নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা
২৭ জুলাই ২০২৩, ১১:৩৩ পিএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ এএম
বিশ্বের ১৬০টি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ বিষয়ক এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে- ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ একটি মধ্যপন্থি, ধর্মনিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং স্থিতিশীল দেশ। কিন্তু এ বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে এখানকার (বাংলাদেশ) রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি ততই অস্থির হয়ে উঠছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হয় অনিয়ম, সহিংসতা ও ভীতিপ্রদর্শনের মাধ্যমে। সরকার এবং ক্ষমতাসীন দল আইন ও নীতি গ্রহণ করেছে, যেগুলো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কথা বলার স্থান সংকুচিত করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে এবং মিডিয়া ও নাগরিক সমাজের স্বাধীনতাকে ফেলেছে হুমকিতে। গতকাল ‘২০২৩ ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট স্টেটমেন্টস’ শীর্ষক বার্ষিক দীর্ঘ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে এ কথা বলা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে কেন্দ্র করে। এতে বিশ্বের ১৬০টি দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ কেমন তা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের চিত্র তুতলে ধরে বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গড়ে শতকরা ৬ ভাগের বেশি এই হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো এ দেশটির ভৌগোলিক অবস্থানের কৌশলগত গুরুত্ব ও বিপুল শ্রমশক্তির কারণে এখানে বিনিয়োগ করে। কিন্তু করোনা মহামারি ও ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে অর্থনীতিতে চাপ পড়েছে। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের চাহিদা কমেছে। একই কারণে বেড়েছে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালে দেশে ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কমে ৩২.২ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। বিদেশি মুদ্রার এই সংকটের মধ্যে গত বছর বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারি ঘটে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২.৮ বিলিয়ন ডলার, যার বেশির ভাগেরই হদিস নেই সরকারের কাছে।
শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ অধিকার (আইপিআর) ও পরিবেশবিষয়ক বেশ কিছু আধুনিক আইন করা হয়েছে। কিন্তু এসব আইনের অনেক কিছুই প্রয়োগ হয় না। তবে গত এক দশকে ভবন ও অগ্নিনিরাপত্তার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলেও শ্রমিকদের স্বাধীনভাবে সংগঠন করা ও সম্মিলিতভাবে দর-কষাকষির অধিকার সীমিত। এ ছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশবিষয়ক বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সমঝোতায় যোগ দিলেও বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা বিশ্বের অন্যতম নিকৃষ্ট শহর।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেয়েছে। আইএমএফের সূত্রে বলা হয়েছে, এই ঋণ দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অরক্ষিত মানুষদের সুরক্ষা দেবে। এতে আরো বলা হয়েছে, গত এক দশকে বিনিয়োগের বাধা অপসারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করেছে। যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করে বিদ্যুতের নিশ্চয়তা বৃদ্ধি। কিন্তু অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, অর্থায়নের সীমিত সুযোগ, আমলতান্ত্রিক বিলম্ব, শ্রম আইনের শিথিল প্রয়োগ ও দুর্নীতির কারণে এখনো বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে। সরকার ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে প্রয়াস পেয়েছে। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগ নীতির এখনো পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখনো বিকশিত হচ্ছে। আর্থিক খাত ব্যাংকের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। অথচ ২০২২ সালে দেশের ব্যাংক খাতে বড় ধরনের কেলেঙ্কারি ঘটে গেছে। ১১টি ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১০ কোটি ডলার।
বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিবেদনে সমালোচনামুলক মন্তব্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশের বিচারিক কার্যক্রমের গতি কম এবং এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। সেই সঙ্গে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে নানা সীমাবদ্ধতা থাকায় চুক্তি বাস্তবায়ন ও ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যাহত হয়। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা