ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১
সীমানা ছোট হচ্ছে না চট্টগ্রামে

রানপ্রসবা সাগরিকায় রান হবে তো?

Daily Inqilab স্পোর্টস রিপোর্টার

১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম

টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানদের খেলা। দর্শক মাঠে যান কিংবা টেলিভিশনের সামনে বসেন চার-ছক্কা দেখতেই। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) সেই সেই দর্শক-আগ্রহ মেটাচ্ছে দারুণভাবেই। ঢাকা হয়ে সিলেট- প্রথম ২০ ম্যাচে রানবন্যাই দেখেছে বিপিএল। পরিসংখ্যানও সাক্ষ্য দিচ্ছে, রানপ্রসবা বিপিএলই হচ্ছে এবার। চট্টগ্রাম পর্ব শুরুর আগে এবারের বিপিএলে ওভারপ্রতি রান উঠেছে ৯.০২ করে। বিপিএলের ইতিহাসে এর আগে একবারই ওভারপ্রতি ৮-এর বেশি রান দেখেছে। সেটি ২০১৯-২০ মৌসুমে। ওই মৌসুমে ওভারপ্রতি রান উঠেছিল ৮.২৪ করে।
ঢাকা ও সিলেটে হওয়া রান-উৎসব চট্টগ্রামেও চলার কথা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম তো আগেই থেকে ব্যাটিং-স্বর্গ। বাংলাদেশের ভেন্যুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান ওঠে ওই মাঠেই। এবারও নিশ্চিত সে ধারাই বজায় থাকবে। সে কথা মনে করিয়ে দিতে, ‘সিলেটে আড়াইশ রান হলো। চট্টগ্রামে তিনশ দেখা যাবে নাকি?’- প্রশ্নটি শুনে মুচকি হাসলেন জহুর আহমদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা। সঙ্গত কারণেই উইকেট বা মাঠ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে তিনি রাজি হননি। চট্টগ্রামের ২২ গজ বরাবরই কথা বলে ব্যাটসম্যানদের হয়ে। এবারও ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ নেই। তবে সিলেটের মতো ছোট সীমানার বাড়তি সুবিধাটুকু এখানে ব্যাটসম্যানরা পাবে না বলেই জানা গেছে।
বিপিএলের সিলেট পর্বে প্রায় সব ম্যাচেই আলোচনায় ছিল মাঠের সীমানা। এবার সীমানা তুলামূলক ছোট ছিল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেও। তবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সীমানা ছিল চোখে পড়ার মতো ছোট। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল একাধিকবার সেখানে সীমানা বড় করার সুপারিশ করেন।
প্রায় সব ম্যাচেই ৫৮ থেকে ৬০ মিটার সীমানা দেখা গেছে সিলেটে। এমনকি ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে মাত্র ৫২ মিটার ছক্কাও দেখা গেছে ওই মাঠে। অথচ সীমানা দড়ির পর গ্যালারি পর্যন্ত পড়ে ছিল বিস্তর জায়গা। সেই জায়গা ব্যবহার না করায় বেশ সমালোচনা সীমানা নিয়ে।
সিলেটে ছোট সীমানার সুবিধা কাজে লাগায় প্রায় সব দল। বিপিএলের গত আসরে সিলেটে হওয়া ১২ ম্যাচে প্রথম ইনিংসের গড় ছিল ১৫১.২৫ রান। এবার সেটি এক ধাক্কায় বেড়ে হয়েছে ১৮১.৫৮ রান। প্রথম ইনিংসে দুইশর বেশি রান হয়েছে তিন ম্যাচে। ১৭০ ছাড়ানো স্কোর ছিল ৯টি। ম্যাচে গড়ে ১৭.৫টি করে দেখা গেছে মোট ছক্কা ছিল ২১০টি। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে অন্য অনেক সময়ের চেয়ে এবার সীমানা ছিল ছোট। টুর্নামেন্টের প্রথম ৮ ম্যাচে ছক্কা হয় মোট ১৩২টি। প্রথম ইনিংসের গড় সংগ্রহ ছিল এই মাঠের বাস্তবতাঢ প্রায় অবিশ্বাস্য, ১৭৯.৫ রান।
চট্টগ্রামে অবশ্য সীমানা ছোট করা ছাড়াই বিপিএলের গত আসরে দেখা গেছে রানের জোয়ার। গত বছরের ১২ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে গড়ে ১৭৭.৯১ রান করেছে দলগুলো। দুইশ ছাড়ানো স্কোর ছিল দুই ম্যাচে। আর ১২ ইনিংসের ৮টিই ছাড়িয়ে যায় ১৬০ রান।
এবারও সীমানা ছোট করার কোনো আভাস মেলেনি বন্দর নগরীর স্টেডিয়ামে। বরিশাল ও ঢাকা ক্যাপিটালস ম্যাচের আগের দিন বিকেল পর্যন্ত আগের মতো স্বাভাবিক দূরত্বেই দেখা গেছে সীমানা দড়ি। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে উইকেটের সোজা দুই পাশে সীমানা রাখা হবে ৭০ মিটার করে। আর স্কয়ারে এক পাশে থাকবে ৬৭ মিটার ও অন্য পাশে ৬৯ মিটার। গতকাল দলের সঙ্গে অনুশীলনের সময় সেন্টার উইকেটে গেলেও সীমানা সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেননি ঢাকার ওপেনার তানজিদ হাসান, ‘বাউন্ডারি সেভাবে দেখতে পারিনি। সেন্টার উইকেটে আসলে দাঁড়িয়ে বোঝা যায় না ওভাবে। খেললে বলতে পারব। তবে চট্টগ্রামের বাউন্ডারি সব সময় একই থাকে।’
তানজিদের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন বরিশালের প্রধান কোচ মিজানুর রহমান। মাঠের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে আসার পথে উইকেটের কাছে কিছুক্ষণ দাঁড়ান তিনি। পরে বলেন, স্পোর্টিং হতে পারে চট্টগ্রামের এবারের উইকেট, ‘উইকেট যতটুকু বুঝলাম, দেখতে খুবই ভালো। আমার মনে হয়েছে, ব্যাটসম্যানরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে এখানে। বোলাররাও যদি সঠিক লাইনে বল করতে পারে, তারা ভালো ফল পাবে। তো ট্রু উইকেট যেটা বলা যায়। বাউন্ডারিও শুনেছি সামনে ৭০ মিটার, স্কয়ারে ৬৭ মিটার। আমার মতে, এটা ঠিক আছে।’
মাঠের উইকেট, সীমানা ছোট করা ছাড়াও আগের ম্যাচগুলোতে রাতের ম্যাচে শিশিরের উপদ্রবও ভুগিয়েছে বোলারদের। তবে মাঠকর্মীদের কাছ থেকে জানা গেছে, গত দুই-তিন দিন রাতে তেমন শিশির পড়েনি মাঠে। ম্যাচের দিনগুলোতেও একই অবস্থা থাকলে সেটি নিশ্চিতভাবেই বাড়াবে ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে প্রথম নামবে বরিশাল ও ঢাকা। আজ দুপুর দেড়টায় শুরু খেলা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার ম্যাচে লড়বে চিটাগং কিংস ও খুলনা টাইগার্স।


বিভাগ : খেলাধুলা


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
টিভিতে দেখুন
দুই টিটি খেলোয়াড়ের পাশে নাভানা
তারুণ্যের উৎসবে তায়কোয়ান্দো
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত