নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিøঙ্কেনের সঙ্গে আলাপ হয়নি : সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Daily Inqilab ইনকিলাব

১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪১ পিএম

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøঙ্কেনের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতেও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া হয়নি। গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, কোনো আলোচনা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তোমাদের দেশের আইনে নির্বাচন হবে। আমরা আশা করব, তোমরা নির্বাচনে একটা ম্যাজিক দেখাবে; যাতে আমরা দুনিয়ার লোকের কাছে বলতে পারি।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না। সব দলের আন্তরিকতা না থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমরাও চাই। এখানে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। আমি সহযোগিতা চেয়েছি। আমি বলেছি, সুষ্ঠু নির্বাচন সরকার একা করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন একা করলে হবে না। সব দল মতের লোকের আন্তরিকতা থাকতে হবে। তোমরা (যুক্তরাষ্ট্র) এসব ব্যাপারে সাহায্য কর। তিনি বলেন, কেউ কেউ তাদের (যুক্তরাষ্ট্রকে) বলেছে, আমাদের বিরোধী দলের লোকজন মিটিং করতে পারে না, করতে গেলে তাদের জেলে নিয়ে যায় সরকার। আমি জানিয়েছি, আমরা-তো রাজনৈতিক কারণে জেলে নিই না। কোনো অপরাধ করলে জেলে নিই। তাদের (বিরোধী দল) তো আমরা কোথাও আটকাই না। তিনি বলেন, কেউ যদি রাস্তা বন্ধ করে দিতে চায়, তোমার দেশে (যুক্তরাষ্ট্রে) হলে তুমিও (বিøঙ্কেনকে) এলাউ করবে না। তারা (বিএনপি) মুক্তভাবে সব মিটিং করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে নির্বাচন নিয়ে প্রচুর বার্তা আসছে। এ ব্যাপারে সরকার বিরক্ত বা চাপ অনুভব করছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না। আমরা খুব খুশি। আমরা নিজেরা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করব। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলছে, ভালো। আমাদের চাঙা রাখছে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে।
বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, কেন হবে না? দেশের মানুষ ভোট দিলে হবে না কেন? আমেরিকা একটা বড় দেশ, ওদের দেশে কত রাজনৈতিক দল আছে, সেগুলোর নাম শুনেছেন?

নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যত পারুক পর্যবেক্ষক পাঠাক। কোনো অসুবিধা নেই। তাদের বলেছি, তোমাদের দেশে পর্যবেক্ষক নাও, আমরা এটা ওপেন করে রেখেছি।

এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে কী পেলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, স্পিরিট। আমরা একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব। এটা আমাদেরও তাগিদ। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) সেটার তাগিদ দিচ্ছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ডিএস নিয়ে আমরা বলেছি, এখানে যদি কোনো দুর্বলতা থাকে আমরা এটা দেখব। আইনের কোথাও দুর্বলতা থাকলে আমরা এটা ঠিক করে ফেলব। সব দেশে এ ধরনের আইন আছে। কখনও কখনও প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আমরা রেকটিফাই করব।

ড. মোমেন-বিøঙ্কেনের বৈঠক নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সুশীল সমাজের কথা বলার অধিকার নিয়ে ড. মোমেন বলেন, আমি বলেছি, আমার দেশে ১২৫১টি দৈনিক বের হয়। তোমার দেশ এত বড়, সেখানে মাত্র ১২৭৯টা বের হয়। আমরা মোটামুটি তোমাদের কাছাকাছি আছি। বাংলাদেশ হলো সেই জাতি যারা-গণতন্ত্রের জন্য ন্যায় বিচারের জন্য, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি, সংগ্রাম করেছি। সুতরাং আমাদের আর এটা নতুন করে শেখানোর প্রয়োজন নেই।

র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশিদের কাছে ধর্না দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, এগুলো খুব দুঃখজনক। কারণ হলো ওনাদের (রাজনৈতিক দলগুলোকে) বরং তৃণমূলের লোকের কাছে; যারা ভোটার তাদের কাছে যাওয়া দরকার। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে কোনো লাভ হবে না। কারণ বিদেশিরা তো ভোট দেবে না। ভোট দেবে এদেশের মানুষ।
দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে ড. মোমেন বলেন, তাদের (বিএনপি) উচিত তৃণমূলের ভোটারদের কাছে যাওয়া। আমি সবসময় বলি, আমাদেরও তৃণমূলের ভোটারদের কাছে যেতে হবে। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে, জোর থাকবে যেন দেশের মানুষের মঙ্গল করতে পারি। মানুষের সঙ্গে আলাপ করে বুঝতে হবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছুটা অসুবিধা আছে। তিনি আরো বলেন, তাদের (রাজনৈতিক দলগুলো) ভোটারদের কাছে যাওয়া উচিত। ভোটাররা বলবে, কী হলে ভালো হয়। নালিশ-টালিশ করে কোনো লাভ হবে না।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সউদী পৌঁছেছেন ৩৪ হাজার হজযাত্রী

সউদী পৌঁছেছেন ৩৪ হাজার হজযাত্রী

প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে

প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে

বিনিয়োগ, অভিবাসন, মৌসুমি কর্মসংস্থান, প্রবাসী কল্যাণ, জ্বালানি বিষয়ে আলোচনা হবে : হাছান মাহমুদ

বিনিয়োগ, অভিবাসন, মৌসুমি কর্মসংস্থান, প্রবাসী কল্যাণ, জ্বালানি বিষয়ে আলোচনা হবে : হাছান মাহমুদ

ইরানের প্রেসিডেন্ট নিহত

ইরানের প্রেসিডেন্ট নিহত

একটুখানি শীতল পানি-১

একটুখানি শীতল পানি-১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শোক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শোক

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের শোক

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের শোক

ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণও শোকাহত

ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণও শোকাহত

ভারতের ‘জেরক্স ইন্ডিয়া’ হাতিয়েছে ১১২ কোটি

ভারতের ‘জেরক্স ইন্ডিয়া’ হাতিয়েছে ১১২ কোটি

দ্বিতীয় দিনেও তান্ডব অটোচালকদের

দ্বিতীয় দিনেও তান্ডব অটোচালকদের

ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ -ওবায়দুল কাদের

ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ -ওবায়দুল কাদের

তাপদাহ কেটে দেশজুড়ে বৃষ্টি

তাপদাহ কেটে দেশজুড়ে বৃষ্টি

পিকে হালদারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

পিকে হালদারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

কারান্তরীণের অমানবিক খেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সরকার -মির্জা ফখরুল

কারান্তরীণের অমানবিক খেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সরকার -মির্জা ফখরুল

দ্বিতীয় দফায় উপজেলা নির্বাচন আজ

দ্বিতীয় দফায় উপজেলা নির্বাচন আজ

নকল ডায়াবেটিস টেস্টিং স্ট্রিপ এক সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংসের নির্দেশ

নকল ডায়াবেটিস টেস্টিং স্ট্রিপ এক সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংসের নির্দেশ

নকল ডায়াবেটিস টেস্টিং স্ট্রিপ এক সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংসের নির্দেশ

নকল ডায়াবেটিস টেস্টিং স্ট্রিপ এক সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংসের নির্দেশ

ভারত থেকে ১২০০ কোটি টাকায় ২০০ বগি কিনছে রেলওয়ে

ভারত থেকে ১২০০ কোটি টাকায় ২০০ বগি কিনছে রেলওয়ে

নেতানিয়াহু ও হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দাবি

নেতানিয়াহু ও হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দাবি

ইসরাইলি আগ্রাসন ও ফাতাহ্র ব্যর্থতায় হামাসের প্রতি সমর্থন বাড়ছে

ইসরাইলি আগ্রাসন ও ফাতাহ্র ব্যর্থতায় হামাসের প্রতি সমর্থন বাড়ছে