সিয়াম সাধনার মর্মকথা
০১ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩৮ পিএম
সাওম বা রোজা পালন করা দৈহিক ও আত্মিক উভয়বিধ এবাদতের সামষ্টিক রূপ। এই এবাদত পালনের সময় হলো সাহরি গ্রহণের শেষ সময় হতে শুরু করে রাতের আগমন পর্যন্ত। আল কুরআনে এতদসম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে : আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাতের কালো রেখা থেকে উষার সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রকাশ না হয়। তারপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণকর। (সূরা আল বাকারাহ : ১৮৭)।
এই আয়াতে কারীমায় ‘রাতের অন্ধকারকে’ কালো রেখা এবং ভোরের আলো ফোটাকে’ সাদা রেখার সাথে তুলনা করে সাওমের শুরু এবং খানাপিনা হারাম হওয়ার সঠিক সময়টি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। অধিকন্তু এই সময় সীমার মধ্যে কম-বেশি হওয়ার সম্ভাবনা যাতে না থাকে সে জন্য ‘হাত্তা ইয়াতাবাইয়্যনা’ শব্দটিও যোগকরে দেয়া হয়েছে। এতে স্পষ্টরূপে বলে দেয়া হয়েছে যে, সন্দেহ প্রবণ লোকদের ন্যায় সুবহে সাদিক দেখা দেয়ার আগেই খানাপিনা হারাম মনে করো না অথবা এমন অসাবধানতা ও অবলম্বন করো না যে, সুবহে সাদিকের আলো ফোটার পরও খানাপিনা করতে থাকবে। বরং খানাপিনা এবং সাওমের মধ্যে সুবহে সাদিকের উদয় সঠিকভাবে নির্ণয়ই হচ্ছে সীমারেখা।
এই সীমারেখা উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত খানাপিনা বন্ধ করা জরুরি মনে করা জায়েজ নয়। তেমনি সুবাহসাদিক উদয় হওয়ার ব্যাপারে ইয়াকীন হয়ে যাওয়ার পর খানাপিনা করাও হারাম এবং সাওম নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ, তা’ এক সেকে-ের জন্য হলেও। মোটকথা, সুবহে সাদিক উদয় হওয়া সম্পর্কে ইয়াকীন হওয়া পর্যন্তই সাহরির শেষ সময়। সে সময় হতে রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করতে হবে। তাই, সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সাওমের নিয়তের সঙ্গে পানাহারও সকল প্রকার যৌন সম্ভোগ থেকে বিরত থাকাকেই সিয়াম সাধনা বলা হয়।
হাদিস শরীফে সিয়াম সাধনার ফজিলত, গুরুত্ব ও রোজাদারের খুশীর বিষয় সম্বলিত বহু বর্ণনা পাওয়া যায়। নিম্নে কতিপয় বর্ণনা সহৃদয় পাঠক ও পাঠিকাদের সামনে উপস্থাপন করা হলো। ১. হযরত আবু হুরাইয়া (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন : যে লোক রমজান মাসের রোজা ঈমান ও চেতনা সহকারে রাখবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (সহিহ বুখারী : হাদিস ১/৩৮)।
২. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, যে লোক একদিন আল্লাহর পথে রোজা রাখবে, আল্লাহপাক তার মুখম-ল জাহান্নাম হতে সত্তর বছর দূরে সরিয়ে রাখবেন। (সহিহ বুখারী : হাদিস ৪/২৮৪০)।
৩. হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : তোমাদের নিকট রমজান মাস উপস্থিত। এটি এক বরকতময় মাস। আল্লাহ তায়ালা এ মাসে তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়। এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। আল্লাহর জন্য এ মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও অনেক উত্তম। যে লোক এই রাত্রির মহা কল্যাণ লাভ হতে বঞ্চিত থাকল, সে প্রকৃতই বঞ্চিত ব্যক্তি। (সুনানে নাসাঈ : হাদিস ৪/২১০৬)।
৪. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন। রোজা এবং কুরআন রোজাদার বান্দাহর জন্য শাফায়াত করবে, রোজা বলবে, হে আল্লাহ! আমি এক ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা-বাসনা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কুরআন বলবে, হে আল্লাহ! আমি এ ব্যক্তিকে রাতের নিদ্রা হতে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। আল্লাহপাক তাদের সুপারিশ গ্রহণ করবেন। (বায়হাকী শুয়াবুল ঈমান : হাদিস ৩/১৮৩৯)।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার
রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি
দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়
যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের
রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা
বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে
জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে
৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা
আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি
পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই
তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা
ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের
উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি
২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট
২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের
কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু
১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে
বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো
তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান