ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১
দোয়া মাহফিলে রিজভী

গণভিত্তি না থাকলে সেলফিতেই সন্তুষ্ট হতে হয়

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম

আওয়ামী লীগ সরকার জনবিচ্ছিন্ন বলেই একটা সেলফি তুলে আনন্দে ডিগবাজী দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দৌড়ে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সেলফি তুলে কি খুশি। সারাদেশে উনি এমনভাবে সেটা ছড়াচ্ছেন। আনন্দে গদগদ ওবায়দুল কাদের। নির্লজ্জতা বেহায়াপনা কত নি¤œগামী হলে পারে এটি হতে পারে। আসলে ওবায়দুল কাদেররা এতটাই জনবিচ্ছিন্ন এই ধরনের কোন ছবি তুলতেই পারলেই তাদের প্রধানমন্ত্রী, তারা আনন্দে ডিগবাজি দেন। আসলে যাদের কোন গণভিত্তি থাকেনা তারা একটি সেলফি তুললেই সন্তুষ্ট হন।

গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
দাওয়াত না পেলেও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশে ছুটে যাচ্ছেন অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দাওয়াত না দিলেও চলে যান। আমি রাজশাহীতে দেখেছি মালেক নানা ছিল। সবাই তাকে কৌতুক করে মালেক নানা বলতো। কোন দাওয়াত ছাড়াই সব বিয়ে বাড়িতেই ওই মালেক নানা গিয়ে হাজির হতো। কি বর পক্ষ, কি কনে পক্ষ। যার বাড়ি হোক না কেন সে সেখানে গিয়ে বসে থাকতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন মালেক নানা হয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, সাউথ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলন হলো, সেই ব্রিকসের সদস্য বাংলাদেশ না, সেই সম্মেলনে কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানাতেই পারে। বহু দেশকে জানিয়েছেন তারা। কিন্তু সবার আগে দৌড় মেরে চলে গেলেন শেখ হাসিনা। দিল্লিতে জি২০ সম্মেলন সেটারও সদস্য না সেখানেও তিনি দৌড় মেরে চলে গেলেন। প্রধানমন্ত্রীর এখন এই অবস্থা দাওয়াত না দিলেও ওখানে উনি দৌড়ে চলে যান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যে দেশ আমন্ত্রণ করেছে সাইড লাইনে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে উনার (প্রধানমন্ত্রীর) দুই একটা দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কথা হয়েছে। মানে এটা মূল বৈঠকের মধ্যে পড়ে না। উনি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হোক আর যাই হোক, কোন দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে একটু কথা বলতে চাইলে তারা তো বলতেই পারে তারপরও সবাই কিন্তু বলেনি। এই কারণে দৌড়ে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সেলফি তুলে কি খুশি। আপনি জনগণের সমর্থন হারিয়েছেন, সুষ্ঠু ভোট আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু। অবাধ এবং ইনক্লুসিভ নির্বাচনকে প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি বড় শত্রু মনে করেন। সেই জন্য একটা সেল্ফিতেই আনন্দের সীমা নেই।

তিনি বলেন, এইভাবে দেশটা চলছে এখান থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। এই পরিত্রাণের জন্য এবার একেবারে জীবন মরণ শপথ নিয়ে নামতে হবে। তাছাড়া কেউ বাঁচতে পারবেনা। এমন কেউ এখানে নেই যার নামে মিথ্যা বানোয়াট মামলা নেই। পুলিশ, র‌্যাব, আদালত বিচারক সবকিছু তার নিয়ন্ত্রণে। তিনি এই ১৪ বছর বেছে বেছে বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন। কি হাইকোর্টে, কি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে, কি জজ কোর্টে। প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন তারা সেইভাবে কাজ করবেন, এক বিন্দু নড়চড় হবে না। আমরা একটি বিচারিক নির্মমতার শিকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। আমরা আদালতের দ্বারা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছি। এই নির্যাতনের কাঠামো তৈরি করেছেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটার বিরুদ্ধে আমাদেরকে দাঁড়াতে হবে।

রিজভী বলেন, সারা দেশের মানুষ যাই বলুক সারা পৃথিবীর মানুষ যাই বলুক কর্তৃত্ববাদী দেশের সার্টিফিকেট নিয়ে উনি প্রধানমন্ত্রী। যে দেশে নির্বাচন হয় না, বিরোধীদলের নেতাদের কারাগারে রেখে সেখানেই মৃত্যুর নিশ্চয়তা দেয় যে সরকার তারাই এখন সার্টিফিকেট দিচ্ছে শেখ হাসিনাকে। তাহলে বোঝেন শেখ হাসিনা কার পক্ষে? অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র মানেন না কোন আইন-কানুন মানেন না। আইনের কথা উনি মুখে বলবেন কিন্তু বাস্তবে কোন তোয়াক্কাই করেন না। উনার বিরুদ্ধে যে কথা বলবে সেই অপরাধী উনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করবে সেই অপরাধী। উনি যে লুটপাট করাচ্ছেন তার দলের নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে সেটার বিরুদ্ধে যে কথা বলবে সে অপরাধী।

জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম,তাঁতীদলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান, ওলামা দলের সদস্য সচিব হাফেজ নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিল।

কর্মসূচি: এদিকে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও জনসচেতনতার জন্য তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন রুহুল কবির রিজভী। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে আজ ১২ সেপ্টেম্বর হতে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ দিনব্যাপী ঢাকাসহ সকল মহানগরে লিফলেট বিতরণ করবে বিএনপি। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত