গফুর স্যার, আমার মাথার ছাতা
১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম

ষষ্ঠ ক্লাশে পড়ি। আমাদের স্যার ছিলেন মীর মাহতাব আলী। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগরের দৌলতগঞ্জ সরকারী পারথ্সিক স্কুলে সকালে পাঠ দান করতেন। আমার সাথে সেই সময় তিনি অনেককেই পাঠদান করতেন। সদা হাস্যমুখে থাকতেন। তিনি তখন জীবন নগর হাইস্কুলে টিচার। ভালো ইংরেজি জানতেন। তো মাঝে মাঝে গর্বভরে বলতেন-
‘আমার স্যার অধ্যাপক আব্দুল গফুর’। তার মতো গুণী টিচার আর কখনো পাইনি। তিনি রাজেন্দ্র কলেজে ইংরেজি বিভাগের প্রধান ছিলেন (ফরিদপুর)।
পরে ১৯৮১ সালে আমি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী কলেজে ভর্তি হই। আনুমানিক ১৪ বছর আগে মাহতাব স্যার গফুর সাহেবের চেম্বারে এসে উপস্থিত। মাধ্যমটা অবশ্যই আমি ছিলাম। গফুর সাহেব তাকে দেখেই বললেন, মাহতাব তুমি কেমন আছো? মাহতাব স্যার কোনো উত্তর না দিয়ে তাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন। মাহতাব স্যার ছিলেন মুক্তি যোদ্ধের লোকাল সংগঠক। তার একটা পা খোঁড়া ছিলো। মাহতাব স্যারকে দিয়ে এসময় মুক্তি যোদ্ধের উপর দুটো গদ্য লিখিয়ে নেই। তা ছাপাও হয়।
দৈনিক ইনকিলাবে আমার চাকরির কোনো দরখাস্ত নেই। কর্তৃপক্ষ চয়েস করে আমার সাহিত্য পাতায় গুঁজে দেন। সেই ১৯৯৪ সালের ১৭ই এপ্রিল থেকে এখনো কর্মরত। কিন্তু গফুর স্যার ক’বছর আগে শারিরীক অসুস্থতার কারণে পত্রিকার চাকরি থেকে আলগা হন। মারা যান কিছু দিন আগে। আমি তখন গ্রামে। মুন্সী আবদুল মান্নান ভাই এডিটোরিয়াল বিভাগের প্রধান। তিনি গফুর সাহেবের মৃত্যুর কথা আমার জানান। আমি দূরে থাকায় জানাযায় আর আসা হয়নি।
বিশেষ সংখ্যা কখনো কখনো ১০০ পাতাও হত। কখনো তার কম। শেষ দিন গুলোতে যখন ইনকিলাবে ছিলেন, তখন তিনি তা দেখতেন না। মানে আমার উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিতেন। এতে বুঝা যায় আমার উপর তার পূর্ণ আস্থা ছিল। আমি ১০০ পাতার কাজ শেষ হলে নিজের সই দিয়ে দায়িত্ব মুক্ত হতাম। এর আগে মাত্র কজনের লেখকের লেখা কোথায়, কতপাতায় যাবে তার ডামি আমার করে দিয়ে যেতেন।
তার আরও একটি স্মৃতি আমার হৃদ মূলে গেঁথে আছে। চাকরিতে ঢুকবার কদিন আগে ১৩২ পাতার একটি নিউজ দেন এডিট করার জন্য। পাচ মিনিট কম সময়ে আমি তা করে স্যারকে দেখাই। তিনি কিছুটা অবাক হন। ভাবলাম এটা আমার ইন্টারভিউ! বিষয়টা ছিলো কবি আল মাহমুদের দোবাই অনুষ্ঠান।
স্যার কে কখনো কোনো ইংরেজি, বাংলা ডিকশনারী উল্টাতে দেখিনি। কাছেও ছিলোনা। ঠিক আমিও তাই আজোবধি। স্যারের নিকট এই পরম সত্য গৌরবটা পেয়েছি।
সাদা পায়জামা, পাঞ্জাবী, কাধে কাপড়ের ব্যাগ ছিলো তার নিত্যদিনের অফিস সঙ্গি। তিনি ছিলেন আধুনিক ইসলামের ধারক বাহক। শিল্প কলা পছন্দ করতেন খুব। নির্লোভ ছিল তার চরিত্রে ভূষণ। আজ তিনি নেই। বুকের ভেতর একটা মরিচ বাতি জ্বলছে।
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ফরিদপুরে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা আটক

নভেম্বর ২০, ২০২৪—আমাদের হৃদয়ে চিরকালের জন্য খোদাই করা একটি দিন

শুল্ক আরোপ নিয়ে নানা দেশে টানাপোড়েন, অটল অবস্থানে ট্রাম্প

ভারতের ২১ শহরে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে

সুনামগঞ্জে শুরু হয়েছে দেশীয় জাতের বোরোধান কাটা

গুলশানে স্পা সেন্টারে অভিযান এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে মালিক গোলাম মহিউদ্দিন

ড. ইউনূসের সন্তানেরা কোথায় কি করেন?

ভারতে ওয়াকফ বিল নিয়ে বিক্ষোভ, বিজেপি নেতার বাড়িতে আগুন

সাবেক এমপি আফজাল ৭ দিনের রিমান্ডে

ক্ষমা চাইলেন ড্যাফোডিলের সেই শিক্ষিকা

সারাদেশে চলছে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি

ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় ২০ দিনে ৪৯০ শিশু নিহত

চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড পরিদর্শনে ৪০ দেশের প্রতিনিধি

রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে গেছে শত বাংলাদেশি

ইন্দুরকানীতে ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন সংকট

গাজায় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ, অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান

এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা, কোচিং-ফটোকপি বন্ধসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা

এশিয়ার শেয়ারবাজারে বড় ধস, তেলের দামেও পতন

গাজা ইস্যুতে সিসি ও ম্যাখোঁর সঙ্গে জর্দানের রাজার বৈঠক আজ

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ ফের শুরু আজ