তাঁর অভাব পদে পদে অনুভব করি

Daily Inqilab রূহুল আমীন খান

০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৭ এএম

এই সময়ে আমি আমার পরিচিত ভুবনে এমন কাউকে দেখছি না, যিনি মুসলিম জাহানের কোনো সমস্যার ক্ষেত্রে ব্রুনাই থেকে মরক্কো পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র নেতাদের সাথে, বুদ্ধিজীবীদের সাথে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে অনায়াসে আলাপ করতে পারেন, সমঝোতার চেষ্টা চালাতে পারেন, দুতিয়ালী করতে পারেন। আমি মাওলানা এম এ মান্নানকে দেখেছি তার কামরায় বসে টেলিফোন হাতে নিয়ে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের সাথে, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের সাথে, মিসরের প্রেসিডেন্ট হুসনি মোবারকের সাথে, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মোয়াম্মার গাদ্দাফির সাথে, আরব আমীরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ জায়দের সাথে, জর্দানের বাদশা হোসেনের সাথে, সউদী আরবের বাদশা খালেদের সাথে, পাকিস্তানের নওয়াজ শরীফ কিংবা বেনজির ভুট্টোর সাথে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে। বিশেষ করে ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় এই যুদ্ধ বন্ধের বিষয় নিয়ে তাদের সাথে আলাপ করেছেন। এছাড়া এসব দেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশের রাষ্ট্রনেতা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের সাথে হরহামেশা আলাপ-আলোচনা তো চালিয়েছেনই। আল্লাহপাক তাকে কথা বলার যাদুকরি ক্ষমতা দিয়েছিলেন। মানুষকে প্রভাবিত করার, সম্মোহিত করার, আকৃষ্ট করার বিস্ময়কর প্রতিভা দিয়েছিলেন। মুহূর্তে তিনি মন জয় করে ফেলতে পারতেন। তাঁর কথা শোনার জন্য আগ্রহী করে তুলতে পারতেন।

আরবদের সাথে কথা বলতেন তিনি চোস্ত আরবি ভাষায়। অনেক আরব পণ্ডিতকে আমি প্রশ্ন করতে শুনেছি, আপনি আরবি শিখেছেন আরবের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে? মাওলানা সাহেব উত্তরে বলতেন, কোনো আরব দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নয়, বাংলাদেশে বসে বাংলাদেশের মাদরাসায় পড়ে। আরব বন্ধুদের কখনো কখনো তিনি ভর্ৎসনার সুরে বলতেন, তোমরা আরবি ভাষাকে বিকৃত করেছ। একবার কুয়েতের এক সভায় তিনি বললেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনাদের সঠিক ধারণা নেই। বাংলাদেশে যত সংখ্যক লোক বিশুদ্ধ আরবিতে কথা বলতে পারেন, যতজন মহাক্কিক আলিম রয়েছেন আপনাদের কুয়েত, কাতার কিংবা বাহরাইনের জনসংখ্যাও তত নয়। উর্দু ভাষাভাষীদের সাথে তিনি কথা বলতেন চোস্ত উর্দু ভাষায়। উর্দু সাহিত্যে ছিল তার অসাধারণ অধিকার। গালিব, হালি, ইকবাল প্রমুখ প্রখ্যাত কবিদের সুবিখ্যাত কবিতার চরণ মিলিয়ে, যথোপযুক্ত শব্দ চয়ন করে মনের কথাটিকে সাজিয়ে গুছিয়ে, সুষমামণ্ডিত করে এমন মোহনীয় করে তিনি পেশ করছেন যে সে ভাষাভাষীরা মুহূর্তেই হয়ে যেত মুগ্ধমোহিত। ফার্সি ভাষাতেও ছিল তার ঈর্ষণীয় অধিকার। অবশ্য ফার্সি ভাষাভাষীদের সাথে তেমন একটা আলাপ করতে আমি দেখিনি। তবে রুমী, হাফিজ, সাদী, জামীর বয়েত বাংলা, উর্দুর ফাঁকে ফাঁকে প্রায়ই উচ্চারণ করতেন। পাশ্চাত্যের শিক্ষাবিদ, সাহাত্যিক, কূটনীতিকদের সাথে ঘণ্টার পর ঘন্টা আলাপ করাতন নির্ভুল ইংরেজি ভাষায় এই বিস্ময়কর প্রতিভাধর মাওলানা। মুসলিম জাহানে এখন এক ক্রান্তিকাল চলছে। বাংলাদেশে আমি অনন্ত এমন কাউকে দেখছি না, যিনি মাওলানা হুজুরর মতো মুসলিম জাহানের নেতৃবৃন্দের সাথে অবলীলাক্রমে নিজ উদ্যোগে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন। তিনি ধর্ম ও ত্রাণমন্ত্রী থাকাকালে বাংলাদেশে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। মাওলানা হুজুর ত্রাণ বিতরণের জন্য সরাসরি সাদাম হোসেনের কাছে হেলিকপ্টার পাঠানোর আবেদন জানান। মহনুভব সাদ্দাম দেরী না করে বিশালকায় সাতটি হেলিকপ্টার পাঠিয়ে দেন। তাই বলছিলাম, তার অভাবে নিদারুণ শূন্যতা অনুভব করছি।

মাওলানা এম এ মান্নানের বড় অভাব অনুভব করছি এ সময়ে ইসলামপন্থীদের অনৈক্য দেখে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও বাস্তবতা এই, এদেশের বিভিন্ন সিলসিলার পীর-মাশায়েখের মধ্যে, বিভিন্ন নেছাবের আলেম-উলামার মধ্যে, বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে, বিভিন্ন ফিরকার পুরোধাদের মধ্যে একটা মনস্তাত্ত্বিক বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। তার বহিঃপ্রকাশও ঘটছে অহরহ। কিন্তু এমন কোনো ইসলামী নেতাকে দেখছি না, যিনি মসলক-মেম্বর, নেসাব, ফেরকা, দল-উপদল নির্বিশেষে সকল নেতৃবৃন্দকে, বুজুর্গানে দ্বীনকে এক চায়ের টেবিলে সমবেত করতে পারেন। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এমন সমন্বয়কারীর বড় আকাল এখন। বিভিন্ন দল উপদল পূর্বেও ছিল, এখনও আছে, হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে, কথিত সুন্নী, ওহাবী, কেয়ামী-লাকেয়ামী, মাজহাবী-লামাজহাবী, আলিয়া-দেওন্দী মতপার্থক্য ছিল, আছে এবং হয়তো থাকবেও। তবু তাদের নিয়ে এক সাথে বসা, আলাপ-আলোচনা করা, কোনো কমন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বীকার করেন না। কিন্তু এমন ব্যক্তিত্বের বড় অভাব যিনি তা করার যোগ্যতা রাখেন। এ জন্যই মাওলানা এম এ মান্নানের কথা আজ বার বার মনে পড়ে। তিনি একটা শিক্ষা ধারায় শিক্ষত ছিলেন, একটা বিশেষ সিলসিলারও তিনি অনুসারী ছিলেন, রাজনীতিতেও তিনি কোনো কোনো দলের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন, তবু এমন সমুদ্র বিশাল ছিল তার অন্তর, যেখানে সকল ধারা এসে মিলতে পারে।

আমলে কঠোরভাবে তিনি নিজস্বতা, স্বকীয়তা বহাল থাকতেন। কিন্তু ভিন্ন মতাবলম্বীকে শ্রদ্ধা করতে, সম্মান দেখাতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করতেন না। তাদের যথার্থ মূল্যায়নে ত্রুটি করতেন না। কেউ কোনো ব্যাপারে সহযোগিতা চাইলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে তিনি কার্পণ্য করতেন না।

কারো বিপদ-মুসিবতের কথা শুনলে স্বউদ্যোগে তার সাহায্যে এগিয়ে যেতে বিলম্ব করতেন না। দল-মত নির্বিশেষে সবাই তার আঙ্গিনাকে আশ্রয়স্থল মনে করতে পারতেন। ইসলামী দল সংগঠন দরবারের তো কোনো কথাই নেই। মাওলানা সাহেব দল-মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতেন। পাকিস্তান আমলে তিনি মুসলিম লীগ করতেন। বাংলাদেশ আমলে তিনি জিয়াউর রহমান ও হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদের দলের সাথে যুক্ত ছিলেন বটে কিন্তু মাওলানা ভাসানীর সাথে, শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে, বামপন্থী সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের নেতৃবৃন্দের অধিকাংশের সাথে ছিল তার ব্যক্তিগত নিবিড় সম্পর্ক। তিনি প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সর্বদা তাদের সাথে যোগাযোগ করতেন। কারো কোনো কাজ করে দিতে পারলে খুশি হতেন। বস্তুত যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাওলানা এম এ মান্নানের মতো আর কেউই আমার চোখে পড়েনি। পীর-মাশায়েখ, আলেম-উলামা, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আমলা-কর্মচারী, সাংবাদিক, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, ছাত্র-শিক্ষক নির্বিশেষে অতিসাধারণ থেকে অতিউচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সবার সাথেই তিনি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতেন। এটা কেবল দেশে নয়, বিদেশেও আমি দেখেছি। তার সাথে বহু দেশ ভ্রমণ করার সুযোগ আমার হয়েছে। বাগদাদে, কায়রোতে, দিল্লিতে, আমিরাতে, মক্কা ও মদীনা শরীফে একই অবস্থা দেখেছি।

দেশে যেমন মেহমানদারীতে তিনি অনন্য ছিলেন, ঐ সমস্ত দেশেও তিনি বড় বড় হোটেলে নিজ খরচে ব্যাংকোয়েট করেছেন বিখ্যাত, অখ্যাত লোকদের ভূরি ভোজনে আপ্যায়িত করেছেন। আসলে মেহমান ছাড়া তিনি একা একা যেন খেতেই পারতেন না। এক সময় তিনি ইনকিলাব অফিসে নিয়মিত বসতেন। দুপুরে ও রাতের খানা প্রায়ই অফিসে বসে খেতেন। বাড়ি থেকে খানা আসত। টেবিলে খানা সাজিয়ে তার সাথে খানায় শরীক হওয়ার জন্য ডাক দিতেন। হাতে হাজারো কাজ থাকলেও সে ডাকে সাড়া না দিয়ে রেহাই ছিল না। নিজ বাড়িতে, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন অফিসে এমনকি মন্ত্রী থাকাকালে মন্ত্রণালয়ের অফিসে কক্ষেও ছিল তার একই অবস্থা। বিদেশে বসেও তার এ মেহমান নেওজিতে ব্যতিক্রম ঘটতে দেখিনি একটি বারের জন্যও।

সৌভাগ্য আর নেতৃত্বের গুণ নিয়ে তিনি জন্মেছিলেন। সম্পূর্ণ অচেনা-অজানা জায়গাতেও দু’চারটা কথা বলে, এখানে ওখাকে দু’চারটা ফোন করে আসর জমিয়ে ফেলতেন। বিদেশে রাজকীয় সম্মান ও সম্বর্ধনা লাভ করতেন। তিনি মন্ত্রী, এমপি কিছুই না এমন অবস্থায়ও ইরাকে, সিরিয়ায়, আমিরাতে, জর্দানে, ওমানে তাকে যে কোনো মন্ত্রী-মিনিস্টারের চেয়ে অধিক সম্মান পেতে দেখেছি। তার আগে-পিছে রাষ্ট্রীয় সিকিউরিটির গাড়ি বহর দৌড়াতে দেখেছি। রাজা-বাদশাদের মেহমান হতে দেখেছি। আমি তাঁকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অনুষ্ঠিত ৭৪ জাতির পপুলার ইসলামী কনফারেন্সে একাধিকবার একাধিক অধিবেশনে সভাপতির আসন অলঙ্কৃত করতে দেখেছি। মিসরের রাজধানী কায়রোতে ওআইসি আয়োজিত শিক্ষা কনফারেন্সের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করতে দেখেছি। ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে তার সাথে একটানা ৯০ মিনিটের বৈঠকে দেখেছি। সেখানে তিনি বাংলাদেশের উলামা-মাশায়েখের এক প্রতিনিধি দল নিয়ে গিয়েছিলেন এবং তার সামনে আরবি ভাষায় একটানা ৪৫ মিনিট বক্তব্য রেখেছিলেন। হজের সময় তৎকালীন সউদী, বাদশা খালেদ প্রদত্ত লাঞ্চে মাওলানা হুজুরের সাথী হয়ে শরীক হয়ে সেখানে তাঁর বক্তব্য শুনেছি। আবুধাবিতে আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদের বিশেষ মেহমানরূপে তার সাথে মুসলিম জাহানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দেখেছি। সর্বদাই তিনি সবার সামনে দেশের ভাবমর্যাদা অতি উচ্চে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

দেশেই হোক আর বিদেশেই হোক কোথাও অসঙ্গতি দেখলে তা দূর করতে চেষ্টা করতেন, প্রতিবাদ করতেন। আমার চোখে দেখা এমন নজির রয়েছে অসংখ্য। একবার আমরা বাগদাদ সফরকালে বড় পীর হযরত আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) মাজারসংলগ্ন মসজিদে জিকিরের মজলিসে দফ বাজাতে দেখলাম। মাওলানা হুজুর বাগদাদের বিশিষ্ট আলেমদের সাথে এনিয়ে আলাপ করলেন। কিতাব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলেন। এটা অনুচিৎ বলে প্রমাণ করলেন। তারপর দরবারের মোতাওয়াল্লীদের প্রতি বন্ধের আহ্বান জানালেন। ওজারাতুল আওকাফে গিয়ে এটা বন্ধের দাবি জানালেন। সরকারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন এবং ২/৩ দিনের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত নির্দেশ জারি করালেন। ইরাকের বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের দাড়ি রাখা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারেও চেষ্টা করে মাওলানা এম এ মান্নান সফল হয়েছেন। দাড়ি রাখা না রাখা নিয়ে মিসরের সুবিখ্যাত জামেউল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের উস্তাদদের সঙ্গে তিনি বিতর্ক করে জয়ী হয়েছেন। সউদী আরবের মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উস্তাদদের সঙ্গে কোনো কোনো মাসআলা নিয়ে তিনি বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন এবং আমাদের মতের প্রাধান্য কায়েমে সক্ষম হয়েছেন। জর্দানের রাজধানী আম্মানের এক বিখ্যাত মসজিদে মাওলানা হুজুরের সাথে একবার আসরের নামাজ পড়লাম। জামাত অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিল। মসজিদ খোলা। মুসল্লী আমরা দু’জন। নামাজ শেষে মসজিদ অভ্যন্তরে সম্মুখভাগে পিলারের গায়ে বাঁধাই করা সাঁটানো এক বিশাল পোস্টারের প্রতি দৃষ্টি আকৃষ্ট হলো। তাতে এমন কিছু বিষয় নাজায়েজ ও শির্ক বলে লিখা হয়েছে, যা কুরআন হাদীস মোতাবেক শির্কতো নয়ই বরং ইবাদত। তা পাঠ করে মাওলানা হুজুর আমাকে হুকুম দিলেন, খুলে আনুন ঐ পোস্টার। আমি সাহস পাচ্ছিলাম না। রাজতন্ত্রের দেশ । আমরা বিদেশি। কেউ চেনে না আমাদের। কোনো না কোনো বিপদে পড়ে যাই। আমাকে ইতস্তত করতে দেখে তিনি নিজেই এগিয়ে গেলেন, হাতে নাগাল পাচ্ছিলেন না। আমাকে বললেন তাকে আলগিয়ে ধরতে। ধরলাম। তিনি পোস্টারটি নিয়ে হোটেলে ফিরে ফোন করলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। আবার ফোন করলেন কিং হোসেনের ছোট ভাইয়ের কাছে। তিনিও একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী। সময় নির্ধারিত হল। পোস্টার নিয়ে বাদশার ভাই মন্ত্রী মহোদয়ের অফিসে গিয়ে দেখলাম, তার সাথে আরো অনেক আলেম বসা। মাওলানা হুজুর নিজেই পোস্টারের আপত্তিকর বিষয়গুলো পাঠ করলেন এবং তার ভ্রান্তি দলিলাদি দিয়ে প্রমাণ করলেন। মন্ত্রী মহোদয় বললেন, এখনই হুকুম দেয়া হচ্ছে সব মসজিদে তল্লাশি নেয়ার এবং কোথাও পাওয়া গেলে তা বিনষ্ট করার ও ভবিষ্যতে যাতে কেউ এরূপ করতে না পারে তার নিশ্চয়তা বিধানের।
আলহাজ মাওলানা এম এ মান্নানের কৃতিত্বের ফিরিস্তি অনেক দারাজ। তবে শিক্ষক নেতা হিসেবে তাঁর অবদান অনন্য। মাদরাসার শিক্ষক তথা বেসরকারি শিক্ষক সমাজ কোনো দিন ভুলতে পারবে না এই মহান নেতাকে। আজ যখন বেসরকারি শিক্ষক সংগঠনসমূহে বহুধা বিভক্ত দেখি, যখন তাদের পরস্পর বিরোধী অবস্থানে ও বিবদমান অবস্থায় দেখতে পাই তখন তার অভাব বড় তীব্রভাবে অনুভব করি। শিক্ষক হিসেবেই শুরু হয়েছিল তার কর্মজীবন।


বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

১ সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে লোকসান ৬ কোটি

১ সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে লোকসান ৬ কোটি

বিজিবির নিরাপত্তায় ট্রেনে জ্বালানি তেল পরিবহন

বিজিবির নিরাপত্তায় ট্রেনে জ্বালানি তেল পরিবহন

বাংলাদেশে সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা, ‘আমাকে শেখাবেন না, বরং আপনারা শিখুন’

বাংলাদেশে সহিংসতা প্রসঙ্গে মমতা, ‘আমাকে শেখাবেন না, বরং আপনারা শিখুন’

চোটজর্জর বার্সাকে নিয়ে চিন্তিত ফ্লিক

চোটজর্জর বার্সাকে নিয়ে চিন্তিত ফ্লিক

বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি বিনিয়োগে দারুণ প্রবৃদ্ধি চীনে

বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি বিনিয়োগে দারুণ প্রবৃদ্ধি চীনে

জাপানে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, সরিয়ে নেওয়া হলো হাজারো মানুষকে

জাপানে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, সরিয়ে নেওয়া হলো হাজারো মানুষকে

জন্মভূমির বিপক্ষে মুরের ফিফটি, মাডান্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড

জন্মভূমির বিপক্ষে মুরের ফিফটি, মাডান্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৮২ রানে থামিয়েও দিনশেষে অস্বস্তিতে ইংল্যান্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৮২ রানে থামিয়েও দিনশেষে অস্বস্তিতে ইংল্যান্ড

পদ্মায় নিখোঁজ নৌপুলিশের সন্ধান মেলেনি ৭ দিনেও

পদ্মায় নিখোঁজ নৌপুলিশের সন্ধান মেলেনি ৭ দিনেও

বেতাগী দরবারে ওরশ আজ

বেতাগী দরবারে ওরশ আজ

সন্ধ্যা হলেই দ্বিগুণ ভাড়া ভোগান্তিতে যাত্রীরা

সন্ধ্যা হলেই দ্বিগুণ ভাড়া ভোগান্তিতে যাত্রীরা

কারফিউ শিথিল করায় টাঙ্গাইলে জনজীবনে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে

কারফিউ শিথিল করায় টাঙ্গাইলে জনজীবনে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে

নদী ভাঙনে ৪৫৮ পরিবারের আহাজারি

নদী ভাঙনে ৪৫৮ পরিবারের আহাজারি

বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে টুকুসহ বিএনপি জামায়াতের ৬ নেতা কারাগারে প্রেরণ

বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে টুকুসহ বিএনপি জামায়াতের ৬ নেতা কারাগারে প্রেরণ

শনিবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী

শনিবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী

মেট্রোরেল স্টেশনে হামলার ঘটনায় আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড

মেট্রোরেল স্টেশনে হামলার ঘটনায় আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড

গণবিরোধী কারফিউ দিয়ে মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে : ডা. মনীষা

গণবিরোধী কারফিউ দিয়ে মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে : ডা. মনীষা

নিহত রুদ্রের নামে শাবির প্রধান ফটকের নামকরণ

নিহত রুদ্রের নামে শাবির প্রধান ফটকের নামকরণ

তিনটি গুলি খেয়ে বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলেটা মরে গেছে’

তিনটি গুলি খেয়ে বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলেটা মরে গেছে’

মালয়েশিয়া ও প্রবাসী আর্ট মেলায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

মালয়েশিয়া ও প্রবাসী আর্ট মেলায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অংশগ্রহণ