দ্বীন আল্লাহর, রক্ষকও আল্লাহ-২

Daily Inqilab মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম

ইসলাম কোনো লা-ওয়ারিশ ধর্ম নয়, যে কেউ যে কোনো ‘ব্যাখ্যা’ করতে পারে। ইসলামের সব বিষয় সুস্পষ্ট। আকীদা ও আহকামে তথা বিশ্বাস ও কর্ম সব ক্ষেত্রেই ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য সুস্পষ্টতা। বিধান, বিশ্বাস, চিন্তা কোনো ক্ষেত্রেই ‘প্রগতিশীল’ ব্যাখ্যার নামে অপব্যাখ্যার মতো অবিশ্বাসের প্রক্ষেপণ ইসলামে সম্ভব নয়। সম্ভব নয় বলেই তো দেড় হাজার বছরের দীর্ঘ পথ পরিক্রমার পরও ইসলামের সব শিক্ষা সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় এখনো বিদ্যমান।

এ দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় ইসলামের শিক্ষাকে বিকৃত করার এবং বিভিন্ন যুগে একে ‘আধুনিক’ ও ‘প্রগতিশীল’ করার অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তাআলার অমোঘ ঘোষণা, ‘আমি এ ‘উপদেশ’ অবতীর্ণ করেছি, আমিই তা রক্ষা করবো’-এর সামনে সকল উদ্যোগ ভূমিসাৎ ও ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। ইসলাম ওই চির নতুন, চির সজীব দ্বীন, যা সব যুগে মৃত মানবতাকে দান করেছে জীবনের সজীবতা। যতোদিন পর্যন্ত জীবন-মৃত্যুর এ চক্র থাকবে ততোদিন ইসলামও থকবে আবে হায়াতের উৎসরূপে এবং জীবন-পথে আলোর মিনাররূপে।

এ দ্বীন মানবরচিত কোনো ধর্ম বা সংস্কার নয় যা কালের ধুলোয় মলিনতাপ্রাপ্ত হয়। এ তো যুগ ও জগতের স্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রোজ্জ্বল জ্ঞান থেকে অবতীর্ণ। যে জ্ঞান স্থান-কালের ছায়াপাত থেকে, সব ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে এবং সব ধরনের ভুল-ভ্রান্তি ও দুর্বলতা থেকে চিরপবিত্র। সুতরাং এ দ্বীনের কোনো সংস্কার প্রচেষ্টার প্রয়োজন নেই। মানবের কর্তব্য, নিজ জীবন ও কর্মকে এ আসমানি মানদণ্ডের দ্বারা সংশোধন করা। ‘প্রগতিশীল’ ব্যাখ্যার দ্বারা এ দ্বীনকে ‘যুগোপযোগী’ করার প্রয়োজন নেই; বরং যুগ ও সমাজের করণীয় এ দ্বীনের শাশ্বত আলোয় নিজেদের আলোকিত করা। তাহলেই সব সময় ও সমাজ হবে মানব-বাস-উপযোগী।

হায়! দুর্বল মানুষের কতো স্পর্ধা যে প্রভুর প্রাকৃতিক বিধানে সে আষ্টেপৃষ্টে বন্দী সে কিনা সে প্রভুরই কর্তব্য-অকর্তব্যের বিধানকে পরিবর্তন করতে চায়!? পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন : মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্রবিন্দু থেকে? অথচ পরে সে হয়ে পড়ে প্রকাশ্য বিতণ্ডাকারী। (সূরা ইয়াসীন : ৭৭)।
যে বিধান এসেছে তার বিশ্বাস ও সংশোধনের জন্য সে বিধানকেই সে করতে চায় ‘সংস্কার’! যে বিধান এসেছে তাকে পশুত্ব থেকে মানবতায় উত্তীর্ণ করার জন্য সে বিধানকেই সে বানাতে চায় ‘প্রগতিশীল’! আত্মবিস্মৃত মানবের এ এক অসার অহং যা কখনো পূরণ হবার নয়। মুসলিম জনসাধারণ তাদের জীবনে ইসলামের শিক্ষা কতটুকু প্রয়োগ করছেন তা আলাদা বিষয়, কিন্তু কেউ যদি আন্তরিকভাবে ইসলামের সঠিক ও অবিকৃত রূপটি দেখতে চান তার জন্য অবশ্যই তা উপস্থিত রয়েছে।

ধর্মনিরপেক্ষতার অস্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদিতার জুজু কিংবা ‘প্রগতিশীল’ ব্যাখ্যার কপটতা কোনো কিছু দ্বারাই এ শাশ্বত আলোর গতিরোধ করা যাবে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছেÑ‘ওরা আল্লাহর নূর ফুৎকারে নেভাতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূর পূর্ণরূপে উদ্ভাসিত করবেন, যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে।’ (সূরা সাফ্ফ : ৮)।


বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পিতার কর্তব্য : সন্তানকে সময় ও সঙ্গদান-১
ইসলামে সহমর্মিতা ও সমাজসেবা
রমজানের বিদায়েও জাগ্রত থাকুক সাওমের শিক্ষা
ঈদুল ফিতর : ‘আল্লাহু আকবারে’র চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন
সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ
আরও
X

আরও পড়ুন

আনোয়ারায় ৭০জন বাচ্চাকে ফ্রি খতনা

আনোয়ারায় ৭০জন বাচ্চাকে ফ্রি খতনা

বাংলাদেশি লেনিন অস্ট্রেলিয়ান জাতীয় নির্বাচনে লিবারেল পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থী

বাংলাদেশি লেনিন অস্ট্রেলিয়ান জাতীয় নির্বাচনে লিবারেল পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থী

উইন্ডিজ ও দ. আফ্রিকাকে আতিথেয়তা দেবে ভারত

উইন্ডিজ ও দ. আফ্রিকাকে আতিথেয়তা দেবে ভারত

বিচার বিভাগ অভ্যন্তরীণ সংস্কারের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে-প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগ অভ্যন্তরীণ সংস্কারের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে-প্রধান বিচারপতি

তামিমের চিন্তাভাবনাকে 'অশিক্ষিত' বললেন সালাউদ্দিন

তামিমের চিন্তাভাবনাকে 'অশিক্ষিত' বললেন সালাউদ্দিন

নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ কর্মসূচি

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ কর্মসূচি

বাংলাদেশের মাটিতে আর কোন ফ্যাসিস্ট যেন জন্মাতে না পারে সেটাই আমাদের লক্ষ্য - খোকন তালুকদার

বাংলাদেশের মাটিতে আর কোন ফ্যাসিস্ট যেন জন্মাতে না পারে সেটাই আমাদের লক্ষ্য - খোকন তালুকদার

প্রথমবারে মিয়ানমার ফেরত নিচ্ছে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা, ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের উল্লাস

প্রথমবারে মিয়ানমার ফেরত নিচ্ছে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা, ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের উল্লাস

পড়ালেখা শেষে শিক্ষার্থীদেরকে দেশ ও জাতির সেবক হিসাবে কাজ করতে হবে-সোলায়মান চৌধুরী

পড়ালেখা শেষে শিক্ষার্থীদেরকে দেশ ও জাতির সেবক হিসাবে কাজ করতে হবে-সোলায়মান চৌধুরী

শুল্ক আরোপ নিয়ে ট্রাম্পের নিজ দলেই বিভক্তি বাড়ছে

শুল্ক আরোপ নিয়ে ট্রাম্পের নিজ দলেই বিভক্তি বাড়ছে

ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি আবু শহীদ ও সম্পাদক ডিফেন্স

ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি আবু শহীদ ও সম্পাদক ডিফেন্স

তিন ধাপ এগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক: বিশেষ দূত

তিন ধাপ এগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক: বিশেষ দূত

প্রশাসনের সহযোগিতায় অটোরিক্সায় শৃঙ্খলা ফিরেছে

প্রশাসনের সহযোগিতায় অটোরিক্সায় শৃঙ্খলা ফিরেছে

শেখ হাসিনা ভারতের সহায়তায় বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট ভূমিকা অবতীর্ণ করেছে : এ্যানি

শেখ হাসিনা ভারতের সহায়তায় বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট ভূমিকা অবতীর্ণ করেছে : এ্যানি

রাজবাড়ীতে সেনাবাহিনীর অভিযানে পরিত্যক্ত অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

রাজবাড়ীতে সেনাবাহিনীর অভিযানে পরিত্যক্ত অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

নোয়াখালীর কবিরহাটে জমজ দুই শিশু ধর্ষণ, পরিবারের পাশে তারেক রহমান

নোয়াখালীর কবিরহাটে জমজ দুই শিশু ধর্ষণ, পরিবারের পাশে তারেক রহমান

যথেষ্ট খাদ্যশস্য সরকারের কাছে মজুত রয়েছে: খাদ্য উপদেষ্টা

যথেষ্ট খাদ্যশস্য সরকারের কাছে মজুত রয়েছে: খাদ্য উপদেষ্টা

দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়

দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনাইয়ের  স্বর্ণপদক  অর্জন করলেন রাজবাড়ীর রুমি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনাইয়ের স্বর্ণপদক অর্জন করলেন রাজবাড়ীর রুমি