সর্বাবস্থায় জন্মভূমির মানুষকে ভালোবাসি :আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম
লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ফুলতলী ছাহেব বাড়ি সংলগ্ন বালাই হাওরে অনুষ্ঠিত হয়েছে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর ১৭তম ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল ইছালে সাওয়াব মাহফিল। ধর্মীয় আবেগঘন পরিবেশ ও সুশৃঙ্খল এ মাহফিলে মুরিদীন-মুহিব্বীনের উদ্দেশ্যে তা’লীম-তরবিয়ত পেশ করেন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব (র.)-এর সুযোগ্য উত্তরসূরী আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব ফুলতলী।
তিনি বলেন, যুগে যুগে অনেক যালিমের আবির্ভাব হয়েছে। যালিম শাসকের উদাহরণ হিসাবে আমরা হাজ্জাজ বিন ইউসুফের নাম উল্লেখ করি। সে হুকুমত প্রতিষ্ঠা ও কর্তৃত্ব রক্ষার জন্য হাজার হাজার আলিম-উলামাকে হত্যা করে। এমন শাসক বাহাদুরী দেখানোর জন্য নানা প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করে থাকে। হাজ্জাজ প্রাসাদ নির্মাণ করেছিল। তা দেখে হাসান বসরী (র.) বলেছিলেন, নমরূদ প্রাসাদ এর চেয়ে আরো উন্নত ছিল। সে প্রদর্শনীর জন্য চারশত ঘোড়া রেখেছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাথে বেয়াদবীমূলকভাবে সে হযরত আনাস রা. কে বলেছিল, তোমার সাথি তথা রাসূল (সা.) এর এমন কোনো ঘোড়া কি ছিল? হযরত আনাস (রা.) প্রিয়নবী (সা.) এর বাণী উল্লেখ করে বলেছিলেন, ঘোড়া তিন শ্রেণির। বাহাদুরী প্রদর্শনের ঘোড়াকে তিনি দোযখের ঘোড়া বলেছিলেন। অর্থাৎ এটি দোযখে নিয়ে যাবে। একথা শুনে হাজ্জাজ অত্যন্ত রাগান্বিত হয়। কিন্তু হযরত আনাস (রা.) রাসূল (সা.) এর শেখানো দুআ পাঠ করায় সে তার কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। আমাদের দেশের এক নাস্তিকও উম্মুল মুমিনীনদের শানে বেয়াদবীমূলক উক্তি করেছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও উম্মুল মুমিনীনদের সাথে বেয়াদবী থেকে বেঁচে থাকবেন। যারা তাদের সম্পর্ক খারাপ মন্তব্য করে তাদের সম্পর্ক মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবন উবাই’র সাথে হবে।
কুরআন কারীমের প্রতি আদব প্রদর্শনের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আল্লাহর নিদর্শনাবলির সম্মান না করলে তাকওয়া বিনষ্ট হয়। খারিজীদের ইমাম আবু তাহের কারামতী হাজরে আসওয়াদ খুলে নিয়েছিল। তার মতে চুমু দেওয়া ছিল শিরক। সেই কারামিতীর অনুসারীরা আল্লাহর নিদর্শনসমূহে শিরক দেখে।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহর ওয়াস্তে দীন-দুঃখী মানুষের খেদমত করবেন। আমরা কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি। বন্যা কবলিত কুমিল্লা, নোয়াখালীতে আমাদের উদ্যোগে গৃহনির্মাণ হয়েছে। কোথাও কারো ঘর আগুনে পুড়ে গেলে আমরা পুননির্মাণের চেষ্টা করি। বৃক্ষরোপণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে হাদীসের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যদি কোনো মুমিন চারা লাগায়, ফসল ফলায় এবং তা থেকে কোনো মানুষ কিংবা পশু-পাখি উপকার পায় তাও সদকাহ হিসাবে গণ্য হবে।
বড় ছাহেব ফুলতলী বলেন, আমরা দুআ করি যুলমকারী কেউ যেন আমাদের মাথার উপর না বসে। শয়তানি চরিত্রের কেউ যেন আমাদের কর্তৃত্বে না আসে। হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে এমন কেউ যেন না আসে। কখনো কোনো পরিস্থিতির শিকার হলে আমরা যেন অবিচার না করি। আমরা যেন যালিম না হই, মজলুম না হই। আমরা যেন সর্বাবস্থায় ন্যায়ের উপর অবিচল থেকে শ্যামল-সুন্দর জন্মভূমির মানুষকে ভালোবাসি, হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকি।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় হাজারো উপস্থিত মুরীদীন-মুহ্বিীনদের নিয়ে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর মাজার যিয়ারতের মধ্য দিয়ে মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নজমুল হুদা খান, মাসিক পরওয়ানার সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী ও জার্মানির এরফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাওলানা মারজান আহমদ চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, প্রোভিসি ড. মোহাম্মদ শহীদুল হক, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্জ এ এম এম বাহাউদ্দীন, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হযরত আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী, মহাখালী গাউসুল আযম মসজিদের খতীব মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসা, চাঁদপুর এর অবসর প্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, সিলেট সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের প্রিন্সিপাল কবি কালাম আজাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শহীদুল হক প্রমুখ।
মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, মুফতী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা এ.কে.এম মনোওর আলী, ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারি হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী, জালালপুর জালালিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জ. উ.ম আব্দুল মুনঈম, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, আমেরিকা প্রবাসী বিশিষ্ট আলিমে দ্বীন মাওলানা আবু আব্দিল্লাহ মো. আইনুল হুদা, মহাখালী কামিল মাদরাসা মুহাদ্দিস মাওলানা মাহবুবুর রহমান, জকিগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার সাবেক সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মোশাহিদ আহমদ কামালী, বুরাইয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুহিবুর রহমান, রাখালগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেহাব উদ্দিন আলীপুরী, মাওলানা আজিজুর রহমান প্রমুখ।
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রহীম, ইকড়ছই আলিম মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা ছমির উদ্দিন, চান্দাইরপাড়া সুন্নিয়া হাফিযিয়া ফাযিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু জাফর নুমান, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শামসুল ইসলাম, হলিয়ারপাড়া সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, লতিফি হ্যান্ডস এর জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, সৎপুর দারুল হাদীস কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা ছালেহ আহমদ বেতকোণী, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা আবূ ছালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম, বিশ্বনাথ কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা নুমান আহমদ, রাখালগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা হবিবুর রহমান, ছাতক জালালিয়া আলিম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল আহাদ, হবিগঞ্জ দারুসুন্নাত আলিয়া মাদরাসার উস্তায মাওলানা ফরিদ আহমদ, মাওলানা ফজলুর রহমান চৌধুরী শিঙ্গাইকুড়ি, ভুরকী হাবিবিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার বড় হুজুর হাফিজ আব্দুশ শহীদ, ভারতের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আজিজুর রহমান তালুকদার, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আলমগীর হোসেন, মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, সাবেক সহ সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, সাবেক সহ সভাপতি মাওলানা হুমায়ুনুর রহমান লেখন, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মনজুরুল করিম মহসিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম মনোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুজতবা হাসান চৌধুরী নুমান, মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এর সহ-সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মিল আলী শরীফ, মাওলানা কাজী আলাউদ্দিন আহমদ, লতিফিয়া কারী সোসাইটি ঢাকা জেলা সভাপতি মাওলানা আবূ সাদেক মুহাম্মদ ইকবাল খন্দকার, গ্রেটার ম্যানচেস্টার বাংলাদেশ এসোসিয়েশন এর সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্জ ময়নুল আমীন বুলবুল, ইউ ডোনেট ফাউন্ডেশন ইউকে এর চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান লস্কর প্রমুখ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত