২০ মিনিটে তিন একর ফসলি জমি মধুমতিতে বিলীন
০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর আগ্রাসী ভাঙনে মাত্র ২০ মিনিটে তিন একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বিশেষ আবাসন প্রকল্প স্বপ্ননগরের পুরে এলাকা।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কাতলাসুর এলাকায় সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে মধুমতি নদীর এই ভাঙন রুদ্ররূপ ধারণ করে। এতে মাত্র ২০ মিনিটের ব্যবধানে বিলীন হয়ে যায় কমপক্ষে তিন একর ফসলি জমি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কাতলাসুর এলাকায় অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু সেই কৃষি জমি এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব জমিতে ধান, পাট ও ভুট্টা চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন এলাকার কৃষকরা। একমাত্র আয়ের উৎস ফসলি জমি হারিয়ে দিশেহারা এখানকার কৃষকরা। বাপ-দাদার ফসলি জমি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন কাতলাসুর গ্রামের টুকু মোল্যা। তিনি ইনকিলাব কে বলেন, নদীগর্ভে তাদের তিন বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এসময় কান্নাজড়িত কন্ঠে টুকু মোল্যা ইনকিলাবকে আরো বলেন, কৃষি কাজ করে সংসার চালাই। কিন্তু মুহূর্তেই আমার সব জমি নদীর পেটে চলে গেছে। এখন চাষাবাদ করার কোন জমি আর থাকলো না।
একই এলাকার ফান্টু খাঁ জানান, হঠাৎ নদীতে তার কমপক্ষে দুই বিঘা জমি বিলীন হয়ে গেছে। অপর কৃষক জিন্নাহ মিয়া জানান, তার এক বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে এই ভাঙনের মাত্র ৩০০ মিটার দূরে দক্ষিন-পূর্ব অংশে অবস্থিত গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বিশেষ আবাসন প্রকল্প স্বপ্ননগর এলাকা। তাও প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চরকাতলাসুর গ্রামে ৫৩ একর জমির ওপর নগরের সব সুবিধা নিয়ে ‘স্বপ্ননগর’ নামে আবাসন এলাকা নির্মাণ করা হয়।
যাদের জমি নেই, ঘর নেই; এমন ২৮৬ পরিবারের ঠাঁই হয়েছে স্বপ্ননগরে। ঘর নির্মাণের পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে মসজিদ, মন্দির, বিদ্যালয়, হাট, খেলার মাঠ, ঈদগাহ, কমিউনিটি ক্লিনিক, শিশুপার্ক, ইকোপার্ক ও সামাজিক বনায়ন।
এছাড়া উপকারভোগীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর।
চার বছর না যেতেই এসব ঘরের বাসিন্দারা এখন নদী ভাঙনে ঘর হারানো আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। এছাড়াও স্বপ্ননগর আবাসন এলাকা ব্যতীতও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের কয়েক শতাধিক পরিবার, মসজিদ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নানা স্থাপনা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম, সিরাজুল ইসলাম শরীফ, হুরি বেগম ইনকিলাবকে জানান, আমরা মাথা গোজার ঠাঁই হিসেবে স্বপ্ননগরে একটূ আশ্রয় পেয়েছিলাম।
এখন এই আশ্রয় হারালে আমাদের আবার পথে পথেই থাকতে হবে। কালতাসুর গ্রামের আফজাল মোল্যা ইনকিলাবকে জানান, নদী থেকে ১০০ মিটার দূরে আমার বাড়ি। যেভাবে নদী ভাঙছে জানিনা কি হবে। বাড়ির এই জমিটুকু ছাড়া আমার থাকার জন্য আর কোন জমি নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার সাহা ইনকিলাব কে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হবে। এরপর তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে। কৃষি সংশ্লিষ্ট যেকোন বিষয়ে তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ফসলি জমি বিলীনের বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে আপদকালীন জিওব্যাগ ফেলানো হবে। ভবিষ্যতের জন্য নদীর স্রোত ও অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শেষ বিকেলে লুইস-অ্যাথানেজের 'আক্ষেপে' ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশে
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়