ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১

মানব জীবনে বিয়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

Daily Inqilab মুফতী পিয়ার মাহমুদ

০৯ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১২ পিএম | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

বিয়ের পরিচয়: বাংলা বিয়ে/বিবাহ শব্দের আরবী প্রতিশব্দ হলো নিকাহ। যার আভিধানিক অর্থ হলো দলিত করা, বন্ধন, সংযুক্ত করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় ইচ্ছাকৃতভাবে একজন পুরুষের একজন নারীর গুপ্তাঙ্গসহ সারাদেহ ভোগ করার নিমিত্তে যে আকদ বা বন্ধন হয় তাকে বিয়ে বলে। (রদ্দুল মুহতার: ৪/৫৭-৬০; কিতাবুল ফিক্হি আলাল মাযাহিবিল আরবাআ: ৪/১) বিয়ে সম্পাদিত হতে হবে দুইজন স্বাধীন বিবেকবান প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান পুরুষ অথবা এ সকল গুণে গুনান্বিত একজন পুরুষ ও দুইজন নারী সাক্ষীর উপস্থিতিতে বর কিংবা কনে পক্ষের ইজাব তথা প্রস্তাব আর অপর পক্ষের কবূলের মাধ্যমে। এই প্রস্তাব ও কবূল সাক্ষীগণের শ্রবণও করতে হবে। এর বিপরীত কোনো পদ্ধতিতে বিয়ে সম্পাদিত হলে তা বিশুদ্ধ হবে না। (হিদায়া:২/২৮৫;রদ্দুল মুহতার:৪/৬৯, ৮৬-৯২)

বিয়ের গুরুত্ব ও ফযীলত: অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান ও চিকিৎসা যেভাবে মানব জীবনের অপরিহার্য প্রয়োজন, একজন যৌবনদীপ্ত মানুষের সুস্থ জীবন যাপনের জন্য বিয়ের অপরিহার্যতা তেমনই। পৃথিবীর প্রায় সকল ধর্মেই এর গুরুত্ব স্বীমাহীন। ইসলামতো একে ইবাদত হিসাবেই স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই ইসলামে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ফযীলত ও মর্যাদা তুলনাহীন। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে- তোমাদের মধ্যে যে পুরুষের স্ত্রী নেই আর যে নারীর স্বামী নেই তাদের এবং তোমাদের দাস-দাসীর মধ্যে যারা সৎকর্ম পরায়ণ তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তাহলে আল্লাহ (বিয়ের বরকতে) নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছলতা দান করবেন। আল্লাহ বড় প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সূরা নূর:৩২) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন- আপনার পূর্বে প্রেরণ করেছি অনেক রাসূল এবং তাদেরকে দিয়েছি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি। (সূরা রাদ:৩৮) সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের রা. বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- হে যুব স¤প্রদায়! তোমাদের মাঝে যারা বিয়ে করতে সক্ষম তারা যেন বিয়ে করে নেয়। কারণ বিয়ে দৃষ্টি অবনত রাখতে এবং গুপ্তাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষায় অধিক সহায়ক আর যে বিয়ে করতে সক্ষম নয় সে যেন রোযা রাখে। কেননা রোযা তার যৌনক্ষুধাকে দমিত করবে। (বুখারী:২/৭৫৮,মুসলিম:১/৪৪৯, ইবনে মাজা:১৩২) অন্য এক বর্ণনায় আনাস রা. বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- কোনো ব্যক্তি যখন বিয়ে করল, তখন সে যেন দ্বীনের অর্ধেকটা পূর্ণ করে ফেলল। এখন সে যেন বাকী অর্ধাংশের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে। [মিশকাত:২/২৬৮]। সাহাবী আবু আইয়ুব রা. এর বর্ণনায় এসেছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- নবী-রসূলগণের চারটি সুন্নত রয়েছে। সেগুলো হলো- ১.লজ্জাবোধ, ২. সুগন্ধি ব্যবহার, ৩. মিসওয়াক করা, ৪. বিয়ে করা। (তিরমিযী: ১/১২৮) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেন- তিন শ্রেণীর লোককে আল্লাহ অবশ্যই সাহায্য করবেন-১. স্বাধীন হওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ গোলাম, যে নিজ মুক্তিপন আদায়ের ইচ্ছা রাখে, ২. চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার উদ্দেশ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ব্যক্তি, ৩. আল্লাহর পথে জিহাদকারী। (তিরমিযী:২/২৯৫;৪; নাসায়ী:২/৫৮;ইবনে মাজা;১৮১) সুবহানাল্লাহ! কি অসাধারণ ফযীলত! মানুষ মানবিক প্রাকৃতিক চাহিদার কারণেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। অথচ আমাদের প্রাণের স্পন্দন ইসলাম বলেছে বিয়ে আর্থিক সচ্ছলতার কার্যকর উপায়। কখনো বলেছে, চরিত্রিক পবিত্রতার কার্যকর মাধ্যম। আবার কখনও বলেছে দ্বীনের অর্ধেক। কখনও বা আখ্যায়িত করেছে আল্লাহর সাহায্য লাভের মাধ্যম হিসাবে।

বিয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: তাই একজন মুমিনের এ মহান কাজটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জানা অপরিহার্য, যেন সে এ কর্মে সঠিক পথে সঠিকভাবে পরিচালিত হতে পারে। তো ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের প্রধান ও মৌলিক লক্ষ্য হলো মানব বংশের সংরক্ষণ ও তার প্রজনন ধারা অব্যাহত রাখা। এ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে- তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র”( বাকারা : ২২৩ ) (যাতে শুক্রাণু বীজস্বরূপ ও সনÍান ফসলতুল্য) সুতরাং স্বীয় শস্যক্ষেত্র চাষাবাদের দ্বারা যেভাবে মূল উদ্দেশ্য থাকে ফসল ফলানো এবং এর ধারা অব্যাহত রাখা ঠিক সেভাবে বিয়ের উদ্দেশ্যও হলো সন্তান জন্মদান এবং তা সংরক্ষণ ও এর ধারা অব্যাহত রাখা। এ ব্যাপারে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- তোমরা পরস্পরে বিয়ে শাদী আঞ্জাম দাও এবং বংশ ধারা অব্যাহত রাখ (বুখারী-২)। অন্য বর্ণনায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক পরিমাণে সন্তান জন্মদানকারিণী নারীদের বিয়ে কর। মিশকাত:২/২৬৭। উল্লিখিত আয়াত ও হাদীস থেকে বিয়ে সম্পর্কে ইসলামের চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গি স্বরূপে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে যে, ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে শাদীর প্রধান ও মূল লক্ষ্য হলো মানব বংশের প্রজনন ধারা অব্যাহত রাখা। ২. বিয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো নারী-পুরুষের সতীত্ব সংরক্ষণ। সৃষ্টিগতভাবেই প্রতিটি সুস্থ মানুষের মধ্যে রয়েছে কামক্ষুধা। সেই ক্ষুধা নিবারণের একমাত্র শুদ্ধ পন্থা হলো বিয়ে। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-(ভিন পুরুষের জন্য) পর নারীর আগমন-প্রত্যাগমন শয়তানের আগমন-প্রত্যাগমন তুল্য। যখন তোমাদের কারো কাছে কোনো নারীকে ভাল লাগে এবং তার উপর দৃষ্টি পড়ায় তোমাদের কারো মনে তার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়, তাহলে সে যেন স্বীয় স্ত্রীর নিকট গমন করে সহবাস করে নেয়। এটা তার অন্তরে উদ্ভূত ঐ অবস্থা বিদূরিত করে দিবে। (মুসলিম:১/৪৪৯-৪৫০) অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা জনৈকা নারীর উপর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দৃষ্টি পড়ল। এতে তাঁর মনে প্রভাব পড়ায় তৎক্ষনাৎ স্বীয় স্ত্রী সাওদা রা. এর নিকট গমন করলেন। তখন সাওদা রা. খোশবু প্রস্তুত করছিলেন আর তার পাশেই উপবিষ্টা ছিলেন কয়েকজন নারী। তারা রাসূলুল্লাহকে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখে সেখান থেকে সরে গেলেন। তখন তিনি নিজ প্রয়োজন মিটালেন। অত:পর তিনি ঘোষণা করলেন, অপর নারী দর্শনে কোন পুরুষের ভাল লাগলে এবং অন্তরে আকর্ষণ সৃষ্টি হলে সে যেন স্বীয় স্ত্রীর নিকট গমন করে সহবাস করে নেয়। কারণ ঐ নারীর যা আছে তার স্ত্রীরও তা আছে। (মিশকাত :২/২৬৯) রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেছেন- “হে যুব সমাজ! তোমাদের মাঝে যারা বিয়ে করতে সক্ষম তারা যেন বিয়ে করে নেয়। কারণ বিয়ে দৃষ্টি অবনত রাখতে এবং লজ্জাস্থানের পবিত্রতা রক্ষায় অধিক সহায়ক।” (বুখারী: ২/৭৫৮; মুসলিম : ১/৪৪৮-৪৪৯, ইবনে মাজা: ১৩২) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এও বলেছেন- তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই সাহায্য করবেন- ১. স্বাধীন হওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ গোলাম, যে নিজ মুক্তিপন আদায়ের ইচ্ছা রাখে, ২. যে সতীত্ব ও চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার উদ্দেশ্যে বিয়ে করে, ৩. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কারী। (তিরমিযী: ১/২৯৫; নাসায়ী: ২/৫৮; ইবনে মাজা: ১৮১)। সাহাবী আনাস ইবনে মালিক রা. কর্তৃক বর্ণিত এক বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সাথে পূত:পবিত্র অবস্থায় সাক্ষাত করতে চায় সে যেন স্বাধীন নারীকে বিয়ে করে। ( ইবনে মাজা: ১৩৫)। তো উপরোক্ত বর্ণনা গুলোর মাধ্যমে এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে, মানুষের সতীত্ব রক্ষাও বিয়ে শাদীর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। ৩. বিয়ের তৃতীয় উদ্দেশ্যটি হলো, স্বামী স্ত্রীর একে অপরের সান্নিধ্যে এসে আন্তরিক প্রশান্তি ও স্বস্তি লাভ করা। এ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে- তিনি (আল্লাহ) তোমাদের থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের স্ত্রীদের, যেন তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ কর এবং তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের (স্বামী-স্ত্রীর) মাঝে পারস্পরিক স¤প্রীতি ও দয়া। ”(রুম:২১) স্বামী-স্ত্রী যদি নেক ও সৎ হয় এবং তাদের ভিতর থাকে আল্লাহর ভয়, তাহলে একে অপরের জন্য আত্মার প্রশান্তি ও মানবিক স্বস্থির ছায়া হয়ে বিরাজ করে।

বিয়ে না করার কুফল ও ক্ষতি: ধর্মীয় ও পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ে না করার ক্ষতি অনেক। প্রথমত সামর্থবান পুরুষকে বিয়ের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল। ফাযায়েলও বর্ণিত হয়েছে প্রচুর। যা আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি। একজন মুমিনের জন্য আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের নির্দেশ লঙ্গন এবং তাদের তরফে বর্ণিত ফাযায়েল অর্জন না করার চেয়ে ক্ষতিকারক বিষয় আর কি হতে পারে ? এ তো ইহকাল ও পরকালে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত থেকে মাহরুম হওয়ার কারণ। সাহাবী আবু হুরায়রা রা. বর্ণনায়, মহানবী সা. ইরশাদ করেন- “দ্বীনদারী ও চারিত্রিক দিক বিবেচনায় তোমাদের পছন্দ হয়, এমন ব্যক্তি তোমাদের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দিলে (উপযুক্ত পাত্রীকে) তার সাথে বিয়ে দিয়ে দাও। যদি বিয়ে না দাও, তাহলে সমাজে বিরাট ফিতনা ও ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিবে। তিরমিযী:১/২০৭। উক্ত হাদীসের ভাষ্যমতে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী পাওয়া সত্তে¡ও বিয়ে সম্পাদিত না হলে ভূখন্ডে দেখা দিবে ফিতনা ও বিপর্যয়। কি সেই ফিতনা ও বিপর্যয়? তিরমিযী শরীফের অন্যতম ভাষ্যগ্রন্থ কুতুল মুগতাযীতে উল্লেখ আছে- উক্ত হাদিসে ফিতনা ও বিপর্যয় দ্বারা উদ্দেশ্য হলো উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী থাকা সত্তে¡ও বিবাহ কার্য সম্পাদিত না হলে অনেক নারী পুরুষ অবিবাহিত অবস্থায় থেকে যাবে। ফলে যিনা ব্যভিচার ব্যাপক ভাবে বিস্তার লাভ করবে। এতে অভিবাবকগণ শিকার হবেন অপমান ও লজ্জার। যার অনিবার্য ফল হিসাবে শুরু হবে দাঙ্গা ও খুনা-খুনী। তিরমিযী:১/২০৭,টিকা নং-৪) এছাড়াও সামর্থবান যুবকের বিয়ে না করাটা সাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকর। ভেঙ্গে পড়ে শরীর। উড়ে যায় সুখনিদ্রা। মন্দা পড়ে কর্মস্পৃহায়। যুবসমাজ শিকার হয কুচরিত্র ও অসভ্যতার। যার অনিবার্য প্রভাব আক্রমণ করে সমাজ জীবনকে। ফলে দূষিত হয় সমাজ ও রাষ্ট্র।
বিয়ের বিধান: বিয়ের হুকুম সর্বদা এক থাকে না। বরং বিয়ের হুকুম আবর্তিত হয় ব্যক্তির শারীরিক,মানসিক ও আর্থিক অবস্থার বিবেচনায়। তাই বিয়ে ব্যক্তি বিভেদে ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুআক্কাদা, হারাম, মাকরুহ, মুবাহ ও সুন্নাত বলে বিবেচ্য হয়। নিম্নে আমরা বিয়ের হুকুমগুলোর বিবরণ তুলে ধরলাম।

ফরজ: যদি কেউ বিয়ে না করলে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে বলে প্রবল আশংকা হয় আর বৈধ পন্থায় মোহর ও ভরণ-পোষণ করতেও সক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা ফরজ।

ওয়াজিব: যদি বিয়ে না করলে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার ভয় হয় কিন্তু ব্যভিচারে পড়েই যাবে এমন প্রবল আশংকা নেই। আবার বিয়ের প্রতি প্রবল আকর্ষণও আছে। হালাল অর্থে স্ত্রীর মোহর ও ভরণ-পোষণ করতেও সক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা ওয়াজিব।

সুন্নাতে মুআক্কাদা: বিয়ের প্রতি আকর্ষণ আছে। তবে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশংকা নেই। কিন্তু বিয়ে না করলে লঘু পাপের অধিকারী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। হালাল অর্থে স্ত্রীর মোহর ও ভরণ-পোষণ আদায় করতে সক্ষম। স্ত্রী মিলনেও সামর্থবান। এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা সুন্নাতে মুআক্কাদা। এ অবস্থায় বিয়ে বর্জন করলে গুনাহ হবে। আর নিজেকে পাপমুক্ত রাখা ও বংশ বৃদ্ধির নিয়ত করলে সওয়াব হবে।

মুবাহ: বিয়ের প্রতি আকর্ষণ আছে। তবে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার কোনো আশংকা নেই। হালাল অর্থে স্ত্রীর মোহর ও ভরণ-পোষণ আদায় করতে সক্ষম। এমন ব্যক্তি যদি পাপ মুক্ত থাকা বা বংশ বৃদ্ধির নিয়ত না করে শুধু যৌনচাহিদা পূরণার্থে বিয়ে করে, তাহলে এটা মুবাহ।

হারাম: যদি বদ্ধমূল বিশ্বাস থাকে যে, বিয়ে করলে স্ত্রী জুলুম ও নিপীড়নের শিকার হবে এবং স্ত্রীর যথাযথ হক আদায়ে ব্যর্থ হবে, তাহলে এক্ষেত্রে বিয়ে হারাম।

মাকরুহ: বিয়ে করলে স্ত্রী জুলুম-নিপীড়নের শিকার হবে যদি এমন আশংকা হয়; বদ্ধমূল বিশ্বাস না থাকে,তাহলে বিয়ে করা মাকরুহে তাহরীমী।(রদ্দুল মুহতার:৪/৬৩-৬৬;কিতাবুল ফিকহি-আলাল মাযাহিবিল আরবাআহ:৪/৬)।

লেখক : ইমাম ও খতীব, মসজিদুল আমান, গাঙ্গিনারপাড়, মোমেনশাহী।

 

 

 


বিভাগ : ধর্ম দর্শন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা