কুরআনের ভাষায় মানবহত্যার ভয়াবহতা-৩
১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম
জাহেলী যুগসহ সবযুগেই একশ্রেণির পাষ- মানুষের স্বভাব ছিল, অর্থাভাব ও দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তানকে হত্যা করা। এমনকি জাহেলি যুগে কলঙ্ক থেকে বাঁচার জন্য নিজের কন্যা সন্তানকে হত্যা করাও স্বাভাবিক চোখেই দেখা হতো। আল্লাহ তাআলা এহেন জঘন্য কাজ থেকে তাদেরকে এবং সমস্ত মানুষকে সাবধান করে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছেÑ ‘দারিদ্র্যের ভয়ে নিজ সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমি তাদেরকেও রিযিক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয়ই তাদেরকে হত্যা করা গুরুতর অপরাধ।’ (সূরা বনি ইসরাইল-৩১)
বর্তমানে আমাদের সমাজে জাহেলি যুগের মতো সন্তান জন্মের পর দারিদ্র্যের ভয়ে বা কন্যাসন্তান হওয়ার কারণে হত্যা করে ফেলার ঘটনা হয়তো খুব কম; কিন্তু মেয়ে হওয়ার কারণে অথবা একটি বা দু’টির বেশি সন্তান হওয়াকে অপছন্দ করার কারণে গর্ভাবস্থায় জীবন্ত সন্তানকে মেরে ফেলার ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। অথচ গর্ভের শিশুর প্রাণ এসে যাওয়ার পর তাকে ওষুধের মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে মেরে ফেলা সুস্পষ্ট হত্যার শামিল। জন্মলাভের পর হত্যা করা আর গর্ভের জীবন্ত শিশুকে হত্যা করা একই রকম ঘৃণ্য অপরাধ।
এই হত্যা করে ফেলা শিশুদের সম্পর্কে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা জিজ্ঞাসা করবেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘তাকে কী অপরাধে হত্যা করা হয়েছিল?’ (সূরা তাকবির-৯) অর্থাৎ পরকালে এই সন্তানদেরকে হাজির করে জিজ্ঞেস করা হবে, তাদেরকে কী অপরাধে হত্যা করা হয়েছিল? এর দ্বারা উদ্দেশ্য হবে সেই জালেমদেরকে শাস্তি দেয়া, যারা তাদের প্রতি এরূপ পাশবিক আচরণ করেছিল।
মুসলমানের জান-মালে যে কোনো ধরনের অন্যায় হস্তক্ষেপই হারাম। বিদায় হজের ভাষণে প্রিয় নবীজী (সা.) অত্যন্ত জোরালো কণ্ঠে বলেনÑ ‘তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, তোমাদের সম্মান তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম ও মর্যাদাপূর্ণ, যেমন তোমাদের এ দিন, তোমাদের এ মাস, তোমাদের এ শহর হারাম মর্যাদাসম্পন্ন।’ (সহিহ বুখারি-৬৭)
রাসূলুল্লাহ (সা.) পবিত্র মুক্কা মুকাররমায় জিলহজ মাসে আরাফার দিন এ খুতবা দেন। মক্কা মুকাররমা, জিলহজ মাস এবং আরাফার দিনের কী সম্মান ও মর্যাদাÑ তা সবারই জানা আছে। এগুলোর যে কোনো ধরনের অমর্যাদা করা হারাম। এর সঙ্গে তুলনা করে রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক মুমিন-মুসলিমের জীবন, সম্মান ও সম্পদের যে কোনো ধরনের ক্ষতি করাকে সবার জন্যই হারাম করেছেন।
মক্কা মুকাররমা, জিলহজ মাস এবং আরাফার দিনের মর্যাদা রক্ষা করা যেমন সবার জন্য ফরজ, ঠিক তেমনি যে কোনো মুসলমানের জান-মাল-ইজ্জতের মর্যাদা রক্ষা করা এবং অনিষ্ট সাধন না করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। তাঁর এ শ্বাশত বাণী কিয়ামত পর্যন্ত আগত সব এলাকার সব মুমিনের জন্যই বিধান হিসেবে সমানভাবে প্রযোজ্য।
ইসলাম প্রত্যেকেরই জান-মাল-ইজ্জতের সমান নিরাপত্তা বিধান করেছে। যেন কারো দ্বারা অন্য কারো জীবন, সম্মান ও সম্পদের সামান্যতম ক্ষতি না হয়। অতএব যারা কোনো মুসলমানের প্রাণের সামান্যতম ক্ষতিও করবে, আখিরাতে তাদের ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। কুরআন কারিমের উল্লিখিত আয়াতসমূহে এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অসংখ্য হাদিসে সে বার্তা ও বিধানই দেয়া হয়েছে।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
রাজনীতি ও রাষ্ট্রাচার ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হয়েছে : সেলিম উদ্দিন
ভারতে ঢুকে পড়েছে এইচএমপিভি
আন্তর্জাতিক আইকিউ টেস্টে দ্বিতীয় ইরান
গণঅধিকার পরিষদের ফারুকের ওপর হামলা : দুই আসামির জামিন
লেনদেন ও সূচকের উত্থান পুঁজিবাজারে চাঙাভাব
খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
পাবনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কাঙ্গাল বাবু গ্রেপ্তার
১৫ হাজার পিচ ইয়াবার মামলায় প্রবাসীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে : মাহমুদুর রহমান
বৃদ্ধাশ্রমের বাবা মায়ের পাশে জেলা প্রশাসন সব সময় আছে এবং থাকবে
তামিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের দিন প্রশ্নবিদ্ধ এনামুল
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চীনের সহযোগিতা চান পরিবেশ উপদেষ্টা
গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ
সোনারগাঁওয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ
র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি শেকৃবি ভিসির
অংশীজনদের সঙ্গে আজ বসছেন অর্থ উপদেষ্টা
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওর নাম্বার ক্লোন করে শিক্ষকের কাছে টাকা দাবি
সমস্যাগ্রস্ত ৬ ব্যাংকের নিরীক্ষায় ২ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের সিদ্ধান্ত