মুসলিম উম্মাহর জন্য মসজিদে আকসা কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ-২
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম
মসজিদে আকসার গুরুত্ব বোঝার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, মেরাজ রজনীতে আমাদের নবীজী ঊর্ধ্বজগতের সফর শুরু করার পূর্বে জিবরাইল আমীনের সাথে প্রথমে এই মসজিদে এসেছেন এবং নামায আদায় করেছেন। তিনি ইমামতি করেছেন আর সমস্ত নবীগণ তাঁর ইকতিদা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম (সা.) (বাইতুল মাকদিসের বিবরণ দিতে গিয়ে) বলেন : আর আমি নিজেকে আম্বিয়া আলাইহিস সালামের জামাতের মধ্যে দেখতে পেলাম। দেখি, হযরত মূসা (আ.) নামাযরত আছেন। তিনি ছিলেন ছিপছিপে ও দীর্ঘ দেহের অধিকারী। তাঁর চুল কোঁকড়ানো, যা ছিল কান পর্যন্ত ঝুলন্ত।
দেখে মনে হবে, যেন ‘শানওয়া’ গোত্রেরই একজন লোক। হযরত ঈসা (আ.)-কেও নামাযে দণ্ডায়মান দেখা গেল। তাঁর আকার-আকৃতি সাহাবী উরওয়া ইবনে মাসউদ সাকাফী (রা.)-এর সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। হযরত ইবরাহীম (আ.)-কেও নামাযরত অবস্থায় দৃষ্টিগোচর হলো। নবীজী বলেন, তাঁর দেহাবয়বের সাথে আমার দেহাবয়বের মিল বেশি। ইতোমধ্যে নামাযের সময় হয়ে গেল আর আমি তাঁদের সকলের ইমামতি করলাম। (সহীহ মুসলিম : ১৭২)।
বাইতুল মাকদিসের গুরুত্ব এখান থেকেও বোঝা যায় যে, কিয়ামতের দিন এটাই হবে হাশরের ময়দান। হযরত মাইমুনা (রা.) বলেন : হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে বাইতুল মাকদিস সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, কিয়ামতের দিন এটা হবে হাশরের ময়দান। এখান থেকে মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে যাবে। তোমরা এখানে আসো এবং নামায আদায় করো...। (মুসনাদে আবু ইয়ালা : ৭০৮৮)। নুরুদ্দীন হাইছামী (রাহ.) বলেন : এই হাদিসের বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ : ৩/৬৭৫)।
মসজিদে আকসার একটি বড় ফযীলত হলো, হযরত সুলাইমান (আ.) এই মসজিদ যিয়ারতকারীর জন্য একটি বিশেষ দুআ করেছিলেন। আর স্বয়ং আমাদের নবী এই দুআ কবুল হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেন : সুলাইমান ইবনে দাউদ (আ.) যখন বাইতুল মাকদিস নির্মাণ থেকে ফারেগ হলেন, আল্লাহর কাছে তিনটি দুআ করলেন : ১. তাঁর প্রতিটি ফায়সালা যেন আল্লাহর ফায়সালা মোতাবেক হয়।
২. তাকে যেন এতো বড় রাজত্ব দেয়া হয়, যা তাঁর পরে আর কাউকে দেয়া হবে না। ৩. একমাত্র নামাযের উদ্দেশে যে ব্যক্তি এই মসজিদে আগমন করবে, আল্লাহ্ যেন তাকে সেদিনের মতো নিষ্পাপ করে দেন, যেদিন তার মা তাকে জন্মদান করেছেন। নবী কারীম (সা.) বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় দুআ তো আল্লাহ কবুল করেছেন। আর আমি আশাবাদী আল্লাহ তাঁর তৃতীয় দুআও কবুল করেছেন। (সুনানে : ৬৯২)।
মসজিদে হারাম, মসজিদে নববীর পাশাপাশি মসজিদে আকসায় নামায পড়ার সওয়াবও অন্যান্য মসজিদের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। হযরত আবু দারদা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন : মসজিদে হারামের নামায এক লক্ষ নামাযের সমতুল্য। আমার মসজিদে (মসজিদে নববীতে) নামায এক হাজার নামাযের সমতুল্য। আর বাইতুল মাকদিসের নামায পাঁচশ নামাযের সমতুল্য। (মুসনাদে বাযযার (কাশফুল আসতার) : ৪২২)।
যদি বাইতুল মাকদিস যিয়ারত করা বা মসজিদে আকসায় নামায আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে যে কোনোভাবে এই মসজিদের খেদমতে অংশগ্রহণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন নবীজী (সা.)। মাইমুনা (রা.) বলেন : আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যে ব্যক্তি সরাসরি বাইতুল মাকদিস যিয়ারত করতে সক্ষম না হবে, সে কী করবে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি এখানে আসার সামর্থ্য রাখবে না, সে যেন এখানের বাতি জ্বালানোর জন্য তেল হাদিয়া পাঠায়। নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি তেল হাদিয়া পাঠাবে সে ওই ব্যক্তির ন্যায় সওয়াবের অধিকারী হবে, যে সরাসরি বাইতুল মাকদিস যিয়ারত করেছে। (মুসনাদে আবু ইয়ালা : ৭০৮৮)। ১৭ হিজরীতে যখন বাইতুল মাকদিস মুসলমানদের হাতে এলো তখন উমর (রা.) এই মসজিদে নামায পড়েছেন এবং নিজ হাতে ঝাড়ু দিয়েছেন। (দ্র. মুসনাদে আহমাদ : ২৬১)
মসজিদে আকসা থেকে ইহরাম বেঁধে উমরা করা। এক পবিত্র ভূখণ্ড থেকে আরেক পবিত্র ভূখণ্ডে সফর করা কতইনা আনন্দ ও সৌভাগ্যের বিষয়। এ কারণেই হাদিস শরীফে মসজিদে আকসা থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। হযরত উম্মে সালামাহ (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি বাইতুল মাকদিস থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ্ করবে, তার গোনাহগুলো মাফ করে দেয়া হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩০০১)।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আট গোলের রোমাঞ্চ: ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে
সহজ জয়ে লা লিগায় রানার্সআপ বার্সা
ক্লপকে অশ্রুসিক্ত বিদায় লিভারপুলের
সিটির অমরত্বের রাত...
বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা
ফতুল্লায় হত্যা মামলার আসামি কেরানিগঞ্জে গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে বান্দরবানে কেএনএফের ৩ সদস্য নিহত
রাজশাহীতে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় পুলিশকে মারপিট, যুবক আটক
স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. অর্ণা জামান
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে সারাদেশে জেলা ও মহানগরীতে ইসলামী
খালেকুজ্জামানের বাড়ী সরকারিভাবে পুননির্মাণের দাবি - ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাবেক বিজেপি নেতা
সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: প্রেসিডেন্ট
বিক্ষোভ, গাড়ি ভাঙচুর, অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
কিরগিজস্তানে আহত বাংলাদেশি ছাত্রদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনুন
শিরোপার রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা : শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে সিটি-আর্সেনাল
কোরবানির গোস্ত দিয়ে কোন অনুষ্ঠান করে টেবিল বসিয়ে টাকা বা উপহার নেওয়া প্রসঙ্গে।
মানিকগঞ্জ-ঢাকা রেললাইন প্রসঙ্গে
কমিউনিটি ক্লিনিক দাঁড়িয়ে আছে দোরগোড়ায়