পবিত্র কুরআন নাযিল হওয়ার পদ্ধতি
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম
পবিত্র কুরআন দু’ভাবে নাযিল হয়েছে- ১. ষোল আনা কুরআন এক সাথে নাযিল হওয়া। ২. রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ২৩ বছরের নবুওয়াতী জিন্দেগীতে প্রয়োজন ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কখনো একটি সূরা কখনো কয়েকটি আয়াত পর্যায়ক্রমে নাযিল হওয়া।
সমগ্র কুরআন এক সাথে দু’বার নাযিল হয়েছে : (ক) ষোল আনা কুরআন ১৫ই শাবানের রাতে (অর্থাৎ ১৪ই শাবান দিবাগত রাতে) লাওহে মাহফুজে নাযিল হয়েছে। এই রাতকে আল কুরআনে ‘লাইলাতুম্ মুবারাকাতুন’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে : ‘নিশ্চয় আমি এটা (আল কুরআন) এক মুবারকরাতে নাযিল করেছি। নিশ্চয়ই আমি ‘সতর্ককারী’। (সূরা আদ্দুখান : ৩)। এ রাতকে মুবারক বলার কারণ এই যে, এ রাত্রিতে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে অসংখ্য কল্যাণ ও বরকত নাযিল হয়। মনে রাখা দরকার যে, ফার্সী, উর্দু ও বাংলা ভাষায় লাইলাতুম্ মুবারাকাতুন’-কে ‘লাইলাতুল বারাত’ বলা হয়।
(খ) অতঃপর ষোল আনা কুরআন লাওহে মাহফুজ হতে রমজান মাসের ২৪ তারিখ দিবাগত রাতে প্রথম আকাশের ‘বাইতুল ইজ্জতে’ নাযিল হয়েছে। আল কুরআনে এই রাতকে ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ অর্থ মর্যাদাপূর্ণ রাত, মহিমান্বিত রাত। আবার এই রাতকে ভাগ্য রজনীও বলা হয়। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয় আমি এই কুরআন লাইলাতুল ক্বাদরে নাযিল করেছি। (সূরা আল ক্বাদর : ১)।
‘ক্বাদর’ শব্দটির এক অর্থ মাহাত্ম্য ও সম্মান। এর মাহাত্ম্য ও সম্মানের কারণে একে লাইলাতুল ক্বাদর বলা হয়। ক্বাদরের আরেক অর্থ তাকদীর অথবা আদেশ। এ রাত্রিতে পরবর্তী এক বছরের অবধারিত ও বিধিলিপি ব্যবস্থাপক ও প্রয়োগকারী ফিরিশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রত্যেক মানুষের বয়স, মৃত্যু, রিযিক, বৃষ্টি ইত্যাদির পরিমাণ নির্দিষ্ট ফিরিশতাগণকে লিখে দেয়া হয়। এই রাত্রিতে তাকদীর সংক্রান্ত বিষয়াদি নিষ্পন্ন হওয়ার অর্থ এ বছর যেসব বিষয় প্রয়োগ করা হবে সেগুলো লাওহে মাফুজ থেকে নকল করে ফিরিশতাগণের কাছে সোপর্দ করা হয়।
মহান আল্লাহ তায়ালা একসঙ্গে ষোলআনা কুরআন নাযিলের বিষয়টি দু’টি ধাপে ‘লাইলাতুম্ মুবারাকাতুন’ ও ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ নামে আখ্যায়িত করে আনযালনা শব্দ যোগে বিশ্লেষণ করেছেন। আর সমগ্র কুরআন নূর নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ২৩ বছরের নবুওতী যিন্দেগীতে প্রয়োজন ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কখনো একটি সূরা কখনো কয়েকটি আয়াত পর্যায়ক্রমে নাযিল হওয়ার বিষয়টি শুরু হয় রমজান মাসে কদরের রাতে।
অতঃপর হযরত জিব্রাঈল (আ.) আল কুরআনকে তেইশ বছর ধরে ‘বাইতুল ইজ্জত’ হতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে মক্কা ও মদীনায় পৌঁছিয়েছেন। প্রয়োজননানুপাতে বহুবার হযরত জিব্রাঈল। (আ.) নূরনবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আগমন করেছেন। এ মর্মে মহান আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে ইরশাদ করেছেন : আর নিশ্চয়ই এ কুরআন সৃষ্টিকুলের প্রতিপালকেরই নাযিলকৃত। রুহুল আমীন (বিশ্বস্ত আত্মা) এটা নিয়ে অবতরণ করেছেন। তোমার হৃদয়ে, যাতে তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভূক্ত হও। একে নাযিল করা হয়েছে সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়। ( সূরা শোয়ারা : ১৯২-১৯৫)। অল্প অল্প করে বারে বারে নাযিল হওয়ার বিষয়টি মহান আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে ‘নাযালা’ ও নায্যালা’ শব্দ যোগে বিশ্লেষণ করেছেন।
হযরত জিব্রাঈল (আ.) নূর নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট সর্বমোট ২৪ হাজার বার আগমন করেছিলেন বলে জানা যায়। হযরত জিব্রাঈল (আ.) ওহী নিয়ে আসলেও নবী কারীম (সা.) এ ওহী লাভ করেছিলেন বিভিন্ন পদ্ধতিতে। যেমন : (ক) ঘণ্টা ধ্বনির ন্যায় : কখনো কখনো রাসূলূল্লাহ (সা.)-এর নিকট ওহী ঘণ্টার আওয়াজের মতো আওয়াজ অনুভব হতো। এ জাতীয় ওহী ধারণ করা তাঁর জন্য খুব কষ্ট সাধ্য ছিল। ফলে তিনি ঘর্মাক্ত ও ক্লান্ত হয়ে পড়তেন।
(খ) ওহী অন্তরে ঢেলে দেয়া : হযরত জিব্রাঈল (আ.) মাঝে মাঝে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অন্তরে ওহী ফুৎকার দিয়ে ঢেলে দিতেন। (গ) মানুষের আকৃতিতে আগমন করা : কখনো কখনো হযরত জিব্রাঈল (আ.) মানুষের আকৃতি ধারণ করে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট ওহী নিয়ে আসতেন। জনৈক সাহাবী হযরত দাহিয়্যাতুল কালবী (রা.)-এর আকৃতিতে তিনি সাধারণত আসতেন। এটা ছিল ওহী প্রাপ্তির সহজতর পদ্ধতি।
(ঘ) ঘুমন্ত অবস্থায় আগমন : হযরত জিব্রাঈল (আ.) অনেক সময় রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিদ্রাবস্থায় আগমন করে ওহী পৌঁছে দিতেন। (ঙ) নিজস্ব আকৃতিতে আগমন : হযরত জিব্রাঈল (আ.) কয়েকবার নিজস্ব বিশাল আকৃতিতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ওহী নিয়ে আগমন করেছেন। এতে নবী কারীম (সা.) অনেকটা ঘাবড়ে যেতেন কিন্তু পরে অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যেত।
(চ) আল্লাহ তায়ালার সাথে কথা বলা : স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে কথা বলে ওহী নাযিল করেছেন। হয় জাগ্রত অবস্থায় না হয় ঘুমন্ত অবস্থায়। (ছ) হযরত ইস্রাফিলের ওহী নিয়ে আগমন : কখনো কখনো আল্লাহ তায়ালা হযরত ইস্রাফিলের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট ওহী নাযিল করছেন।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
যশোরে নাশকতার অভিযোগে আওয়ামীলীগের দুই কর্মী আটক
যশোরে ব্যবসায়ীর পায়ে গুলি সাবেক এসপি আনিসসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা থানায় রেকর্ড
যশোরে একই সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জাহিদুল
ইমনের সেঞ্চুরির পরও এগিয়ে খুলনা
টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে সরানো হলো প্রথম আলোর সামনে অবস্থানকারীদের
নাইমের ১৮০, মেট্রোর বড় সংগ্রহ
রাজার বোলিংয়ে অলআউট বরিশাল
দেশের টাকা পাচার করে হাসিনা ও তাঁর দোসররা দেশকে দেউলিয়া করে গেছে পাচারকৃত টাকা উদ্ধারে কাজ করতে হবে -মাওলানা ইমতিয়াজ আলম
এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’
বিএনপি’র প্রতিনিধি দলের সাথে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের বৈঠক
৫ বছর পর আয়োজিত হতে যাচ্ছে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪
থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না শাহাদাত
গণ-অভ্যুত্থানে ঢাবি ভিসির ভূমিকা কী ছিল? জানতে চান ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক
নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ হওয়া উচিত অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করা : রিজভী
ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনে দেশে এলো অ্যাপ ‘পারলো’
সীমান্তর লক্ষ্য এসএ গেমসের হ্যাটট্রিক স্বর্ণ জয়
বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান
নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান
লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক