কুখ্যাত মাচ কারাগারের ভয়ংকর ‘মরিচ’ ওয়ার্ডই ইমরান খানের সম্ভাব্য ঠিকানা
০৬ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৬ এএম | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৬ এএম
ইসলামাবাদের একটি আদালতে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পরই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তাঁর লাহোরের বাড়ি জামান পার্ক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার গ্রেপ্তারের পরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইমরানকে লাহোরের কোট লখপাত জেলে নিয়ে যায় পুলিশ। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী তাঁকে রাজধানী ইসলামাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ইসলামাবাদের আদিয়ালা কারাগারে প্রাথমিকভাবে রাখা হবে। ইতিমধ্যেই ওই কারাগারের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইমরানের সমর্থকেরা যেন সেখানে ভিড় না করেন—সে জন্য কারাগারটির আশপাশের রাস্তাগুলোতে ব্যারিকেডও দেওয়া হয়েছে।
তবে কিছু সূত্র দাবি করেছে, ইমরান খানকে বেলুচিস্তানের মাচ কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখারই পরিকল্পনা করেছে সরকার। রাজনৈতিক বন্দীদের রাখার জন্য কারাগারটি ব্রিটিশ আমল থেকেই কুখ্যাত।
সম্প্রতি ইমরান খানও এক বক্তব্যে আশঙ্কা করেছিলেন যে, সরকার তাঁকে কুখ্যাত মাচ কারাগারে রাখার পরিকল্পনা করেছে। এ ছাড়া গত বছরের নভেম্বরে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সাইফুল্লাহ বলেছিলেন, যদি ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয় তবে তাঁকে মাচ কারাগারেই রাখা হবে। শুধু তাই নয়—ওই জেলের কোন ওয়ার্ডে ইমরানকে রাখা হবে তা-ও উল্লেখ করেছিলেন সাইফুল্লাহ। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ইমরান খানের সম্ভাব্য গন্তব্য হতে যাচ্ছে মাচ কারাগারের ৯ নম্বর ওয়ার্ডটি।
পাকিস্তানি গণমাধ্যমের তথ্যমতে, বেলুচিস্তানের কোয়েটা শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বোলান জেলায় মাচ কারাগারটির অবস্থান। ১৯২৯ সালে ব্রিটিশ আমলে এটি তৈরি হয়েছিল। শুধু কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাই নয়, দেশের সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগার হিসেবেও এর পরিচিতি রয়েছে। আর এই কারাগারের সবচেয়ে কুখ্যাত ওয়ার্ড বিবেচনা করা হয় সেই ৯ নম্বর ওয়ার্ডকেই। কুখ্যাতির জন্য উর্দু ভাষায় ওই ওয়ার্ডটিকে বলা হয় ‘মির্চি’ বা মরিচ ওয়ার্ড।
তবে ওই ওয়ার্ডটি কেন ‘মির্চি’ ওয়ার্ডের খ্যাতি পেল, সে সম্পর্কে জানতে ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখতে হবে। ইতিহাস বলছে, ইমরান খানের আগেও ওই ওয়ার্ডে হাই-প্রোফাইল অনেক রাজনৈতিক বন্দীদের রাখা হয়েছিল। তাঁদের বেশির ভাগই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ কিংবা আন্দোলন করে কারাবরণ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলেন—নবাব আকবর বুগতি, নবাব খায়ের বখশ মারি, সরদার আত্তাউল্লাহ মেঙ্গল, সাদিক ইমরানি এবং সাংবাদিক সিদ্দিক বালুচের মতো ব্যক্তিরা।
কারাগারটির অবস্থান অনেক দূরবর্তী এলাকায় হওয়ায় এবং পাকিস্তানের অন্যতম উষ্ণতম অংশে হওয়ায় প্রায় সময়ই এটিকে কুখ্যাত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের সেলুলার জেলের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
জানা যায়, ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ কিংবা আন্দোলন করে যাঁরা ধরা পড়তেন তাঁদের বেশির ভাগেরই ঠিকানা হতো ওই মাচ কারাগার।
আরেকটি বিষয় হলো—স্বাধীনতাকামী বন্দীদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন জেল-জুলুম এবং নির্মম নির্যাতনের পরও যাদের টলানো যেত না কিংবা যাঁরা ভেঙে পড়তেন না। একগুঁয়ে ওই সব বন্দীর জন্যই কারাগারের এক কোণে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তৈরি হয়েছিল ৯ নম্বর বা মির্চি ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে বন্দীদের খাবারে সাধারণত বেশি করে মরিচ বা ঝাল দেওয়া হতো, যেন খেতে গিয়েও তাঁরা খুব কষ্ট পান। এ থেকেই ওয়ার্ডের নামও মির্চি ওয়ার্ড হিসেবে পরিচিতি পায়।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত