আমি কি জান্নাতেও সন্তান-পরিবার নিয়ে থাকতে চাই
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১৩ এএম
রোজ সকালে জীবন ও জীবিকার তাগিদে যদিও পরিবারের একেক সদস্যকে ছুটে যেতে হয় একেক দিকে, দিনশেষে আবারো এক ঘরে এক ছাদের নিচে বসবাসের জন্যই আমরা ফিরে আসি। প্রবাসে-নিবাসে যে যেখানেই থাকি, কিছুদিন পর পর হলেও সবাই একত্র হওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকি এবং আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার চেষ্টা করি। কারণ এই আনন্দ অপার্থিব, অতুলনীয়! এতেই মনের তৃপ্তি ও আত্মার প্রশান্তি!
প্রিয় পাঠক! এই পৃথিবী ছেড়ে আমাদের যখন যেতে হবে আখেরাতের স্থায়ী নিবাসে, সেখানেও যদি আল্লাহ আমাদের পরিবার ও সন্তান-সন্তুতিদের একত্র করে দেন, জান্নাতে একসাথে থাকার সুযোগ করে দেন, এর চেয়ে বড় সুখের বিষয় আর কী? তবে তার জন্য সুন্দর কৌশলও বাতলে দেয়া হয়েছে কুরআন কারীমে। সেটি হলো, নিজে পরিপূর্ণ দ্বীন-ঈমানের ওপর চলা, সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকেও দ্বীন-ঈমানের ওপর গড়ে তোলা এবং সেভাবে রেখে যাওয়ার চেষ্টা করা।
সর্বোপরি আমরা যারা পরবর্তী প্রজন্ম, এই নিআমত পাওয়ার জন্য আমাদেরও দ্বীন-ঈমানের ক্ষেত্রে পূর্বসূরিদের অনুসরণ করতে থাকা। তবে পাওয়া যাবে জান্নাতের এই মহা নিআমত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : যারা ঈমান এনেছে এবং সন্তান-সন্তুতিগণ ঈমানের ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণ করেছে, আমি তাদের সন্তান-সন্তুতিকে তাদের সঙ্গে মিলিত করব এবং তাদের কর্ম হতে কিছুমাত্র হ্রাস করব না। (সূরা ত‚র : ২১)।
আয়াতের অর্থ ও মর্ম খুবই স্পষ্ট। নেককারদের সন্তান-সন্তুতি যদি ঈমান ও আমলে সালেহের অধিকারী হয়, আল্লাহ তাআলা পিতা-মাতাকে খুশি করার জন্য সন্তানদেরকেও তাদের সাথে যুক্ত করে দেবেন, সন্তানদেরকে সেই স্তরে পৌঁছে দেবেন। যদি আমলের মাধ্যমে তারা পিতা-মাতার মতো জান্নাতের উচ্চ স্তর লাভ করতে নাও পারে, তবুও চক্ষু শীতলের জন্য তাদেরকে পিতা-মাতার পাশে রাখা হবে। এক্ষেত্রে পিতা-মাতা বা পূর্বসূরির স্তর বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। বরং তাঁদের মর্যাদা ও স্তর যথাস্থানেই থাকবে। (দ্র. তাফসীরে ইবনে কাসীর ৭/৪৩২; মাজমাউয যাওয়ায়েদ : ১১৩৭০)।
এ আয়াতে আমাদের জন্য রয়েছে বহুমুখী শিক্ষা। প্রথমত, নিজে পরিপূর্ণ দ্বীন-ঈমানের ওপর চলা, সন্তান-সন্ততি ও পরবর্তী প্রজন্মকেও তার ওপর গড়ে তোলা এবং সেভাবে রেখে যাওয়ার চেষ্টা করা। দ্বিতীয়ত, আমরা যারা পরবর্তী প্রজন্ম, এই নিআমত পাওয়ার জন্য দ্বীন-ঈমানের ক্ষেত্রে পূর্বসূরিদের পুরোমাত্রায় অনুসরণ করতে থাকা। ঈমান-আমলের মাধ্যমে পিতা-মাতা ও পূর্বসূরিদের অনুসরণ করে যাওয়া, যেন তাদের সঙ্গে জান্নাতে থাকা যায়।
আরেকটি বিষয় হল, মা-বাবার নেক আমলের কল্যাণ যেমন সন্তানেরা লাভ করে, তেমনি সন্তানদের আমলের কল্যাণও মা-বাবা লাভ করবেন। আল্লামা ইবনে কাসীর (রাহ.) এই প্রসঙ্গে বলেন, আর পূর্ববর্তীদের জন্যও রয়েছে আল্লাহ তাআলার দান ও করুণা। সেটি হবে পরবর্তী প্রজন্মের দুআর মাধ্যমে। এক হাদিসে এসেছে : আল্লাহ তাআলা জান্নাতে অবশ্যই সালেহ ও নেককার বান্দাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। বান্দা বলবে, আল্লাহ, আমার জন্য এসব কোত্থেকে এলো? আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমার জন্য তোমার সন্তানদের দুআর মাধ্যমে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ৩০৩৫৯)।
বলার অপেক্ষা রাখে না, পরকালে পূর্বসূরিদের মর্যাদায় কাছাকাছি বা পাশাপাশি থাকার জন্য ঈমান যেমন আনতে হবে, নেক আমল ও শরীয়ত পরিপালনের মাধ্যমে তাঁদের অনুসরণও করতে হবে। নতুবা কেবল বাপ-দাদার নেককার ও আমলদার হওয়ার কারণে পরবর্তী বংশধরেরা পার পাবে না। রাসূলে কারীম (সা.) এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইরশাদ করে : আর যার আমল তাকে পিছিয়ে দিল, বংশমর্যাদা তাকে অগ্রসর করতে পারবে না। (সহীহ মুসলিম : ২৬৯৯)।
ইমাম নববী (রাহ.) বলেন, কাজেই বংশমর্যাদা ও বাপ-দাদার ঐতিহ্যের ওপর ভরসা করে বসে না থেকে নিজে আমলের প্রতি বেশি মনোযোগী হওয়া কাম্য। (শরহু মুসলিম, নববী ১৭/২৩)। তাই আসুন, নিজে ঈমান-আমলের রঙে রঙিন হই এবং পরিবার ও পরবর্তী প্রজন্মকেও সে রঙে রঙিন করি।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সরকার ৬ মাসের মধ্যে জাতিকে নির্বাচন উপহার দেবে : আশা মেজর হাফিজের
মিরপুর ও না’গঞ্জে বিস্ফোরণে শিশুসহ ১৮জন দগ্ধ
যশোরে নাশকতার অভিযোগে আওয়ামীলীগের দুই কর্মী আটক
যশোরে ব্যবসায়ীর পায়ে গুলি সাবেক এসপি আনিসসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা থানায় রেকর্ড
যশোরে একই সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জাহিদুল
ইমনের সেঞ্চুরির পরও এগিয়ে খুলনা
টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে সরানো হলো প্রথম আলোর সামনে অবস্থানকারীদের
নাইমের ১৮০, মেট্রোর বড় সংগ্রহ
রাজার বোলিংয়ে অলআউট বরিশাল
দেশের টাকা পাচার করে হাসিনা ও তাঁর দোসররা দেশকে দেউলিয়া করে গেছে পাচারকৃত টাকা উদ্ধারে কাজ করতে হবে -মাওলানা ইমতিয়াজ আলম
এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’
বিএনপি’র প্রতিনিধি দলের সাথে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের বৈঠক
৫ বছর পর আয়োজিত হতে যাচ্ছে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৪
থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না শাহাদাত
গণ-অভ্যুত্থানে ঢাবি ভিসির ভূমিকা কী ছিল? জানতে চান ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক
নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ হওয়া উচিত অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করা : রিজভী
ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনে দেশে এলো অ্যাপ ‘পারলো’
সীমান্তর লক্ষ্য এসএ গেমসের হ্যাটট্রিক স্বর্ণ জয়
বিপিএলের প্রথম দিনই মাঠে নামছে বসুন্ধরা-মোহামেডান
নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান