কুরআন-সুন্নাহর ইলম কেন কল্যাণময়-১
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জান্নাত এবং জাহান্নাম সৃষ্টি করেছেন। এক দল জান্নাতী হবে, এক দল জাহান্নামী। এই বিষয়টি তারা বিশ্বাস করে। কাজেই মুমিনদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে, তোমরা সত্যে বিশ্বাস করেছ, সেই বিশ্বাস অনুযায়ী আমল কর। তাহলে মুমিনকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। হয় সে আলিম হবে অথবা মুতাআল্লিম। দ্বীনের জ্ঞানী হবে, কুরআন ও সুন্নাহর প্রজ্ঞাবান আলিম হবে অথবা কুরআন-সুন্নাহর ছাত্র হবে অথবা কুরআন সুন্নাহর ইলমের শ্রোতা হবে, মনযোগের সাথে, আন্তরিকতার সাথে গ্রহণের নিয়তে কুরআন-সুন্নাহর বিধি-বিধান শুনতে থাকবে।
এর বাইরে- চতুর্থ প্রকারের লোক, না আলেম, না ছাত্র, না কুরআন-সুন্নাহর কথা শুনে সেই মোতাবেক নিজের জীবনকে পরিচালিত করার চেষ্টা করে- কোনোটাই নয়; বরং চতুর্থ প্রকারের। অর্থাৎ জাহিল। এই চতুর্থ প্রকারের অন্তর্ভুক্ত কিছুতেই হবে না। তাহলে তো ধ্বংস হতে হবে। দুনিয়ার জীবন ধ্বংসও হবে আখিরাতের জীবনও ধ্বংস হবে।
ধ্বংস থেকে যদি বাঁচতে হয় সন্তান-সন্ততি, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-পড়শী গোটা মুসলিম উম্মাহকে ধ্বংসের পথ থেকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে এর উপায়, কুরআন-সুন্নাহর ছাত্র হওয়া। কুরআন-সুন্নাহর ইলম অর্জন করা এবং সে অনুযায়ী নিজের জীবনকে পরিচালিত করার চেষ্টা করা। তাহলে কুরআন ও সুন্নাহর ইলম, যাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ‘খাইর’ বলেছেন, এটা এমন খাইর, এমন কল্যাণ, যার বিপরীত হল শার, অনিষ্ট-অকল্যাণ-ধ্বংস। এই কল্যাণ আমাদের অর্জন করতেই হবে।
কুরআন ও সুন্নাহ আমাদের কী শেখায়? কুরআন ও সুন্নাহ আমাদেরকে শেখায়- আমাদের বিশ্বাস কী হবে, আমাদের চিন্তা-চেতনা কেমন হবে। কুরআন ও সুন্নাহ আমাদেরকে শেখায়- আমাদের ইবাদত-বন্দেগী কী হবে, তার পদ্ধতি কী হবে। কুরআন ও সুন্নাহ আমাদের শেখায়- আমাদের লেন-দেন কেমন হবে, কোন পদ্ধতিতে হবে। উপার্জনের কোন্ পদ্ধতি হালাল, আর কোন্টি হারাম। কুরআন-সুন্নাহ আমাদের শেখায়- আমাদের স্বভাব-চরিত্র, আচার-ব্যবহার কেমন হবে।
আল্লাহর হক কীভাবে আদায় করা হবে, বান্দার হক কীভাবে আদায় করা হবে। আল্লাকে কীভাবে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করতে হবে আর বান্দার সাথে কীভাবে ভালো ব্যবহার করতে হবে। কাজেই ভালো ও সজ্জন হতে হলে কুরআন-সুন্নাহর ইলমের কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হযরত রাসূলে কারীম (সা.) এর মাধ্যমে ‘খাইরে কাছীর’-প্রভুত কল্যাণ উন্মুক্ত করেছেন। এই ইলমের মাধ্যমে মানুষের জীবনের সকল অঙ্গন আলোকিত হয়। আকীদা-বিশ্বাস থেকে শুরু করে ইবাদত-বন্দেগী, লেন দেন, আচার-ব্যবহার সবকিছু সুন্দর হয়। স্বভাব ও আচরণগত ভালো কাজগুলোও তখনই প্রকৃত ভালো হয় যখন মানুষ দ্বীন-ঈমান শেখে, আল্লাহমুখিতা অর্জন করে, আল্লাহর জন্য করে।
কুরআন ও সুন্নাহর ইলমের মাধ্যমে মানুষের গোটা জীবন শুদ্ধ-পরিশুদ্ধ হয়। গোটা জীবন আল্লাহমুখী হয়। গোটা জীবনের সকল কাজ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে সন্তুষ্ট করার প্রেরণায় সম্পন্ন হয় এবং আল্লাহর বিধান মোতাবেক, হালাল-হারামের বিধান মোতাবেক, আল্লাহর রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ মোতাবেক সম্পন্ন হয়। এইজন্য কুরআন ও সুন্নাহর ইলম হচ্ছে ‘খাইরে কাছীর’-প্রভুত কল্যাণ। ‘যাকে হিকমাহ দান করা হয়েছে তাকে প্রভুত কল্যাণ দান করা হয়েছে।’
এই কল্যাণ আমাদের নিজেদেরকেও অর্জন করতে হবে, আমাদের সন্তানদেরকেও এর অধিকারী করতে হবে। একজন পিতা তার সন্তানকে উত্তম শিক্ষার চেয়ে, কুরআন ও সুন্নাহর ইলমের চেয়ে এবং কুরআন ও সুন্নাহর পথে পরিচালিত করার চেয়ে উত্তম উপহার আর কিছুই দিতে পারেন না। এটাই বাবার পক্ষ থেকে আদরের সন্তানের জন্য সর্বোত্তম উপহার।
আমাদের সর্বস্তরের মুসলমানদেরকে সচেতন হতে হবে। দ্বীনী ইলম অর্জন করার, সহীহ আকীদা জানার, ইবাদতের সঠিক নিয়ম জানার, সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন কারীম পড়তে শেখার, কুরআনে কারীম বুঝতে শেখার এবং কুরআনের আলোয় নিজের জীবনকে আলোকিত করার চেষ্টা করতে হবে। এই চেষ্টা সকল শ্রেণির মানুষকেই করতে হবে। শিশু-কিশোরকেও করতে হবে, বয়স্কদেরও করতে হবে। সর্বস্তরের ইলম চর্চা ও ইলম বিস্তারের এই ধারা কীভাবে জারি হতে পারে, কীভাবে গতিশীল হতে পারে- এই বিষয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনাও করতে হবে।
আমাদের এ অঞ্চলের সাধারণ চিন্তা হচ্ছে, স্কুলে দিয়েছি তো দিয়েছি। ব্যস, কুরআন-সুন্নাহর সাথে আর কোনো সম্পর্ক নেই। অন্য দিকে কুরআন-সুন্নাহ শিখতে এসেছে তো জাগতিক শিক্ষা-দীক্ষার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। দুই শিক্ষার মাঝে এমন দূরত্ব যে, একটাকে অবলম্বন করা হলে আরেকটা ছাড়তেই হবে; বরং সম্পূর্ণরূপেই ছাড়তে হবে। এই চিন্তাটা কতদূর সঠিক তা ভেবে দেখা দরকার। একটা পর্যায় পর্যন্ত সম্ভবত দুটোই একসাথে হতে পারে।
একজন মুসলমান কুরআনে কারীম শিখবে, কুরআনে কারীমের হাফেয হবে, কুরআন বোঝার যোগ্যতা অর্জন করবে, দ্বীনের মৌলিক জ্ঞান অর্জন করবে এরপর পছন্দমতো কোনো পেশার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা-দীক্ষার দিকে যাবে। এমনটাই তো স্বাভাবিক। তাহলে কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানের প্রভাবে ওই পেশায় গিয়েও সে একজন মুসলিম হিসেবে তার জীবনকে পরিচালিত করতে পারবে। আল্লাহ পাক আমাদের বিষয়গুলো বোঝার এবং আমল করার তাওফীক দান করুন।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
যশোরে নাশকতার অভিযোগে আওয়ামীলীগের দুই কর্মী আটক
যশোরে ব্যবসায়ীর পায়ে গুলি সাবেক এসপি আনিসসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা থানায় রেকর্ড
যশোরে একই সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জাহিদুল
ইমনের সেঞ্চুরির পরও এগিয়ে খুলনা
টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে সরানো হলো প্রথম আলোর সামনে অবস্থানকারীদের
নাইমের ১৮০, মেট্রোর বড় সংগ্রহ
রাজার বোলিংয়ে অলআউট বরিশাল
দেশের টাকা পাচার করে হাসিনা ও তাঁর দোসররা দেশকে দেউলিয়া করে গেছে পাচারকৃত টাকা উদ্ধারে কাজ করতে হবে -মাওলানা ইমতিয়াজ আলম
এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’
বিএনপি’র প্রতিনিধি দলের সাথে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের বৈঠক
৫ বছর পর আয়োজিত হতে যাচ্ছে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪
থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না শাহাদাত
গণ-অভ্যুত্থানে ঢাবি ভিসির ভূমিকা কী ছিল? জানতে চান ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক
নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ হওয়া উচিত অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করা : রিজভী
ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনে দেশে এলো অ্যাপ ‘পারলো’
সীমান্তর লক্ষ্য এসএ গেমসের হ্যাটট্রিক স্বর্ণ জয়
বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান
নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান
লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক