ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১
গাজার মানবিক অঞ্চল নিয়ে উদ্বেগ, ইসরাইলি আক্রমণ অব্যাহত

প্রথম পর্যায়ে মুক্তি পাবেন এক হাজার ফিলিস্তিনি

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ এএম

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ৩৩ জন জিম্মির বিনিময়ে প্রায় এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল। হামাসের ঘনিষ্ঠ দুই ফিলিস্তিনি সূত্র মঙ্গলবার বার্তা সংস্থাকে এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্র দুটি এএফপিকে জানিয়েছে, ইসরাইল প্রায় এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন দীর্ঘকাল সাজাপ্রাপ্ত বন্দিও রয়েছেন। একজন ইসরাইলি সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চুক্তির প্রথম ধাপের অংশ হিসেবে ‘কয়েকশ বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে’। এর আগে জানা যায়, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অনেক বাধা দূর হয়েছে এবং চুক্তির আরও কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। যদিও যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই দখলদার ইসরাইলের বর্বর হামলায় গাজায় প্রতিদিন বহু মানুষ নিহত হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায়ও গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৬৩ জন নিহত এবং ২৮১ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৬ মাস ধরে দখলদার ইসরাইলের চালানো হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৬৪৫ জনে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইল। ইসরাইলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও। ইসরাইলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বর্বর এ বাহিনীর নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। অপর এক খবরে বলা হয়, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার মানবিক অঞ্চল ‹হিউম্যানিটারিয়ান জোন› নামে পরিচিত এলাকায় ইসরাইলি বাহিনী কতৃক ৯৭টি হামলা ঘটেছে।সংবাদমাধ্যম বিবিসির একটি বিশ্লেষণ থেকে জানা গেছে যে এই এলাকার নাগরিকদের নিরাপত্তার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যখন একে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।কিন্ত বাস্তবে এই অঞ্চলে বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে। গাজার মানবিক অঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা বৃদ্ধি পাওয়ার খবর প্রতিনিয়ত আসছে। সম্প্রতি, গাজায় ইসরাইলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে শান্তিচুক্তির আলোচনা শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন। একে কেন্দ্র করে আশার সঞ্চার হয়েছে, তবে অন্যদিকে গাজায় সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। এই ্রমানবিক অঞ্চলগ্ধ গঠন হয়েছিল অক্টোবর ২০২৩ সালে, যখন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজাবাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করেছিল।এবং ২০২৪ সালের মে মাসে, এটি আরো বিস্তৃত করা হয়, যেখানে খান ইউনিস এবং দেইর আল-বালাহ শহরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই অঞ্চলটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং এখানে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষের বসবাস রয়েছে। অনেক মানুষ তাবুতে বসবাস করছে, যাদের অনেকেরই কোনোভাবে দিন যাপন করছে এবং সাহায্য পাওয়ার সুযোগটুকুও নেই তাদের। ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে যে, তারা এই অঞ্চলে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, ইসরাইলি অভিযোগ হামাস তার নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।অথচ ২০২৪ সালের মে থেকে গাজার মানবিক অঞ্চলে হামলার সংখ্যা বেড়েছে, যেখানে ৯৭টি আক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে এবং প্রায় ৫৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে। এছাড়া, এই অঞ্চলে নিয়মিত হামলা হচ্ছে, বিশেষত ইসরাইলি বিমান হামলা ও ড্রোন থেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা প্রতি দিন হামলার মুখোমুখি হচ্ছেন, যা তাদের নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে গাজার ৪৬,৬০০ মানুষ নিহত হয়েছে, যা এই সঙ্কটের গভীরতাকে আরও স্পষ্ট করছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, গাজার কোনও অঞ্চলই নিরাপদ নয়, আর এই মানবিক অঞ্চল ্রহিউম্যানিটারিয়ান জোনগ্ধও কখনো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। এর ফলে স্থানীয়রা শঙ্কিত এবং প্রতিদিনই আতঙ্কে জীবন কাটাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গাজায় একদিকে শান্তির আশা থাকলেও, আক্রমণ ও সহিংসতার মধ্যে এই মানবিক অঞ্চলের অস্তিত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে। এএফপি, বিবিসি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত
শেষ তিন মাসে রেকর্ড বাজেট ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের
বিশ্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একত্রে কাজ করলেই সফল হবে জাতিসংঘ
এলোপাতাড়ি গোলাবর্ষণে ১২০ নিহত সুদানে
ভারতীয়দের ভিসা প্রদানে কড়াকড়ি আরোপ সউদীর
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত