থেকে শুরু করে দ্বীনের মৌলিক বিধানগুলো শেখাতে হবে।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
মানসিক সুস্থতায় কর্মবিরতি