সমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই

জালেম সরকার পালাতে বাধ্য হবে

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২৭ জুলাই ২০২৩, ১১:৩১ পিএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ এএম

যারা দেশপ্রেমিক, যারা মজলুমদের রোনাজারিত ব্যথিত তারাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জালেমের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে। মজলুম মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আজ মানুষের জান মালের কোনো নিরাপত্তা নেই। এই অবস্থায় ঘরে বসে থাকলে হবে না। এই জালেম সরকারের বিরুদ্ধে জান মাল নিয়ে রাজপথে নামতে হবে। তবেই ওরা পালাতে বাধ্য হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে মোড়েলগঞ্জে মুফতি ফয়জুল করীমের বক্তব্য প্রদানকালে পুলিমের বাধা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ, ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরেণে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাাচনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগরী আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

পীর সাহেব বলেন, এই জালেম সরকার ফেরাউনের ভূমিকায় অবর্তীণ হয়েছে। স্মরণ রাখতে হবে ফেরাউন নীল নদে ডুবে ধ্বংস হয়েছিল। স্বৈরশাসক এরশাদকেও জেলের ভেতর দিন কাটাতে হয়েছিল। শেখ মুজিবুর রহমানও ৯৯% ভাগ ভোট পেয়েছিলেন। তার জনপ্রিয়তাও ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ক্ষমতাসীনরা বাঘ সিংহের মতো গর্জে উঠছে। সারা দেশের মানুষ ফুঁসে উঠলে এসব বাঘ সিংহও লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যাবে।

বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে পুলিশের অনুমতি না পেয়ে এই প্রতিবাদ সমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলের দক্ষিণ ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আলহাজ মো. আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, অধ্যাপক ফজলে বারি মাসউদ, মাওলানা লোকমান জাফরি, বীর মুক্তিযোদ্ধ মো. আবুল কাশেম, মাওলানা এ বিএম জাকারিয়া, মাওলানা মো. আরিফুল ইসলাম, মুফতি মানসুল আহমদ সাকী, মাওলানা নূরুল ইসলাম নাঈম,মাওলানা মাকসুদুর রহমান, মুফতি শওকত ওসমান, ফজলুল হক মৃধা, এস এম কাউসার মাহমুদ ও মাইদুল হাসান সিয়াম।

পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, সর্ব মহলের মানুষ আজ শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি করাও কী অপরাধ ? জাতীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন দিতে হবে।

পীর সাহেব বলেন, বিভিন্ন দেশে বেগমপাড়া বাঁনিয়েছেন। একজন ছাত্র লীগের পাতি নেতার ২ হাজার কোটি টাকার খবরও প্রকাশিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা দেশ বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। যোগ্য ছাত্ররা চাকরি পাচ্ছে না। চাকরির দরখাস্ত করলেই চৌদ্দগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ করে কি না তা’ তালাশ করা হয়। এভাবে দেশ চলতে পারে না। পীর সাহেব বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করায় তাদের ধন্যবাদ জানান। পীর সাহেব আজ শুক্রবার বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহের বিক্ষোভ সমাবেশে কোনো ধরণের অরাজকতা যাতে সৃষ্টি করা না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানান। তিনি আজ বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ইসলামী যুব আন্দোলনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করার আহবান জানান। পীর সাহেব বলেন, মোড়েরগঞ্জে দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি ফয়জুল করীমের ঘরোয়া কর্মসূচিতে বাধা এবং অসৌজন্যমূলক আচরণে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থানকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবার ইঙ্গিত। মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, অর্থ লুটপাট, দুর্নীতি, দু:শাসন ও অর্থপাচার করে তারা দেশকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। তিনি বলেন, জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে এর বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি ? মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, দুর্নীতি, ঘুষ, চুরি ডাকাতির উন্নয়ন হয়েছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। যতদিন পর্যন্ত এই সরকারের বিদায় না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, যারা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেয়, মানুষ গ্রেফতার করে। এরা জালেম। এই জালেম সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে। এরা ভোটাধিকার হরণ করেছে। জেলে যাওয়ার জন্য এদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে। মাওলানা গাজী আত্উার রহমান বলেন, দেশটা কী আওয়ামী লীগ বিএনপির একার না কী ? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপি কর্মসূচি পালন করতে পারলে ইসলামী আন্দোলনও করতে পারবে। এদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ আমাদেরকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ ইসলামের দুশমন, স্বাধীনতার দুশমন মানবতার দুশমন। জনগণ ক্ষেপে উঠলে এরা পালাবার পথ পাবে না। এরা হিরো আলমের কাছে হেরেছে। বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনে অনুমতি না দিয়ে এরা সংবিধান লঙ্ঘন করছে। এরা মুক্তি যুদ্ধের চেতনার নামে মানুষের অধিকার হরণ করছে। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করছেন। মনে রাখবেন আফগাস্তিন থেকে আমেরিকানরাও অনেক কিছু ফেলে পালিয়েছিল। আপনাদেরও এমন অবস্থা হতে পারে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সম্প্রীতির জন্য রাখাইন রাজ্যে টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অপরিহার্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নাম বদলে হলো ‘যমুনা রেলসেতু’
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে ফেলছে : শিক্ষা উপদেষ্টা
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক
আরও

আরও পড়ুন

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ১

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ১

কামালপুর সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে মরণফাঁদ চরম  দুর্ভোগে পথচারীরা

কামালপুর সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে মরণফাঁদ চরম  দুর্ভোগে পথচারীরা

মেয়েদের ক্রিকেটে যুক্ত হলো যেসব সুযোগ-সুবিধা

মেয়েদের ক্রিকেটে যুক্ত হলো যেসব সুযোগ-সুবিধা

বাড়ছে শীতের প্রকোপ, সাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়

বাড়ছে শীতের প্রকোপ, সাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়

জকিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

জকিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন

খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন

যুব এশিয়া কাপজয়ীরা পাচ্ছেন আর্থিক পুরস্কার

যুব এশিয়া কাপজয়ীরা পাচ্ছেন আর্থিক পুরস্কার

আদমদিঘীতে বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধন

আদমদিঘীতে বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধন

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত ও আ. লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়

গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত ও আ. লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়

কালীগঞ্জে ভাইরাল চিতাবাঘ হত্যার ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার বন বিভাগ ও প্রশাসনে তোলপাড়

কালীগঞ্জে ভাইরাল চিতাবাঘ হত্যার ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার বন বিভাগ ও প্রশাসনে তোলপাড়

আশুলিয়ায় স্ট্যান্ডে চাঁদার দাবীতে হামলার অভিযোগ; আহত-১৩

আশুলিয়ায় স্ট্যান্ডে চাঁদার দাবীতে হামলার অভিযোগ; আহত-১৩

সউদী আরবে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য দুই নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সউদী আরবে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য দুই নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

শুটিংয়ে গিয়ে আপত্তিকর আচরণ করায় নির্মাতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা

শুটিংয়ে গিয়ে আপত্তিকর আচরণ করায় নির্মাতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা

সালাম মুর্শেদীর ৪ মামলার জামিন নামঞ্জুর

সালাম মুর্শেদীর ৪ মামলার জামিন নামঞ্জুর

সম্প্রীতির জন্য রাখাইন রাজ্যে টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অপরিহার্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সম্প্রীতির জন্য রাখাইন রাজ্যে টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অপরিহার্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

গবিসাসের নতুন সভাপতি সানজিদা, সম্পাদক ইভা

গবিসাসের নতুন সভাপতি সানজিদা, সম্পাদক ইভা

গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার গুদামে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট

গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার গুদামে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট

খুবির উৎকর্ষ সাধনে পাশে থাকবে ইরান

খুবির উৎকর্ষ সাধনে পাশে থাকবে ইরান

বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নাম বদলে হলো ‘যমুনা রেলসেতু’

বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নাম বদলে হলো ‘যমুনা রেলসেতু’